বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কিত অধ্যায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত ঘাতক চক্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেন। এই কলঙ্কিত হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা হয়নি। কারণ, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদ বিচারের হাত থেকে খুনিদের রক্ষা করতে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করেন। খন্দকার মোশতাকের স্বাক্ষর থাকলেও এই অধ্যাদেশ জারির নেপথ্যের কারিগর ও মাস্টারমাইন্ড ছিলেন জেনারেল জিয়া, যিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার ৯ দিনের মাথায় তৎকালীন সেনাপ্রধানকে হটিয়ে নিজেই সেনাপ্রধান বনে যান। সে কারণে বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল দীর্ঘদিন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে ১৯৯৬ সালের ১৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ২ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহকারী (পিএ) এ এফ এম মোহিতুল ইসলাম ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সংঘটিত নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় একটি এফআইআর করেন। পরে আরেক আসামি মহিউদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়।
১৯৯৬ সালের ১৪ নভেম্বর খুনিদের বিচারের আওতায় আনতে পার্লামেন্টে ইনডেমনিটি আইন বাতিল করা হয়। ১৯৯৭ সালের ১৫ জানুয়ারি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এ মামলায় ২০ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে, সেখানে আসামি করা হয় ২৪ জনকে। একই বছরের ১২ মার্চ আদালতে বিচার শুরু হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকার তৎকালীন দায়রা জজ কাজী গোলাম রসুল বিচার শেষে ১৫ জন আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। এরপর বিচার প্রক্রিয়ায় ২০০৯ সালের এইদিনে (১৯ নভেম্বর) দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির দায়ের করা আপিল আবেদন খারিজ করে রায় দেন। হত্যাকাণ্ডের ৩৪ বছর পর ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর চূড়ান্ত রায়ের মধ্যদিয়ে বাঙ্গালী জাতির কলঙ্কমুক্তির পথ উন্মোচিত হয়।
২০১০
সালের ২৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে
দণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে
পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে জাতিকে দায়মুক্ত
করা হয়। ফাঁসি কার্যকর
করা পাঁচ খুনি হলেন-
লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল সুলতান
শাহরিয়ার রশিদ খান, মেজর
বজলুল হুদা, লে. কর্নেল মহিউদ্দিন
আহমেদ (আর্টিলারি) ও লে. কর্নেল
এ কে এম মহিউদ্দিন
আহমেদ (ল্যান্সার)। সবশেষ দণ্ড
কার্যকর করা হয় ভারতে
পালিয়ে থাকা আসামি আবদুল
মাজেদের। ২০২০ সালের ১২
এপ্রিল রাতে তার মৃত্যুদণ্ড
কার্যকর করা হয়। বাকি
ছয় আসামির মধ্যে দণ্ডিত আবদুল আজিজ পাশা পলাতক
অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যান। অন্যরা
এখনো পলাতক। পলাতক আসামিরা হলেন- খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এ
এম রাশেদ চৌধুরী, এস এইচ এম
বি নূর চৌধুরী ও
মোসলেহ উদ্দিন। তাদের গ্রেফতারে ইন্টারপোলের পরোয়ানা রয়েছে। পলাতক আসামীদের শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমেই বাংলাদেশের
এই কলঙ্ক থেকে মুক্তি পাবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে নিয়ে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য নারী পক্ষ নামে একটি সংগঠন সিরাজগঞ্জ ও পাবনার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার (১৯ মে') দুপুরে শহরের এস. এস রোডস্থ নর্থ টাউন রেস্তোরাঁয় প্রোগ্রাম ফর উইম্যান ডেভোলপমেন্ট (পি ডাব্লিউডি) সার্বিক সহযোগিতা ও নারীপক্ষ আয়োজনে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য দিনব্যাপী মতবিনিময় সভার শুভ উদ্বোধন করেন নারীপক্ষ চেয়ার পারসন গীতা দাস।
মতবিনময় সভায় নারীপক্ষ চেয়ারপার্সন গীতা দাস বলেন, মানুষ কোনো ভালো কর্ম করলে তাকে বিশেষায়িত করা যায়। কিন্তু নারীরা নির্যাতিত হলেও তাদেরকে বিশেষায়িত করা হয়। যেমন ধর্ষণের শিকার হলে তাকে ধর্ষিতা, নির্যাতনের শিকার হলে নির্যাতিতা বলা হয়। অথচ ধর্ষণের শিকার, নির্যাতনের শিকার লিখলেও হয়।’ একজন নারীকে মানুষ হিসেবে দেখলে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন কামরুন নাহার, ফেরদৌসী আখতার, পিডাব্লিউডি নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা জলি।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি চ্যানেল টুয়েন্টিফর সিনিয়র রিপোর্টার সাংবাদিক হীরুকগুণ, এনটিভি জেলা প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম ইন্না, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজন সরকার, বৈশাখী টেলিভিশন সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজিত সরকার, দীপ্ত টিভির সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি শিশির, দীপ্ত টিভি পাবনা জেলা প্রতিনিধি শামসুল আলম সহ অনেকে।
মন্তব্য করুন
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামালের বিরুদ্ধে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের শিবপুর বাজার এলাকা থেকে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করেন চেয়ারম্যার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপে আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যার প্রার্থী তানভীর ইসলাম বলেন, সাইফুল ইসলাম কামালের গুন্ডা সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত আমার কর্মী, সমর্থক, ভোটারদের ভয়ভীতি, হুমকী, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করছে। ফলে নির্বাচন কমিশনের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণবিধি সাইফুল ইসলাম কামাল বারবার লঙ্ঘন করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘ঘোড়া নিয়ে প্রচার প্রচারণা করিনি। তবে আমি ঘেড়ার গাড়ি নিয়ে প্রচার প্রচারণা করেছি। এটাও যদি বিধি নিষেধ থাকে তাহলে এটাও পরিহার করবো।’
পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট ও রিটার্নিং অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় চেয়ারম্যান প্রার্থী এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি আমরা। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন