নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
সময় যত গড়াচ্ছে ততই বিএনপির তরুণরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন আইনজীবীদের উপর। বিএনপির অধিকংশ তরুণই মনে করেন, বেগম জিয়ার কারান্তরীণ হবার সঙ্গে তাঁর আইনজীবীদের যোগসাজস আছে। বেগম জিয়ার সাজা এবং জেলে যাওয়ার সঙ্গে তারা তুলনা করেছেন বেগম জিয়ার বাড়ি হারানোর ঘটনার। তরুণ একজন নেতা বলেছেন, ‘ম্যাডামের আইনজীবীরা বললেন রোববার নাকি তারা জামিনের আবেদন করবেন। কোথায় আবেদন? একটি অঙ্গসংগঠনের নেতা বলেছেন, ‘বেগম জিয়ার আইনজীবীরা মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে কর্মীদের মনোবল ভেঙ্গে দিচ্ছেন।’
বিএনপির তরুণ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে আইনজীবীদের ভূমিকা নিয়ে কিছু মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। জিয়া অরফানেজ এবং জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলায় বেগম জিয়ার প্রধান কৌসুলী ছিলেন খন্দকার মাহাবুব হোসেন। তাঁকে সহযোগিতা করছিলেন সাবেক পিপি আব্দুর রেজ্জাক খান এবং সানাউল্লাহ মিয়া। এরা সবাই ট্রায়াল কোর্টে মামলা পরিচালনায় অভিজ্ঞ। বিএনপির অনেক নেতার মধ্যেই প্রশ্ন মামলার শেষ দিকে হঠাৎ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এবং ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার আসলেন কেন? যুবদলের একজন নেতা বলেছেন, এদের দুজনের কারোরই ট্রায়াল কোর্টে মামলা পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই।’ ওই নেতা আরও বলেন, ‘ব্যারিস্টার মওদুদ একজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং কোম্পানি ল’ইয়ার। আর ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার হলেন সিভিল (দেওয়ানি) ল’ইয়ার।’ ওই নেতার মতো অনেকেই মনে করছেন, ‘সরকারের যোগসাজসে এরা এই মামলায় মাঠে নেমেছিলেন।’ উদাহরণ হিসেবে তাঁরা বেগম জিয়ার ক্যান্টনমেন্ট বাড়ি উচ্ছেদের মামলার কথা বলছেন। ওই মামলায় ব্যারিস্টার মওদুদ বাড়ি উচ্ছেদের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চাননি। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি তাঁকে তিনবার স্মরণ করিয়ে দেন, উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আপনি কি নিষেধাজ্ঞা চাচ্ছেন? জবাবে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘আমরা এটা চাচ্ছিনা।’ ফলে পরদিনই বেগম জিয়াকে তাঁর বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়। বিএনপির অনেকেরই ধারণা, ব্যারিস্টার মওদুদ সরকারকে খুশি করতে এই মামলায় ‘দ্বৈত ভূমিকা’ পালন করেছেন।
মামলায় আইনজীবীদের প্রস্তুতি এবং মামলা পরিচালনার পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির তরুণ নেতৃত্ব। এদের একজন আলাপচারিতায় বলেন, ‘ট্রায়াল কোর্টে আইনজীবীরা মোটেও মনোযোগী ছিলেন না। বরং তারা মামলাটিকে উচ্চ আদালতে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখার কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। যার পরিণাম বেগম জিয়ার জেল।’
একটি অঙ্গ সংগঠনের নেতা বলেছেন ‘বেগম জিয়ার নামে কোনো অ্যাকাউন্ট ছিল না। কিন্তু তাঁর সচিবের স্বাক্ষরে পরিচালিত অ্যাকাউন্টের টাকা কেন এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে ঘুরল? এর কোনো ব্যাখ্যা বেগম জিয়ার আইনজীবীরা দেননি।’ তাদের প্রশ্ন, ‘কেন?’
বেগম জিয়ার জামিন নিয়েও বিএনপির নেতাদের অসন্তোষ বাড়ছে। একজন নেতা বলছেন ‘লন্ডনে থাকা অবস্থাতেই বিএনপি চেয়ারপার্সনের নামে কুমিল্লায় দুটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। কিন্তু তাঁর আইনজীবীরা চার মাসেও ওই মামলায় অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন নেননি কেন?’ ওই নেতার মতে, ‘এখন যদি বেগম জিয়ার এই মামলায় জামিনও হয়, তাহলেও ওই দুটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কারণে তিনি মুক্তি পাবেন না। এর মধ্যে আসছে জিয়া চ্যারিটেবল মামলা।’
বিএনপির তরুণ নেতারা যারা ‘তারেক পন্থী’ হিসেবে পরিচিত, তাদের সন্দেহ বেগম জিয়াকে দীর্ঘ দিন জেলে রেখে দল ভাঙার যে নীলনকশা, তাতে বেগম জিয়ার আইনজীবীরাও ভূমিকা রেখেছেন।
Raed in English- http://bit.ly/2EiNZyw
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।