সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য
জাতীয় নির্বাচন উপহার দিতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন,
‘আমরা বলেছি, একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যেটা দেশবাসী চাচ্ছে, সারা বিশ্বও
সেভাবে তাকিয়ে আছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য আপনাদের ভূমিকাই মুখ্য হবে। সেজন্য
আপনারা তৈরি থাকুন, যাতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারেন।’
আজ বৃহস্পতিবার
(২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের
ষষ্ঠ অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বলেন, ‘আমরা বলেছি, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এখন যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম।
তাদের দেশপ্রেম, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা... তারা এখন পরিপূর্ণ। কাজেই নির্বাচনের সময় যা
প্রয়োজন, তাদের অভিজ্ঞতা ও তাদের দক্ষতা দিয়ে যে কোনো পরিস্থিতি তারা মোকাবিলা করতে
পারবেন।’
‘বস্তুত সেই
সময় তো আমাদের করণীয় কিছু থাকবে না। মন্ত্রণালয় শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবে। মূল দায়িত্বে
থাকবে ইলেকশন কমিশন। নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কাছেই ন্যস্ত হবে’ যোগ করেন আসাদুজ্জামান
খান কামাল।
তিনি বলেন,
‘মাদক নিয়ে কথা বলেছি। এটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। মাদক প্রতিরোধে আমরা তিন ভাগে
ভাগ করে কাজ করছি। প্রথমে আমাদের চাহিদা কমাতে হবে। এ বিষয়ে তারা (ডিসি) মুখ্য ভূমিকা
পালন করতে পারবেন।’
এক প্রশ্নের
জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ কোনোদিনও জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়
দেয়নি। বিদেশ থেকে নানান ধরনের ইঙ্গিত কিংবা ষড়যন্ত্র... আমাদের এখানে দেওয়ার প্রচেষ্টা
হচ্ছিল, যেটা আমি সবসময় বলে আসছি। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তাদের কাজটি সঠিকভাবে করতে
পেরেছে। কাজেই জঙ্গি আমরা দমন করেছি। কিন্তু আমরা গোড়া থেকে উঠিয়ে দিতে পারিনি। এখনও
মাঝে মধ্যে দু-একটি ঘটনা ঘটছে। (জঙ্গিরা) আমাদের এখান থেকে চলে গিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের
ওখানে যোগাযোগ করছে। সেই ঘাঁটিটাও আমরা সমূলে বিনষ্ট করে দিয়েছি।’
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো সবসময় বলে আসছি, রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ
হয়ে যাবে, যদি তারা দীর্ঘদিন এখানে থাকে। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘসহ সব জায়গায় আপিল
করছেন। এ জনগোষ্ঠী সবকিছু হারিয়ে, সবকিছু ফেলে এসেছে। কাজেই জঙ্গিরা এদের প্রলুব্ধ
করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী এটা ধারণা করতে পেরেছেন বলেই তিনি তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার
জন্য সবসময় চাপ দিয়ে আসছেন।’
রোহিঙ্গাদের
একটি অংশ ইয়াবা পাচারসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত রয়েছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান
খান আরও বলেন, ‘আমাদের এপিবিএন, আমাদের সেনাবাহিনী, আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী সবাই সক্রিয়
আছে আমার মনে হয় ওই কোনা-কানাচ দিয়ে যেগুলি ঘটছে, এর আর বিস্তার ঘটবে না।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডিসি সম্মেলন
মন্তব্য করুন
দেশেরে অন্যতম সফল ব্যবসায়ী জয়নুল হক
সিকদার। একাধারে তিনি যেমন উদ্যোক্তা ছিলেন তেমনি দেশেরে সম্পদশালীদের মধ্যে ছিলেন
অন্যতম একজন ব্যবসাসফল মানুষ। আর সেকারণেই দেশের প্রভাবশালী অনেক ব্যবসায়ী গুরু মানতেন
তাকে। শুধু তাই নয়, ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারের ওপরও ছিল তার বিপুল প্রভাব। তার আশীর্বাদের
জন্য তার কাছে ধরনাও দিতেন।
জয়নুল হক সিকদারের হাতে গড়ে ওঠা সিকদার
গ্রুপের ব্যবসা সম্প্রসারিত হয় ব্যাংক, বীমা, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবাসন, নির্মাণ,
হোটেল, পর্যটন, এভিয়েশনসহ নানা খাতে। কিন্তু তার মৃত্যুর তিন বছর না পেরোতেই বিপর্যয়ের
মুখে পড়েছে পুরো সিকদার গ্রুপ।
প্রয়াত ব্যবসায়ী জয়নুল হক সিকদারের
আট সন্তানের মধ্যে দুজন বাংলাদেশে তার ব্যবসার হাল ধরেছিলেন। তারা হলেন রন হক সিকদার
ও রিক হক সিকদার। বেপরোয়া জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে বারবার আলোচনায় এসেছেন এ দুই সহোদর।
পিতার জীবদ্দশায় যখন যা পেতে চেয়েছেন, সেটিই পেয়েছেন। এমনকি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও
জড়িয়েছেন বহুবার।
ন্যাশনাল ব্যাংক কর্মকর্তাদের ওপর তাদের কর্তৃত্ব ছিল প্রভুসুলভ। পিতার প্রভাব কাজে লাগিয়ে দেশের অন্যান্য ব্যাংক থেকেও ঋণ নিয়েছেন খেয়াল খুশিমতো। কিন্তু পিতার অবর্তমানে সে সাম্রাজ্যও এখন ভেঙে পড়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংক পর্ষদ থেকে ছিটকে পড়ার পর অন্য ব্যবসাগুলোও হাতছাড়া হচ্ছে তাদের।
চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে বাংলাদেশ
ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়। ওই সময় ব্যাংকটির পর্ষদ থেকে রন-রিকের
পাশাপাশি তাদের মা মনোয়ারা সিকদারও ছিটকে পড়েন। পর্ষদ থেকে বাদ পড়লেও ব্যাংকটির শেয়ারের
মালিকানায় ছিলেন তারা। কিন্তু গত দুই দিনে সে মালিকানাও হাতছাড়া হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের
(ডিএসই) ব্লক মার্কেটে গত দুই দিনে ন্যাশনাল ব্যাংকের ১৮ কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার ৪০০টি
শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে গত ৬ মে ১২ কোটি ২৫ লাখ ২০ হাজার ৪০০টি শেয়ার ৮৩ কোটি
৭ লাখ টাকায় লেনদেন হয়। আর গতকাল ৪২ কোটি ৫১ লাখ টাকায় লেনদেন হয় আরো ৬ কোটি ৪৫ লাখ
শেয়ার। ব্লক মার্কেটে শেয়ারের ক্রেতা-বিক্রেতা আগে থেকেই নির্ধারিত থাকে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের তথ্যমতে,
এ দুই দিনে সিকদার পরিবারের সদস্যরা তাদের মালিকানাধীন শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। এর
মধ্যে রন-রিকের শেয়ারের পাশাপাশি তাদের মায়ের শেয়ারও রয়েছে। এসব শেয়ার কিনে নিয়েছে
দেশের প্রভাবশালী একটি শিল্প গ্রুপ। সে গ্রুপটির প্রতিনিধিরা ব্যাংকটির পুনর্গঠিত পরিচালনা
পর্ষদে স্থান পেয়েছেন।
আগামী কয়েক দিনে সিকদার পরিবারের আরো
কয়েক কোটি শেয়ার হস্তান্তর হবে। শুধু ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার নয়, রন-রিকের মালিকানায়
থাকা বিভিন্ন কোম্পানির সম্পদও হাতছাড়া হতে চলেছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের
তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুন পর্যন্ত দেশের ব্যাংকগুলোয় রন-রিকের মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর
ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। এসব ঋণের সিংহভাগই ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ। খেলাপি
হওয়া থেকে বাঁচতে তারা ঋণের ওপর উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে রেখেছেন। তবে একাধিক
ব্যাংকে তাদের ঋণ এরই মধ্যে খেলাপি করে দেয়া হয়েছে।
তবে গুঞ্জন উঠেছে, সম্পদের তুলনায় দায়দেনা
বেশি হওয়ায় রন-রিক তাদের সব সম্পদ দেশের একটি প্রভাবশালী শিল্প গ্রুপের কাছে হস্তান্তর
করে দিচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এরই মধ্যে তাদের
সব কোম্পানি হস্তান্তরের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। এর মধ্যে জেডএইচ সিকদার
উইমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালও রয়েছে।
তবে বিষয়টিকে গুজব বলে দাবি করেছেন
প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের কন্যা পারভীন হক সিকদার। তিনি বলেন, ‘জেডএইচ সিকদার উইমেন্স
মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল আমার পিতার নামে। তিনি প্রয়াত হওয়ার পর উত্তরাধিকারী
হিসেবে আমাদের মধ্যে এ সম্পদ বণ্টন হয়নি। সে হিসেবে আমার ভাইরা চাইলেও এটি বিক্রি করতে
পারার কথা নয়। তাছাড়া আমি ন্যাশনাল ব্যাংকের কোনো শেয়ার এখনো বিক্রি করিনি।’
পারভীন হক সিকদার বলেন, ‘একটি পক্ষ
গুজব ও আতঙ্ক ছড়িয়ে আমাদের সম্পদ দখলে নেয়ার চেষ্টা করছে। তারা সিকদার পরিবারকে ধ্বংস
করে দিতে চায়। আমি সব সময় সত্যের পথে চলেছি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এ কারণেই
ভাইদের সঙ্গে আমার বিরোধ। কন্যা হিসেবে জয়নুল হক সিকদারের রক্ত আমার শরীরে প্রবহমান।
আমি এখনো ব্যর্থ হয়ে যাইনি। আশা করছি, ব্যর্থ হবও না। দ্রুতই আমরা ঘুরে দাঁড়াব।’ তবে
এ বিষয়ে চেষ্টা করেও রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল ব্যাংক
লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি বেশ সুনামের সঙ্গেই
প্রায় তিন দশক পার করেছিল। কিন্তু ২০১০ সালের পর ব্যাংকটি পথ হারায়। এক যুগের বেশি
সময় ধরে সিকদার পরিবারের একচ্ছত্র কর্তৃত্বে পরিচালিত হয়েছে ব্যাংকটি। প্রয়াত জয়নুল
হক সিকদারের হাত ধরে সৃষ্টি হওয়া সে কর্তৃত্বের অবসান হয় গত বছরের শেষের দিকে। বাংলাদেশ
ব্যাংক থেকে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে সাত সদস্যের পর্ষদ গঠন করে দেয়া হয়।
ব্যাংকটির পর্ষদ ভেঙে দেয়ায় প্রয়াত
জয়নুল হক সিকদারের স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে ছিটকে
যান। একই সঙ্গে পরিচালক পদ হারান জয়নুল হক সিকদারের ছেলে রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদার।
ওই পরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে নতুন পর্ষদে স্থান পান কেবল পারভীন হক সিকদার। কিন্তু
গত রোববার ব্যাংকটির পর্ষদ আরেক দফায় পুনর্গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন পর্ষদ থেকে
পারভীন হক সিকদারও ছিটকে পড়েছেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী,
ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩ হাজার ২১৯ কোটি টাকা। ব্যাংকটির মোট শেয়ার
সংখ্যা ৩২১ কোটি ৯৭ লাখ ৩৯ হাজার ৫৭০। এর মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ শেয়ার সিকদার পরিবারের
সদস্যদের নামে রয়েছে। পরিবারটির মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে আরো ৬-৭
শতাংশ শেয়ার।
প্রয়াত জয়নুল হক সিকদারের আট সন্তানের
মধ্যে কেবল রন-রিকই বাংলাদেশে ব্যবসা বিস্তৃত করেছেন। এ দুই সহোদরের মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর
মধ্যে পাওয়ার প্যাক মতিয়ারা কেরানীগঞ্জ পাওয়ার প্লান্ট লিমিটেডের নামে ১ হাজার ৩৮৩
কোটি টাকা, পাওয়ার প্যাক মতিয়ারা জামালপুর পাওয়ার প্লান্ট লিমিটেডের নামে ১ হাজার ১১৯
কোটি, সিকদার রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের নামে ৬৭২ কোটি, বিইএল কনস্ট্রাকশন এসডিএন বিএইচডি
লিমিটেডের নামে ৬২২ কোটি, মাল্টিপ্লেক্স হোল্ডিংস লিমিটেডের নামে ২১৪ কোটি, আর অ্যান্ড
আর এভিয়েশন লিমিটেডের নামে ২৯ কোটি, পাওয়ার প্যাক মতিয়ারা খুলনা পাওয়ার প্লান্ট লিমিটেডের
নামে ২৭ কোটি, পাওয়ার প্যাকের নামে ১২ কোটি এবং পাওয়ার প্যাক হোল্ডিংস লিমিটেডের নামে
৭ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। এছাড়া রন হক সিকদারের নামে ৩৫৩ কোটি ও রিক হক সিকদারের নামে
১৯৫ কোটি টাকার ব্যক্তিগত ঋণও রয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ব্যাংকটি থেকেও
নামে-বেনামে কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন রন ও রিক। এসব ঋণ অনেক আগেই অনিয়মিত ও
মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। শুধু ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেই এ দুই ভাই বিদেশে খরচ করেছেন
৭১ কোটি টাকার বেশি। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী দেশের ব্যাংকগুলোর কোনো
ক্রেডিট কার্ডের অনুকূলে জামানতবিহীন সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা ও জামানতসহ সর্বোচ্চ ২৫
লাখ টাকার ঋণসীমার সুযোগ রয়েছে। এ নিয়ে গত মাসের শুরুতে এ দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল ব্যাংকের ক্রেডিট
কার্ড ব্যবহার করে বিদেশে ৭১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয় ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। এতে রন-রিক
ছাড়াও বেসরকারি ব্যাংকটির সাবেক তিন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) পাঁচ কর্মকর্তাকে
আসামি করা হয়। দুদকের পরিচালক মো. বেনজীর আহম্মদ বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। ক্রেডিট
কার্ড ছাড়াও ন্যাশনাল ব্যাংকের হিসাব থেকে থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার হয়েছে
বলে দুদকের মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
এতে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) অনুসন্ধান প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, থাইল্যান্ডে রন হক সিকদার ও রিক হক সিকদারের নিজ নামে এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে অন্তত ২০টি ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হচ্ছে। এসব ব্যাংক হিসাবে বিভিন্ন সময়ে ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে। আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ড, চীন, ভিয়েনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন ও রাশিয়া থেকে হিসাবগুলোয় অর্থ স্থানান্তরের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জয়নুল হক সিকদার বাংলাদেশ ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ
মন্তব্য করুন
বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় রামেশ্বাপুর ইউনিয়নের কুসুমকলি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে প্রিজাইডিং অফিসার ও আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্টকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (৮ মে) বেলা ১২ টার দিকে তাদেরকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: উপজেলা নির্বাচন: নরসিংদীতে ভোটকেন্দ্র দখল নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫
আটক প্রিজাইডিং অফিসারের নাম শাজাহান আলম
এবং
অপরজন হলেন আনারস মার্কা প্রার্থী রফি নেওয়াজ খান রবিনের এজেন্ট এরশাদ আলী। এ সময় তাদের কাছে সিল মারা ৯০০টি ব্যালট পেপার পাওয়া যায়।
এছাড়াও প্রায় ৩০০টি জাল ভোট বাক্সে ফেলানোর অভিযোগ স্বীকার করেছেন প্রিজাইডিং অফিসার শাজাহান আলম।
আটকের বিষয় নিশ্চিত করে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, ‘হাতেনাতে তাদের আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান বলেন, ‘যেখানে অভিযোগ আছে
সেখানেই
ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
দুপুর অবধি
উপজেলায়
প্রায় ২০ শতাংশ ভোট গ্রহণ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাচন জাল ভোট সিল মারা ব্যালট
মন্তব্য করুন
দিনাজপুরের হাকিমপুরে (হিলি) উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বুধবার (৮ মে) একদিনের জন্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যসহ বন্দরের ভেতরের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
তবে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দুদেশের মাঝে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচন উপলক্ষে সরকারিভাবে উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে কাস্টমসের সব বিভাগ বন্ধ থাকবে।
তিনি বলেন, এতে করে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যসহ বন্দরের ভেতরের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় দুদেশের মাঝে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যসহ বন্দরের ভেতরের সব কার্যক্রম চালু হবে।
দিনাজপুর হাকিমপুর হিলি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন
মন্তব্য করুন
নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা
ইউনিয়নের একটি ভোটকেন্দ্র দখলকে নিয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে
সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া এতে প্রায় আধা
ঘন্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে এই কেন্দ্রে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় ভোটগ্রহণ
শুরু হয়।
বুধবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার হোসেন (কাপ পিরিচ) ও আব্দুল বাকির (আনারস) এর কর্মী সমর্থকরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় উভয় গ্রুপের ধাওয়া ও পাল্টাধাওয়ায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভোটারদের মাঝে টাকা বিতরণ, ৯৪ হাজার টাকাসহ ইউপি চেয়ারম্যান আটক
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে আনারস প্রতীকের সমর্থক পাঁচদোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির লিটন
(৪০)
ও কাপ পিরিচ প্রতীকের সিদ্দিকের
(৩০)
পরিচয় পাওয়া গেছে,
বাকিদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
পাঁচদোনা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির লিটন বলেন,
‘কাপ পিরিচ প্রতীকের সমর্থক ও স্থানীয় আল আমিনের
(৩৪)
নেতৃত্বে টিপু
(৩১),
দুলাল
(২৭)
অভিসহ ১০-১২ জন কেন্দ্রের ভেতরে আমাদের ওপর হামলা করে। আমি আনারস প্রতীকের এজেন্ট ছিলাম। আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়। এরপর কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। আমাদের লোকজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।’
অভিযুক্ত কাপ পিরিচের সমর্থক আল আমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
‘আমাদের লক্ষ্য করে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছিলেন আব্দুল বাকিরের সমর্থক হুমায়ুন ও তার লোকজন। এতে সামান্য হাতাহাতি হয়েছে। আমাদের ৮-১০ জনকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়। আমরা কাউকে আঘাত করিনি।’
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সামসুল আরেফিন বলেন,
‘দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হওয়ার কথা শুনে ঘটনাস্থলে এসেছি। আমরা তদন্ত করে বের করার চেষ্টা করছি,
কারা কারা এ ঘটনায় জড়িত। পরিবেশ এখন স্বাভাবিক রয়েছে। ভোটগ্রহণ পুনরায় চলছে। নির্বিঘ্নে ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ রয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত হওয়ারও খবর পেয়েছি।’
উপজেলা নির্বাচন কেন্দ্র দখল আহত
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে একটি ভোটকেন্দ্র থেকে নগদ ৯৪ হাজার টাকাসহ ভাঙ্গাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
বুধবার (৮ মে) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের তামাই পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে তাকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: মনিটরিং সেলে ভোট পর্যবেক্ষণ করছে ইসি
জেলা গোয়েন্দা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জুলহাজ উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের মাঝে নগদ টাকা বিতরণ করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছিলেন এই ইউপি চেয়ারম্যান। এ সময় তাকে টাকাসহ হাতে নাতে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে ৯৪ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। বিষয়টি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানো হয়েছে। তারা এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ওই এলাকার দায়িত্বে থাকা কামারখন্দ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আদনান মোস্তাফিজ বলেন, চেয়ারম্যান দিয়ে ভোটকেন্দ্র এলাকায় ভোট কেনার চেষ্টা করছিলেন। তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। তিনি কোন প্রার্থীর হয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছিলেন এটা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন ।
প্রসঙ্গত, সারাদেশের ন্যায় সিরাজগঞ্জে বেলকুচিসহ ৩টি উপজেলায় প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলছে।
উপজেলা নির্বাচন টাকা বিতরণ আটক
মন্তব্য করুন
দেশেরে অন্যতম সফল ব্যবসায়ী জয়নুল হক সিকদার। একাধারে তিনি যেমন উদ্যোক্তা ছিলেন তেমনি দেশেরে সম্পদশালীদের মধ্যে ছিলেন অন্যতম একজন ব্যবসাসফল মানুষ। আর সেকারণেই দেশের প্রভাবশালী অনেক ব্যবসায়ী গুরু মানতেন তাকে। শুধু তাই নয়, ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারের ওপরও ছিল তার বিপুল প্রভাব। তার আশীর্বাদের জন্য তার কাছে ধরনাও দিতেন। জয়নুল হক সিকদারের হাতে গড়ে ওঠা সিকদার গ্রুপের ব্যবসা সম্প্রসারিত হয় ব্যাংক, বীমা, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবাসন, নির্মাণ, হোটেল, পর্যটন, এভিয়েশনসহ নানা খাতে। কিন্তু তার মৃত্যুর তিন বছর না পেরোতেই বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পুরো সিকদার গ্রুপ।