নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কি হিরো বানাচ্ছে সরকার? বিএনপির মধ্যে এখন এই প্রশ্ন প্রচন্ডভাবে আলোচিত হচ্ছে। বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে দেখা গেছে, মির্জা ফখরুলকেই দল ভাঙার প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। একজন নেতা তো বলেছেন, সরকার তিল তিল করে তাঁকে পাদপ্রদীপে নিয়ে এসেছে। বিএনপির ওই নেতা বলেন, ২০১৪ সাল থেকেই বিএনপিকে টার্গেট করে একের পর এক মামলা দিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্বয়ং তারেক জিয়াই মনে করেন, গ্রেপ্তার করেই তাঁকে বশে আনে সরকার। গ্রেপ্তার, মুক্তি, আবার গ্রেপ্তার এভাবেই ফখরুলকে দ্বিতীয় নেতা বানিয়ে ফেলা হয়। এরপর ফখরুলকে গ্রেপ্তার করার পর আবার বিকেলে ছেড়ে দেওয়া হয়। এখান থেকেই বিএনপিতে সন্দেহ উঁকি মারে। গত বছর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক দিনেই ১৮ মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন নিলে বিএনপিতে তারেকপন্থীরা বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে, মির্জা ফখরুল সরকারের ইশারায় চলছে। এসময় স্বয়ং তারেক জিয়া সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবের দূরত্ব তৈরি হয়।
বেগম জিয়া কারাবন্দি হলে তারেক জিয়া এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা শুরু হয়। জিয়া পরিবারের সদস্য হবার পরও দূরে থাকা এবং খারাপ ব্যক্তিগত ইমেজের কারণে পিছিয়ে পড়েছেন তারেক জিয়া। এখন মির্জা ফখরুলই বিএনপির প্রধান নেতা। বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেয়ারপারসন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। এর পরই দলের ভাইস চেয়ারম্যান। বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক সংস্থা হলো দলের স্থায়ী কমিটি। দলের মহাসচিব স্থায়ী কমিটির সদস্য হন পদাধিকার বলে। স্থায়ী কমিটিতেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেশ জুনিয়র। স্থায়ী কমিটিতে তাঁর অবস্থান ১৫তম। বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়ার পরেই বিএনপির সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এরপরই ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের অবস্থান। তৃতীয় অবস্থানে আছেন সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। কিন্তু এদের আড়াল করে মির্জা ফখরুলই এখন দৃশ্যত বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সিনিয়র নেতাদের ঈষৎ অস্বস্তি সত্ত্বেও তাঁরা ফখরুলের অধীনেই চলছেন। এর কারণ হিসেবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘ মির্জা ফখরুল বিনয়ী, সংযত কথাবার্তা বলেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে তাঁর একটা পরিচ্ছন্ন ইমেজ রয়েছে। একারণেই তাঁকে আমরা সামনে রেখেছি।’
কিন্তু বিএনপিতে তারেকপন্থীদের এব্যাপারে ভিন্ন মত। তারা মনে করেন, এজেন্সিগুলো পরিকল্পিত ভাবে মির্জা ফখরুলের ইমেজ বাড়িয়েছ। বার বার গ্রেপ্তার করে সাধারণ মানুষের সহানুভূতি কেড়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজনীতিতে আবদুল মান্নান ভুঁইয়ার শিষ্য ছিলেন। তাঁর নিকটাত্মীয় লে. জে. (অব.) মাহাবুবুর রহমান। কাজেই শেষপর্যন্ত তিনি বেগম জিয়ার নেতৃত্বের প্রতি কতটা অটল থাকবেন, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
বাস্তবতা হলো কে এম ওবায়দুর রহমানের পর এই প্রথম একজন মহাসচিব বিএনপি পেয়েছি যিনি দলে প্রচণ্ড জনপ্রিয়। দলের বাইরেও তাঁর ইমেজ যথেষ্ট ভালো। মির্জা ফখরুল এখন তারেক জিয়ার অনেক সিদ্ধান্তই নাকচ করে দেন। স্থায়ী কমিটির সিংহভাগ সদস্যই তারেকের চেয়ে মির্জা ফখরুলকে বেশি পছন্দ করেন। তাহলে মির্জা ফখরুলই কি জিয়া পরিবারের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করবেন? তিনি কি হবেন জিয়া পরিবারের বাইরে বিএনপির প্রথম প্রধান নেতা? এজন্যই কি তাঁকে তৈরি করা হয়েছে? এজন্যই মির্জা ফখরুল তাঁর শান্তিপূর্ন কর্মসূচি সরকারের আশীর্বাদে করতে পারছেন?
Read In English: http://bit.ly/2CCHpkM
বাংলা ইনসাইডার/জেডএ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
বাল্যবিবাহ সামাজিক আন্দোলন ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।