পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) ভর্তি স্থগীতের ঘটনায় আন্দোলন করতে গিয়ে আন্দোলনরত নারী শিক্ষার্থীরা মারধোরের শিকার হয়। পবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের মারধোরের তথ্য নিতে গিয়ে পবিপ্রবি ছাত্রলীগের হাতে মারধোরের শিকার হয় একাধিক সংবাদকর্মীরা। পরে উল্লেখিত ঘটনায় সংবাদ না করার শর্তে মুসলেখা দিলে মধ্যরাতে সংবাদকর্মীদের ছেরে দেয় পবিপ্রবির রেজিস্ট্রার ও ছাত্রলীগ।
শুধু
তাই নয়, সংবাদ কর্মীদের
ছেরে দেয়ার মুহুর্তে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ
থেকে সকল প্রকার তথ্য-উপাত্ত মুছে দেয়া হয়।
এসকল ঘটনায় সংবাদ প্রচার হলে সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে
নারী গঠিত মামলাও ঠুকে
দেয়ার হুমকী দেন রেজিস্টার। পবিপ্রবি
ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেকের ইন্দোনে এসব কান্ড হয়েছে
বলে দাবি করেন হামলার
শিকার নারী শিক্ষার্থী ও
সংবাদকর্মীরা।
পবিপ্রবি‘র সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা
বলেন-সম্প্রতি সিজিপিএ ও জিপিএ মানদন্ড
তুলে নিয়ে মাষ্টার ডিগ্রি
প্রোগ্রামে ভর্তি হয়ে স্নাতকোত্তরের সুযোগ
দেন পবিপ্রবি প্রশাসন। একদিনের মাথায় কোনো কারন ছারাই
ভর্তি সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলে পবিপ্রবি প্রশাসন।
এতে ভর্তি বঞ্ছিত শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের নামে। যা নিয়ে পবিপ্রবি
ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে হঠে।
আন্দোলনের
এক পর্যায় পবিপ্রবির ভিসি স্বদেশ চন্দ্র
সামন্তকে অবরুদ্ধ করা হয়। ক্যাম্পাসে
ভিসি অবরুদ্ধের খবর ছরিয়ে গেলে
ভিসির পক্ষে মাঠে নামে ছাত্রলীগ
ও বহিরাগতরা। এসব ঘটনার তথ্য
নিতে গিয়ে পবিপ্রবি ছাত্রলীগের
হাতে মারধোরের শিকার হয় সংবাদকর্মীরা।
হামলার
শিকার তাহিরা লিজা বলেন, গত ৫
এপ্রিল স্নাতকোত্তর ভর্তি জটিলতা নিরসনের জন্য শান্তিপূর্ণ অবস্থান
কর্মসূচীতে যোগ দিতে সাধারণ
শিক্ষার্থীদের নিয়ে কবি বেগম
সুফিয়া কামাল হল থেকে বের
হই। এসময় মেধা, ফারজানা,
প্রীতি, অনন্যা, সারন, বিন্তি, নাজিফা, সুস্মিতা, আমরিন, সুমাইয়া, স্বর্না বিভিন্ন অস্ত্রসশ্র নিয়ে আমাদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমাকে
গণরুমে তুলে নেন। পরে
তারা তার উপর গনরুমে
নেয়ার পরে তারা আমার
উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়।
হামলাকালে
তারা বলেন, পবিপ্রবি ছাত্রলীগ শাখার সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক ভাইয়ের নিষেধ থাকা সত্তেও তুই
কর্মসুচীতে যোগ দেয়ার শাস্তি
ভোগ করতে হবে। হামলার
পরে সহপাঠিরা পবিপ্রবি হেলথ কেয়ার সেন্টারে
নিয়ে গেলে তারা আমাকে
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন
করেন। এসময় আমাদের সহায়তা
করতে এসে মারধোরের শিকার
হয় কয়েকজন সাংবাদিক।
এদিকে
এসব তথ্য নিতে পটুয়াখালী
জেলা শহর থেকে পবিপ্রবিতে
ছুটে যায় ডেইলী সান
ও বাংলা ট্রিবিউন পত্রিকার প্রতিনিধি আবদুল কাইউম, সময় টিভির ক্যামেরা
পার্সন সুজন দাম, বার্তা
বাজারের মো.নয়ন মৃধা,
আনন্দ বাজার ও বিডি২৪ লাইভ
এর স্বপ্নীল দাস, বাংলা ইনসাইডার,
দেশ তথ্য এর রাকিবুল
ইসলাম তনুসহ একাধিক সংবাদকর্মীরা। রাত সাড়ে ৯টার
দিকে আন্দোলরত নারী শিক্ষার্থীরা তোপের
মুখে পরে অবরুদ্ধ হয়।
রাত
৯টার দিকে ভিসি অবরুদ্ধের
ভিডিও চিত্র নিতে গেলে পবিপ্রবি
ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি আশ্রাফুল
আলম রুবায়েত এর হাতে মারধোরের
শিকার হয় রাকিবুল ইসলাম
তনু। এসময় তনুর মোবাইল
ও ল্যাপটপ ছিনিয়ে ভেঙ্গে ফেলেন ছাত্রলীগ নেতা রুবায়েত। রাত
১০ টারদিকে বেগম সুফিয়া কামাল
ছাত্রবাস থেকে নারী শিক্ষার্থীদের
ডাক-চিৎকার শুনে উপস্থিত সংবদকর্মীরা
এগিয়ে গেলে হামলাকালীদের তোপের
মুখে পরে মারধোরের শিকার
হয়।
সংশ্লিষ্টরা
বলেন-পবিপ্রবি ছাত্রলীগ নেতাদের হস্তক্ষেপে নারী ছাত্রাবাসের পরিস্থিতি
ভয়ঙ্কর হলে বেশ কয়েক
নারী শিক্ষার্থীরা সংবাদকর্মীদের কাছে সহায়তা চান।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের লক্ষ্যে উপস্থিত সংবাদকর্মীরা একাধিকবার কল দিলে ভিসি
স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত কল রিসিভ করেনি।
পরে শিক্ষার্থীদের ডাকে অবস্থারত সংবদকর্মীরা
ছাত্রবাসের ভেতরে গেলে নারী শিক্ষার্থীদের
মারধোরের দৃশ্য ধারন করার চেস্টা
করেন। এতে হামলাকারীরা সংবদকর্মীদের
মোবাইল কেরে নেয়ার চেষ্টা
করেন। পরে পরিস্থিতির অবনতি
দেখে সংবাদকর্মীরা দুমকী প্রেসক্লাব চত্বরে অবস্থান করেন। এর কিছুক্ষন পরে
পবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক ও পবিপ্রবি প্রশাসনের
বরাত দিয়ে ডেইলী সান
ও বাংলা ট্রিবিউন এর প্রতিনিধি আবদুল
কাইউমকে তুলে নেন পবিপ্রবির
ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি রুবায়েত
ও সাংগঠনিক সম্পাদক শিহাব বুখারি এবং তাদের লোকজন।
সাংবাদিক
কাইউমকে বেগম সুফিয়া হলের
সামনে তুলে নিয়ে কোনো
কিছু বুঝে ওঠার আগেই
মারধোর শুরু করেন। যেখানে
উপস্থিত ছিলেন পবিপ্রবির রেজিস্টার প্রফেসর ড. সন্তোষ কুমার
বসুসহ একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এসময়
কাইউমের কাছ থেকে কর্মরত
মিডিয়ার আইডি কার্ড, মোবাইল
ও ল্যাপটপ কেরে নেয়া হয়।
মারধোর শেষে কাইউমের ব্যবহৃত
মোবাইল থেকে সকল প্রকার
তথ্য মুছে দিয়ে মোবাইলটি
ভেঙ্গে ফেলেন ছাত্রলীগ নেতা রুবায়েত ও
শিহাব। এসব ঘটনার সায়
দেন রেজিস্টার সন্তোষ কুমার বসু। দুই ঘন্টার
পরে আলোচ্য ঘটনার সংবাদ প্রকাশ না করার শর্তে
কাইউকে ছেরে দেন রেজিস্টার
ও ছাত্রলীগ। ছেরে দেয়ার মুহুর্তে
সংবাদ হলে নারী গঠিত
অভিযোগে সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলারও হুমকী দেন রেজিস্টার।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আশ্রাফুল আলম
খান রুবায়েতকে কল দিলে তিনি
ব্যস্ত আছেন বলে কলটি
কেটে দেন।
পবিপ্রবি
ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেককে একাধিকবার কলে দিয়েও তাকে
পাওয়া যায়নি।
এসব
প্রসঙ্গে পবিপ্রবির রেজিস্টার প্রফেসর ড. সন্তোস কুমার
বসু বলেন-কিছু সংবাদকর্মীরা
ছাত্রী হলে প্রবেশ করে
মারামারির ভিডিও করছে। তাই তারা বাধার
মুখে পরেছে। এখানে কোনো শিক্ষার্থী অথবা
সাংবাদিকে মারধোর করা হয়নি। শুধু
ধাক্কা-ধাক্কি হয়েছে। আর কোনো শিক্ষার্থীকেও
চিকিৎসা নিতে হয়নি।
এসব
প্রসঙ্গে জানতে ভিসিকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পবিপ্রবি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকদের উপরে হামলা
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নতুন সরকার বাজেট ঘোষণা জাতীয় সংসদ
মন্তব্য করুন