আজ রোববার
(১৬ এপ্রিল) অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হিসেবে কিউবার রাজধানী হাভানার প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে
এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে দেশটির মহামান্য রাষ্ট্রপতি মিগুয়েল ডিয়াজ কানেল- এর নিকট
পরিচয় পত্র পেশ করেন কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. খলিলুর রহমান।
এর আগে প্রেসিডেন্সিয়াল
প্যালেসে পৌঁছালে সেখানকার একটি চৌকস দল তাঁকে গার্ড অফ অনার প্রদান করে। পরিচয় পত্র
প্রদানের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কিউবার মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত পারস্পারিক
স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। এ সময় দেশটির মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী
ব্রুনো এডুয়ার্ডো রদ্রিগেজ প্যারিলা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় কিউবার
রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং কিউবার বিপ্লবী নেতা ও সাবেক
রাষ্ট্রপতি ফিদেল কাস্ত্রোর যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক
সম্পর্কের বিষয়ে আলোকপাত করেন এবং দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার
পর থেকে বিদ্যমান বন্ধুত্বের দৃঢ় বন্ধনের কথা তুলে ধরেন। তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক
ফোরামে কিউবার প্রতি বাংলাদেশের সমর্থনের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং দুই দেশের মধ্যে
সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রদূত
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে কিউবার জনগণ এবং বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর
নেতৃত্বাধীন সরকারের সমর্থন এবং বঙ্গবন্ধু ও ফিদেল কাস্ত্রোর মধ্যে ব্যক্তিগত বন্ধুত্বের
কথা স্মরণ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ফিদেল কাস্ত্রোর সমর্থনের স্বীকৃতিস্বরূপ
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক তাঁকে ২৪ মার্চ ২০১৩ তারিখে 'বাংলাদেশ
মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা' পুরস্কার প্রদানের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
এছাড়াও, রাষ্ট্রদূত
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের প্রতি কিউবান সরকারের সমর্থনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে
ধন্যবাদ জানান এবং কিউবাকে বাংলাদেশে আশ্রিত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১৩ লক্ষ মিয়ানমার
নাগরিকদের তাদের নিজ দেশে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনসহ অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশকে
সমর্থন অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।
অন্যান্য বিষয়ের
মধ্যে, রাষ্ট্রদূত বিশ্বের বর্তমান সংঘাত পরিস্থিতি ও অন্যান্য বিধিনিষেধের কারণে উদ্ভূত
সমস্যার প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায় সম্পর্ক জোরদার করার এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির
প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত
জি ৭৭-এর বর্তমান সভাপতি হিসেবে ফোরামটিকে শক্তিশালী করার জন্য কিউবাকে বিশেষ অনুরোধ
করেন। তিনি উন্নয়নশীল বিশ্বের স্বার্থ সমুন্নত ও সুরক্ষা করতে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে
হাভানায় অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন জি ৭৭ শীর্ষ সম্মেলনে অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে
বিদেশী শক্তি কর্তৃক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে জোরালো বিবৃতি প্রদানের প্রয়োজনীয়তার কথাও
উল্লেখ করেন।
এছাড়া, রাষ্ট্রদূত
কিউবান চেম্বার অফ কমার্সের প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশ থেকে তৈরি
পোশাক (আরএমজি), চামড়াজাত পণ্য এবং পাটের ফাইবার রপ্তানি সহ বাংলাদেশ ও কিউবার মধ্যে
ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদারে করণীয় নির্ধারণে আলোচনা করেন। তারা উভয় দেশের চেম্বার
অব কমার্সের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে সম্মত হয়। এছাড়া, চিকিৎসা জীবপ্রযুক্তি এবং
ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে দুই দেশের বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে তাঁরা আলোকপাত করেন।
এ লক্ষ্যে, সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ থেকে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স
অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)-এর একটি প্রতিনিধি দলের কিউবা সফর করবে বলেও দুই
পক্ষ সম্মত হয়।
কিউবার রাষ্ট্রপতি ড. খলিলুর রহমান রাষ্ট্রদূত
মন্তব্য করুন
কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ইফতেখার রাফসান
মন্তব্য করুন
পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার মিতু হত্যা
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
সরকারি সফর যুক্তরাষ্ট্র সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন