মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করার ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার বক্তব্যে এখনো অটল রয়েছে এবং এটি যেন প্রতিফলিত হয় সে লক্ষ্যে তারা বিভিন্নমুখী তৎপরতা চালাচ্ছে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মানবাধিকার, সুশাসন, দুর্নীতি ইত্যাদি বিষয় নিয়েও বেশ সোচ্চার। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল আগ্রহের জায়গা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সুশীল সমাজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেন বিচারের খড়গের মধ্যে না পড়ে এবং সুশীল সমাজ যেন বর্তমান রাজনৈতিক মেরুকরণে লাভবান হয় ও অন্তত কিছুদিনের জন্য ক্ষমতায় আসে এটিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষা বলে কোন কোন কূটনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছে কোন দলকে ক্ষমতায় আনার আগ্রহ তাদের নেই। তারা বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়। এটিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা। কিন্তু সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই চাপে নতি স্বীকার করবে না বলে মনে হচ্ছে। বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই চাপের বিপরীতে বাংলাদেশ তার কূটনীতিতে নতুন বিন্যাস করছে।
বাংলাদেশের কূটনীতিতে একটি নীরব মেরুকরণ চলছে এবং এই মেরুকরণে বাংলাদেশ এখন মূলত চারটি দেশের ওপর নির্ভর করছে এবং সে দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের কূটনীতিতে এখন ভারত, মধ্যপ্রাচ্য, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করা এবং এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটি রাজনৈতিক মেরুকরণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সাম্প্রতিক সহ আগামী নির্বাচন পর্যন্ত বাংলাদেশ যে সমস্ত দেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে:
১. ভারত: বাংলাদেশের জন্য ভারত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র এবং ভারতের সাথে সুসম্পর্ক যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। তাই বাংলাদেশের কূটনীতির প্রধান লক্ষ্য হলো ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সামনের দিনগুলোতে ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে আরও কিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছে, নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন চমক তৈরি হবে।
২. মধ্যপ্রাচ্য: বাংলাদেশ এখন মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে যে নতুন বিন্যাস হচ্ছে, সে বিন্যাসের দিকে বাংলাদেশ নজর রাখছে এবং এই বিন্যাসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ তার কূটনীতিক তৎপরতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। মধ্যপ্রাচ্যের ইরান এবং সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের অবসান এবং কাতারসহ অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বৈরতার অবসান বাংলাদেশের জন্য একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি কাতার সফর করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাতার সফর ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন নতুন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, এই সম্পর্কগুলো সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়ানো হবে।
৩. চীন: চীন বাংলাদেশের প্রধান অর্থনৈতিক অংশীদার এবং চীনের সঙ্গে এই সম্পর্ক তারা অব্যাহত রাখবে। শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নয়, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক বিষয়ে চীনের একটি প্রভাব এবং গুরুত্ব থাকতে পারে। বিশেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে বাংলাদেশের চাপ মোকাবেলার ক্ষেত্রে পরাশক্তি চীন কিছু ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৪. রাশিয়া: রাশিয়া বাংলাদেশের একাত্তরের বন্ধু। সাম্প্রতিক সময়ে চীন-রাশিয়ার মেরুকরণের ব্যাপারে বাংলাদেশ সতর্ক নজর রাখছে এবং এই সম্পর্কের উন্নয়ন হলে বাংলাদেশই লাভবান হবে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে চীন-রাশিয়া সম্পর্কের উত্তোলন বিশ্ব রাজনীতিতে একটি বড় ভূমিকা রাখবে।
আর বাংলাদেশ যে পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্ভরশীল নয়, সেই বার্তাটিও দেয়া হবে। এখন দেখার বিষয় বাংলাদেশের এই নতুন কূটনৈতিক মেরুকরণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর কি প্রভাব ফেলে।
মার্কিন চাপ বাংলাদেশ কূটনৈতিক কৌশল
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ড খুশী কবির
মন্তব্য করুন
সুশীল ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বদিউল আলম মজুমদার আদিলুর রহমান খান
মন্তব্য করুন
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও একমত বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার (১৫ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, “গাজায় শান্তি স্থাপন করার বিষয়টি আমরা আলোচনা করেছি। তিনি (ডোনাল্ড লু) বলেছেন, ইউএস অত্যন্ত টায়ারডলেসলি (অক্লান্তভাবে) কাজ করছে যাতে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তিনি আমাকে যেটুকু বলেছেন- ‘তারা আশাবাদী’।”
‘আমরা বলেছি, গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে, নিরীহ নারী ও শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে। ৩৫ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তার মধ্যে ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু’, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এটি আসলে মেনে নেয়া যায় না। আমি বলেছি, টেলিভিশনে যখন এগুলো দেখি, তখন টেলিভিশন দেখা কন্টিনিউ করতে পারি না। সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনিও একমত যে, সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য টায়ারলেসলি কাজ করছেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক খুবই চমৎকার। আমাদের বহুমাত্রিক সহযোগিতার ক্ষেত্র রয়েছে। একইসাথে গত ৫৩ বছরের আমাদের অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যে কারণে ডোনাল্ড লুকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।’
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সরকার গঠনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। তিনি সম্পর্ককে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন। সেই অভিপ্রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।’
‘আমাদের আলোচনা সেই লক্ষ্যেই হয়েছে। একক দেশ হিসেবে আমাদের রফতানির সবচেয়ে বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশও যুক্তরাষ্ট্র। আমি ডোনাল্ড লু’কে অনুরোধ জানিয়েছি, বাংলাদেশে ৪০টি আইটি ভিলেজ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখানে যাতে যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ বাড়ায়। যদিও কিছু বিনিয়োগ তারা এরইমধ্যে করেছে।’
হাসান মাহমুদ ডোনাল্ড লু ফিলিস্তিন গাজা
মন্তব্য করুন
রাজধানী ঢাকায় যেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার (১৫ মে) বনানীতে বিআরটিএর সদর কার্যালয়ে আয়োজিত সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যাটারিচালিত কোনো গাড়ি (তিন চাকার) যেন ঢাকা সিটিতে না চলে। আমরা ২২টি মহাসড়কে নিষিদ্ধ করেছি। শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, চলতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর আগে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ঢাকার মধ্যে অটোরিকশা বন্ধে সম্মতি জানান।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ভয়াবহ ব্যাপার যখন রিকশাচালকরা দুই পা ওপরে উঠিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। অনেক প্রতিবন্ধী আছেন যারা চোখে কিছুটা কম দেখেন তারাও এই রিকশা নিয়ে নেমে পড়েন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, সিদ্ধান্তে আসা দরকার যে ঢাকায় ইজি বা অটোরিকশা চলবে না। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
সভায় বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানী ওবায়দুল কাদের অটোরিকশা
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের চাকরির বাজারের প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হওয়ার জনপ্রিয়তা সবচাইতে বেশি। চাকরিপ্রত্যাশীদের মতে সরকারি চাকরির মত পেশাগত নিরাপত্তা আর কোথাও নেই। আর সেজন্যই অনেক দেশে বেশি বয়সে সরকারি চাকরির আবেদনের সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশে এর সীমাবদ্ধতা ৩০ বছরে রয়েছে। সরকারি চাকরির কোন কোন ক্ষেত্রে বিশেষ দক্ষতার দরকার হয়। সেই দক্ষতা অর্জনের জন্য বাড়তি সময়ের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া চাকরির আবেদনের বয়স যতই থাকুক না কেন, পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ অনির্দিষ্ট হয় না। একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ৫ বা ৭ বার সিভিল সার্ভিসের জন্য আবেদন করতে পারেন। আমাদের দেশেও যেকোন যুক্তিতে বয়স বাড়াতে গেলে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত।
জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজাদ ফাউন্ডেশন, ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইন্ডিয়া এবং আই পার্টনার-ইন্ডিয়া যৌথভাবে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করবে। জেন্ডার সমতা নিয়ে কর্মরত দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাসকারী যে কেউ এই পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে পারেন। আগামী ৭ জুনের মধ্যে এই আবেদন করতে হবে।
বাংলাদেশে সুশীল সমাজের কিছু প্রতিনিধি আছেন যাদেরকে মনে করা হয় তারা মার্কিনপন্থী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে তারা গর্ব অনুভব করেন। কথায় কথায় মার্কিন দূতাবাসে যান। সেখানে প্রাতঃরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, নৈশভোজে মিলিত হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা বলে তারা তার চেয়ে তিন ধাপ গলা উঁচিয়ে কথা বলেন। বাংলাদেশ নিয়ে তাদের কোন ভালবাসা নেই, প্রেম নেই, আগ্রহ নাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এবং নীতি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করাই যেন তাদের প্রধান লক্ষ্য। এই সমস্ত সুশীলদেরকে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোফোন।