ইনসাইড বাংলাদেশ

নতুন মার্কিন ভিসা নীতি: সরকারি কর্মকর্তারাই আসল লক্ষ্য

প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ২৫ মে, ২০২৩


Thumbnail নতুন মার্কিন ভিসা নীতি: সরকারি কর্মকর্তারাই আসল লক্ষ্য।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গতকাল যে নতুন ভিসা নীতি জারি করেছে বাংলাদেশের ব্যাপারে, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলাপ-আলোচনা চলছে। এই ভিসা নীতিতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে যারা বাধা সৃষ্টি করবে তারা যেই হোক না কেন, তাদের ও তাদের পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেবে না। এটি কি রাজনৈতিক দলকে মাথায় নিয়ে করা হয়েছে? সরকারি দলের রাজনীতিবিদদেরকে টার্গেট করে করা হয়েছে? নাকি বিরোধী দলকে লক্ষ্য করেই এই নতুন ভিসানীতি করেছে? এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি সংক্রান্ত ঘোষণাটি পড়লে দেখা যায় যে, এই ভিসানীতিটিতে আসলে প্রধান লক্ষ্য করা হয়েছে সরকারি কর্মকর্তাদের।

বাংলাদেশের বিগত কয়েকটি নির্বাচন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এই নির্বাচনগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার পিছনে বড় ভূমিকা রেখেছিল প্রশাসন। সিভিল প্রশাসন যেমন নির্বাচনে সরকারি দলের চেয়েও বড় রাজনীতিবিদ হয়ে গিয়েছিলেন। ঠিক তেমনিভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি ভূমিকা পালন করেছিল। আর এ কারণেই এই নতুন ভিসা নীতি এমনভাবে করা হয়েছে যাতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যারা নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকবেন, তারা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে বাধ্য হন।

বাংলাদেশে যারা ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন তা বেসামরিক প্রশাসন হোক কিংবা পুলিশ প্রশাসন হোক তাদের একটি বড় অংশের সন্তান-সন্ততিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করেন। তাদের কারও কারও যুক্তরাষ্ট্রে বাড়িঘরও রয়েছে। এমনকি কেউ কেউ দেশে ব্যাচেলর জীবন যাপনও করেন। এই সমস্ত আমলারা অতি উৎসাহী। তাদের দেশের প্রতি কোনো দায়িত্ব নেই এবং জনগণের কাছে কোন দায়বদ্ধতা নেই। যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে তাকে সন্তুষ্ট করে তারা নিজেদের আখের গোছানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। আর এরাই ২০১৪ এবং ২০১৮ নির্বাচন নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক তৈরি করেছে।

২০১৪ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। তারপরও এ নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু প্রশাসনের কিছু অতি উৎসাহী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু ব্যক্তিরা একধরনের বিভ্রান্তি মূলক পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নির্বাচিত হতে পারে এ নিয়ে তৎপরও ছিল। বহু এলাকায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিরুদ্ধে প্রার্থীদেরকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদেরকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের বিজয়ী হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। যার ফলে ওই নির্বাচনে ১৫৩ টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছিল।

২০১৮ নির্বাচন এর চেয়েও ভালো হতে পারতো। সব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ারও সুযোগ ছিল। কিন্তু রাজনীতিবিদদের চেয়েও প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার অতি উৎসাহের জন্য ওই নির্বাচনে এরকম ঘটনা ঘটেছে। ২০১৮ নির্বাচনে বিএনপি ছিল অপ্রস্তুত। তাদের প্রার্থী মনোনয়ন সঠিক ছিল না। একেকটি নির্বাচনী এলাকায় দুই-তিনজন  করে প্রার্থী দিয়েছিল। জনগণ ছিল আওয়ামী লীগের পক্ষে এবং আওয়ামী লীগের বিজয় ছিল নিশ্চিত। পৃথিবীর সবচেয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলেও ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠত না। কিন্তু প্রশাসনের অতি উৎসাহীরা ওই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ক্ষেত্রে যা যা করা দরকার সেটিই করেছেন। আর এ কারণেই লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সবগুলো নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক উঠেছে শুধুমাত্র প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার কারণে। আর এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নতুন ভিসানীতিমালায় যাদের কথা উল্লেখ করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সিভিল সোসাইটি, মিডিয়া সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্বাচনের জন্য ভূমিকা পালন করে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতিমালায় এটাও বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের বর্তমান এবং সাবেক কর্মকর্তা, সরকারি দল ও বিরোধী দলের সদস্যরা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগের কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা যদি নির্বাচন সুষ্ঠু হবার ক্ষেত্রে বাধা দান করেন, তবে তাদের ক্ষেত্রে এ নীতিমালা প্রযোজ্য হবে। অনেকেই মনে করেন যে, প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকে তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। যেটি ভারতে বা অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে হয়। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করতে এই মার্কিন নীতিমালা টনিকের মতো কাজ করবে বলেই অনেকে মনে করছেন। 


মার্কিন   ভিসা নীতি   সরকার   কর্মকর্তা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

তিনি যদি দেশে না ফিরতেন

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

১৭ মে ১৯৮১, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। এক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন। পিতার রক্তে ভেজা মাটিতে কপাল স্পর্শ করে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। তাঁর কান্নার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল প্রকৃতিও। আর সে কারণেই ঢাকার আকাশ জুড়ে নেমেছিল মুষলধারে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাখো মানুষ শেখ হাসিনাকে বরণ করে নিয়েছিল। 

শেখ হাসিনা যখন স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন তখন তিনি ছিলেন রিক্ত নিঃস্ব। তিনি মা-বাবা, ভাই, ভাবি সবাইকে হারিয়েছিলেন। তাঁর পাশে ছিল শুধুমাত্র এদেশের জনগণ এবং সেই জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েই তিনি দেশে ফিরছিলেন। 

শেখ হাসিনা যখন বাংলাদেশে আসেন তখন এই দেশের অবস্থা কী ছিল? জিয়াউর রহমানের একনায়কতন্ত্র, স্বৈরাচারী শাসন জগদ্দল পাথরের মতো বাংলাদেশের ওপর চেপে বসেছিল। সেই সময় রাতে কারফিউ জারি করা হত, নির্বিচারে মানুষকে গ্রেপ্তার করা ছিল একটি স্বাভাবিক ঘটনা। কারাগারগুলো ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। প্রতিরাতে কারাগারে বিচারের নামে প্রহসন হত এবং আইনের শাসনের তোয়াক্কা না করে দণ্ডিত ব্যক্তিদেরকে ফাঁসির কাস্টে ঝোলানো হত। এভাবে মৃত্যুর মিছিলে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনা যখন বাংলাদেশে ফেরেন তখন গণতন্ত্র ছিল বন্দি, সংবিধান কাটাছেঁড়া করা হয়েছিল, বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর সব আয়োজনই সম্পন্ন হয়েছিল। বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের এক দুর্দান্ত দাপট আমরা লক্ষ্য করেছিলাম পঁচাত্তর পরবর্তী বাংলাদেশে। স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধের শিরোমণি গোলাম আযম বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি জামায়াতে ইসলামকে আবার রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ ছিল এক অন্ধকার আচ্ছন্ন হতাশাগ্রস্থ বিবর্ণ দেশ।

এবার আমরা যদি কল্পনা করি যে, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসলেন না তাহলে বাংলাদেশ কী হতো? বাংলাদেশ কী হত তা ১৯৭৫ থেকে ৮১ সালের সময়কালে যেভাবে বাংলাদেশ এগোচ্ছিল সেই পথ রেখা বিশ্লেষণ করলে পাওয়া যায়। শেখ হাসিনা যদি বাংলাদেশে না আসতেন তাহলে এতদিন বাংলাদেশ নামে রাষ্ট্রটি থাকত কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ একনায়ক জিয়াউর রহমানের অনেক দোসররাই পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করার জন্য আলাপ আলোচনা শুরু করেছিলেন। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পাল্টে দেওয়া নিয়েও আলাপ আলোচনা হচ্ছিল।

জিয়াউর রহমান শুধু স্বৈরশাসক ছিলেন না, তিনি নির্মম একজন ঘাতক ছিলেন। প্রতিপক্ষকে হত্যা করাই ছিল তাঁর রাজনীতির সবচেয়ে বড় অস্ত্র। আর যদি শেখ হাসিনা দেশে না ফিরতেন তাহলে পরে এ দেশে বিনা বিচারে কত মানুষ মারা যেত তা হয়ত আমরা অনুমানও করতে পারিনা। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশের মানুষের কোনো অধিকার ছিল না। বিচার পাওয়া, ভোটের অধিকার সবগুলোই কুক্ষিগত করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা আসার কারণেই গণতন্ত্র এসেছে। মানুষ কথা বলার অধিকার পেয়েছে। 

জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিরাই পরোক্ষভাবে দেশ চালাত। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন রাজাকার শাহ আজিজুর রহমান। আর যদি শেখ হাসিনা দেশে না ফিরতেন তাহলে এতদিনে হয়ত রাজাকাররাই দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করত। বাংলাদেশে একটি রাজাকারতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হত। খুনিদের পক্ষে বাংলাদেশ কনফেডারেশন করত। শেখ হাসিনা যদি না আসতেন তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা কিছুই হত না। বাংলাদেশ ক্ষুধা দারিদ্রের একটি দুর্ভিক্ষ পীড়িত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের করুণার পাত্র হত। শেখ হাসিনা যদি বাংলাদেশে না আসতেন তাহলে বাংলাদেশ হয়ত মৌলবাদের একটি চারণভূমি হত। আফগানিস্তান হত। শেখ হাসিনা যদি বাংলাদেশে না আসতেন তাহলে এই দেশ হয়ত একটি হতাশাগ্রস্ত দরিদ্র পীড়িত রাষ্ট্র হিসেবে সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত হত।


শেখ হাসিনা   স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে নতুন সচিব সাঈদ মাহমুদ

প্রকাশ: ০৮:৫৪ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দারকে পদোন্নতি দিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

অন্যদিকে আরেক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিনকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে। 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়   সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

শেখ হাসিনাকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী এন্থনি এলবানিজের অভিনন্দন

প্রকাশ: ০৮:৩৭ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী এন্থনি এলবানিজ। সম্প্রতি এক শুভেচ্ছা বার্তায় এ অভিনন্দন জানান তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানান, আগামী বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উন্মুখ।

বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার মাধ্যমে আঞ্চলিক শান্তি, উন্নয়ন ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে কাজ করতে চান উল্লেখ করেন এন্থনি এলবানিজ।

প্রধানমন্ত্রী এন্থনি এলবানিজ চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, ভারত মহাসাগরের দেশ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উভয় দেশের একই ধরনের স্বার্থ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্ট্রেলিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


অস্ট্রেলিয়া   এন্থনি এলবানিজ   বাংলাদেশ   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

শেখ হাসিনা ডিপ্লোমেসি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউটার্ন

প্রকাশ: ০৭:০৩ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু’র সফর আর নির্বাচনের পরে তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর, দুটোর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। ডোনাল্ড লু নিজেই স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশ সফর শেষে যাওয়ার পথে তিনি তার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে পরিষ্কার বলেছেন, অতীতের মতপার্থক্যকে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আর এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে আগের অবস্থানে নেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

কীভাবে সম্ভব হল, কীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউটার্ন নিল? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার পার্সোনাল ডিপ্লোমেসির কারণে। এটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর আরেকটি অংশ। ২০১৮ সালের পর থেকেই বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করতে শুরু করে। বিশেষ করে জো বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নীতি বদলাতে থাকে। এসময় একের পর এক চাপ প্রয়োগ করা হতে থাকে বাংলাদেশের উপর।

বিশেষ করে ২০২২ সালের ১৫ মার্চ পিটার ডি হাস বাংলাদেশে আসার পর সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায় মুখোমুখি একটি অবস্থানে চলে যায়। দুই দেশের মধ্যে নানা রকম ভুল বোঝাবোঝি সৃষ্টি হয়েছিল। এর একটি বড় কারণ ছিল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছিল। আর এই সমস্ত ভুল তথ্যের কারণেই যুক্তরাষ্ট্র একটি ভিন্নরকম অবস্থান গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশের ব্যাপারে।

কিন্তু ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আস্তে আস্তে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য মনে করেন যে, নির্বাচনের আগে থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন ঘটে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একাধিক ভূমিকা কাজ করেছে বলেই অনেকে মনে করে যেটি ডোনাল্ড লু’র সফরে স্পষ্ট প্রতিভাত হয়েছে।

প্রথমত ভারতের প্রভাব। ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থান থেকে সরে আসার জন্য চেষ্টা করেছে এবং সফল হয়েছে। ভারতের এই অবস্থানের প্রধান কারণ ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত বিশ্বাস করে তার উপর আস্থা রাখে এবং শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প বাংলাদেশে নেই, এই উপলব্ধি থেকেই নরেন্দ্র মোদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছেন বলে কূটনৈতিক মহল মনে করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত কারণে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে চাইনি।

দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পর তিনি সেখানে নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এছাড়াও ভারত সফরের সময় তিনি অ্যান্থনি ব্লিনকেন এবং জো বাইডেনের সঙ্গেও কথা বলেন। সবকিছু মিলিয়ে তার উদ্যোগ সফল হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য সালমান এফ রহমানকেও দায়িত্ব দিয়েছিলেন এবং সালমান এফ রহমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন।

তৃতীয়ত, বিরোধী দলের ভুল রাজনীতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাশা করেছিল যে, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং এই কারণেই নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের উপর জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যখন বিএনপি নির্বাচনে যায়নি, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেনি। আর সবকিছু মিলিয়ে এখন নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ আছে, মার্কিন স্বার্থ আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে চায়, চীনের আগ্রাসন কমাতে চায়। সবকিছু মিলিয়ে তাদের সামনে বর্তমান সরকারই একমাত্র বিকল্প। আর তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে, রীতিমতো ইউটার্ন নিয়েছে।


বাংলাদেশ   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   জো বাইডেন   ডোনাল্ড লু   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ছাগলনাইয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বেতন-ভাতা ফেরতের নির্দেশ

প্রকাশ: ০৬:৪১ পিএম, ১৬ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফেনীর ছাগলনাইয়ায় ২০১৯ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলের উপজেলা চেয়ারম্যান পদ অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে যত বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি গ্রহণ করেছেন তা ৩০ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই সময়ের মধ্যে ফেরত না দিলে ফেনীর জেলা প্রশাসককে তার থেকে আদায় করতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। 

রায়ে ওই সময়ের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল হালিমের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। অপর প্রার্থী এ এস এম শহিদুল্লাহ মজুমদারের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

আদালতে আব্দুল হালিম ও শহিদুল্লাহ মজুমদারের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার এস এম কফিল উদ্দিন। সোহেল চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও মো. অজি উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান বলেন, ‘২০১৯ সালে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আব্দুল হালিম ও শহিদুল্লাহ মজুমদারের প্রার্থিতা বাতিল হয়। এর ফলে মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছাগলনাইয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর মধ্যে প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন বাতিল হওয়া দুই প্রার্থী। একইসঙ্গে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সোহেলকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত ঘোষণার বৈধতা চ্যা্লেঞ্জ করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালেই হাইকোর্ট এসব বিষয়ে রুল জারি করেন। একইসঙ্গে ছাগলনাইয়ার উপজেলা চেয়ারম্যানের গেজেট স্থগিত করেন। পরে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। তবে আইনি জটিলতায় মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নিতে পারেননি। শপথ না নিয়ে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।’

ছাগলনাইয়া উপজেলা   মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন