কিছুদিন আগেও নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির ব্যাপারে সুশীলরা ছিল নীরব। কিন্তু এখন তারা সরব হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি সমর্থন করেনি। বরং সুস্পষ্টভাবে বলেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ। এই নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলো কি থাকলো না, সেটি তাদের বিষয় নয় বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছিল। কিন্তু এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনকারী সুশীল গোষ্ঠী বাংলাদেশে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন চায়। এই নিয়ে এখন তারা বক্তব্য রাখা শুরু করেছে।
গাজীপুর সিটি নির্বাচন ছিল অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ। এই নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের একটি মডেল হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছিল। কিন্তু এই নির্বাচনের ব্যাপারেও সুশীলদের আপত্তি ওঠেছে। সুশীলরা এখন বলছে, বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে একটি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে পারে না। সুশীলদের অন্যতম প্রতিনিধি সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, গাজীপুরের নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি। বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে, সে নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটতে পারে না। তিনি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকেও ইনিয়ে বিনিয়ে সমর্থন করছেন। তবে বদিউল আলম মজুমদার একা নয়, সুশীলদের একটি বড় অংশই এখন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির কথা বলছেন। আগামী নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প নেই- এমন কথাও তারা বলছেন।
এর পেছনে অবশ্য সুস্পষ্ট একটি কারণ রয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। কারণ নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার না হলে তাদের গুরুত্ব থাকে না এবং ক্ষমতায় তাদের হিস্যা নিশ্চিত হয় না। মূলত ক্ষমতায় হিস্যা লাভের জন্যই তারা নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নতুন করে উচ্চারণ করছেন। আর বিভিন্ন মহল মনে করছেন, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি যেন পশ্চিমা দেশগুলো- বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করে- এজন্য তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও দেন-দরবার করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য যে, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কনসেপ্টটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা এবং এই সময় সুশীল অধ্যুষিত একটি সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকে- সুশীলরা ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসে। এই ধারণাটি প্রতিষ্ঠিত হবার পর ১৯৯১, ৯৬, ২০০১-এ নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়। এর ফলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সুশীলরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। রাজনীতির গতিপ্রকৃতির অন্যতম নিয়ন্ত্রক হয়ে যান সুশীলরা। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতা ত্যাগের পর বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, সেই অস্থিরতার সুযোগেই সুশীলরা ক্ষমতা দখল করে এবং দুই বছর জগদ্দল পাথরেরর মতো ক্ষমতা আঁকড়ে ছিল। কিন্তু এর পর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। এর ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।
এখন সুশীলরা মনে করছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তাদের ক্ষমতার অংশীদারিত্ব থাকে না। এ কারণে বিএনপির আন্দোলনে তারা ইন্ধন দিচ্ছে এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার তৎপর সুশীলরা
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী এন্থনি এলবানিজ। সম্প্রতি এক শুভেচ্ছা বার্তায় এ অভিনন্দন জানান তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানান, আগামী বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উন্মুখ।
বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার মাধ্যমে আঞ্চলিক শান্তি, উন্নয়ন ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে কাজ করতে চান উল্লেখ করেন এন্থনি এলবানিজ।
প্রধানমন্ত্রী এন্থনি এলবানিজ চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, ভারত মহাসাগরের দেশ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উভয় দেশের একই ধরনের স্বার্থ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্ট্রেলিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অস্ট্রেলিয়া এন্থনি এলবানিজ বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু’র সফর আর নির্বাচনের পরে তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর, দুটোর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। ডোনাল্ড লু নিজেই স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশ সফর শেষে যাওয়ার পথে তিনি তার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে পরিষ্কার বলেছেন, অতীতের মতপার্থক্যকে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আর এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে আগের অবস্থানে নেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
কীভাবে সম্ভব হল, কীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউটার্ন নিল? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার পার্সোনাল ডিপ্লোমেসির কারণে। এটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর আরেকটি অংশ। ২০১৮ সালের পর থেকেই বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করতে শুরু করে। বিশেষ করে জো বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নীতি বদলাতে থাকে। এসময় একের পর এক চাপ প্রয়োগ করা হতে থাকে বাংলাদেশের উপর।
বিশেষ করে ২০২২ সালের ১৫ মার্চ পিটার ডি হাস বাংলাদেশে আসার পর সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায় মুখোমুখি একটি অবস্থানে চলে যায়। দুই দেশের মধ্যে নানা রকম ভুল বোঝাবোঝি সৃষ্টি হয়েছিল। এর একটি বড় কারণ ছিল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছিল। আর এই সমস্ত ভুল তথ্যের কারণেই যুক্তরাষ্ট্র একটি ভিন্নরকম অবস্থান গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশের ব্যাপারে।
কিন্তু ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আস্তে আস্তে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য মনে করেন যে, নির্বাচনের আগে থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন ঘটে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একাধিক ভূমিকা কাজ করেছে বলেই অনেকে মনে করে যেটি ডোনাল্ড লু’র সফরে স্পষ্ট প্রতিভাত হয়েছে।
প্রথমত ভারতের প্রভাব। ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থান থেকে সরে আসার জন্য চেষ্টা করেছে এবং সফল হয়েছে। ভারতের এই অবস্থানের প্রধান কারণ ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত বিশ্বাস করে তার উপর আস্থা রাখে এবং শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প বাংলাদেশে নেই, এই উপলব্ধি থেকেই নরেন্দ্র মোদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছেন বলে কূটনৈতিক মহল মনে করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত কারণে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে চাইনি।
দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পর তিনি সেখানে নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এছাড়াও ভারত সফরের সময় তিনি অ্যান্থনি ব্লিনকেন এবং জো বাইডেনের সঙ্গেও কথা বলেন। সবকিছু মিলিয়ে তার উদ্যোগ সফল হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য সালমান এফ রহমানকেও দায়িত্ব দিয়েছিলেন এবং সালমান এফ রহমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন।
তৃতীয়ত, বিরোধী দলের ভুল রাজনীতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাশা করেছিল যে, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং এই কারণেই নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের উপর জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যখন বিএনপি নির্বাচনে যায়নি, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেনি। আর সবকিছু মিলিয়ে এখন নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ আছে, মার্কিন স্বার্থ আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে চায়, চীনের আগ্রাসন কমাতে চায়। সবকিছু মিলিয়ে তাদের সামনে বর্তমান সরকারই একমাত্র বিকল্প। আর তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে, রীতিমতো ইউটার্ন নিয়েছে।
বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জো বাইডেন ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
ছাগলনাইয়া উপজেলা মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল
মন্তব্য করুন
১৭ মে ১৯৮১, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। এক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন। পিতার রক্তে ভেজা মাটিতে কপাল স্পর্শ করে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। তাঁর কান্নার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল প্রকৃতিও। আর সে কারণেই ঢাকার আকাশ জুড়ে নেমেছিল মুষলধারে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাখো মানুষ শেখ হাসিনাকে বরণ করে নিয়েছিল।
নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু’র সফর আর নির্বাচনের পরে তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর, দুটোর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। ডোনাল্ড লু নিজেই স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশ সফর শেষে যাওয়ার পথে তিনি তার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে পরিষ্কার বলেছেন, অতীতের মতপার্থক্যকে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আর এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে আগের অবস্থানে নেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ফেনীর ছাগলনাইয়ায় ২০১৯ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলের উপজেলা চেয়ারম্যান পদ অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে যত বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি গ্রহণ করেছেন তা ৩০ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই সময়ের মধ্যে ফেরত না দিলে ফেনীর জেলা প্রশাসককে তার থেকে আদায় করতে বলা হয়েছে।