ভারতের সেনাপ্রধান ও চিফ অব আর্মি স্টাফ (সিওএএস) জেনারেল মনোজ পান্ডে বাংলাদেশ সফরে আসছেন। দুই দিনের সফরে সোমবার (৫ জুন) ঢাকায় পৌঁছাবেন তিনি। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এছাড়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর অফিশিয়াল টুইটারে দেওয়া এক টুইট বার্তায় জেনারেল মনোজ পান্ডের বাংলাদেশে সফরে আসার কথা জানানো হয়েছে।
এদিকে মনোজ পান্ডের বাংলাদেশ সফরের ঘোষণা দেওয়া ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিটি প্রকাশ করেছে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি)। এটি ভারত সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত একটি নোডাল সংস্থা।
সোমবার (৫ জুন) প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর চিফ অব আর্মি স্টাফ (সিওএএস) জেনারেল মনোজ পান্ডে ৫ থেকে ৬ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে দুই দিনের সফরে যাচ্ছেন। সফরকালে সেনাপ্রধান বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন সামরিক নেতৃত্বের সাথে বৈঠক করবেন।
ওই বৈঠকে তিনি বাংলাদেশ-ভারত প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়া সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (৬ জুন) জেনারেল মনোজ পান্ডে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) ৮৪তম লং কোর্সের অফিসার ক্যাডেটদের পাসিং আউট প্যারেড (পিওপি) পরিদর্শন করবেন।
কুচকাওয়াজ চলাকালীন সেনাপ্রধান বিএমএ থেকে পাসিং আউট কোর্সের সেরা বিদেশি ক্যাডেটদের জন্য প্রতিষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ ট্রফি’ উপস্থাপন করবেন। এ বছর প্রথম ট্রফি তানজানিয়ার অফিসার ক্যাডেট এভারটনকে দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সফরকালে ভারতীয় সেনাপ্রধানের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের সাথে আনুষ্ঠানিক আলাপচারিতা ছাড়াও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশের সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের ব্রিফিংও রয়েছে।
ভারতের সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সিওএএস জেনারেল মনোজ পান্ডে তার প্রথম বিদেশ সফরে ২০২২ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে এসেছিলেন। বাংলাদেশের সেনাপ্রধান চলতি বছরের এপ্রিলে ভারত সফর করেন এবং চেন্নাইয়ের অফিসার্স ট্রেনিং একাডেমিতে পাসিং আউট প্যারেড পরিদর্শন করেন।
সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের ঘন ঘন সফর এবং যৌথ সামরিক মহড়ার মতো দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার নানা কর্মসূচি উভয় দেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে অবদান রাখে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।