২০১৯ সালে ৭ জানুয়ারি বর্তমান সরকার গঠিত হয়েছিল। টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নতুন মন্ত্রীসভার শপথের মাধ্যমে তৃতীয় মেয়াদের সরকারের যাত্রাপথের সূচনা হয়েছিল। আর আজ ৭ জুন পাড় হলো, বর্তমান সরকার তার সাড়ে চার বছরের মেয়াদ পূর্ণ করলো। আর মাত্র ছয় মাসের মধ্যে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং নুতন সরকার গঠিত হবে। সেই সরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বেও হতে পারে বা অন্য কারো নেতৃত্বেও হতে পারে। পাঁচ বছরে এই সরকারের অর্জনই কি বা বিসর্জনই কি?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা নির্মোহ বিশ্লেষণে মনে করেন, পাঁচ বছরে শুধু নয়, গত ১৪ বছরে এই সরকার যা অর্জন করেছিল- তা সাম্প্রতিক কয়েক মাসে বিসর্জন পেতে শুরু করেছে। সরকারের অর্জনগুলো আস্তে আস্তে প্রশ্নবিদ্ধ হতে শুরু করেছে। গত সাড়ে ১৪ বছরে এই সরকারের অনেক অর্জন। সরকার উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছিল। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমানবিক প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল- এরকম দৃশ্যমান উন্নয়ন ছাড়াও মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছিল। বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত এবং ভুল তৎপরতার কারণে সরকার এখন ব্যাকফুটে চলে গেছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ সঙ্কট এখন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে সরকার এখন সাধারণ মানুষের কাছে সমালেচিত হচ্ছে।
দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি অসহনীয় অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ এখন বাজারে গিয়ে হাঁসফাঁস করছে। এর মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি ১০ স্পর্শ করার অপেক্ষায় রয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রী গতকাল নিজেই মুদ্রাস্ফীতির জন্য লজ্জা পেয়েছেন। অর্থনৈতিক সঙ্কটে কোনো সুখবর নেই। বরং সামনে ভয়াবহ পরিস্থিতির পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগতভাবে কমছে। অর্থপাচার, ঋণখেলাপি ইত্যাদি ইস্যুগুলো এখন সরকারের জন্য বিব্রতকর শুধু নয়, নাজুক অবস্থা তৈরি করেছে।
নির্বাচনের শেষ অর্ধে এসে যে কোনো দেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল জনবান্ধব হওয়ার চেষ্টা করে। জনগণকে নানা রকম সুযোগ-সুবিধা, প্রণোদনা ইত্যাদি দিয়ে ভোটের রাজনীতি করতে চায়। ভোটার তুষ্টি হওয়াই তখন সরকারের বড় লক্ষ্য হয়। আর বর্তমান সরকার টানা তিন মেয়াদে থেকেছে- তার অন্যতম একটি কারণ হলো অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং জনগণের জীবন-মানের উন্নতি। এই সরকারই ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে। এই সরকারের আমলেই চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসেবাসহ মৌলিক চাহিদাগুলোর ক্ষেত্রে অনেক বেশি অগ্রগতি এবং উন্নতি হয়েছে। এখন শেষ মেয়াদে এসে- সেই চাহিদাগুলো মেটাতেই সরকার এখন হিমশিম খাচ্ছে।
ফলে মানুষ এখন তাদের অতীতের প্রাপ্তির কথাগুলো ভুলে যাচ্ছে। বরং বর্তমানকে নিয়েই সমালোচনা করছে। আর এ কারণেই এই শেষ ৬ মাস সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জিং। যে কোনো মূল্যে সরকারকে পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে। একদিকে রাজনৈতিক চাপ, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক চাপ, তার সাথে যুক্ত হয়েছে জনগণের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ এবং ক্ষোভ। এই সব মিলিয়ে শেষ ৬ মাস সরকারের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। দেখার বিষয় সরকার এই চ্যালেঞ্জ কিভাবে মোকাবেলা করে।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
মন্তব্য করুন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী এন্থনি এলবানিজ। সম্প্রতি এক শুভেচ্ছা বার্তায় এ অভিনন্দন জানান তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানান, আগামী বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করার লক্ষে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উন্মুখ।
বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার মাধ্যমে আঞ্চলিক শান্তি, উন্নয়ন ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে কাজ করতে চান উল্লেখ করেন এন্থনি এলবানিজ।
প্রধানমন্ত্রী এন্থনি এলবানিজ চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, ভারত মহাসাগরের দেশ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উভয় দেশের একই ধরনের স্বার্থ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্ট্রেলিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অস্ট্রেলিয়া এন্থনি এলবানিজ বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু’র সফর আর নির্বাচনের পরে তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর, দুটোর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। ডোনাল্ড লু নিজেই স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশ সফর শেষে যাওয়ার পথে তিনি তার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে পরিষ্কার বলেছেন, অতীতের মতপার্থক্যকে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আর এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে আগের অবস্থানে নেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
কীভাবে সম্ভব হল, কীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউটার্ন নিল? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার পার্সোনাল ডিপ্লোমেসির কারণে। এটি ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ এর আরেকটি অংশ। ২০১৮ সালের পর থেকেই বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করতে শুরু করে। বিশেষ করে জো বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ নীতি বদলাতে থাকে। এসময় একের পর এক চাপ প্রয়োগ করা হতে থাকে বাংলাদেশের উপর।
বিশেষ করে ২০২২ সালের ১৫ মার্চ পিটার ডি হাস বাংলাদেশে আসার পর সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায় মুখোমুখি একটি অবস্থানে চলে যায়। দুই দেশের মধ্যে নানা রকম ভুল বোঝাবোঝি সৃষ্টি হয়েছিল। এর একটি বড় কারণ ছিল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছিল। আর এই সমস্ত ভুল তথ্যের কারণেই যুক্তরাষ্ট্র একটি ভিন্নরকম অবস্থান গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশের ব্যাপারে।
কিন্তু ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আস্তে আস্তে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য মনে করেন যে, নির্বাচনের আগে থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন ঘটে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একাধিক ভূমিকা কাজ করেছে বলেই অনেকে মনে করে যেটি ডোনাল্ড লু’র সফরে স্পষ্ট প্রতিভাত হয়েছে।
প্রথমত ভারতের প্রভাব। ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থান থেকে সরে আসার জন্য চেষ্টা করেছে এবং সফল হয়েছে। ভারতের এই অবস্থানের প্রধান কারণ ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত বিশ্বাস করে তার উপর আস্থা রাখে এবং শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প বাংলাদেশে নেই, এই উপলব্ধি থেকেই নরেন্দ্র মোদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছেন বলে কূটনৈতিক মহল মনে করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত কারণে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে চাইনি।
দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পর তিনি সেখানে নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এছাড়াও ভারত সফরের সময় তিনি অ্যান্থনি ব্লিনকেন এবং জো বাইডেনের সঙ্গেও কথা বলেন। সবকিছু মিলিয়ে তার উদ্যোগ সফল হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য সালমান এফ রহমানকেও দায়িত্ব দিয়েছিলেন এবং সালমান এফ রহমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন।
তৃতীয়ত, বিরোধী দলের ভুল রাজনীতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাশা করেছিল যে, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এবং এই কারণেই নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু শর্তহীন সংলাপের উপর জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যখন বিএনপি নির্বাচনে যায়নি, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেনি। আর সবকিছু মিলিয়ে এখন নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ আছে, মার্কিন স্বার্থ আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে চায়, চীনের আগ্রাসন কমাতে চায়। সবকিছু মিলিয়ে তাদের সামনে বর্তমান সরকারই একমাত্র বিকল্প। আর তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে, রীতিমতো ইউটার্ন নিয়েছে।
বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জো বাইডেন ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
ছাগলনাইয়া উপজেলা মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল
মন্তব্য করুন
১৭ মে ১৯৮১, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। এক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছিলেন। পিতার রক্তে ভেজা মাটিতে কপাল স্পর্শ করে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। তাঁর কান্নার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল প্রকৃতিও। আর সে কারণেই ঢাকার আকাশ জুড়ে নেমেছিল মুষলধারে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাখো মানুষ শেখ হাসিনাকে বরণ করে নিয়েছিল।
নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লু’র সফর আর নির্বাচনের পরে তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর, দুটোর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। ডোনাল্ড লু নিজেই স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশ সফর শেষে যাওয়ার পথে তিনি তার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে পরিষ্কার বলেছেন, অতীতের মতপার্থক্যকে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আর এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে আগের অবস্থানে নেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ফেনীর ছাগলনাইয়ায় ২০১৯ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলের উপজেলা চেয়ারম্যান পদ অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে যত বেতন-ভাতা ও সুবিধাদি গ্রহণ করেছেন তা ৩০ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই সময়ের মধ্যে ফেরত না দিলে ফেনীর জেলা প্রশাসককে তার থেকে আদায় করতে বলা হয়েছে।