দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, আমিরে জামায়াত শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও ওলামায়ে কেরামের মুক্তি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। শনিবার (১০ জুন) দুপুর ২টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই সমাবেশ হয়।
শুক্রবার (৯ জুন) রাতে ডিএমপি জামায়াতকে মৌখিকভাবে শনিবার (১০ জুন) দুপুর ২টায় রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সমাবেশ করার জন্য অনুমতি দেয়। জামায়াতের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই এ অনুমতি দেয় পুলিশ।
এদিকে জামায়াতের এই সমাবেশ হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার কারণেই জামায়াতকে এই সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে বলেও কেউ কেউ মনে করছেন। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন ইতিমধ্যেই তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।
এই প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে জামায়াতের সমাবেশ ঘিরে ক্ষমতাসীন সরকারের মন্ত্রীরাও তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। চলুন এক নজরে দেখি আসি সরকারের মন্ত্রীরা জামায়াতের সমাবেশ নিয়ে কে কি বললেন: -
বিচার না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতকে নিষিদ্ধ বলতে পারি না: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিচার শুরুর জন্য যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে। কিন্তু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা জামায়াতকে নিষিদ্ধ বলতে পারি না। রোববার (১১ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ল’ রিপোর্টর্স ফোরাম (এলআরএফ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, জামায়াতের বিচারের জন্য আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে, শিগগির তা মন্ত্রিসভায় উঠবে।
জামায়াতের সমাবেশ করা নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, সমাবেশের অনুমতি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কেন তারা অনুমতি দিলো সেটার উত্তর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেবে।
অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ইনডোরে সমাবেশ করতেই পারে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নিবন্ধনহীন জামায়াত কীভাবে সমাবেশের অনুমতি পেল, তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই বলতে পারবে; আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, জামায়াত নিবন্ধিত কোনো রাজনৈতিক দল নয়। অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল তাদের সভা-সমাবেশ ইনডোরে (ঘরোয়াভাবে) করতেই পারে। তারা ইনডোরে সমাবেশ করতে চেয়েছিল, সেটি কমিশনার যাচাই করে (অনুমোদন) দিয়েছে।
রোববার (১১ জুন) দুপুর সাড়ে তিনটায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে হাইওয়ে পুলিশের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে তারা সমাবেশ করে থাকে। এসব সমাবেশে অনেক সময় আমরা দেখেছি অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেছে। এসব কিছু মাথায় রেখেই তাদের ইনডোরে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
জামায়াতকে অনুমতি দেওয়ায় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নীতির কোনো পরিবর্তন হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাব মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ইনডোরে তাদের সভা সমাবেশ করতেই পারে।
জামায়াত এখনো নিষিদ্ধ হয়নি, সেজন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জামায়াত যেহেতু এখনো নিষিদ্ধ হয়নি, তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে সমাবেশের জন্য আবেদন করেছিল, সেজন্য তাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে গতকাল (শনিবার) জামায়াতের নেতাদের যে বক্তব্য, এটি আসলে বিএনপির বক্তব্য।’
রোববার (১১ জুন) দুপুরে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদকপ্রাপ্তির ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এ সময় ‘জামায়াতকে মাঠে নামার সুযোগ দেওয়া হলো কেন’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে মোড়ক উন্মোচনের আয়োজন করা হয়। এ সময় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফারুক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আগামীতেও জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেকোনো রাজনৈতিক দল সমাবেশ করতে পারে। কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হলে তাদের সভা-সমাবেশ করার অধিকার থাকে না। যতক্ষণ পর্যন্ত নিষিদ্ধ না হয়, তারা সভা-সমাবেশ করার অধিকার রাখে।’
জামায়াতের সমাবেশে বক্তারা বিএনপির সুরে সুর মিলিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না বক্তব্য দিয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জামায়াতের সমাবেশ থেকে যেভাবে আস্ফালন করা হয়েছে। এগুলো আসলে জামায়াতের বক্তব্য নয়, বিএনপির বক্তব্য। তারা নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলেছে। অর্থাৎ ২০১৪ সালে যেভাবে নির্বাচন প্রতিহত করতে গিয়ে শত শত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সেটারই ইঙ্গিত তারা গতকালও দিয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের প্রধান শরিক হচ্ছে জামায়াত। বিএনপি জামায়াতকে দিয়ে এ কথাগুলো বলিয়েছে।’
জামায়াতকে মাঠে নামিয়েছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
এর আগে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করে বলেছেন, ‘জামায়াত মাঠে নামেনি, বিএনপি তাদের নামিয়েছে। বিএনপি আবার ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুতের পরিবর্তে খাম্বা আসবে, হাওয়া ভবন তৈরি হবে।’
শনিবার (১০ জুন) রাজধানীর নিকুঞ্জ খেলার মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, তারেক অর্থপাচার করে পালিয়েছে। সৎ সাহস হলে দেশে আসুক। যে দলে ঐক্য নেতা, মানুষ নাই, সেই দলের কর্মসূচি আন্দোলনে রূপ নিতে পারে না। আন্দোলনে নেতা লাগে, বিএনপির এক নেতা হাসপাতালে, আরেক নেতা লন্ডনে। বিএনপি সমাবেশের নামে নাশকতা সৃষ্টি করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির মাথায় তিন ভূত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার, শেখ হাসিনার পদত্যাগ, পার্লামেন্ট। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাইলে বিএনপির মাথা থেকে তিন ভূত নামাতে হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।