ইনসাইড বাংলাদেশ

রিজার্ভে নাজুক পরিস্থিতি সত্ত্বেও আমদানি নির্ভর জ্বালানি বিভাগ!

প্রকাশ: ১০:৩৭ এএম, ১৫ জুন, ২০২৩


Thumbnail রিজার্ভে নাজুক পরিস্থিতি সত্ত্বেও আমদানি নির্ভর জ্বালানি বিভাগ!

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে অত্যন্ত নাজুক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এ মুহূর্তে দেশের কোষাগারে ৩০ বিলিয়ন ডলারেরও বৈদেশিক মুদ্রার সংস্থান নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ রিজার্ভ হিসাবায়ন নিয়ে আপত্তি তুলেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলছে, নিট রিজার্ভের হিসাবায়নে রফতানি উন্নয়ন তহবিলসহ (ইডিএফ) অন্যান্য তহবিল এবং সরকারি কয়েকটি সংস্থা ও শ্রীলংকাকে দেয়া ঋণের অর্থ রিজার্ভে দেখানো যাবে না। সেক্ষেত্রে আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী দেশে নিট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২১-২২ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে। 

সংস্থাটির ঋণের শর্ত অনুযায়ী, চলতি মাসের মধ্যে এ নিট রিজার্ভ তুলতে হবে সাড়ে ২৪ বিলিয়ন ডলারের বেশিতে। আমদানি নিয়ন্ত্রণসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমেও চলতি মাসের মধ্যে এ নিট রিজার্ভের শর্ত পূরণ নিয়ে সন্দিহান খোদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারাও। ডলারের অভাবে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক জ্বালানি আমদানির বিল পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এরই মধ্যে জ্বালানির বিল পরিশোধ করতে না পারায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো বিড়ম্বনার মধ্যেও পড়তে হয়েছে। চরম এ সংকটের মুহূর্তেও আমদানিনির্ভরতার নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না জ্বালানি বিভাগ। 

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সবচেয়ে রক্ষণশীল উপায়ে হিসাব করে দেখা গেছে, চলতি ২০২৩ থেকে আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত শুধু তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও কয়লা আমদানি করতেই সরকারকে অর্থ ব্যয় করতে হবে প্রায় ৪২ বিলিয়ন ডলার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানিতে আমদানিনির্ভর নীতি গ্রহণ না করে স্থানীয় সরবরাহ বাড়ানোয় মনোযোগ ও বিনিয়োগ বাড়ানো গেলে সংকট অনেকাংশেই এড়ানো সম্ভব ছিল। কিন্তু বহিস্থ প্রভাবকের ওপর অতিমাত্রায় সংবেদনশীল এ আমদানিনির্ভরতা থেকে এখনো বেরিয়ে আসতে পারছে না জ্বালানি বিভাগ। দেশের গ্যাস খাতের মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের সময় ডেনমার্কের প্রকৌশল ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান র‍্যাম্বলের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছিল, ২০২১ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর বাংলাদেশে শুধু গ্যাসের চাহিদা পূরণ করতেই আমদানি ব্যয় করতে হবে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি। আমদানি বা আন্তর্জাতিক জ্বালানি কোম্পানির বিনিয়োগের অপেক্ষায় না থেকে এ অর্থ স্থানীয় পর্যায়ে গ্যাস অনুসন্ধান-উন্নয়নে কাজে লাগানো হলে এখান থেকে আরো বেশি মাত্রায় সুফল পেতে পারে বাংলাদেশ। র‍্যাম্বলের ওই সুপারিশও এখন পর্যন্ত এক প্রকার উপেক্ষিতই থেকে গেছে। অথচ গত বছরও জ্বালানি খাতের উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানিতে (বাপেক্স) মাত্র ৮১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ১ লাখ কোটি টাকা মূল্যের গ্যাস আমদানির খরচ সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে। 

দেশে এলএনজি আমদানি হয় দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ও স্পট মার্কেট থেকে ক্রয়ের ভিত্তিতে। রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় দেশে এলএনজিবাহী কার্গো আনা হয় ৫৬টি। এর মধ্যে কাতার থেকে ৪০টি ও ওমান থেকে ১৬টি। আর চলতি পঞ্জিকাবর্ষে স্পট মার্কেট থেকে আসার কথা রয়েছে আরো ২১ কার্গো। অতীতে স্পট মার্কেটে দামের ভিত্তিতে এলএনজি আমদানি কমিয়েছে বা বাড়িয়েছে পেট্রোবাংলা। সে অনুযায়ী হিসাব করেও দেখা যায়, প্রতি বছর কমপক্ষে ৭০ কার্গো এলএনজি প্রয়োজন। মাঝারি আকৃতির একটি কার্গোর ধারণক্ষমতা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ। স্পট ও দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য ১০ ডলার করে ধরলেও আমদানিতে প্রতি কার্গোয় শুধু এলএনজির দামই পড়বে ৩ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। সে অনুযায়ী বছরে ৭০ কার্গো আমদানি করতে প্রয়োজন হবে ২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি। সবচেয়ে রক্ষণশীল এ হিসাব অনুযায়ী, চলতি ২০২৩ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত আট বছরে শুধু এলএনজি আনতেই বাংলাদেশের প্রয়োজন পড়বে অন্তত ১৯ বিলিয়ন ডলার। 

জ্বালানি সংশ্লিষ্ট আরেক হিসাবে দেখা গেছে, জাতীয় গ্রিডে যদি পরিকল্পনামাফিক দিনে ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করতে হয়, তাহলে পণ্যটি আমদানি করতে হয় বছরে ৩ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারের। সেক্ষেত্রে আট বছরে এলএনজি আমদানি করতে হবে ২৬ বিলিয়ন ডলারের। জাতীয় গ্রিডে এখন দৈনিক এলএনজি সরবরাহ হচ্ছে কমপক্ষে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। প্রয়োজন ও পরিকল্পনার চেয়ে অনেক কম এ সরবরাহ বজায় রাখতে হলেও বছরে এলএনজি আমদানি করতে হবে অন্তত ২ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলারের। সেক্ষেত্রেও এলএনজি আমদানি বাবদ আট বছরে প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। 

তবে গতকালই সামিট গ্রুপের এক ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল (এফএসআরইউ) স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে সরকারের অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এটি ২০২৭ সালে কমিশনিংয়ের কথা রয়েছে। এছাড়া পরিকল্পনায় রয়েছে এক্সিলারেট এনার্জির আরেকটি এফএসআরইউ। 

এ দুটি চালু হলে দেশে এলএনজির আমদানি চাহিদা আরো অনেকখানি বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ২০৩০ সাল পর্যন্ত এলএনজি আমদানিতে বাংলাদেশের বার্ষিক ব্যয়ও প্রায় দ্বিগুণে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। 

দেশের বিদ্যুৎ খাতের মোট সক্ষমতার বড় একটি অংশ এখন কয়লাভিত্তিক। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালের আগেই দেশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় সাত হাজার মেগাওয়াট হওয়ার কথা। বিশেষজ্ঞদের হিসাব অনুযায়ী, এ সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রাখতে বছরে কয়লা প্রয়োজন সাড়ে ২৫ মিলিয়ন টন। প্রতি টনের গড় দাম ১৩০ ডলার ধরে এ পরিমাণ কয়লা আমদানিতে বছরে অর্থ প্রয়োজন ৩ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারের বেশি। সে অনুযায়ী, ২০২৪ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত পরবর্তী সাত বছরে অর্থ প্রয়োজন পড়বে ২৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

সবচেয়ে রক্ষণশীলভাবে করা এ হিসাব অনুযায়ী, আগামী আট বছরে দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণে শুধু এলএনজি ও কয়লা আমদানি করতে হবে প্রায় ৪২ বিলিয়ন ডলারের। 

যদিও প্রকৃতপক্ষে জ্বালানি আমদানির খরচ অতিমাত্রায় রক্ষণশীল এ হিসাবের চেয়ে আরো অনেক বেশি হবে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরা। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ম. তামিম বলেন, ‘‌জ্বালানি নিরাপত্তাকে আমদানিনির্ভর করতে হলে মূল্যের ধাক্কা সামলানোর মতো সক্ষমতা থাকতে হবে। অর্থাৎ জ্বালানির মূল্য যত বেশি হোক না কেন সেটি আমরা আমদানি করতে পারব। কিন্তু আমাদের অর্থনীতি তো সেই পরিস্থিতিতে নেই। আমাদের যে পরিমাণ বিদ্যুৎ সক্ষমতা গড়ে তোলা হচ্ছে এবং স্থানীয় গ্যাসের সরবরাহ কমে আসছে তাতে ২০৩০ সাল নাগাদ ৯০ শতাংশ জ্বালানি আমদানি করতে হবে। সেই হিসেবে তখন আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রাথমিক জ্বালানি আমদানিতেই খরচ ২০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছাবে।’

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে ২ হাজার ২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চলমান রয়েছে। বাকি সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আগামী বছরের মধ্যে প্রস্তুত হয়ে উৎপাদনে আসবে। এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে এলে বছরে সাড়ে ২৫ মিলিয়ন টন কয়লার প্রয়োজন পড়বে।

বর্তমানে পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদন কার্যক্রমে রয়েছে। যদিও কয়লা সংকটে সাময়িক বন্ধ রয়েছে কেন্দ্রটি। এছাড়া একই সক্ষমতার রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট (৬৬০ মেগাওয়াট) চালু রয়েছে। বাকি ৬৬০ মেগাওয়াট সক্ষমতা এ বছরেই উৎপাদনে আসবে। এছাড়া চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এসএস পাওয়ারের ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার কেন্দ্রটি প্রস্তুত রয়েছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। জাপানি অর্থায়নে নির্মাণাধীন মাতারবাড়ী ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনে এলে দেশে কয়লা আমদানির পরিমাণ বর্তমানের তুলনায় কয়েকগুণ বাড়াতে হবে। 

অন্যদিকে দেশের জ্বালানি খাতের মহাপরিকল্পনার বড় একটি অংশ জুড়ে রয়েছে এলএনজি আমদানি। জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে দৈনিক গ্যাস সরবরাহের ২০-২২ শতাংশ আসছে আমদানীকৃত এলএনজির মাধ্যমে। দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে এ গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হচ্ছে। এ দুটি টার্মিনালের দৈনিক সক্ষমতা এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। 

এর মধ্যে আবার নতুন করে গতকাল আরেকটি এলএনজি টার্মিনালের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পাইপলাইনে আছে আরেকটি। জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে গত বছরও দুটি টার্মিনালে পূর্ণ সক্ষমতায় এলএনজি সরবরাহ দেয়া যায়নি। এরই মধ্যে নতুন টার্মিনালের গ্যাস সরবরাহ দেয়া কতটা সম্ভব হবে, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও কেউ কেউ বলছেন, গ্যাসের বর্তমান পরিস্থিতিতে মজুদ সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নতুন টার্মিনাল দুটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু কমিশনিংয়ের পরও প্রয়োজনীয় সরবরাহ নিশ্চিত করা না গেলে এগুলোকে বসিয়ে রেখেই ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে বিপুল পরিমাণ অংক পরিশোধ করতে হবে জ্বালানি বিভাগকে। সেক্ষেত্রে এখান থেকেও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ। 

আমদানিনির্ভরতা অর্থনীতির জন্য টেকসই কিছু নয়, বরং এতে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে বলে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক বদরূল ইমাম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘‌জ্বালানি আমদানির জন্য আমাদের পর্যাপ্ত ডলার নেই। ডলার সংকটের কারণে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি আমদানিতে হিমশিম খাচ্ছি। যার খুব খারাপ প্রভাব দেখেছি বিদ্যুৎ খাতে। আমদানিনির্ভর জ্বালানিতে এটাই সংকট। এখন আমাদের যে পরিমাণ জ্বালানি আমদানিতে অর্থ প্রয়োজন হচ্ছে, আগামী তিন-চার বছর পর দেশের বৃহৎ গ্যাস উৎপাদনে থাকা বিবিয়ানা গ্যাসের প্রেশার কমে যাবে। তখন কী হবে? এটার কোনো সমাধান আমি দেখি না। জ্বালানি আমদানিতে বিনিয়োগের এ অর্থের বড় অংশই এখন অনুসন্ধানে বিনিয়োগ হওয়া দরকার। তা না হলে একটা বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।’ 

দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার ও ওমানের সঙ্গে বার্ষিক চার মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানি চুক্তি রয়েছে। এর মধ্যেই চলতি বছরের ১ জুন কাতারের সঙ্গে নতুন আরেকটি এলএনজি আমদানি চুক্তি করেছে জ্বালানি বিভাগ। এ চুক্তির আওতায় বিদ্যমান কার্গোর বাইরে ২০২৬ সালে অতিরিক্ত আরো ১২ কার্গো এবং ২০২৭ সালে ২৪ কার্গো বাড়তি এলএনজি সরবরাহ দেবে কাতার। ১৫ বছরমেয়াদি এ চুক্তি করে জ্বালানি বিভাগের অধীন সংস্থা পেট্রোবাংলা। পাশাপাশি ওমানের কাছ থেকেও এলএনজি আমদানি বাড়াতে এরই মধ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি শেষের পথে। এসব চুক্তির আওতায় ২০২৬ সালের পর দেশে এলএনজি সরবরাহ বাড়লে জ্বালানি আমদানি ব্যয় আরো বহুলাংশে বাড়বে। 

দেশে জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা। দেশে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সক্ষমতা সাড়ে ১১ হাজার মেগাওয়াট থাকলেও পাঁচ-ছয় হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতার বেশি চালানো যায় না। গ্যাস সংকটের কারণে বাকি সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসিয়ে রাখতে হয়। এরই মধ্যে আরো নতুন দুই হাজার সক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রস্তুত হয়ে আছে। এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন গ্যাসের কারণে উৎপাদনে যেতে পারছে না বলে বিদ্যুৎসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।


রিজার্ভ   নাজুক পরিস্থিতি   আমদানি   জ্বালানি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কেন চাকরির বয়সসীমা ৩৫ করা উচিত নয়?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের চাকরির বাজারের প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হওয়ার জনপ্রিয়তা সবচাইতে বেশি। চাকরিপ্রত্যাশীদের মতে সরকারি চাকরির মত পেশাগত নিরাপত্তা আর কোথাও নেই। আর সেজন্যই অনেক দেশে বেশি বয়সে সরকারি চাকরির আবেদনের সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশে এর সীমাবদ্ধতা ৩০ বছরে রয়েছে। সরকারি চাকরির কোন কোন ক্ষেত্রে বিশেষ দক্ষতার দরকার হয়। সেই দক্ষতা অর্জনের জন্য বাড়তি সময়ের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া চাকরির আবেদনের বয়স যতই থাকুক না কেন, পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ অনির্দিষ্ট হয় না। একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ৫ বা ৭ বার সিভিল সার্ভিসের জন্য আবেদন করতে পারেন। আমাদের দেশেও যেকোন যুক্তিতে বয়স বাড়াতে গেলে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত।

চাকরিপ্রত্যাশী অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশে পড়াশোনা বিশেষ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যারা উচ্চশিক্ষা শেষ করে বের হন তাদের সেশন জটের কারণে ২৬-২৭ বছর লেগে যায়। সেক্ষেত্রে ৩০ বছরের বয়সসীমা তাদের জন্য অন্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় বৈষম্যমূলক। বিশ্বের অনেক দেশেই চাকরির বয়সসীমা নেই। বাংলাদেশে বয়সসীমার বাধাটিও বৈষম্যেরই সামিল। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। কিন্তু বাংলাদেশে সেটি নেই। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধারণত চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে যাদের বয়স একটু বেশি থাকে তারাই আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানোর আন্দোলন করে থাকেন। দুই দশক ধরে এ রকম আন্দোলন নিয়মিতভাবে সংবাদমাধ্যমে আসতে দেখা যায়। আন্দোলনকারীদের যুক্তি-বিভিন্ন দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৫৯ বছর পর্যন্ত দেখা যায়। সুতরাং, বাংলাদেশের গ্র্যাজুয়েটরা কেন এই সুযোগ পাবেন না? তাদের মতে, বয়স নয়, যোগ্যতাই হতে পারে একজন প্রার্থী বাছাইয়ের প্রধান বিবেচ্য। তাছাড়া মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারটিও তারা উল্লেখ করেন।

সম্প্রতি জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও আলাপ-আলোচনা করবেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আপাতত বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত সরকারের নেই। গত ১৫ বছরে সরকার অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চাকরির বয়স ছিল ২৭ বছর সেখান থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ বছরে উন্নীত করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য সেটা ৩২ বছর করা হয়েছে। চাকরি থেকে অবসরের বয়স ৫৭ বছর থেকে বাড়িয়ে ৫৯ বছর করা হয়েছে। আমরা সবসময় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে জনবল কাঠামো ও নিয়োগ প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করে থাকি। যুগের সাথে সম্পর্ক রেখে আমরা পরিবর্তনও করে থাকি।

সরকারি চাকরিজীবীদের অবসরের বয়স বেশি বাড়ানোর প্রধান অসুবিধা হিসেবে ওপরে সরকারি চাকরিতে তারুণ্যের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সেটি ছাড়াও একটি সামাজিক সমস্যা রয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পদবিন্যাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো খোলা (ওপেন) বা পরিবর্তনশীল (ডাইনামিক) নয়; এখানকার পদবিন্যাস প্রায় স্থির। বয়োজ্যেষ্ঠদের অবসরে যাওয়ার ফলে এখানে অপেক্ষাকৃত তরুণ চাকরিজীবীদের পদপ্রাপ্তি তথা পদোন্নতির সুযোগ তৈরি হয়। বয়োজ্যেষ্ঠরা দীর্ঘদিন পদ ধরে রাখলে তরুণেরা আরও বেশি দিন পদোন্নতিবঞ্চিত থাকবেন। এতে বয়োজ্যেষ্ঠরা ঘটনাক্রমে বয়ঃকনিষ্ঠদের বিরক্তির কারণ হতে পারেন।

বাংলাদেশে চাকরির বয়সসীমা ৩০ কেন উপযুক্ত বয়স? কারণ, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে তরুণদের কাজে লাগাতে চায় কর্তৃপক্ষ। তরুণরা যাতে তাদের মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারে। এমনকি চাকরিতে প্রবেশের একটা মানসিক বয়সও রয়েছে। সাধরণত সামরিক বাহিনীতে চাকরির ক্ষেত্রে যেমন শারীরিক সক্ষমতার বিষয় থাকে, বেসামরিক চাকরিতে সেটা না থাকলেও মানসিক সক্ষমতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চাকরিতে প্রবেশের পর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় পিক-আপ (গ্রহণ) করা এবং সে অনুযায়ী সার্ভিস বা সেবাদান ঠিক রাখতে হলে একটা নির্দিষ্ট বয়স দরকার হয়। এছাড়া ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার বিষয়টি এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হতে পারে। চাকরিতে ‘কন্ট্রিবিউট’ করা বা অবদান রাখতে হলেও একটা নির্দিষ্ট বয়সের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ সে যাতে অবদান রাখতে পারে তার জন্যও পর্যাপ্ত সময় দরকার হয়।

বাংলাদেশে সাধারতণ চাকরির ক্ষেত্রে বর্তমানে অবসরের বয়সসীমা ৫৯ বছর। দেরীতে চাকরিতে প্রবেশ করলে অবদান রাখার সময়ও কমে আসতে পারে। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি বাংলাদেশে কর্ম কমিশন (বিসিএস) এর আওতাধীন নিয়োগ পরীক্ষাসমূহ। এই পরীক্ষার মাধ্যমে একজন চাকরিপ্রত্যাশীর সম্পূর্ণ নিয়োগ পেতে তিন থেকে চার বছর সময় লাগে। ৩০ বছর বয়সে কেউ এই দীর্ঘ প্রক্রিয়া পেরিয়ে চাকরি শুরু করতে হলে তার বয়স অন্তত ৩৩-৩৪ বছর হয়ে যায়। ফলে তার অবদান রাখার সময়সীমা এমনিতেই কমে যায়। এতে করে যেই সেক্টরে একজন ব্যক্তি চাকরি করেন সেখানে চাকরিতে তার সম্পূর্ণটা দিতে সক্ষম হন না। ফলে দেশের একাংশ ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। 

বিবেচনা করলে দেখা যায়, কোন ব্যক্তি ২৫ বছর বয়সে চাকরিতে যোগদান করলে তার পিক-আপ করার সক্ষমতা যত থাকবে, ৩৪ বছর বয়সী একজনের সেই সক্ষমতা একই হবে না, এসব বিষয় মাথায় রেখেই বয়স নির্ধারণ করা হয় হতে পারে। একজন ব্যক্তি ২৫ বছরে চাকরিতে প্রবেশ করলে সে অপেক্ষাকৃত তরুণ থাকে এবং প্রশিক্ষণসহ নানা ধরণের কর্মসূচীতে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে তার কোন পিছুটান থাকে না। কিন্তু বয়স বেশি হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিয়ে, অন্য চাকরির মতো পিছুটান তৈরি হয় যা নতুন চাকরি, প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য কর্মসূচীতে বাধার সৃষ্টি করতে পারে।

এছাড়া কর্মক্ষেত্রে যারা সহকর্মী হিসেবে কাজ করবেন সেখানেও, বয়সের পার্থক্য খুব বেশি যাতে না হয় বা একটা নির্দিষ্ট বয়সের ধারা বজায় রাখার প্রতিও নজর দেয়া হয় বলে মনে করেন সমাজের বিশিষ্টজনরা। এমনকি বাংলাদেশে চাকরির সংকটের কারণগুলোও বিবেচনা করা কে তা বিশেষ ভাবে পর্যালোচনা করে সংকট মোকাবিলায় কাজ করা হয়।

দেশের তরুণদের চাকরির সংকটের নানা কারণে হতে পারে বিশষে করে চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতার অভাব। ২০১৯ সালে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক, বিআইজিডি ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা-জরিপ প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতায় মারাত্মকভাবে পিছিয়ে আছেন বাংলাদেশের তরুণেরা। বিশ্ববিদ্যালয় পাস করেও তাঁরা কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারছেন না। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার চাকরির নিয়োগের সময়ে এই ব্যাপারটি দেখা যায়। তাই তরুণদের দক্ষ ও যোগ্য করে তোলার জন্য বাজারের চাহিদার দিকে নজর রেখে নানা ধরনের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া যায়।

সুতরাং সব দিক ভেবে যুবসম্প্রদায়ের প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র ও সময় প্রসারিত করার উদ্দেশ্যে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ এবং অবসরের বয়সের একটি সাম্যতা দরকার। আর একই সঙ্গে বয়োজ্যেষ্ঠদের সেবা একটি যৌক্তিক বয়স পর্যন্ত পেতে এবং নতুন প্রজন্মের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে চাকরি থেকে অবসরের বয়স এক বছর বাড়িয়ে ৬০ বছর করাই বাঞ্ছনীয়।

কিন্তু চাকরি থেকে অবসরের দিক থেকে যদি দেখা হয়, সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও অবসর গ্রহণের সময়সীমা সক্রিয়ভাবে নির্ধারন করা হয়েছে। বিচারকদের অবসর গ্রহণের বয়স ৬৭ বছর এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ রাখা হয়েছে। এমনকি একজন ডাক্তারও বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগদান করে তাকে ৫৯ বছর বয়সে অবসরগ্রহণ করতে হয়। কিন্তু একই ডাক্তার যদি কোন মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসরের চাকরি করেন তাহলে তাকে ৬৫ বছরে অবসরে যেতে হয়। তাহলে সাম্যতা কোথায়? যদি চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে বয়সের সিমাবদ্ধতা দরকার হয় তাহলে চাকরি থেকে অবসরের সময়ও নির্দিষ্ট সিমাবদ্ধতা দরকার।


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ডের জন্য বাংলাদেশিদের আবেদনের আহ্বান

প্রকাশ: ০৮:৫৫ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজাদ ফাউন্ডেশন, ন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইন্ডিয়া এবং আই পার্টনার-ইন্ডিয়া যৌথভাবে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করবে। জেন্ডার সমতা নিয়ে কর্মরত দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাসকারী যে কেউ এই পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে পারেন। আগামী ৭ জুনের মধ্যে এই আবেদন করতে হবে।

বুধবার (১৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সকল তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন নিজেরা করির নির্বাহী পরিচালক মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির। এ সময় আরও বক্তৃতা করেন পুরস্কার কমিটির সদস্য ও আজাদ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী দোলন গাঙ্গুলী, সাংগাত বাংলাদেশের কান্ট্রি কোর গ্রুপের সদস্য অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা প্রমুখ।

মূল বক্তব্যে খুশী কবির বলেন, ‘‘দক্ষিণ এশিয়ার নারী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ কমলা ভাসিন ছিলেন শান্তি আন্দোলনের অগ্রণী নেত্রী, লেখক, কবি, শিশু সাহিত্যিক ও সমাজবিজ্ঞানী।

২০২১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যুর পর জেন্ডার সমতার উদ্দেশে তার কাজকে এগিয়ে নিতে ‘কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ডস-ফর ড্রাইভিং জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যাক্রস সাউথ এশিয়া’ চালু করা হয়। এই পুরস্কারের বিচারকমণ্ডলীতে আছেন দক্ষিণ এশিয়ার স্বনামখ্যাত নারী অধিকার ও মানবাধিকার কর্মী, সমাজসেবী, সাংবাদিকসহ প্রথিতযশা ব্যক্তিবর্গ। আগামী ৩০ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লির হ্যাবিট্যাট সেন্টারে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি বছর দুটি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হবে।

প্রথা-বহির্ভূত বা অপ্রচলিত পেশায় সফলভাবে কর্মরত নারী (সিস অথবা ট্রান্স) ও জেন্ডার সাম্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশে কাজ করেন এমন পুরুষ (সিস অথবা ট্রান্স) এই পুরস্কার পাবেন। প্রতিটি পুরস্কারের মূল্য ভারতীয় মুদ্রায় এক লক্ষ টাকা। অর্থমূল্য ছাড়াও পুরস্কৃত ব্যক্তি দক্ষিণ এশিয়ার সমাজকর্মীদের নেটওয়ার্কে সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাবেন।’

পুরস্কার কমিটির সদস্য দোলন গাঙ্গুলী বলেন, ‘২০২২ ও ২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আবেদনকারী আবেদন করলেও বাংলাদেশ থেকে ২০২৩ সালে কোনো আবেদন জমা পড়েনি। কমলা ভাসিন সত্যিকার অর্থেই নিজেকে একজন দক্ষিণ এশীয় ভাবতেন। তাই এই পুরস্কারের দক্ষিণ এশীয় প্রকৃতি বজয় রাখতে বাংলাদেশ থেকেও অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।’ বাংলাদেশের যোগ্য ব্যক্তিবর্গদের এই পুরস্কারের জন্য আবেদন করার আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কমলা ভাসিন পুরস্কার বিষয়ে গত মঙ্গলবার ঢাকার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে একাট অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মহিলা পরিষদ, নারীপক্ষ, একশন এইড, অক্সফাম, বাদাবন সঙ্ঘ, জাগো ফাউণ্ডেশন, সাংগাত বাংলাদেশ, ক্যাম্পি, ডিয়াকোনিয়া, অস্তিত্ব বাংলাদেশ, কর্মজীবী নারী, বন্ধু ফাউণ্ডেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

কমলা ভাসিন অ্যাওয়ার্ড   খুশী কবির  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

এই সব সুশীলদের এখন কী হবে?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশে সুশীল সমাজের কিছু প্রতিনিধি আছেন যাদেরকে মনে করা হয় তারা মার্কিনপন্থী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে তারা গর্ব অনুভব করেন। কথায় কথায় মার্কিন দূতাবাসে যান। সেখানে প্রাতঃরাশ, মধ্যাহ্নভোজ, নৈশভোজে মিলিত হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যা বলে তারা তার চেয়ে তিন ধাপ গলা উঁচিয়ে কথা বলেন। বাংলাদেশ নিয়ে তাদের কোন ভালবাসা নেই, প্রেম নেই, আগ্রহ নাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এবং নীতি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করাই যেন তাদের প্রধান লক্ষ্য। এই সমস্ত সুশীলদেরকে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোফোন। 

গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে এই ধরনের সুশীলের প্রভাব প্রতিপত্তি বাংলাদেশে ব্যাপক লক্ষ্য করা গিয়েছিল। মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফোরামে তারা যেন ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কণ্ঠস্বর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি, তখন এই সমস্ত সুশীলরা বাহবা দিয়েছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সিদ্ধান্ত সঠিক বলেই বিভিন্ন টকশোতে, বিভিন্ন লেখালেখিতে বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার সময়ও সুশীলদের দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কথা বলতে। এতে যে দেশের ক্ষতি সেটি অনুভব করার সামর্থ্য তাদের নেই। আবার ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি ঘোষণা করল তখন এই সমস্ত সুশীলরা ভিসা নীতি নিয়ে যেন মার্কিন কূটনীতিকের ভূমিকা অবতীর্ণ হয়েছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে যখনই কোনো প্রতিনিধিরা আসতেন তখন এই সমস্ত সুশীলদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক করতেন এবং এতেই বাজারে তাদের কদর বাড়ত। বিভিন্নভাবে তারা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতেন। আর এই সমস্ত সুশীলদের খুঁটির জোর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এমন কথাটা সর্বত্র চাউর ছিল। কিন্তু সেই সুশীলরাই এখন অপাংক্তেয় হয়ে গেলেন। তারা এখন হতাশার সাগরে নিমজ্জিত। 

ডোনাল্ড লুর সফরে এবার চায়ের দাওয়াত পাননি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। ডোনাল্ড লুর সঙ্গে তাদের দেখা সাক্ষাৎও হয়নি। এ নিয়ে তাদের ভীষণ মন খারাপ। বিশেষ করে হেফাজতের তাণ্ডবের সময়ে যিনি হেফাজতের কর্মীদের মৃত্যু আবিষ্কার করেছিলেন, মানবাধিকারের নামে যিনি সরকারবিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত সেই আদিলুর রহমান খান প্রতিবারই মার্কিন দূতাবাসে দাওয়াত পেতেন। কিন্তু এবার তাকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এই বিতর্কিত তথাকথিত মানবাধিকার কর্মী বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক ধরনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে লিপ্ত। 

জিল্লুর রহমান তৃতীয় মাত্রা উপস্থাপক। পিটার হাস রাষ্ট্রদূত হওয়ার পরপরই লাইমলাইটে আসেন জিল্লুর রহমান। তার সঙ্গে পিটার হাসের সখ্যতার কথা তিনি নিজেই বিভিন্ন জায়গায় বলে বেরিয়েছেন। ডোনাল্ড লু যখন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তখন ডোনাল্ড লুর সঙ্গে তিনি এক সাক্ষাৎকারেও আয়োজন করেছিলেন। একদা খুনি রশিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া এই বিতর্কিত উপস্থাপক মার্কিন অর্থায়নে এবং মার্কিন আর্থিক সহায়তায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। কিন্তু এবার তিনিও অপাংক্তেয় ছিলেন। 

স্বাধীনতাবিরোধীর সন্তান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের প্রধান কাজ হল সরকারকে নানাভাবে সমালোচনা করা। সরকারের লক্ষ্য ত্রুটি বিচ্যুতি বের করাই যেন তাঁর একমাত্র মিশন। সেই রিজওয়ানা হাসানকেও এবার দাওয়াত দেয়নি মার্কিন দূতাবাস। আর এই সমস্ত ব্যক্তিদেরকে দাওয়াত না দেওয়া ফলে প্রশ্ন উঠেছে। 

তবে বিস্ময়কর ব্যাপার ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক দম নিজস্ব ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত বদিউল আলম মজুমদারের অনুপস্থিতি। বদিউল আলম মজুমদার প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন। কারণ তাকে মনে করা হত তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে মূত্রপাত্র। এমন কী মার্সিয়া বার্নিকাটকে বিদায়ের আগে তাঁর বাসায় নৈশ্যভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই বদিউল আলম মজুমদারের মার্কিন দূতাবাসে চায়ের দাওয়াত না পাওয়াটা বিস্ময়কর। প্রশ্ন হচ্ছে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি নিয়ে যে সব সুশীলরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদলেহন করেছেন তাদের এখন কী হবে?

সুশীল   ডোনাল্ড লু   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান   বদিউল আলম মজুমদার   আদিলুর রহমান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

‘ফিলিস্তিনের গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একমত’

প্রকাশ: ০৭:১৩ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রও একমত বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার (১৫ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, “গাজায় শান্তি স্থাপন করার বিষয়টি আমরা আলোচনা করেছি। তিনি (ডোনাল্ড লু) বলেছেন, ইউএস অত্যন্ত টায়ারডলেসলি (অক্লান্তভাবে) কাজ করছে যাতে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তিনি আমাকে যেটুকু বলেছেন- ‘তারা আশাবাদী’।”

‘আমরা বলেছি, গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে, নিরীহ নারী ও শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে। ৩৫ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, তার মধ্যে ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু’, যোগ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এটি আসলে মেনে নেয়া যায় না। আমি বলেছি, টেলিভিশনে যখন এগুলো দেখি, তখন টেলিভিশন দেখা কন্টিনিউ করতে পারি না। সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনিও একমত যে, সেখানে শান্তি স্থাপন করা দরকার। তিনি জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য টায়ারলেসলি কাজ করছেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক খুবই চমৎকার। আমাদের বহুমাত্রিক সহযোগিতার ক্ষেত্র রয়েছে। একইসাথে গত ৫৩ বছরের আমাদের অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। যে কারণে ডোনাল্ড লুকে ধন্যবাদ জানিয়েছি।’

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সরকার গঠনের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। তিনি সম্পর্ককে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন। সেই অভিপ্রায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।’

‘আমাদের আলোচনা সেই লক্ষ্যেই হয়েছে। একক দেশ হিসেবে আমাদের রফতানির সবচেয়ে বড় গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশও যুক্তরাষ্ট্র। আমি ডোনাল্ড লু’কে অনুরোধ জানিয়েছি, বাংলাদেশে ৪০টি আইটি ভিলেজ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখানে যাতে যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগ বাড়ায়। যদিও কিছু বিনিয়োগ তারা এরইমধ্যে করেছে।’


হাসান মাহমুদ   ডোনাল্ড লু   ফিলিস্তিন   গাজা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে না দেওয়ার নির্দেশ

প্রকাশ: ০৬:১১ পিএম, ১৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানী ঢাকায় যেন ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।  বুধবার (১৫ মে) বনানীতে বিআরটিএর সদর কার্যালয়ে আয়োজিত সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যাটারিচালিত কোনো গাড়ি (তিন চাকার) যেন ঢাকা সিটিতে না চলে। আমরা ২২টি মহাসড়কে নিষিদ্ধ করেছি। শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, চলতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর আগে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ঢাকার মধ্যে অটোরিকশা বন্ধে সম্মতি জানান।

সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ভয়াবহ ব্যাপার যখন রিকশাচালকরা দুই পা ওপরে উঠিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। অনেক প্রতিবন্ধী আছেন যারা চোখে কিছুটা কম দেখেন তারাও এই রিকশা নিয়ে নেমে পড়েন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, সিদ্ধান্তে আসা দরকার যে ঢাকায় ইজি বা অটোরিকশা চলবে না। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

সভায় বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


রাজধানী   ওবায়দুল কাদের   অটোরিকশা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন