পুকুর-জলাশয় থেকে পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ দেশীয়
বিভিন্ন প্রজাতির ছোট ছোট মাছ
হারিয়ে যাচ্ছে। জলাশয়ে বছরের অধিকাংশ সময় পানি না
থাকা এবং প্রজনন মৌসুমে
পানিপ্রবাহ কমে যাওয়া এর অন্যতম কারণ। এছাড়া মনুষ্যসৃষ্ট
কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে জমিতে রাসায়নিক সার ও অপরিকল্পিত
মত্স্য আহরণ, প্রজনন মৌসুমে প্রজনন সক্ষম মাছ ও পোনা
ধরা, কারেন্ট জালের ব্যবহার, মাছের আবাসস্হল ধ্বংস করা এবং ক্ষতিকর
মত্স্য আহরণ সরঞ্জামের ব্যবহার
করায় ধিরে ধিরে বিলুপ্তি
হতে চলছে।
আমরা
মাছে-ভাতে বাঙালি। কিন্তু
দিনে দিনে কমছে নদী-খাল-জলাশয়! ভরাট
করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতি ছোট মাছের অভায়ারণ্য।
যে সব নদী বা
খাল রয়েছে তাও আবার বিভিন্ন
বিষাক্ত বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে! ফলে দেশি প্রজাতির
মাছ এখন বিলুপ্ত পথে।
এক সময় লক্ষ্মীপুর জেলার
বিভিন্ন খাল-বিল, পুকুর-জলাশয় ও নদী থেকে
বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর মাছ পাওয়া যেতো।
বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা এ সব
মাছ এখন পাওয়াই কষ্টকর।
জেলার খাল- বিলে এবং
জলাশয় পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শিকার করতো
জেলেরা আর এসব ছোট
মাছের নানারকম নাম ছিলো।
এর মধ্যে রয়েছে চাপিলা, বৈচা, চান্দা, চাঁদা গুড়া, গোল চাঁদা, গুলশা,
পাবদা, দেশি পুঁটি, সরপুঁটি,
তিত পুঁটি, বাইলা, মেনি অথবা (ভেদা),
শিং, কৈ, টাকি, শোল,
কাঁচকি, মলা, ঢেলা, তাঁরাবাইম,
চৌককুনী, চিংড়ি গুড়া, সেললোশ, খৈলশা, ছোট টেংরা, বড়
টেংরা, বজুরি, ছোটচিংড়ি, বাতাশি, বড় বাইন, তারা
বাইন, শালবাইন, চিত্রা বাইন, টেমবইছা, মাগুর, দাঁড়িয়া গুড়া, টেম, বইছা, বুচ্ছাসহ
নাম না জানা অনেক
প্রজাতির দেশি মাছ।
লক্ষ্মীপুর
উপজেলার নদী, খাল, বিল
ও ডোবা-জলাশয় থেকে
দেশীয় প্রজাতির ছোট-বড় অনেক
মাছ এখন বিলুপ্তির পথে।
কৃষিজমিতে
অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশক ও অবৈধ কারেন্ট
জালের ব্যবহার, খাল-বিল-ডোবা
ভরাট, উন্মুক্ত জলাশয়ে সেচে ও বাঁধ
নির্মাণসহ মাছের বিচরণক্ষেত্রের প্রতিকুল পরিবর্তনের কারণে এরকম বিপর্যয় ঘটছে
বলে মনে করছেন অনেকেই।
এক যুগ আগেও এ
অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় দেশীয়
মাছ পাওয়া গেলেও বর্তমানে এসব মাছের অনেক
প্রজাতিই বিলুপ্তির পথে।
সদর
উপজেলা, রামগতি উপজেলা, রায়পুর উপজেলা,রামগঞ্জ উপজেলা, কমলনগর উপজেলা, নদীর শাখা, গাঙ,
খাল ও সরকারি খালসহ
বেশ কিছু নদী ও
ছোট খাল-বিল মাছের
প্রধান উৎস। এসব জলাশয়ের
মাছ এলাকার চাহিদা মিটাতো।
একসময়
জলাভূমিতে দেশীয় মাছের প্রাচুর্য ছিল। কিন্তু এখন
বেশ কিছু প্রজাতির মাছ
তেমন দেখা যায় না।
দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ বিলুপ্তির
কারণে স্থানীয় জেলেদের সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
সরজমিনে গিয়ে আলাপকালে জানা যায়, বর্ষা
মৌসুমে মা মাছগুলো ডিম
ছাড়ে। ওই সময় এক
শ্রেণির মৎস্য শিকারি এগুলো ধরে ফেলে। এতে
দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন হয় না। তা
ছাড়া কতিপয় মাছ চাষি বিভিন্ন
দিঘি, পুকুর ইত্যাদি জলাশয় ইজারা নিয়ে বা ফসলি
জমিতে মাছের ঘের তৈরি করে।
এসব জলাশয় ও ঘের বিভিন্ন
রাসায়নিকদ্রব্য ব্যবহার করে দেশীয় প্রজাতির
মাছ ধ্বংস করে ফেলছে।
এ ছাড়া কৃষিজমি থেকে
রাসায়নিক পদার্থ বর্ষার সময় ও বিভিন্ন
কারখানার বর্জ্য খালের মাধ্যমে নদী ও জলাশয়ে
পড়ে পানি দূষিত করছে।
ফলে দেশি প্রজাতির মাছ
দিন দিন কমে অনেকটা
বিলুপ্তির পথে।
রায়পুর,
লক্ষ্মীপুর, রামগতি, রামগঞ্জ, কমলনগর উপজেলা
মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানাযায়, আগে দেশীয় প্রজাতির
যেসব মাছ দেখা যেত,
তার অনেকটা এখন বিলুপ্ত হয়ে
গেছে। বিলুপ্ত প্রজাতির মাছের মধ্যে রয়েছে রিটা, বাচা, ছেনুয়া, গাওড়া,কাইক্কা নাপতিনী, বুইতা, পাবদা, পুঁটি, চাঁদা গুড়া, গোল চাঁদা, গুলশা,
পাবদা, দেশি পুঁটি, সরপুঁটি,
তিত পুঁটি, বাইলা, মেনি অথবা (ভেদা),
শিং, কৈ, টাকি, শোল,
কাঁচকি, মলা, ঢেলা, তাঁরাবাইম,
চৌককুনী, চিংড়ি গুড়া, সেললোশ, খৈলশা, ছোট টেংরা, বড়
টেংরা, বজুরি, ছোটচিংড়ি, বাতাশি, বড় বাইন, তারা
বাইন, শালবাইন, চিত্রা বাইন, টেমবইছা, মাগুর, দাঁড়িয়া গুড়া, টেম বইছা, বুচ্ছা ইত্যাদি।
স্থানীয় মৎস্যজীবী
নরেশ বাবুসহ আরো অনেকের সঙ্গে
কথা বলে জানা যায়,
এখন আর আগের মত খাল-
বিল জলাশয় আশানুরূপ মাছ মিলে না।
এইতো কয়েক বছর আগের
কথা।জেলার হাটে, মাঠে, বাজারে, সকাল বেলা বিভিন্ন
জাতের ছোট বড় মাছ
নিয়ে আসতাম বিক্রি করার জন্য। তখন
ক্রেতার খুব ভিড় ছিল
কিন্তু মাছের দাম ছিল খুবই
সস্তা। তখন বাজার থেকে
ক্রেতারা ৫০/১০০ টাকার
ছোট মাছ কিনলে একটা
পরিবার অনায়াসে খেতে পারতো একদিন
অথবা দুইদিন। আর তখন মাছ ছিলো
ভরপুর আর এখন কাচকি
মাছের কেজি ৪৫০ থেকে
৫০০ টাকা, টাকি মাছের কেজি
৩০০ থেকে ৪০০ টাকা,
বাইম মাছ ৮০০থেকে ১০০০
টাকা, পুঁটি মাছ ২৫০ টাকা
থেকে ৩০০টাকা, টেংরা মাছ ৪০০থেকে ৪৫০
টাকা, শিং মাছ ৯০০
থেকে ১২০০টাকা, মাগুর মাছ ৮০০ থেকে
৯৫০ টাকা দরে বিক্রি
করতে হয়। আমরা লাভোবান
হতাম যদি খাল - বিল
-নদীনালা- জলাশয় -পুকুরে কয়েক বছর আগের
মত মাছ পেতাম। এখন
ছোট মাছের দাম
ও আগের থেকে অনেক
বেশি, মাছ ও পাওয়া
যায় কম, মাছ ও
বিক্রি করতে হয় কেজি
হিসাবে আর সামান্য কিছু
ছোট মাছ নিয়ে বাজারে
আসলে আমাদের কে পড়তে হয়
ক্রেতা সংকটে। আর সে কারণে
সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়।
লক্ষ্মীপুর
সদর উপজেলা পার্বতীনগর ইউনিয়ন সোনাপুর গ্রামের আরমান হোসেন তারেক বাংলা ইনসাইডার কে জানান, সেই
দিনের কথা বলে কি
হবে! কত জাতের মাছ
ছিল। (ছোট) মাছ আমরা
খায় নাই ধরি নাই?
এহন জাইল্ল্যারা মাছ দরতে গেলে
মাছ পায়না। সব জাতের ছোট মাছ কীটনাশক
কে ধ্বংস করে ফেলছে। এখন
ছোট মাছ পাওয়াটাই কষ্টকর।
সরকার
যদি ডিম ছাড়নের সময়
খাল- বিল নদীনালায় জেলেদের
মাছ শিকার করতে না দিতো
তাহলে দেশিপ্রজাতির মাছগুলো বাঁচতো।
মাছ
ব্যবসায়ী মাসুদ মিয়া দেশি প্রজাতির
মাছ রক্ষায় সরকারি তৎপরতা হতাশাজনক মন্তব্য করে বলেন, নদী
-খালবিল জলাশয় এবং পুকুর ভরাট
হওয়ায় মাছের বিচরণ ও প্রজনন স্থান
সংকুচিত হচ্ছে। প্রজনন স্থানে মা মাছেরম অভয়ারণ্য
করে নির্দিষ্ট সময় মাছ ধরা
বন্ধ রাখতে হবে, বর্ষাকালে উজানে
পোনা ছাড়তে হবে। তাহলে হয়তো
আগের মত ছোট জাতের
বাজার সয়লাব করবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। ১৫০টি উপজেলায় এখন জনগণ ভোটের অপেক্ষায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৫৯টি উপজেলায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন গতকাল শেষ হয়েছে। সেখানেও এখন নির্বাচনী প্রচারণার ডামাডোল শুরু হয়েছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে কি না, উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে কি না এবং উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে কি না তা নিয়ে একদিকে যেমন জনগণের সংকট রয়েছে তেমনই নির্বাচন কমিশনও এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত।
লক্ষ্মীপুর সদরের তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই হামলার শিকার হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নেপথ্যে নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ। এঘটনায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী দুই প্রার্থীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ৯১১ জনের বিরুদ্ধে দুইটি মামলাও দায়ের করেন। ফলে নির্বাচনের পর আনন্দের বদলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ওই ইউনিয়নে।