দেশের অন্যতম প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি। আজ বুধবার রাজধানীতে প্রধান এই দুই দলই সমাবেশ করেছে। রক্ত দিয়ে হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন নির্বাচন হতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তাঁরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করলেই কেবল নির্বাচন হবে। বিএনপির সমাবেশ থেকে সরকার পতনের লক্ষ্যে চলমান বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের নতুন রূপরেখা ‘একদফা’ ঘোষণা করেছে দলটি। সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদের বিলুপ্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে ‘এক দফা’ ঘোষণা করেছে বিএনপি। বুধবার (১২ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে এই এক দফার ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ করেছে শান্তি সমাবেশ। আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, যথাসময়ে সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং বর্তমান সরকারের অধীনে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি নির্বাচনে আসলে ভালো, আর নির্বাচনে না আসলে আরও ভালো। বুধবার (১২ জুলাই) রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে বিএনপির এক দফা বেলুনের মতো ফুটে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, তারা বার বার এক দফা দেয়। ১৩, ১৪, ১৯ এবং ২২ সালের ডিসেম্বরে এক দফা দিয়েছে। তাদের এক দফা বেলুনের মতো ফুটে যায়। এক দফার আন্দোলন মাঠে মারা গিয়েছিল। এবারও তাদের এক দফা ফুটে যাবে।
এদিকে পূর্ব ঘোষণা অুনযায়ী বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনের প্রধান সড়কে। অন্যদিকে বায়তুল মোকারমের দক্ষিণ দিকের সড়কে আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। প্রধান দুই দলের এই পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘিরে এই দুই সমাবেশ স্থলে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েনও করা হয়। ফলে এই দুই প্রধান সড়কে দুপুর থেকেই যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই সড়কগুলোতে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পল্টন, মতিঝিল, বিজয়নগর পানির ট্যাংকি, প্রেসক্লাব, শাহবাগ অঞ্চলে যাতায়াতরত জনসাধারণের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। এসব এলাকায় যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
গণমাধ্যম সূত্র জানা যায়, দুপুরের আগেই নেতা-কর্মীতে পূর্ণ হয় বিএনপির সমাবেশস্থল। সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের ঘোষণায় বিএনপির সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকার নয়াপল্টনে সকাল থেকেই জড়ো হতে শুরু করে দলটির নেতা-কর্মীরা। সমাবেশ বেলা আড়াইটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর ১২টার মধ্যেই বিএনপির নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে ভরে যায় সমাবেশস্থল। ফলে বিজয়নগর পানির ট্যাংকি এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনের দুই পাশের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় নেতা-কর্মীদের জমায়েতের কারণে।
সমাবেশে অংশ নেওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের অনেকে জানান, ভোর থেকেই নগরীর বিভিন্ন এলাকা ও বিভিন্ন জেলা থেকে দলের নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতা-কর্মীদের জমায়েত বড় হতে শুরু করে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের অনেকে মধ্যরাতে রওনা দিয়ে সমাবেশে হাজির হয়েছেন। নেত্রকোনা সদর থেকে ভোর চারটায় রওনা হয়েছিলেন স্বপন শেখ। তিনি গাজীপুর পর্যন্ত বাসে আসেন। এরপর ট্রেনে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছান। বাস না পেয়ে কমলাপুর থেকে হেঁটে আসেন সমাবেশস্থলে। নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সদস্য স্বপন অবশ্য বলেন, জায়গায় জায়গায় পুলিশ দেখেছেন তিনি। তবে কেউ তাঁকে বাধা দেয়নি।
অন্যদিকে আজ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ স্থল জনতার মহাসমুদ্রে পরিণত হয়। বিএনপি ও জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাগ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আয়োজিত এই শান্তি সমাবেশের আয়োজন করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ দিকের সড়কে বেলা আড়াইটার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে শান্তি সমাবেশ শুরু করে আওয়ামী লীগ। বিকেল সাড়ে চারটার দিকেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসতে দেখা যায়। বেলা যত বাড়তে থাকে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিও ততই বাড়তে থাকে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি এই সমাবেশে কেরানীগঞ্জে, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, রূপগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুর থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী এই সমাবেশে অংশ নেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বায়তুল মোকাররমে জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ ফটক সংলগ্ন সভা মঞ্চ তৈরি করা হয়। মঞ্চ থেকে পশ্চিম দিকে জিরো পয়েন্ট হয়ে সচিবালয়ের প্রধান ফটক পর্যন্ত দুই দিকের সড়কে হাজারো নেতা-কর্মী অবস্থান নেন। অন্যদিকে সভামঞ্চ থেকে গুলিস্তানের কাজী বশীর উদ্দিন মিলনায়তন (মহানগর নাট্যমঞ্চ) পর্যন্ত দুই পাশের সড়কে নেতা-কর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে যায়। এছাড়া বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ লাগোয়া পশ্চিম পাশের সড়কেও নেতা-কর্মীরা অবস্থান দেখা যায়। জিরো পয়েন্ট থেকে পুরানা পল্টন অভিমুখী সড়কেও ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে অবস্থান নিয়েছিলেন নেতা-কর্মীরা।
আজ দুই দলের এই সমাবেশের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট দেখা গেছে। বুধবার (১২ জুলাই) দুপুরে কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, শেরাটন হোটেল সংলগ্ন ভিআইপি রোড, কাকরাইল মোড়ে সিগন্যাল জ্যামে দীর্ঘক্ষণ ব্যক্তিগত গাড়ি, সিনএজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, বাস আটকে দেখা যায়। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে পায়ে হেঁটে নিজ নিজ দলের কর্মসূচিতে যোগ দেন নেতা-কর্মীরা। বাস, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল থেকে নেমে পথচারীদেরও হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
দুই দলের সমাবেশের কারণে রাজধানীর সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল তুলনামূলক কম দেখা গেছে। যানজট বেশি হওয়ায় গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই অনেক বাস ঘুরে ফিরে যায়। সমাবেশের কারণে বিভিন্ন সরকারি অফিস ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখেও চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশকে তল্লাশি করতে দেখা গেছে।
দুই দল রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদর্শন জনসাধারণ ভোগান্তি
মন্তব্য করুন
জেলা প্রশাসক সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে একটি চালকলে ধান সিদ্ধ করার সময় বয়লার বিস্ফোরণে এক শ্রমিকে মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও দুই শ্রমিক। শুক্রবার (৩ মে) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জামতৈল পশ্চিম পাড়ার মেসার্স আজাহার চালকলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফজল আলী (২৬) উপজেলার জামতৈল পশ্চিম পাড়ার রবিয়াল হোসেনের ছেলে।
আহত শ্রমিকরা হলেন, উপজেলার জামতৈল পশ্চিম পাড়ার মৃত পলান শেখের ছেলে জহুরুল শেখ (২৬) এবং কর্ণসূতি পশ্চিম পাড়ার মৃত সুরুত মন্ডলের ছেলে জিন্নাহ মন্ডল (৩০) ।
আহত শ্রমিক জহুরুল শেখ জানান, ‘ধান সিদ্ধ করার এক পর্যায়ে ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে বিকট শব্দে বয়লার বিস্ফোরণ হয়। এতে আমি সহ ফজল ও জিন্নাহ আহত হই। আমি আর জিন্নাহ হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে চলে এসেছি আর ফজলের অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।’
জহুরুল আরও জানান, ‘আমি গত এক বছরের বেশি সময় ধরে এই চালকলে কাজ করছি। এর মধ্যে বয়লারের পাইপ পরিবর্তন করা হলেও বয়লার পরিবর্তন করা হয়নি।'
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে নিহত ফজলের ভাই আসলাম হোসেন জানান, ‘মেসার্স আজাহার চালকলে ধান সিদ্ধ করার এক পর্যায়ে বয়লার বিস্ফোরণে ফজল গুরুতর আহত হয়। প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।'
মেসার্স আজাহার চালকলের স্বত্বাধিকারী আজাহার আলী রাজা দাবি করেন, ‘গত ছয় মাস আগে বয়লার ও কয়েক দিন আগে বয়লারের পাইপ পরিবর্তন করা হয়েছে। বয়লার কেন বিস্ফোরণ হলো বুঝতে পারছি না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুমনুল হক জানান, ‘বয়লার বিস্ফোরণে আহত তিন জন শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। দুই জনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়ে। এদের মধ্যে ফজল নামে একজন শ্রমিকের মুখের অনেকাংশ থেঁতলে গেছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন সুলতানা জানান, ‘মেসার্স আজাহার চালকলে বয়লার বিস্ফোরণের খবর পেয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।'
মন্তব্য করুন
গাজীপুরের জয়দেবপুরে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে তেলবাহী ট্রেনের
মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় স্টেশন মাস্টারসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (০৩ মে) গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত বহু
আরও পড়ুন: দুই ট্রেনের সংঘর্ষ: উদ্ধারে যোগ দিয়েছে বিজিবি
এদিকে ঘটনার পর থেকে জয়দেবপুর স্টেশন দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম
রুটের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছে অন্তত ৬টি ট্রেন।
জয়দেবপুরের স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী মিয়া বলেন, ‘আজ পৌনে ১১টার
দিকে টাঙ্গাইল কমিউটার ও তেলবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। রেললাইনের পয়েন্টের ভুলের
কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে তেলবাহী ট্রেনের পাঁচটি এবং যাত্রীবাহী ট্রেনের চারটি
বগি লাইনচ্যুত হয়। কমিউটার ট্রেনটিতে যাত্রী কম থাকায় হতাহতের সংখ্যা কম। কমিউটার ট্রেনের
লোকোমাস্টারসহ চারজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায়
৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ’।
তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আপঘুন্টি স্টেশন মাস্টার হাশেম ও পয়েন্টসম্যান
সাদ্দাম হোসেনসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের
জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বগি উদ্ধারের জন্য ১২টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে রিলিফ ট্রেন
ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুস সামাদ বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। এরই মধ্যে রেলের সব বগি তল্লাশি করা হয়েছে। তবে ভেতরে কেউ আটকা নেই। ট্রেনের চালক ও সহকারী চালকসহ ৪ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল
পরিদর্শন করে বলেন, জয়দেবপুরে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে
প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে তাদের
প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিগন্যাল ভুল, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা
ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন স্টেশনে বেশ কয়েকটি ট্রেন যাত্রা বিরতি করা হয়েছে। দ্রুত উদ্ধার
প্রক্রিয়া শুরু করতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ
করা হয়েছে।
এরআগে, শুক্রবার (০৩ মে) বেলা ১১টার দিকে জয়দেবপুর স্টেশনের আউটার
সিগনালে যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সঙ্গে একটি তেলবাহী ট্রেনের মুখোমুখি
সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
তিনি জানান, রেল দুর্ঘটনায় দুই ট্রেনের চালক ও সহকারীরা আহত হয়েছেন।
তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রেল দুর্ঘটনায় ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের
রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে কমলাপুর রেলস্টেশনে আটকা পড়েছেন ৪-৫টি ট্রেনের যাত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি উত্তরবঙ্গ থেকে
ছেড়ে এসে গাজীপুর হয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশনের আউটার সিগনালে
পৌঁছালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা তেলবাহী ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তবে টাঙ্গাইল
কমিউটারে খুব বেশি যাত্রী ছিল না।
একজন উদ্ধারকর্মী জানান, শুক্রবার টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি বন্ধ থাকে। অন্যান্য দিন ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশনে থামে। আজ বন্ধ থাকায় এটির থ্রোপাস করার কথা। আর অপরদিকে ঢাকা থেকে আসা তেলবাহী ট্রেনটি স্টেশনে দাঁড়ানো ছিল। এখানে আপলাইন ও ডাউনলাইন আছে, কিন্তু কী কারণে ট্রেন দুটি মুখোমুখি হল সে বিষয়ে তদন্তের পর জানা যাবে।
আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
এর আগে, গতকাল রাজবাড়ীতে মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
পরে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে
উদ্ধারকারী রিজার্ভ ট্রেন এসে লাইনচ্যুত ট্রেনটি উদ্ধার করে। রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনের
মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা মালবাহী ট্রেনটি সকালে ২ নম্বর
রেলগেট এলাকার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন ডিপোতে ঢোকার সময় লাইনচ্যুত হয়। তখন এ রুটে
সব রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। উদ্ধারকারী রিজার্ভ ট্রেন সাড়ে ১০টার দিকে লাইনচ্যুত
ট্রেনটি উদ্ধার করে। বর্তমানে রাজবাড়ীর সঙ্গে ঢাকা, রাজবাড়ী-দৌলতদিয়া ও রাজবাড়ী-খুলনা
রুটে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় ২ নম্বর রেলগেট এলাকার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন
ডিপোতে ঢোকার সময় মালবাহী ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। এতে মেইন লাইন ব্লক হয়ে যাওয়ায় রাজবাড়ীর
সঙ্গে ঢাকা, রাজবাড়ী-দৌলতদিয়া ও রাজবাড়ী-খুলনা রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে তিন ঘণ্টা পর ট্রেনটি উদ্ধার করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রাজবাড়ীর সঙ্গে স্বাভাবিক হয়েছে ট্রেন চলাচল।
দুই ট্রেন সংঘর্ষ স্টেশন মাস্টার তদন্তে কমিটি
মন্তব্য করুন
গাজীপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ পরবর্তী উদ্ধার কাজে সহায়তা করতে দুই
প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঢাকা-জয়দেবপুর রেল সড়কের গাজীপুরের ছোট দেওড়া কাজীবাড়ি
এলাকায় মালবাহী ও যাত্রীবাহী দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় উদ্ধার কাজের
সহায়তায় ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন।
তিনি আরও জানান, টাঙ্গাইল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা টাঙ্গাইল
কমিউটার ট্রেনটি আজ (শুক্রবার) বেলা ১১টায় জয়দেবপুর স্টেশনে যাত্রাবিরতি শেষে ঢাকার
উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ট্রেনটি স্টেশন থেকে ছেড়ে আউটার সিগন্যালে পৌঁছানোর পর লাইন
ক্রসিং করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা জয়দেবপুর আউটার সিগন্যালের কাজীবাড়ি ছোট দেওড়া
এলাকায় একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।
এ ঘটনায় যাত্রীবাহী ট্রেনের চালকসহ আহত ৪জনকে উদ্ধার করে গাজীপুর
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় আরও আহত
থাকতে পারে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।
মন্তব্য করুন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
মন্তব্য করুন