শান্তিপূর্ণ
পরিবেশের মধ্য দিয়ে শুরু
হয়েছে ঢাকা-১৭ আসনের
উপ-নির্বাচন। সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা
পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটি
করপোরেশনের বিভিন্ন কেন্দ্রে টানা ভোটগ্রহণ চলবে ।
ঢাকা-১৭ আসনে একতারা
প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো
আলম। তিনি এই আসনের
ভোটার না হওয়ায় ভোট
দিতে পারছেন না। তবে তিনি
বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন বলে জানা গেছে।
এরই
মধ্যে সকাল ১০টার কিছুক্ষণ
পর তিনি প্রথমে বনানী
মডেল স্কুল কেন্দ্রে পরিদর্শন করেছেন। এরপর একে একে
অন্যান্য কেন্দ্র পরিদর্শনে যাবেন বলে জানা গেছে।
এর মধ্যে রয়েছে- জামিয়া মোহাম্মদীয়া ইসলামীয়া কড়াইল টি অ্যান্ড টি
কলোনি মাদ্রাসা, মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল কলেজ,
বনানী বিদ্যা নিকেতন, টি অ্যান্ড টি
আদর্শ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়,
ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি,
আই পি এইচ স্কুল
অ্যান্ড কলেজ, সরকারি কালাচাঁদপুর হাই স্কুল অ্যান্ড
কলেজ, সরকারি হোমিপ্যাথী মেডিকেল কলেজ, ভাষানটেক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভাষানটেক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, শিশু
মঙ্গল আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মানিকদী ইসলামীয়া সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্র।
ঢাকা-১৭ আসনের এই
নির্বাচনে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। নির্বাচন ভবন থেকে সিসি
ক্যামেরায় ভোট পর্যবেক্ষণ করছেন
নির্বাচন কমিশনাররা।
ঢাকা-১৭ আসনে
মোট আট প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- একতারা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী
আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম), নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী
আরাফাত, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান, ডাব প্রতীকে বাংলাদেশ কংগ্রেসের
মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন, ছড়ি প্রতীকের বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট'র মো. আকতার হোসেন,
সোনালী আঁশ প্রতীকে তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী
মো. তারেকুল ইসলাম ভুইয়া ও গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির প্রার্থী কাজী মো. রাশেদুল
হাসান।
ইসির তথ্যানুযায়ী,
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড নং ১৫, ১৮, ১৯, ২০ এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা
নিয়ে ঢাকা-১৭ আসন গঠিত। এ উপনির্বাচনে সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র
পাহারায় ২১ জনের পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে ফোর্স নিয়োজিত রয়েছে। তারা দায়িত্ব পালন করবে
ভোটের পরের দিন পর্যন্ত। তবে অঙ্গীভূত আনসার পাঁচদিনের জন্য নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া,
পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসারের ১৫টি, র্যাবের ৬টি টিম ও ১০ প্লাটুন বিজিবি
মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে
২৫ জন নির্বাহী ও ৫ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট।
ঢাকা-১৭ আসনের
উপনির্বাচনে ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এদের
মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ৬২৫ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮০ জন।
উল্লেখ্য,
গত ১৫ মে চিত্রনায়ক
আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) মারা যাওয়ার পর
ঢাকা-১৭ আসনটি শূন্য
হয়।
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জেলা প্রশাসক সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।