ইনসাইড বাংলাদেশ

মৎস্য সপ্তাহ ২০২৩ ও মৎস্য খাতে স্মার্ট প্রযুক্তি


Thumbnail

‘নিরাপদ মাছে ভরব দেশ, গড়ব স্মার্ট বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গতকাল ২৪ থেকে ৩০ জুলাই দেশব্যাপী মৎস্য সপ্তাহ উদযাপিত হচ্ছে। মৎস্য সপ্তাহের এবারকার অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সড়ক রেলি, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বঙ্গভবনের পুকুরে পোনা অবমুক্তি, কর্মশালা ইত্যাদি। বিজ্ঞানভিত্তিক মাছ চাষে উদ্বুদ্ধকরণসহ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মৎস্য খাতের গুরুত্ব ও সম্ভাবনা সম্পর্কে জনগণকে অবহিতকরণ, মৎস্য চাষ ও উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় আধুনিক ও ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সামগ্রিকভাবে বিষয়টিকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দেওয়াই মৎস্য সপ্তাহের মূল লক্ষ্য।

দেশের ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও রপ্তানি আয়ে মৎস্য খাতের অবদান আজ সর্বজনস্বীকৃত। প্রাণিজ আমিষের ৬০ শতাংশ আসে মাছ থেকে। তাছাড়া, দেশের ১৪ লাখ নারীসহ জনসংখ্যার ১২ শতাংশের বেশি অর্থাৎ প্রায় ২ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কাজ করে যাচ্ছে। ইনস্টিটিউট থেকে ইতিমধ্যে মৎস্য চাষ ও ব্যবস্থাপনা-বিষয়ক ৭৫টি লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে এবং উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মৎস্য অধিদপ্তর ও বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারণের ফলে সাম্প্রতিক কালে দেশে মাছের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইনস্টিটিউট থেকে উদ্ভাবিত এসব প্রযুক্তির মধ্যে বিপন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ সংরক্ষণ ও চাষ, কই মাছের রোগ নিরাময়ে ভ্যাকসিন তৈরি, অ্যাকোয়াপনিক পদ্ধতিতে স্বাস্থ্যসম্মত মাছ ও সবজি উৎপাদন, নোনা পানির চিত্রা ও দাতিনা মাছের পোনা উৎপাদন, অধিক উৎপাদনশীল বিএফআরআই সুবর্ণ রুই, তেলাপিয়া, কই, পাঙাশ, সরপুঁটি ও কালিবাউশ মাছের উন্নত জাত উদ্ভাবন, অপ্রচলিত মত্স্যসম্পদ যেমন কুচিয়া ও কাঁকড়ার পোনা উৎপাদন ও চাষ, মিঠা পানির ঝিনুকে ইমেজ মুক্তা উৎপাদন, সাগর উপকূলে সিউইড চাষ ও এর ব্যবহার, বিএফআরআই মেকানিক্যাল ফিশ ড্রায়ার ব্যবহারের মাধ্যমে গুণমানসম্পন্ন শুঁটকি মাছ উত্পাদন এবং ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণে মা-ইলিশ ও জাটকা ধরা নিষিদ্ধকাল নির্ধারণ, ইলিশের ছয়টি অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি অন্যতম।

বাংলাদেশ বর্তমানে অর্ধশতাধিক দেশে মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করছে। মানসম্মত মৎস্য ও মৎস্য পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যে পরীক্ষার জন্য মৎস্য অধিদপ্তরের আওতায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় আন্তর্জাতিক মানের তিনটি মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মাছের আহরণোত্তর ক্ষতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে আমাদের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গবেষণায় দেখা গেছে, সঠিক পরিচর্যা ও বাজারজাতকরণের অভাবে মাছে শতকরা ৩০-৪০ ভাগ পুষ্টি কম পাওয়া যায়। সামুদ্রিক মত্স্যসম্পদের স্মার্ট ব্যবস্থাপনার অভাবে আমরা কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন পাচ্ছি না।

মৎস্য খাতে স্মার্ট প্রযুক্তি, যেমন—রিমোট কনট্রোল অপারেটেড ফিশ ফিডার, অটোমেটিক পদ্ধতিতে পানির গুণাগুণ নির্ণয়, স্মার্ট সেনসর, স্মার্ট আন্ডারওয়াটার ক্যামেরা, আইওটিভিত্তিক স্মার্ট মৎস্য খামার ব্যবস্থাপনা, রিমোট সেনসিং এবং জিআইএস প্রযুক্তির মাধ্যমে রোগের পূর্বাভাস প্রদান ও দমন, রোবটিক্সের ব্যবহার ইত্যাদি অন্যতম। বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর যুগে আমাদের কম সময় ও কম খরচে বেশি ফলন বৃদ্ধির জন্য এসব স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সমুদ্রতল/মুক্ত জলাশয় পর্যবেক্ষণ ও জরিপ, গবেষণা পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ধরনের ডুবোযান, যেমন—Automated Underwater Vehicle (AUV), Remotely Operated Vehicle (ROV), Deep Submergence Vehicle (DSV) Ges Underwater Gliders (GUG) ব্যবহার করা যেতে পারে। বর্তমানে মুক্ত জলাশয়ে মাছের পরিভ্রমণ পথ, বাসস্থান, মৃত্যুহার ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য Fish Tagging প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া মৎস্য খাতে এআই পরিচালিত ড্রোন, ভিএমস (Vessel Monitoring System) প্রযুক্তি, ভিআর (Virtual Reality) ও এআর (Artificial Reality) প্রযুক্তির ব্যবহার এখন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। এসব প্রযুক্তির ব্যবহার দেশে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মৎস্য ও মত্স্যজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে আধুনিক প্রযুক্তি যেমন অটোম্যাটিক ফিস ফিলেটিং মেশিন, অটোমেটিক ফিশ ইনস্পেকশন সেন্সর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আমাদের মৎস্য প্রক্রিয়াজাত কারখানায় এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায়। স্মার্ট বাজার ব্যবস্থাপনায়ও বিভিন্ন ধরনের অ্যাপস ও ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। অনুরূপভাবে, দেশের মত্স্যচাষি ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারমনস্ক ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। এতে মৎস্য খাতে আধুনিক ও প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে, মাছের উৎপাদন বাড়বে এবং অর্থনীতির ভিত মজবুত হবে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

উপজেলা নির্বাচন: এমপির বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

প্রকাশ: ১০:৩৯ এএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

পাবনা- আসনের সাংসদ গালিবুর রহমান শরীফের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে। তিনি আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী এমদাদুল হক রানা সরদারের পক্ষে প্রভাব বিস্তার করছেন বলে অভিযোগ প্রতিদ্বন্দ্বি মোটসোইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের।

শনিবার (১৮ মে) বিষয়ে তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটানিং অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন মোটসোইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ।

তিনি তার অভিযোগে বলেছেন, বিগত ১৩ মে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এমদাদুল হক রানা সরদারের পক্ষে কাজ করছেন পাবনা- আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য গালিবুর রহমান শরীফ। তিনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য তার পছন্দের লোককে প্রার্থী করেছেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, সংসদ সদস্য দলীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে আনারস প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনে কাজ করার জন্য প্রভাবিত করছেন। এছাড়াও সাংসদ গালিব শরীফ তার ছোট ভাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমালকে আনারস প্রতিকের পক্ষে প্রচারণার জন্য মাঠে নামিয়েছেন।

আবুল কালাম আজাদের অভিযোগ, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী এমপিদের প্রভাব বিস্তার না করার জন্য নির্দেশনা বিধি রয়েছে। কিন্তু নির্দেশনা উপেক্ষা আচরণবিধি লংঘন করে সাংসদ গালিব শরীফ আনারস প্রতীকের পক্ষে বিভিন্ন ভাবে প্রভাব বিস্তারের জন্য কাজ করছেন। তিনি ঈশ্বরদীতে অবস্থান করে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উপজেলা নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করছেন। তার এই কর্মকান্ড নির্বাচনী আচরণবিধির ২২ এর উপধারা এবং ৩১ ধারা সরাসরি লঙ্ঘন।

মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এমপি' প্রভাব বিস্তারের কারণে ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু প্রভাবমুক্ত হওয়ার বিষয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আচরণবিধি লংঘনকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছি।

বিষয়ে তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটানিং অফিসার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বিষয়ে কথা বলার জন্য পাবনা- আসনের সাংসদ গালিবুর রহমান শরীফের মুঠো ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও, তিনি কল রিসিভ করেননি। ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও সাড়া সাড়া পাওয়া যায়নি তার থেকে।

উল্লেখ্য, আগামী ২৯ মে ৩য় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আওতায় ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।


উপজেলা নির্বাচন   এমপি   আচরণবিধি লঙ্ঘন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভিএফএস গ্লোবালের কাছে জিম্মি ইউরোপের শ্রমবাজার

প্রকাশ: ১০:১৫ এএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

বহুজাতিক ভিসা প্রোসেসিং সার্ভিস সংস্থা ভিএফএস-এর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে ইউরোপের শ্রমবাজার। ইউরোপে গমনেচ্ছুক লক্ষাধিক বাংলাদেশির আবেদনসহ পাসপোর্ট আটকে রেখেছে সংস্থাটি। এক থেকে দেড় বছর ধরে এসব পাসপোর্ট আটকে থাকার কারণে একদিকে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে ভুক্তভোগীরা, অন্যদিকে বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে দেশ।

জানা গেছে, লক্ষাধিক পাসপোর্ট আটকে থাকায় এক বছরে দেশের ক্ষতি হয়েছে ৪১ হাজার ২২০ কোটি টাকা। অবস্থায় ভিএফএসের এমন কর্মকান্ডকে ইউরোপের শ্রমবাজার ধ্বংসে গভীর ষড়যন্ত্র বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, ভিএফএস গ্লোবাল বাংলাদেশ নামের প্রতিষ্ঠানটিতে, দেশি-বিদেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। ২০২১ সালের ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশে ইতালি দূতাবাস ভিএফএস গ্লোবালের সঙ্গে ভিসা প্রদানসহ যাবতীয় সেবা নির্দিষ্ট ফি- বিপরীতে সম্পাদনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। ২০০১ সালের পর ইতালি সরকার বাংলাদেশিদের ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া বন্ধ রাখে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপে ২০২০ সালের পর থেকে বাংলাদেশিরা ওয়ার্ক পারমিটের সুযোগ পায়। সুযোগটি  গ্রহণে ইতালিতে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দেন। কেননা ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইতালি সরকার বিশ্বের ২০-২২টি দেশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৮২ হাজার ৭০৫ জনকে ওয়ার্ক পারমিট দেয়। এর মধ্যে শুধু বাংলাদেশিরা পায় ৩০ হাজারেরও বেশি।

ভিএফএস গ্লোবাল বাংলাদেশের মালিক নাহিদ নেওয়াজ। ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়ে কিছু জানাতে চান নি

সূত্র জানায়, ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর ভিসা প্রদানের সাক্ষাৎকার এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমার সিরিয়াল পেতে আবেদনকারীরা ভিএফএসের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে প্রার্থীদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট প্রদানে ভোগান্তি, দালাল চক্রের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাণিজ্য, লক্ষাধিক পাসপোর্ট এক থেকে দেড় বছর ধরে আটকে রাখাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে যাচ্ছে ভিএফএস। বৈদেশিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের সঙ্গে ইন্ডিয়াসহ অন্যান্য দেশের প্রতিযোগিতা রয়েছে।

বাংলাদেশে ইতালিয়ান অ্যাম্বাসির নিয়ম অনুযায়ী ভিসার আবেদনের জন্য ভিএফএস গ্লোবালের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয়। ভিএফএস গ্লোবাল গত বছর মে- পর থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে চরম অব্যবস্থাপনা তৈরি করছে। কোনো ব্যক্তি দালাল এবং মোটা অঙ্কের টাকা ছাড়া অ্যাপয়েন্টমেন্ট পান না। এদিকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট না পেয়ে হাজার হাজার মানুষ হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছেন। কেননা ইতালির আইন অনুযায়ী ওয়ার্ক পারমিটসহ ভিসার আবেদনপত্রটি ওয়ার্ক পারমিট বের হওয়ার দিন থেকে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে অ্যাম্বাসিতে অবশ্যই উপস্থাপন করতে হবে।

অথচ অ্যাম্বাসি সরাসরি আবেদন গ্রহণ করে না এবং অ্যাপয়েন্টমেন্ট জটিলতায় পড়ে অনেকেই ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ হারাচ্ছে। তাছাড়া বিগত সময়ে ওয়ার্ক পারমিটপ্রাপ্ত ৩০-৪০ হাজার আবেদনকারী পাসপোর্টসহ ভিসার আবেদন ভিএফএস গ্লোবালে জমা দিয়ে ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে অপেক্ষায় রয়েছেন। অথচ ইতালিয়ান সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আবেদন দাখিলের ২০ দিন থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে ভিসা প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ইতালিতে বাংলাদেশিদের ভালো অবস্থান এবং সুনাম থাকার পরও বর্তমানে মালিকরা বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য আবেদন করতে ইতোমধ্যেই অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, বাংলাদেশে ভিসা প্রদানের জটিলতা হচ্ছে। আমরা ওয়ার্ক পারমিট বের করে দিলেও সময়মতো শ্রমিক এখানে আসতে পারে না। আমাদের কাজের ক্ষতি হয়। অর্থাৎ ইতালির শ্রমবাজারে বাংলাদেশের সুযোগ প্রায় ধ্বংসের মুখে। এই ক্ষতি অপূরণীয়। কেননা, ইউরোপে একমাত্র ইতালিতেই দক্ষ, অদক্ষ নিরক্ষর লোকও গিয়ে কাজ করার জন্য আবেদন করতে পারে। এই মানুষগুলো ইতালিতে যাওয়ার সুযোগ পেলে পরিবার এবং রাষ্ট্রের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে এবং সে তার জীবনমান পরিবর্তন করতে পারে।

জানা গেছে, ভিএফএস গ্লোবাল ভিসা প্রসেসিং খরচ বাবদ জনপ্রতি ১৯ হাজার ৭২০ টাকা থেকে ২২ হাজার টাকা নিয়ে থাকে। নিয়ম অনুযায়ী ভিসাপ্রত্যাশীরা কাগজপত্র জমা এবং সাক্ষাৎকারের জন্য ভিএফএস গ্লোবালের নিজস্ব ওয়েবসাইটে বুকিং বা অ্যাপয়েমেন্ট গ্রহণ করে থাকে। ২০২২ সাল থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট সহজলভ্য হলেও ২০২৩ সালের শুরুর দিকে অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য কালোবাজারি এবং ভিএফএসের যোগসাজশে একটি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়। ভিসাপ্রত্যাশীরা নিজে চেষ্টা করে কোনোভাবেই ওয়েবসাইটে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে পারে না। ভিসাপ্রত্যাশীরা অ্যাপয়েন্টমেন্ট না পেলেও ভিএফএস কমকর্তা এবং দালালদের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের বিনিময়ে সহজেই যখন-তখন অ্যাপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করে থাকে।

সূত্র জানায়, ভিসাপ্রত্যাশীদের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য সরবরাহ করা হয় না। আবেদন গ্রহণ করার পর কোনো আপডেট তারা আবেদনকারীকে প্রদান করে না। অ্যাপয়েন্টমেন্ট কবে পাবে, তাদের পাসপোর্ট এতদিন আটকে রাখার কারণ, আদৌ ভিসা সরবরাহ করা হবে কি না ইত্যাদি প্রশ্নের জবাব ভিএফএস বা দূতাবাস সরবরাহ করে না। এমনকি ভিএফএসের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য খুদেবার্তা ছাড়া আর কোনো মাধ্যম নেই। ফলে মাসের পর মাস এমন দোটানায় পড়ে নাজেহাল হয় আবেদনকারী বা তার পরিবার। সূত্র মতে, ভিএফএসের অ্যাপয়েন্টমেন্ট জটিলতার কারণে অনেক ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়েছে এবং দীর্ঘ সময় পর টাকার বিনিময়ে জমা দিলেও রিজেক্ট হয়েছে। ফলে ভিসাপ্রত্যাশীদের ১৮-২০ লাখ টাকা ক্ষতি হচ্ছে এবং টাকাগুলো আন্তর্জাতিক মাফিয়াদের হাতে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন উপায়ে।

সরেজমিন অনুসন্ধানকালে দেখা যায়, ভিএফএসের ওয়েটিং রুমে ভিসাপ্রত্যাশী ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও হরহামেশা বেশকিছু দালালের বিচরণ পরিলক্ষিত হয়। বিষয়ে ভিএফএসের জিজ্ঞাসাবাদে নিতান্তই দায়সারা গোছের জবাব পাওয়া যায়।

সূত্র জানায়, গত ৩১ মার্চ থেকে ভিএফএস মেইলিং সিস্টেমের মাধ্যমে অ্যাপয়েনমেন্ট নেওয়ার ঘোষণা দিলেও মেইলিং সিস্টেমে সিরিয়াল মেনটেনের কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই। এতে একই অসংগতির পুনরাবৃত্তি ঘটে। গত মে ভিএফএস চিটাগাং থেকে মেইলিং অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া ২০ জন আবেদনকারীর ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার কথা থাকলেও ৪০ জন মেসেজ পেয়েছেন বলে জানা যায়। যে অতিরিক্ত ২০ জন মেসেজ পেয়েছিলেন তাদের মেইলিং ডাটাবেজ চেক করে নানান ধরনের তথ্যের অসংগতি দেখা যায়। যার মধ্যে প্রধান অসংগতি হলো প্রটোকল ছাড়াই অতিরিক্ত ২০ জন অ্যাপয়েন্টমেন্টের কল পেয়েছিলেন।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, অফিস চলাকালীন নির্ধারিত সময়ে ভিসা স্লট ওপেনিংয়ের নিয়ম থাকলেও গভীর রাতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভিসা স্লট ওপেন করে ভিএফএস। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, ২০২২-২০২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় লাখ ১১ হাজার পাসপোর্ট ভিএফএস আটকে রাখে। এর মধ্যে ২০২২ সালে ৩৫ হাজার এবং ২০২৩ সালে ৭৬ হাজার পাসপোর্ট আটকে রাখা হয়। এতে করে ভিসার খরচ, ভিএফএস খরচ, দালাল খরচ, রেমিট্যান্স বঞ্চিতসহ দেশের ক্ষতি হয়েছে ৪১ হাজার ২২০ কোটি টাকা।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জ অগ্নিকান্ডে ৩ টি ঘর পুড়ে ছাই

প্রকাশ: ০৯:৪০ এএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে অগ্নিকান্ডে বসত বাড়ির তিনটি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। স্থানীয়দের সহায়তায় প্রায় ১ ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। 

 

রবিবার (১৯ মে) সকালে উপজেলার চন্দনগাঁতী দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মনো দেবের বাড়িতে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

 

মনো দেব জানান, ‘বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে প্রথমে আগুনের সুত্রপাত্র হয়। আমার ঘরে প্রথম আগুন লেগে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়লে মা ও ছোট ভাইয়ের ঘরে আগুন লাগে। তিনটি ঘরসহ আসবারপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় প্রায় ১ ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আসে। এতে আমাদের প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস এসে ছিলো কিন্তু রাস্তা উপরে নিচু নিচু গাছের ডাল থাকার করনে কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি।’

বেলকুচি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাষ্টার শহিদুল ইসলাম জানান, ‘খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হই। কিন্তু যেখানে অগ্নিকান্ডের ঘটনা সেখাকার রাস্তা নিচু নিচু গাছের ডাল থাকার কারণে আমাদের গাড়ি পৌঁছাতে পারিনি। আমারা প্রায় ১ কিলোমিটার পথ হেটেঁ যাওয়ার পরে ঘটনাস্থলে দেখি স্থানীদের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রনে এসেছে।'


আগুণ   বসতঘর   ক্ষয়ক্ষতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আজ থেকে ৬৫ দিন সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ

প্রকাশ: ০৮:৩৪ এএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন বৃদ্ধি, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য আজ (২০ মে) থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব ধরনের মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ থাকবে। সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০২০ এর ধারা এর উপধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ২৪ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে এই নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন জারি করে মৎস্য   প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৬৫ দিন দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব প্রকার মৎস্য নৌযান দিয়ে যে কোনো প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সময় সমুদ্রযাত্রার প্রবেশপথগুলোতে মনিটরিং জোরদার করা হবে এবং মৎস্য নৌযানের সমুদ্রযাত্রা শতভাগ বন্ধ রাখা হবে। সামুদ্রিক মৎস্য পরিবহন বন্ধের লক্ষ্যে সমুদ্র তীরবর্তী বরফকলসমূহ সীমিত পর্যায়ে চালু রাখা হবে সমুদ্রে মৎস্য আহরণকারী নৌযান নোঙ্গরস্থলে আবদ্ধ রাখা হবে।

মৎস্য আহরণে বিরত থাকা মৎস্যজীবীদের আপদকালীন বিকল্প আয় বা খাদ্য সহায়তা হিসেবে দুই কিস্তিতে ৬৫ দিনের জন্য ৮৬ কেজি হারে লাখ ১১ হাজার ৬২ জেলে পরিবারকে ভিজিএফ বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।


সামুদ্রিক   জলসীমা   মৎস্য আহরণ   নিষিদ্ধ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে: রাষ্ট্রপতি

প্রকাশ: ০৮:২১ এএম, ২০ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, দেশে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন ও সেবা প্রদানের পাশাপাশি শিল্পায়ন ও দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

সোমবার (২০ মে) ‘বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে আজকের পরিমাপ’।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সেবার সব ক্ষেত্রে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিত করতে সরকার গতানুগতিক পদ্ধতির ডিজিটাল রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ‘ওজন ও পরিমাপ মানদণ্ড আইন, ২০১৮’ ও ‘পণ্য মোড়কজাতকরণ বিধিমালা, ২০২১’ প্রণয়ন করা হয়েছে।

পণ্য ও সেবার মান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সব ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাপ নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনগণকে কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানে জাতীয় মান সংস্থা হিসেবে বিএসটিআইকে আরও দক্ষ, জবাবদিহিমূলক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিমিতিবোধ ও পরিমাপ বিজ্ঞানের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ব্যক্তি কিংবা জাতীয় জীবনে সঠিক পরিমাপ ব্যতীত টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। পরিমিতি জ্ঞান ও পরিমাপ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ‘বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস’ পালন একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

রাষ্ট্রপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথ পরিক্রমায় দেশকে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমন প্রত্যাশা করেন।

বাণীতে মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কর্তৃক বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস-২০২৪’ পালনের উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং দিবসটি উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।

তিনি বলেন, সঠিক পরিমাপের আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে শিল্প, কলকারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি উৎপাদিত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণসহ আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি সহজতর হচ্ছে; যা দেশের অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করছে।


রাষ্ট্রপতি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন