সৌদি আরবের দাম্মামে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার মক্কা থেকে ওমরাহ শেষে দাম্মামে ফেরার পথে আল কাসিম এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন দুজন।
দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলী মহল্লার মোবাররক শেখ (৪৬), তাঁর ছেলে তানজিল আবদুল্লাহ মাহি (১৭) ও ছোট মেয়ে মাহিয়া (১৩)। আহত ব্যক্তিরা হলেন মোবাররকের স্ত্রী আফরোজা বেগম ওরফে সিমা (৩৬) ও মেয়ে মিথিলা আক্তার ওরফে মীম (২০)। তাঁরা সবাই সৌদি আরবের দাম্মামে থাকতেন।
রোববার (৬ আগস্ট) দুপুরে ফরিদপুর শহরে নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের তিন সদস্যকে হারিয়ে বিলাপ করছিলেন মোবাররকের বাবা শেখ মোহাম্মদ আলী (৭৫) ও মা আলেয়া বেগম (৬৫)। ওই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোবাররক ২৫ বছর ধরে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে থাকতেন। সেখানে তিনি একটি ওয়ার্কশপের ব্যবসা করতেন। স্ত্রী-সন্তানেরা তাঁর কাছেই থাকতেন। বড় মেয়ে মিথিলা কিছুদিনের মধ্যেই উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডা যাবেন। সে জন্য পরিবারের সবাইকে নিয়ে ওমরাহ পালন করতে দাম্মাম থেকে মক্কায় যান মোবাররক। ওমরাহ শেষে একটি ল্যান্ডক্রুজার নিজেই চালিয়ে সবাইকে নিয়ে দাম্মামে ফিরছিলেন মোবাররক।
শনিবার সৌদি আরবের স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে চারটার দিকে আল কাসিম এলাকায় পেছন থেকে একটি গাড়ি মোবাররকের গাড়িকে অতিক্রম করতে গিয়ে ধাক্কা দেয়। এ সময় ল্যান্ডক্রুজারটি সড়কে কয়েকবার ডিগবাজি খায়। ঘটনাস্থলেই মোবাররক, তানজিল ও মাহিয়ার মৃত্যু হয়। আহত অবস্থায় আফরোজা ও তাঁর মেয়ে মিথিলাকে সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁরা এখনো চিকিৎসাধীন।
মোবাররকের ভাই রায়হান শেখ (৪৩) বলেন, বুধবার রাতে তাঁকে ফোন করেছিলেন ভাই। জানিয়েছিলেন মক্কায় যাচ্ছেন ওমরাহ করতে। এরপর ভাইয়ের সঙ্গে আর কথা হয়নি। শনিবার বিকেল তিনটার দিকে সৌদি আরব থেকে পরিচিত একজন এ দুর্ঘটনার কথা জানান।
ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলী মহল্লার বাসিন্দা শেখ মোহাম্মদ আলী ও আলেয়া বেগম দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে মোবাররক ছিলেন দ্বিতীয়। তাঁদের আদি বাড়ি চরভদ্রাসন এলাকার গাজীরটেক ইউনিয়নের হোসেনপুরে। ৩০ বছর আগে পদ্মার ভাঙনে বসতঘর বিলীন হলে ফরিদপুর শহরে আসেন তাঁরা। মোবাররক সৌদি আরবে যাওয়ার পর তাঁদের পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা আসে। তিনতলা একটি বাড়ি তৈরি করেন তিনি।
মোবাররকের বাবা মোহাম্মদ আলী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার কী সর্বনাশ হয়ে গেল। আমি কী অন্যায় করেছিলাম যে জন্য ছেলে ও নাতি-নাতনির মৃত্যুর খবর শুনতে হলো।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাবা (ছেলে) ও তাঁর দুই সন্তানের লাশ দেশে এনে কবর দিতে চাই। এ ব্যাপারে আমি সরকারের সাহায্য চাই।’
সৌদি আরব সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশি নিহত হাসপাতাল
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।