বাংলাদেশ সরকারকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান গ্রীন পার্টির দুই সিনেটরের ভিত্তিহীন, অশোভন ও অসম্মানজনক বক্তব্যের লিখিত প্রতিবাদ জানালো অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগ ও অস্ট্রেলিয়া যুবলীগ।
এ বছরের জুন মাসে এবং ২০২০ ও ২০২১ সালের বিভিন্ন সময়ে অস্ট্রেলিয়ার গ্রীন পার্টির দুই সিনেটর, যথাক্রমে ডেভিড শুব্রিজ এবং জ্যানেট রাইস অস্ট্রেলিয়ান সংসদের সিনেট ফরেন অ্যাফেয়ার্স, ডিফেন্স এ্যান্ড ট্রেড লেজিলেশন কমিটি এবং ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স এ্যান্ড ট্রেড কমিটির কাছে বাংলাদেশ সরকার সম্পর্কে ভিত্তিহীন, অশোভন ও অসম্মানজনক বক্তব্য পেশ করেছেন।
তাদের সেই অগ্রহণযোগ্য বক্তব্যের লিখিত প্রতিবাদ জানালেন অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টনএবং অস্ট্রেলিয়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান শামীম। গবেষণালব্ধ সাতাশ পৃষ্ঠার লিখিত এই প্রতিবাদ পত্রে তথ্য ও উপাত্ত দিয়ে সম্মানিত সিনেটরদ্বয়ের বক্তব্যের অসারতাকে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবাদপত্রে তারা বলেন, ‘আমাদের জানামতে এই দু’জন সিনেটরের কেউই কখনো বাংলাদেশে যাননি। তাঁরা অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন দল-উপদলের সাথেও তেমনভাবে সম্পৃক্ত নন। এমনকি তাঁরা বাংলাদেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস সম্পর্কেও তেমন ওয়াকিবহাল নন বলেই প্রতীয়মান হয়।’
প্রতিবাদপত্রে বাংলাদেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাস, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, পচাত্তরের ১৫ই আগস্ট স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যা, তিন নভেম্বর জাতীয় চার নেতার হত্যা, এবং খুনীদের রক্ষার্থে ইমডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি কিংবা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কমপক্ষে উনিশবার হত্যা চেষ্টার মত অসংখ্য মানবাধিকার বিরোধী ঘটনা তুলে ধরে ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন ও নোমান শামীম বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে তখন কেন কার্যকর কোন প্রতিবাদ করা হয়নি এবং কেন তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে কোন স্যাংশন বা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি?’
প্রতিবাদ পত্রে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলতে গিয়ে তাঁরা যে উপাত্ত ব্যবহার করেছেন, তা অসত্য। বিএনপির অনুসারী এনজিও কর্মীরা এই অসত্য উপাত্ত সরবরাহ করেছে যে, ৬০০ লোকের গুম হওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাদের অধিকাংশই জীবিত আছেন এবং সুস্থ আছেন। প্রতিবাদপত্রে মানবাধিকার রক্ষার নামে বিভিন্ন সময়ে অসত্য তথ্য সরবরাহ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বজুড়ে যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত জঘন্য কাজের সাথে জড়িত, সেই সবের সুদীর্ঘ তালিকা অকাট্য প্রমাণসহ উল্লেখ করা হয়। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যায় সংশ্লিষ্টতার দায়ে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের বিচার দাবি করা হয়।
ড. আবুল হাসনাৎ মিল্টন এবং নোমান শামিম সিনেটরদ্বয়কে বাংলাদেশ সম্পর্কে আরও ভালো করে জানার এবং ভ্রমণে যাবার অনুরোধ করেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন অংশের সাথে যোগাযোগ রাখবার জন্য অনুরোধ করেন। সবশেষে সিনেটরদ্বয়ের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, অস্ট্রেলিয়ার জনগণ কি একটি বিদেশি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার করবার জন্য তাদেরকে সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত করেছেন?
উল্লেখ্য, এই প্রতিবাদপত্রের অনুলিপি অস্ট্রেলিয়ান সিনেটের সভাপতি, অস্ট্রেলিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সিনেটর এবং সংসদ সদস্যদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া দুই সিনেটর বক্তব্য প্রতিবাদ অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগ যুবলীগ
মন্তব্য করুন
নতুন সরকার বাজেট ঘোষণা জাতীয় সংসদ
মন্তব্য করুন
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
ডোনাল্ড লু পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন