এক সপ্তাহে কোনো ওয়ার্ডে ১০ জনের বেশি ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেলে, সে ওয়ার্ডকে ‘লাল চিহ্নিত’ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে পরিচালনা করা হবে দিনব্যাপী বিশেষ চিরুনি অভিযান। এখন থেকে সপ্তাহের প্রতি শনিবার করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মশককর্মীসহ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সকল স্তরের জনগণকে সাথে নিয়ে এবং জনগণের সহযোগিতায় এই অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগের বিস্তার ঠেকানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (২৩ অগাস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার সংলগ্ন এলাকায় বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার লক্ষ্যে পরিচালিত কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ তথ্য জানান।
ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘আগামী শনিবার আমরা আরেকটি বিশেষ অভিযান নিচ্ছি (পরিচালনা শুরু করব)। যেটা ওয়ার্ডভিত্তিক। যে ওয়ার্ডে এক সপ্তাহে আমরা ১০ জনের অধিক রোগী সনাক্ত করা হবে, সে ওয়ার্ডগুলোকে আমরা বিশেষ লাল চিহ্নিত এলাকা হিসেবে আমরা ঘোষণা করছি। সে ওয়ার্ডের এলাকাবাসী, সকল হোল্ডিং-স্থাপনার মালিকদের আমরা আহবান করছি, তারা যেন নিজ নিজ বাসাবাড়ি, স্থাপনা, আঙ্গিনা নিজেরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন। আমরা এলাকাবাসীর দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রার্থনা করছি। সেদিন কেউ কাজে যাবেন না। এটাই সবচেয়ে বড় কাজ হবে। আমরা যদি নিজেদের জীবন সুরক্ষিত রাখতে চাই, তাহলে এটাই হবে আমাদের গুরু দায়িত্ব। আমাদের এই কর্মসূচিতে আপনারা অংশগ্রহণ করবেন। আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মশককর্মী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা থাকবে। আমরা দিনব্যাপী চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে এডিস মশার উৎসস্থলগুলোকে ধ্বংস করব। যার মাধ্যমে আমরা ডেঙ্গু রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব।’
৫, ২২, ৫৩ ও ৬০ নম্বর ওয়ার্ডে আগামী শনিবারে বিশেষ এই পরিচালনার ঘোষণা দিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘এই চারটি ওয়ার্ডে গত এক সপ্তাহে আমরা ১০ জনেরও বেশি রোগী পেয়েছি। এই চারটি ওয়ার্ডে আগামী শনিবার অভিযান পরিচালনা করব। এরপরে যদি আমরা দেখি যে, অন্য কোনো ওয়ার্ডে বা একাধিক ওয়ার্ডে এক সপ্তাহে দশ জনের বেশি রোগী আসছে, তাহলে আমরা সে ওয়ার্ডগুলোতেও (পরের শনিবারে বিশেষ এই অভিযান পরিচালনা) করব। আমরা মনে করি, এভাবে এডিস মশাকে পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। সেজন্য এলাকাবাসীকে পূর্ণমাত্রায় সম্পৃক্ত হতে হবে। তাহলে আমাদের এই কার্যক্রম আরো ব্যাপক সফলতা লাভ করবে। আমরা এলাকাবাসীকে সম্পৃক্ত করব।’
ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী স্থিতিশীল হলেও তা কমানোর পরিকল্পনা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘এখন ডেঙ্গু রোগের ভরা মৌসুম। এ সময় তা ঊর্ধ্বগামী হওয়ার কথা। কিন্তু আপনারা লক্ষ্য করেছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও বলছে -- ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগ এখন স্থিতিশীল। আমাদের রোগীর সংখ্যা আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পেরেছি। গতকালও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা একশর নিচে ছিল। ভরা মৌসুমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত দুরূহ হলেও আমরা কাজটি করে চলেছি। এজন্য ঢাকাবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা আমাদের একান্তই কাম্য। আপনাদের সচেতনতাই ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে, নির্মূলে সহায়ক হবে। তাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষকমণ্ডলী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ঢাকাবাসীকে অনুরোধ করব -- বৃষ্টি হলেও যেন আপনার বাড়ি, আঙ্গিনা ও আশপাশে বৃষ্টির পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। এটা নির্মূল করা, ধ্বংস করা আমাদের সকলের নাগরিক দায়িত্ব। তাই সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে আমাদের আজকের এই কর্মসূচি।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘ঢালাওভাবে বলা -- এটা কাজ করছে না, ওটা কাজ করছে না! আমার ফলাফলই তো বলে দিচ্ছে কোনটা কাজ করছে। কীটনাশক যদি কাজ না করত তাহলে এই ভরা মৌসুমে একশ’র নিচে রোগী রাখা -- কোনো দেশই তো পারছে না। যারা এ কথাগুলো বলছেন ওনারা কীটতত্ত্ববিদ নন। ওনারা আসলে বিভিন্ন (ধরনের) কীটনাশক বিক্রি করে ঢাকা সিটি করপোরেশনে চক্র সৃষ্টি করেছিল। (ওনারা) সেই একটি চক্রের (অংশ বিশেষ)।’
পরে ঢাদসিক মেয়র সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের অভ্যন্তর ঘুরে দেখেন এবং মশককর্মী ও পরিচ্ছন্নকর্মীদের দিকনির্দেশনা দেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা ঈমানের অঙ্গ। তাই আমি শিক্ষার্থীদের বলব, তোমরা সবসময় তোমাদের আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকার, সিটি করপোরেশন যে সকল দিকনির্দেশনা দিচ্ছে, সেগুলো যদি তোমরা সবাই অনুসরণ করো তাহলে এই ক্যাম্পাসে কেউ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হবে না। এটা বড় একটি উদাহরণ সৃষ্টি করবে এবং আমাদের এই কার্যক্রমকে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অনুসরণ করবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানবীর হাসান সৈকত বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংস ও ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে সচেতন করছি। এছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমের প্রতি সংহতি পোষণ করে ইতোমধ্যে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে কার্যক্রম চালু করেছি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমান, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহিম, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ডেঙ্গু লাল চিহ্নিত এলাকা
মন্তব্য করুন
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, শ্রমিকরাই জাতীয় অর্থনীতির চাকা সচল রাখে। তাই শ্রমিকদের
জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। উন্নত কর্মপরিবেশ শ্রমিকের কর্মদক্ষতা ও প্রতিষ্ঠানের
উৎপাদন বৃদ্ধি করে। তাই শোভন কর্মপরিবেশ তৈরিতে বিনিয়োগ করতে হবে।
‘শ্রমিক মালিক গড়ব দেশ; স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ এ প্রতিপাদ্যে দেশে
পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস। বুধবার (১ মে) সকালে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয়
শ্রমিক লীগ নওগাঁ জেলা শাখা আয়োজিত মহান মে দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার বাংলার মাটি যদি
থাকে, মানুষ যদি থাকে, একদিন এই বিধ্বস্ত বাংলাকেই আমি সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা বাংলায়
রূপান্তরিত করব।’ বাংলাদেশ এখন খাদ্য শষ্য উৎপাদনে স্বয়সম্পূর্ণ। বঙ্গবন্ধু বৈষম্যের
বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সর্বদা। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের
সর্বশ্রেষ্ঠ উন্নয়ন হয়েছে, হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। শ্রমিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের
কল্যাণে মালিকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মজুরি বৃদ্ধি করেছেন। দেশের ভেতরে ও বাইরে কর্মরত
শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অচিরেই স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানে নওগাঁ সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন
জলিল বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম
এ খালেক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাভেদ জাহাঙ্গীর সোহেল, বিভাস মজুমদার
গোপাল, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ বকুল, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি
মো. আব্দুল মজিদ, ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির রহমান উপস্থিত ছিলেন।
পরে এক বর্ণাঢ্য র্যালি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার শ্রমিক মে দিবস
মন্তব্য করুন
বেনাপোল পৌরসভার ঢাকা-বেনাপোল হাইওয়ে সড়কের রজনী ক্লিনিক এর সামনে দুইজন বাইসাইকেল চালক ও ঢাকা থেকে বেনাপোলগামী বাসের মধ্যে দুর্ঘটনায় গোলাম মোস্তফা (৪৮) নামে এক ধান কাটা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় তার সঙ্গী আনিসুর রহমান (৩৩) নামে আর একজন শ্রমিক মারাত্মক আহত হয়েছেন।
বুধবার (০১ মে) সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত গোলাম মোস্তফা ও আহত আনিসুর রহমান উভয় শার্শা উপজেলার লাউতাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় বাসের চালক, সুপারভাইজার এবং হেলপার পলাতক রয়েছে।
বেনাপোল পৌরসভার কাউন্সিলর শাহীন আলম জানান, ‘আমার পার্শ্ববর্তী লাউতাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফা ও আনিসুর রহমান দুইজনই মাঠে ধান কাটার শ্রমিক। তারা কাজের সন্ধানে বাইসাইকেল চালিয়ে বেনাপোল বাজারের উদ্দেশ্যে স্থানীয় রজনী ক্লিনিকের সামনে দিয়ে আসছিল। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতগামী একটি বাস তাদেরকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে গোলাম মোস্তফা মারা যায়। এবং আনিসুর রহমান মারাত্মকভাবে আহত হয়। আনিসুরকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে নাভারন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।’
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সুমন ভক্ত সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন শ্রমিক হতাহতের ঘটনা স্বীকার করে জানান, সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে সেখানে ফোর্স পাঠায়। সেখান থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার এবং আহতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনা শ্রমিক ধানকাটা ময়নাতদন্ত
মন্তব্য করুন
শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বঞ্চিত করলে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন
হলেও ছাড় নেই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি
বলেন, ৯৬ সালে বিরোধী দলে থাকাকালে আমি শ্রমিকদের দেখেছি তাদের মজুরি ছিল মাত্র ৮০০
টাকা। তখন সরকারে এসে আমরা মজুরি বাড়িয়েছিলাম। যতবার সরকারে এসেছি ততবারই মজুরি বৃদ্ধি
করেছি। শ্রমিকদের আরো উপযুক্ত করে গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।
বুধবার (১ মে) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মে
দিবস উপলক্ষ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনই
আওয়ামী লীগের লক্ষ্য। সরকার চায় দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠুক। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে
শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছে। শ্রমিকদের কল্যাণ দেখা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতার
পর মে দিবসকে প্রথমে শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতিও
দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, মা যেমন একটা রুগ্ন সন্তানকে বুকে নিয়ে লালন-পালন করে
গড়ে তোলেন, ঠিক সেভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতার পর শূন্য হাতে একটা
যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব হাতে নিয়ে সব কলকারখানা জাতীয়করণ করেন। শ্রমিকদের
অধিকার নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেন। তাদের কর্মসংস্থান যাতে ঠিক থাকে সে পদক্ষেপটাই তিনি
হাতে নিয়েছিলেন।
শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য মজুরি কমিশন গঠনের কথা উল্লেখ করে
শেখ হাসিনা বলেন, মে দিবসের সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। এদেশে মানুষের মধ্যে
যে বৈষম্য সে বৈষম্য তিনি দূর করতে চেয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আওয়ামী
লীগের একমাত্র লক্ষ্য। আমরা সব সময় সেই পদক্ষেপ নিই। জাতির পিতা যখন দেশটাকে গড়ে
তুলেছেন, তখন যে সব মালিক বাংলাদেশে ছিল শিল্প কলকারখানা মালিক তারা হবেন। আর যেগুলো
মালিকানাবিহীন সেগুলো সরকার চালাবে। সে ব্যবস্থাও তিনি করেছিলেন, সরকারি খাতকেও গুরুত্ব
দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, মাত্র নয় মাসের তিনি আমাদের একটি সংবিধান দেন। সংবিধানের
১৩ অনুচ্ছেদে আমাদের অর্থনৈতিক নীতিমালা কী? সেটা কিন্তু স্পষ্ট বলা আছে। সেখানে যেমন
সরকারি প্রতিষ্ঠার থাকবে, সমবায় হবে এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থাকবে। অর্থনীতিকে বহুমুখী
করে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, মানুষের জীবনমান উন্নত করার এটাই ছিল জাতির পিতা
লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে তিনি কাজ করেছেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। আমরা সরকার
গঠন করে আমাদের প্রধান কাজ হলো মানুষের কল্যাণ করা। সেই প্রচেষ্টাই আমরা হাতে নিয়েছিলাম।
আমরা আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ২০০৮ নির্বাচনের ইশতেহারে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মো.
মাহবুব হোসেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি
এইচ এম ইব্রাহীম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সভাপতি আরদাশীর কবির, জাতীয়
শ্রমিক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর কুতুব আলম মান্নান।
মন্তব্য করুন
জেলায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৬ টি ইটভাটাকে ৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় ইটভাটাগুলোর কিলন ভেঙ্গে দিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এ তথ্য জানান নওগাঁ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মলিন মিয়া।
এর আগে, রোববার (২৮ এপ্রিল) ও সোমবার (২৯ এপ্রিল) জেলার পত্নীতলা ও বদলগাছী উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ওই ছয়টি ভাটাকে জরিমানা করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট উইংয়ের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা সালেহা সুমী এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে মোবাইল কোর্টে প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নওগাঁ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের পরিদর্শক উত্তম কুমার। এ সময় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সহযোগিতা করেন।
অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র না থাকা, খড়ি পোড়ানো ও সঠিক পদ্ধতিতে ভাটার কার্যক্রম পরিচালনা না করায় পত্নীতলা উপজেলার ছালিগ্রাম এলাকার মেসার্স এমএবি ব্রিকসকে ৫০ হাজার টাকা, কাশিপুর এলাকার বিএসপি ব্রিকসকে ৫০ হাজার টাকা, বালুঘা এলাকার এসবিবি এফ ব্রিকসকে ১ লাখ টাকা ও চক দুর্গারায়াম এলাকার ফাতেমা ব্রিকসকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া বদলগাছী উপজেলার বুড়িগঞ্জ বাজার এলাকার আদিল ব্রিকসকে ৩ লাখ টাকা এবং এমবিএফ ব্রিকসকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি ইটভাটা ভেঙ্গে দিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর আগে, মার্চ মাসে সদর ও মান্দা উপজেলায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা ৬ টি ইটভাটায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
মন্তব্য করুন
দেশে নানা কারণে নির্যাতনের পাশাপাশি শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনাও বাড়ছে। দেশে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) পর্যন্ত ১২৯ জন শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৬ জন। আহত হয়েছেন ২১৩ জন। কারখানা, বাসাবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং সড়ক ও নৌপথে এসব ঘটনা ঘটেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পাশাপাশি মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিটি ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে। তবে পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। প্রায়ই শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় নিহতের ঘটনা ঘটছে।
এইচআরএসএসের তথ্যে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে ৯২টি শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১২৮ জন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাবে দুর্ঘটনায় ৪৪ জন শ্রমিক মারা গেছেন। এ সময়ে সাতটি গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন একজন। এ ছাড়া এপ্রিল মাসে ৩৭টি শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১১ জন শ্রমিক। এ সময়ে নির্যাতনে আহত হয়েছেন ৮৫ জন। এপ্রিল মাসে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাবে দুর্ঘটনায় ১৭ জন শ্রমিক মারা গেছেন।
মন্তব্য করুন
শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বঞ্চিত করলে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন হলেও ছাড় নেই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ৯৬ সালে বিরোধী দলে থাকাকালে আমি শ্রমিকদের দেখেছি তাদের মজুরি ছিল মাত্র ৮০০ টাকা। তখন সরকারে এসে আমরা মজুরি বাড়িয়েছিলাম। যতবার সরকারে এসেছি ততবারই মজুরি বৃদ্ধি করেছি। শ্রমিকদের আরো উপযুক্ত করে গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য।