বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং কাতারের জাতীয় মানবাধিকার কমিটির মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪শে আগস্ট) সকাল ১০ টায় হোটেল সোনারগাঁ’তে কমিশনের উদ্যোগে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণাললের মন্ত্রী আনিসুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।
কমিশনের পক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য জনাব মো. সেলিম রেজা। কাতারের মানবাধিকার কমিশনের পক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং গেস্ট অফ অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাতারের জাতীয় মানবাধিকার কমিটির ডেপুটি চেয়ারপারসন ড. মোহাম্মদ সাইফ আল কুয়ারি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির। এছাড়াও অনুষ্ঠানে কাতারের জাতীয় মানবাধিকার কমিটির মহাসচিব সুলতান আল জামালি, বাংলাদেশে নিযুক্ত কাতার দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স সাঈদ জারাল্লা আল- সামিখ এবং উক্ত দুতাবাস ও কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
স্বাক্ষরিত সমঝোতা চুক্তির আওতায় দুই দেশের মানবাধিকার কমিশন/ কমিটি আন্তর্জাতিক কনভেনশনের আলোকে নিজ নিজ জাতীয় আইনি কাঠামো শক্তিশালীকরণ, মানবাধিকার বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ এবং যৌথ গবেষণা সম্পাদন, যৌথভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি ও মিডিয়া কার্যক্রম গ্রহণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম যৌথভাবে সম্পাদন করতে পারবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব আনিসুল হক পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিশেষত প্রবাসী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় কাতার ও বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একযোগে কাজ করবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, জাতীয় মানবাধিকার সংস্থাসমূহ নিজ নিজ দেশের মানবাধিকার সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। আমি আশা করব, এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কাতারের মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নে নিজেদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হবে।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর দুই কমিশনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কাতারে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় কাতারের মানবাধিকার কমিটির সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও, আন্তর্জাতিকভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে এ স্ট্যাটাস প্রাপ্তির বিষয়ে কাতারের মানবাধিকার কমিশন সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করে। কমিশন চেয়ারম্যান ড কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কাতারের জাতীয় মানবাধিকার কমিটির চেয়ারপারসন গ্লোবাল এলায়েন্স অফ ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ইন্সটিটিউশনস এর চেয়ারপারসন। কাজেই বাংলাদেশের কমিশনকে এ স্ট্যাটাস প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কাতারের মানবাধিকার কমিশন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে। ফলে, এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
বাংলাদেশ কাতার মানবাধিকার সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জেলা প্রশাসক সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।