শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিদেশি নাগরিকদের বিবৃতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার নেতৃস্থানীয় ২০০ বাংলাদেশি আমেরিকান নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। তারা বিশ্ব নেতাদের বিবৃতিকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ আখ্যায়িত করে গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, এই বিবৃতিটি কোনো সঠিক তথ্য না জেনেই দেওয়া হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেওয়া চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদ আর দুই লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে আক্রমণ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, কর ফাঁকি ও শ্রম অধিকারের অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। এইসব অভিযোগের মামলা এখনো বিচারাধীন এবং কোনো রায় এখনো হয়নি। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, স্বাক্ষরকারীরা যাদের অনেকেই আইনের শাসন নিয়ে কথা বলেন- তারাই বাংলদেশে ড. ইউনূসের বিচারের অভিযোগগুলো নিয়ে কোনোকিছু না জেনেই একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী বাংলাদেশি আমেরিকানরা আরও বলেন, আমরা অনেক বছর যাবৎ ড. ইউনূসের অসদাচরণ পর্যবেক্ষণ করে আসছি। জনসংযোগ এবং প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে ড. ইউনূসের প্রতারণার কৌশল সম্পর্কেও আমরা সচেতন। আমরা মার্কিন নাগরিক হিসেবে এসব নিয়ে আগে কখনো অভিযোগ করিনি। আমরা বিশ্বাস করি বিবৃতিতে ড. ইউনূসের পক্ষে স্বাক্ষরকারীরা মিথ্যাচার ও প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক যে, ইউনূসের পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা শুধু ড. ইউনূসের পক্ষে ন্যায়বিচার প্রক্রিয়ার আহ্বান জানিয়েই থামেনি, অধিকন্তু তারা বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া, আইনের শাসন ও অন্যান্য বিষয়ের কথাও উল্লেখ করেছে- যেগুলোর সাথে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো সম্পর্ক নেই। বিবৃতির একটি অংশে বলা হয়েছে: ‘...আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এবং নির্বাচন কমিশন দেশের সব বড় দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। আগের দুটি জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।’ এই ধরনের বিবৃতি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অতীতে তথাকথিত ‘প্রধান দলগুলো’ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি ছিল অশ্রদ্ধাশীল।
বিবৃতিতে নেতারা আরো উল্লেখ করেন, এটা আমাদের কাছে স্পষ্ট যে, স্বাক্ষরকারীরা একটি সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে অকারণে বিবৃতি দিয়ে নিজেদের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন। বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ে তাদের দাবি পুরো বিচারব্যস্থাকে অসম্মান করা ও একটি সার্বভৌম জাতির মাননীয় বিচারকদের অমর্যাদার করার শামিল। বাংলাদেশে উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার গত পনেরো বিশ বছরের তুলনায় অনেক এগিয়ে। লাখ লাখ প্রান্তিক নাগরিকের জীবন মান উন্নয়ন বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বাংলাদেশ বিশ্বে একটি রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নেতৃস্থানীয় বাংলাদেশি আমেরিকানরা বলেন, দলগতভাবে বা স্বতন্ত্রভাবে দেওয়া এই বিবৃতি প্রত্যাহার করে ১৭০ মিলিয়ন বাংলাদেশির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন- ড. নুরন নবী (কাউন্সিলম্যান, নিউজার্সি), এবিএম নাসির (অধ্যাপক, নর্থ ক্যারোলিনা), আবু আহমেদ মুসা (কাউন্সিলম্যান, মিশিগান), রানা হাসান মাহমুদ (প্রকৌশলী, ক্যালিফোর্নিয়া), ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ (অধ্যাপক, পেনসিলভেনিয়া), স্বীকৃতি বড়ুয়া (আইটি প্রকৌশলী, নিউইয়র্ক), আবুল খান (স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ, নিউ হ্যাম্পসায়ার), মাহবুবুল তয়ুব আলম (মেয়র, মিলবোর্ন, পেনসিলভেনিয়া), মো. নুরুল হাসান (কাউন্সিলম্যান, মিলবোর্ন, পেনসিলভেনিয়া), ড. সুফিয়ান এ খন্দকার (বিজ্ঞানী), ড. আশরাফ আহমেদ (বিজ্ঞানী ও লেখক), ড. জোতি প্রকাশ দত্ত (লেখক, ফ্লোরিডা), প্রফেসর আবু নাসের রাজিব (ক্যালিফোর্নিয়া) মোরশেদ আলম (অ্যাক্টিভিস্ট, নিউইয়র্ক), আহাদ আহমেদ (প্রকৌশলী, মিশিগান), ড. বামন দাস বসু (বিজ্ঞানী, মাসাচুসেটস), সাফেদা বসু (অ্যাক্টিভিস্ট, মাসাচুসেটস), ড. খন্দকার মনসুর (কমিউনিটি লিডার, নিউইয়র্ক) ড. মহসিন পাটোয়ারি (অধ্যাপক, নিউইয়র্ক) জামাল উদ্দিন হোসেন (সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, আলাবামা), ড. মহসিন আলী (লেখক, নিউইয়র্ক), দস্তগীর জাহাঙ্গীর (সাংবাদিক, ভার্জিনিয়া), ফাহিম রেজা নূর, (অ্যাক্টিভিস্ট, নিউইয়র্র্ক), ড. জিনাত নবী (বিজ্ঞানী, নিউজার্সি), হাসান ফেরদৌস (লেখক, নিউইয়র্ক), মেজর (অব.) মঞ্জুর আহমেদ (কমিউনিটি লিডার, নিউইয়র্ক), ড. প্রদীপ কর (বিজ্ঞানী, নিউইয়র্র্ক), ডা. প্রতাপ দাস (চিকিৎসক, নিউইয়র্র্ক), কৌশিক আহমেদ (সম্পাদক, নিউইয়র্ক), লাভলু আনসার (সাংবাদিক, নিউইয়র্ক), রাফায়েত চৌধুরী (অ্যাক্টিভিস্ট, নিউইয়র্র্ক), আবু তাহের (অ্যাক্টিভিস্ট, পেনসিলভেনিয়া), সউদ চৌধুরী (অ্যাক্টিভিস্ট, নিউইয়র্ক), ড. মিজান আর মিয়া, (অধ্যাপক, ইলিনয়)।
ড. জামিল তালুকদার, (অধ্যাপক, উইসকনসিন), ড. শাহাদাত হোসেন, (অধ্যাপক, নিউইয়র্ক), ড. হাসান মাহমুদ, (অধ্যাপক, নিউজার্সি), ড. খন্দকার মনসুর, (বিজ্ঞানী, মেরিল্যান্ড), ড. সৈয়দ আবু হাসনাত, (শিক্ষক, মাসাচুসেটস), মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, (ব্যবসায়ী, জর্জিয়া), তাজুল ইমাম, (শিল্পী, নিউইয়র্র্ক), আব্দুর রহিম বাদশা, (ব্যবসায়ী, নিউইয়র্র্ক), ড. মিজানুর রহমান, (বিজ্ঞানী), আব্দুল কাদের মিয়া (কমিউনিটি লিডার, নিউইয়র্র্ক), জাকারিয়া চৌধুরী, (কমিউনিটি লিডার, নিউইয়র্ক), বেদারুল ইসলাম বাবলা, কমিউনিটি লিডার, নিউইয়র্ক, মিন্টু রহমান, কমিউনিটি লিডার, জর্জিয়া, নাদিরা রহমান, কমিউনিটি লিডার, জর্জিয়া, আরেফিন বাবুল, কমিউনিটি লিডার, জর্জিয়া, ড. শাহাব সিদ্দিক, বিজ্ঞানী, জর্জিয়া, মোহাম্মদ আলী বাবুল, আইনজ্ঞ, নিউইয়র্ক, মোহাম্মদ মাওলা, কমিউনিটি লিডার, জর্জিয়া, ঝর্ণা চৌধুরী, (থিয়েটার শিল্পী, নিউইয়র্কর্), লুতফুন নাহার লতা (শিল্পী, নিউইয়র্ক), ডা. ফারুক আজম, চিকিৎসক, নিউজার্সি, মিয়ান হেলাল, ব্যবসায়ী, নিউজার্সি, শামসুন নাহার হেলেন, প্রযুক্তিবিদ, নিউজার্সি, ইকবাল ইউসুফ, কমিউনিটি লিডার, মাসাচুসেটস, আতিকুর রহমান, কমিউনিটি লিডার, রুমি কবির, লেখক, জর্জিয়া, আলী আহমদ ফারিস, ব্যবসায়ী, মিশিগান, রাশেদ আহমেদ, কমিউনিটি লিডার, নিউইয়র্র্ক, সীতাংশু গুহ, (সাংবাদিক, নিউইয়র্র্ক), ড. দিলীপ নাথ, শিক্ষক, নিউইয়র্র্ক, এমএ সালাম, (কমিউনিটি লিডার, নিউজাসির্), ফকির ইলিয়াস, (কবি, নিউইয়র্কর্), মিশুক সেলিম, (কবি, নিউইয়র্র্ক), খালেদ শরীফউদ্দিন, কবি, নিউইয়র্ক, আবু সাঈদ রতন, কবি, হাসান আল আবদুল্লাহ, কবি, নিউইয়র্ক, মিথুন আহমেদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নিউইয়র্ক, মিনহাজ আহমেদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নিউইয়র্ক, শাখাওয়াত আলী, কমিউনিটি লিডার, নিউইয়র্ক, ড. আব্দুল বাতেন, বিজ্ঞানী, নিউইয়র্র্ক, ড. হাসান মাসুদ, শিক্ষক, নিউইয়র্ক, শহীদ হাসান, কণ্ঠশিল্পী, নিউইয়র্র্ক, রথীন্দ্র নাথ রায়, কণ্ঠশিল্পী, নিউইয়র্ক, ইশিতিয়াক রূপু, কবি, নিউইয়র্র্ক, গোপাল স্যান্নাল, কমিউনিটি লিডার, নিউইয়র্ক, ড. মাহবুবুর রহমান টুকু, ব্যবসায়ী, নিউইয়র্র্ক, ড. নাহিদ বানু।
বিজ্ঞানী, নিউজার্সি, মাহবুব রেজা রহিম, কমিউনিটি লিডার, আরিজোনা, ড. মনোয়ার হোসেন, বিজ্ঞানী, নিউজার্সি, গোলাম ফারুক ভূঁইয়া, ব্যবসায়ী, নিউজার্সি, রেহান রেজা, কমিউনিটি লিডার, ক্যানসাস, ড. হাসান মামুন, শিক্ষক, নিউজার্সি, জাহেদুল মাহমুদ জামি, কমিউনিটি লিডার,ক্যালিফোর্নিয়া, তৌফিক সোলাইমান খান, কমিউনিটি লিডার, ক্যালিফোর্নিয়া, নজরুল আলম, কমিউনিটি লিডার, ক্যালিফোর্নিয়া, সাইফুর রহমান ওসমানি, সাংবাদিক, ক্যালিফোর্নিয়া, ড. গোলাম মোস্তফা, অধ্যাপক, পেনসিলভেনিয়া, রবিউল করিম বেলাল, (ব্যবসায়ী, পেনসিলভেনিয়া), ড. আহসান চৌধুরী, (প্রকৌশলী, টেক্সাস), হাশমত মোবিন, (কমিউনিটি লিডার, টেক্সাস), শাহ হালিম, (কমিউনিটি লিডার, টেক্সাস), ম্যাগি হালিম, (কমিউনিটি লিডার, টেক্সাস), ডা. আনিসুল আসলাম, (চিকিৎসক, ক্যালিফোর্নিয়া), মোহাম্মদ বিল্লাহ রানা, (ব্যবসায়ী, ক্যালিফোর্নিয়া), হাদি বিল্লাহ রোবা, (ব্যবসায়ী, নেভাডা), কাজী শাহরিয়ার রহমান (প্রকৌশলী, ক্যালিফোর্নিয়া), করিমুল হক চৌধুরী, (ব্যবসায়ী, ক্যালিফোর্নিয়া), বশীর আথার, (বিজ্ঞানী, ক্যালিফোর্নিয়া), তপন মন্ডল, (এক্টিভিস্ট, ক্যালিফোর্নিয়া), শাহ আলম, (কমিউনিটি লিডার, ক্যালিফোর্নিয়া), মমিনুল হক বাচ্চু, (কমিউনিটি লিডার, ক্যালিফোর্নিয়া), তাসনিম সালাম আসলাম, (প্রকৌশলী, ক্যালিফোর্নিয়া) ও আবেদ মনসুর, (কমিউনিটি লিডার, ক্যালিফোর্নি) প্রমুখ।
ড. ইউনূস বিবৃতি নিন্দা বাংলাদেশি আমেরিকান নাগরিক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।