ইনসাইড বাংলাদেশ

বাইডেনের সেলফি: যত ব্যাখ্যা

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ এর সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছবি এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচনার বিষয়। এই ছবির মাধ্যমে কি প্রমাণ হয়? এই নিয়ে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ চলছে। আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছে, এই ছবি বিএনপির ঘুম হারাম করে দিয়েছে। তবে বিএনপির ঘুম হারাম করেছে কি করেনি সেটা বড় কথা নয়। বিএনপির নেতাদের মনোভাব যাই হোক না কেন, কর্মীরা এই সেলফিতে ধাক্কা খেয়েছে এটা বলাই বাহুল্য। তবে এই ছবির মানে কি—এই নিয়ে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক অঙ্গনে নানা রকম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ চলছে। এ পর্যন্ত এই ছবির পাঁচটি ব্যাখ্যা আমরা পেয়েছি। পাঠকদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে আমরা পাঁচটি ব্যাখ্যাই উপস্থাপন করছি। পাঠক, আপনি মিলিয়ে নিন আপনার ব্যাখ্যার সাথে এই পাঁচটি ব্যাখ্যা মেলে কিনা;

ব্যাখ্যা-১, স্রেফ সৌজন্যতা: যারা কূটনৈতিক পাড়ায় বেশি ঘোরাফেরা করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি, রাজনীতি ইত্যাদির সম্পর্কে ওয়াকিবহাল তারা বলছেন, এই ছবির আলাদা কোনো তাৎপর্য নেই। এটা স্রেফ জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে হাস্যজ্জোলভাবে কথা বলেছেন, করমর্দন করেছেন, তার হাত ধরে শেখ রেহানার সঙ্গে কথা বলেছেন। সায়মা ওয়াজেদকে সঙ্গে নিয়ে শেখ রেহানার সঙ্গে সেলফি তুলেছেন। সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের কাছ থেকে কার্ড চেয়ে নিয়েছেন। এসবই সৌজন্যতা এবং আনুষ্ঠানিকতা। জো বাইডেন এমনিই একজন সজ্জন, ভদ্রলোক হিসেবে পরিচিত। মার্কিন রাজনীতিতে তারা যাকে পর্যবেক্ষণ করেছেন তারা জানেন যে তার ভদ্রতা এবং শিষ্টাচার অনেক উঁচুতে। এ কারণেই তিনি এই সমস্ত করেছেন। এর সাথে রাজনীতি বা অন্য কোন কিছু জড়ানো সঠিক হবে না। 

ব্যাখ্যা-২, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বরফ গলেছে: আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এই ব্যাখ্যাটি দেওয়ার চেষ্টা করছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যে দূরত্ব এবং সম্পর্কের অস্বস্তি ছিল সেটি কেটে গেছে। বাইডেন যদি আওয়ামী লীগের ব্যাপারে নেতিবাচক থাকতো, বর্তমান সরকারের ব্যাপারে নেতিবাচক থাকতো তাহলে এরকম ছবি তুলতেন না। এই ছবির মাধ্যমে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়েছে যে, বাইডেন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে বা কিছুটা নমনীয় হয়েছে। এই ব্যাখ্যাটি আওয়ামী লীগ বিভিন্ন স্থানে দেওয়ার চেষ্টা করছে এবং আওয়ামী লীগের নেতারা এরকম ব্যাখ্যায় খুশি।

ব্যাখ্যা-৩, বাইডেন কিছু না, দেশ চালায় সিআইএ, এফবিআই: জো বাইডেনের ছবির ওপর আরেক রকম ব্যাখ্যা এসেছে। এই ব্যাখ্যাটি দেওয়া হয়েছে যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার, রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে গভীর পড়াশোনা করেন তাদের পক্ষ থেকে এই ব্যাখ্যাটা দেওয়া হয়েছে। তারা বলছেন যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট আসলে কিছুই না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক নীতি এবং কর্মপন্থা নির্ধারণ করে এফবিআই, সিআইএ সহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেভাবে সিদ্ধান্ত নেয় সেভাবেই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে কাজ করতে হয়। অনেক বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানেন না। তাকে শুধু সামনে রাখা হয়। তারা মনে করছেন যে, এই ছবি কোনোভাবেই প্রমাণ করে না যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বা নীতির কোন পরিবর্তন হয়েছে। বরং এই ছবির মধ্যে প্রমাণিত হয় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আসলে বাংলাদেশ বা তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর প্রেসিডেন্টের মতো ক্ষমতাবান নন। বরং সেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যা করে সেই অনুযায়ী তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

ব্যাখ্যা-৪, ঝড়ের আগে আলামত: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতি সৌজন্যতা, অতি ভদ্রতা অনেক সময় একটি দেশের জন্য ক্ষতিকর—এমন একটি ব্যাখ্যাও এখন দেওয়া হচ্ছে। সাধারণত যারা বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং বামপন্থায় বিশ্বাসী তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে এরকম একটি ব্যাখ্যা সামনে হাজির করেছেন। তারা মনে করেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কারো বন্ধু হতে পারে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যাদের বন্ধু তার শত্রুর অভাব হয় না। আর এ কারণেই জো বাইডেনের এই ছবিটি একটি ঝড়ের আলামত হিসেবে তারা মনে করছেন। 

ব্যাখ্যা-৫, ভারতকে খুশি করতেই সেলফি: জো বাইডেনের এই ছবি ভারতকে খুশি করার জন্য—এমন ব্যাখ্যাও দিচ্ছেন কেউ কেউ। তারা মনে করেন যে, জো বাইডেন দিল্লিতে গেছেন নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে। এখানে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত একটি পার্টনার। ভারত দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। আর এ কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বাইরে যে যাবে না বা ভারতকে খুশি করার জন্যই এরকম একটি নাটক সাজিয়েছেন। এর মাধ্যমে ভারতের হৃদয় জয় করতে চেয়েছেন জো বাইডেন। 

ব্যাখ্যা যাই হোক না কেন এই সেলফি নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠ যে সরগরম থাকবে সেটা বলাই বাহুল্য।

জো বাইডেন   জি-২০ সন্মেলন   শেখ হাসিনা   নয়াদিল্লি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আজ বিশ্ব মা দিবস

প্রকাশ: ০৮:৫২ এএম, ১২ মে, ২০২৪


Thumbnail

আজ রোববার (১২ মে) সারা বিশ্বে পালন করা হচ্ছে মা দিবস। এই দিনটি মাকে বিশেষভাবে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা জানানোর দিন। প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালন করা হয় বিশ্ব মা দিবস।

মাকে নিয়ে দারুণ কবিতা লিখেছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি লুকোচুরি নামক কবিতায় বলেছেন, ‍আমি যদি দুষ্টুমি করে চাঁপার গাছে চাঁপা হয়ে ফুটি, ভোরের বেলা মা গো, ডালের পরে কচি পাতায় করি লুটোপুটি, তবে তুমি আমার কাছে হারো, তখন কি মা চিনতে আমায় পারো। তুমি ডাক, খোকা কোথায় ওরে।

মা-পৃথিবীর মধুরতম ডাক। মা শব্দের অতলে লুকানো গভীর স্নেহ, মমতা আর পৃথিবীর সবচেয়ে অকৃত্রিম ভালোবাসা। শৈশব থেকে আনন্দ-বেদনা-ভয় কিংবা উদ্দীপনা-প্রতিটি মানবিক অনুভূতিতে জড়িয়ে থাকে মায়ের নাম। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের সবশেষ আশ্রয়স্থল মমতাময়ী মায়ের আঁচল।

বিশেষ এই দিবসটি কীভাবে এলো তা হয়তো অনেকেরই অজানা। ইতিহাস বলছে, অনেক পথ পেরিয়ে এই দিবসটি নতুন রূপ পেয়েছে। ধারণা করা হয়, মা দিবসের সূচনা প্রাচীন গ্রিসের মাতৃরূপী দেবী সিবেলের এবং প্রাচীন রোমান দেবী জুনোর আরাধনা থেকে।

এ ছাড়া ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য অনেক আগে থেকেই মায়েদের এবং মাতৃত্বকে সম্মান জানানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট রোববারকে বেছে নিয়েছিল। ষোড়শ শতকে এটি ইংল্যান্ডে মাদারিং সানডে বলে পরিচিতি লাভ করে।

তবে ইতিহাসবিদদের মতে, জুলিয়া ওয়ার্ড হোই রচিত "মাদার্স ডে প্রক্লামেশন" বা "মা দিবসের ঘোষণাপত্র" মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মা দিবস পালনের গোড়ার দিকের প্রচেষ্টাগুলোর মধ্যে অন্যতম।

১৮৭০ সালে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পৈশাচিকতার মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে শান্তির প্রত্যাশায় জুলিয়া একটি ঘোষণাপত্র লেখেন। এরপর যুদ্ধ শেষে পরিবারহীন অনাথদের সেবায় ও একত্রীকরণে নিয়োজিত হন মার্কিন সমাজকর্মী আনা রিভিজ জার্ভিস ও তার মেয়ে আনা মেরি জার্ভিস।

এ সময় তারা জুলিয়া ওয়ার্ড ঘোষিত মা দিবস পালন করতে শুরু করেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে আনা রিভিজ জার্ভিস ১৯০৫ সালের ৫ মে মারা যান।

মায়ের মৃত্যুর পর আনা মেরি জার্ভিস মায়ের শান্তি কামনায় ও তার সম্মানে সরকারিভাবে মা দিবস পালনের জন্য প্রচারণা চালান। তিন বছর পর ১৯০৮ সালের ১০ মে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার আন্দ্রেউজ মেথডিস্ট এপিসকোপাল চার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম মা দিবস পালন হয়।

এরপর ১৯১২ সালে এই দিবসটিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ব্যাপক প্রচার শুরু হয়। এই প্রচার ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কানাডা, মেক্সিকো, চীন, জাপান, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকায়।

এই প্রচারের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯১৪ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস ও জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই প্রতিটি দেশে মায়েদের সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এই দিনটি উৎসর্গ করা হয়। দেশে দেশে পালন করা হয় বিশ্ব মা দিবস। 


বিশ্ব   মা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রংপুর মেডিকেলের আইসিইউতে আগুন

প্রকাশ: ১১:০৬ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের ৩ নম্বর এসিতে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (১১ মে) বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় আধা ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল ওয়ার্ডটি। তবে, বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।

ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ড হায়দার আলী বলেন, ‘এখানে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট হয়। সঙ্গে সঙ্গে আমরা সেটা নিয়ন্ত্রণ করি।’

হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর স্বজন সজল জানান, বিকেলে কিছুক্ষণের জন্য বিদ্যুৎ চলে যায়। পরে আবার চলে আসে। এখন কোনো সমস্যা নাই।

একাধিক রোগীর স্বজন জানান, হাসপাতালে তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

আইসিইউ ওয়ার্ডের ইনচার্জ জামাল উদ্দিন মিন্টু জানান, ৩টা ৫৫ মিনিটে ওই ওয়ার্ডের ৩ নম্বর এসির সার্কিট পুড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সেটি বন্ধ করে জরুরি লাইন চালু করা হয়। মেইন লাইন থেকে বিদ্যুৎ আধা ঘণ্টা বন্ধ ছিল। এখন সব কিছু ঠিক আছে।

এ বিষয়ে রংপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক বাদশা আলম কালবেলাকে বলেন, ‘অগ্নিসংযোগের ঘটনা আমরা জানি না।’


আগুন   রমেক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সরকারের প্রথম চার মাস: রাজনীতিতে স্বস্তি অর্থনীতিতে উৎকণ্ঠা

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

একটি নতুন সরকারের প্রথম চার মাস সময়কে বলা হয় হানিমুন পিরিয়ড। এই সময় সাধারণত সরকারের দোষ ত্রুটি বা সমালোচনাগুলোকে উপেক্ষা করা হয়। সরকারের কর্মসূচি এবং পরিকল্পনাগুলোর দিকে সাধারণ মানুষের নজর রাখেন ভবিষ্যতে সরকার কী করবে তার একটা ইঙ্গিত পাওয়া যায় প্রথম চার মাসে। আর এই কারণেই সময়টাকে হানিমুন পিরিয়ড বলা হয়। কিন্তু যেহেতু আওয়ামি লিগ সরকার পুরনো টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় এসেছে তাই সে কারণেই আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য সেই হানিমুন পিরিয়ড আর প্রযোজ্য হয়নি। বরং নতুন সরকার আগের অতীতের ভুল ত্রুটিগুলো কীভাবে কাটিয়ে ওঠে সে ব্যাপারে সকলের মনোযোগ ছিল।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নতুন মেরুকরণ

আওয়ামী লীগ সরকার টানা চতুর্থবার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল এক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই। এই নির্বাচন হবে কি না, নির্বাচনের পর আন্তর্জাতিক মহল নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে কি না, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী ভূমিকা নেবে ইত্যাদি নানা অনিশ্চয়তা সংকট এবং আলোচনার মধ্যেই ৭ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার ১১ জানুয়ারি টানা চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করেন। তিনি নতুন এবং পুরনো মিলিয়ে তার মন্ত্রিসভাকে সাজান৷ অন্য ৩ বারের মতো মন্ত্রীদের ঢালাও ভাবে বাদ না দিয়ে বেশ কিছু পুরনো মন্ত্রী এবার নতুন মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নিয়েছেন। আর এই মন্ত্রিসভার আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য ছিল, মন্ত্রিসভাকে একটি রাজনৈতিক চরিত্র দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। আওয়ামী লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমানের মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতারা মন্ত্রিসভায় জায়গা পান। ফলে এই মন্ত্রিসভা নিয়ে মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল।

প্রথম চার মাসে মন্ত্রিসভা প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে বলেই অনেকে মনে করেন। কয়েকজন মন্ত্রীকে বেশ উজ্জল এবং আলোকিত দেখা গেছে। মানুষের জন্য কাজ করা তাদের কমিটমেন্ট। সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশেষ করে নতুন মন্ত্রী হওয়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমানের কর্মতৎপরতা ছিল ছোখে পড়ার মত। তবে নতুন সরকার গাঠিত হওয়ার পর যে রাজনৈতিক সংকটের আশঙ্কা করা হয়েছিল সে রাজনৈতিক সংকট থেকে সরকার শুরুতে কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশের উপর যে নেতিবাচক মনোভাব ছিল নির্বাচনের পর তা কেটে যেতে শুরু করেছে। বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছে। এটা সরকারের জন্য একটা বড় স্বস্তি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নির্বাচনের পর মিয়ে গেছে। তারা এখন অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে। বিভিন্নরকম কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তারা নিজেদের হতাশা কাটানোর চেষ্টা করছে। সরকারের সামনে কোন বড় ধরনের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ নেই বললেই চলে।

আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদের-একরাম চৌধুরীর নোয়াখালীর বিরোধ: যেখান থেকে শুরু

তবে প্রথম চার মাসে অর্থনৈতিক সংকট ভয়াভয় হয়ে উঠছে। অর্থনৈতিক সংকটই সরকারে কাছে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা অর্থনৈতিক সংকটকে বাড়িয়ে দিয়েছে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, ব্যাংকিং সেক্টরে অনিয়ম, লাগামহীন দুর্নীতি, অর্থপাচার ইত্যাদি ইস্যু গুলোকে অর্থনীতিতে একটি নাজুক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ব্যাংকিং সেক্টর এখন একটি হতাশাজনক চিত্র একই সাথে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। বাংলাদেশকে এখন ঋণ নিয়ে চলতে হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ আয়ের উৎস কমে গেছে আর সব কিছু মিলিয়ে সামনের দিনগুলোতে অর্থনৈতিক সংকটে একটি নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। এই পরিস্থিতি থেকে কিভাবে উত্তরণ করা যায় সেটিই হল এখন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।


আওয়ামী লীগ   মন্ত্রিসভা   সরকার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫-প্রত্যাশীদের বিক্ষোবে পুলিশের বাধা, আটক ১৫, আলটিমেটাম

প্রকাশ: ১০:০৩ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

গণভবনের উদ্দেশে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলনরত একদল ব্যক্তি। বেলা তিনটার দিকে এ কর্মসূচি থেকে ১৫ জনকে শাহবাগ থানা-পুলিশ আটক করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আটককৃতদের ছেড়ে দিতে রাত ১০টা পর্যন্ত সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

শনিবার (১১ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার দাবিতে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫-প্রত্যাশী সমন্বয় পরিষদ’ নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে এই কর্মসূচি ডাকা হয়েছিল।

রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। সমাবেশ শেষে বেলা তিনটার দিকে আন্দোলনকারীরা গণভবনের উদ্দেশে মিছিল নিয়ে যাত্রা করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিছিলটি শাহবাগ মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এ সময় পুলিশ তাদের ব্যাপক মারধর ও লাঠিপেটা করে এবং তাদের ১৫ জনকে আটক করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। এরপর ৩৫-প্রত্যাশীরা আবার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন। সন্ধ্যায় সেখানে সংবাদ সম্মেলন করে ১৫ শিক্ষার্থীকে আটকের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫-প্রত্যাশী সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শরিফুল হাসান। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে তিনি বলেন, ‘আমরা রাত ১০টা পর্যন্ত আলটিমেটাম দিলাম। এর মধ্যে আমাদের আটক শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে গণভবন থেকে আমাদের দাবি পূরণের বিষয়টি সুরাহা করতে হবে।’

শরিফুল হাসান পরে বলেন, ‘রাত ১০টার মধ্যে আটক আন্দোলনকারীদের ছেড়ে দেওয়া না হলে সাড়ে ১০টায় রাজু ভাস্কর্যে সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।’ রাত পৌনে আটটায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় আন্দোলনকারীরা রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন।

শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস) আরশাদ হোসেন বলেন, আন্দোলনকারীরা কয়েকটি স্থানে সড়ক আটকিয়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন দেন। তাদের সরে যেতে বললেও সরে না যাওয়ায় বাধ্য হয়ে ১৩ জনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে।


চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫-প্রত্যাশীদের বিক্ষোব   আটক   আলটিমেটাম  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

'আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতো না'

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

আজ ভোর রাতে চিরবিদায় নিয়েছেন হায়দার আকবর খান রনো। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের শেষ আলোকবর্তিকা। বাংলাদেশের সৎ রাজনীতির শেষ উত্তরাধিকার। বাংলাদেশে প্রগতিশীল এবং বাম রাজনীতির শেষ অনুকরণীয় উদাহরণ। হায়দার আকবর খান রনোর বিদায় বাম রাজনীতিতে এক নতুন করে শূন্যতা তৈরি করল। এই শূন্যতা কখনও পূরণ হবে না। নিজে একসময় চৈনিক বামে আসক্ত হলেও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিনি চীনপন্থী নীতির সাথে একমত পোষণ করেন৷ চীনপন্থী বামরা যখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, আমাদের অস্তিত্বের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল সেইসময় হায়দার আকবর খান রনো দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। বাম রাজনীতিতে তার বিভ্রান্তি থাকতে পারে কিন্তু ন্যায় নীতি এবং আদর্শের প্রশ্নে তিনি ছিলেন অটল।

বাংলাদেশের বাম রাজনীতিতে হায়দার আকবর খান রনো এবং রাশেদ খান মেনন যেন যুগলবন্দি নাম ছিল। দুইজনই বাংলাদেশের বাম রাজনীতির ধারাকে বিকশিত করেছিলেন। এই দুইজনের কারণেই তরুণ এবং ছাত্র সমাজের মধ্যে বাম রাজনীতির একটা বিকাশ হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুই বন্ধু এক থাকতে পারেননি। এক বৃন্তের দুটি ফুল ভেঙে যায়। হায়দার আকবর খান রনো তার আদর্শের প্রশ্নে শেষ জীবন পর্যন্ত অটল থেকেছেন। অন্যদিকে, রাশেদ খান মেনন ক্ষমতার হালুয়া-রুটি খাওয়ার লোভে বাম আদর্শ ত্যাগ করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন। মন্ত্রী হয়েছেন, এমপি হয়েছেন এবং নিজের আদর্শকে সেলফি তুলে রেখেছেন। দুই বাম নেতার এই দূরত্ব বাংলাদেশের বাম রাজনীতিতে অনেকখানি ক্ষতি করেছে।

হায়দার আকবর খান রনো ছিলেন আদর্শবাদী স্বাধীনচেতা। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চায় অবিচল আস্থাবান এক মানুষ। তিনি শেষ জীবনে তার নিজের হাতে গড়া দল ওয়ার্কার্স পার্টি তে থাকেননি। তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। এর প্রধান লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের বাম রাজনীতিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং একটি সুবিন্যস্ত ধারায় বাম রাজনীতিকে নতুন করে সংগঠিত করা। কিন্তু তার সেই যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। তবে রাজনীতিতে তার অবস্থান খুব জোরালোভাবে স্পষ্ট করতেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে থাকার কারণে সবসময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে সচল ছিলেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় এবং একে একে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দেয়া শুরু করে তখন হায়দার আকবর খান সরকারের এই নীতির প্রশংসা করেছিলেন৷ সেই সময় এক টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য আওয়ামী লীগের কোনো অবদান নেই বলে তিনি উল্লেখ করে বলেছিলেন যে, এটি শেখ হাসিনার একক অবদান। শেখ হাসিনার সাহস এবং প্রজ্ঞার কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব হয়েছে বলে হায়দার আকবর খান রনো মন্তব্য করেছিলেন।

ওই টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, 'শেখ হাসিনা যদি প্রধানমন্ত্রী না থাকতেন, আওয়ামী লীগও যদি ক্ষমতায় থাকতো তাহলে এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কখনোই সম্ভব হতো না।' এভাবেই নিজের মনের ভাবনা স্পষ্ট এবং অবিচল ভাবে বলার এক সাহস ছিল তার। জীবনে তিনি একজন নির্ভীক রাজনীতিবিদ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন না, একজন সৎ মানুষ হিসেবে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের বাম রাজনীতিতে মুণি সিং, মোহাম্মদ ফরহাদের পর হায়দার আকবর খান ছিলেন এক উজ্জ্বল তারকা। তার চলে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের বাম রাজনীতিতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হল সেই শূন্যতা কেউ কোনদিন পূরন করতে পারবে না।


আওয়ামী লীগ   শেখ হাসিনা   প্রধানমন্ত্রী   যুদ্ধাপরাধী   হায়দার আকবর খান রনো  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন