ইনসাইড বাংলাদেশ

ম্যাজিক মুন্সির আশ্চর্য প্রদীপ

প্রকাশ: ১০:০১ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

সুন্দরপুরের দরিদ্র ব্যবসায়ী হাসমত মুন্সি। গ্রামের হাটে হাটে ঘুরে ফেরি করে চুড়ি, ফিতা বিক্রির অল্প টাকায় কোনোরকমে চলে তার সংসার। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে হাসমত মুন্সি এক রাতে যখন নিজের বিছানায় গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তখন হাসমত স্বপ্নে দেখলেন তিনি এক আশ্চর্য প্রদীপ পেলেন। যে প্রদীপ ঘষলেই বের হয়ে আসে এক দৈত্য এবং একটি ইচ্ছা পূরণ করে দেয়। হাসমত মুন্সি দৈত্যকে বললেন, “এমন কিছু একটা করো যাতে আমাকে কষ্ট করতে হবে না কিন্তু ব্যবসা চলবে ঠিকঠাক।” দৈত্য চিন্তায় পড়ে যায়। অনেক ভেবে দৈত্য হাসমতের কাছে জানতে চায়, “তোর গ্রামের বাজারে এমন কোনো জিনিস রয়েছে যে জিনিসের দাম বেশি কিন্তু সাপ্লাই আটক সিন্ডিকেটের হাতে।” হাসমত মুন্সি ভেবে উত্তর দেয়, “পেঁয়াজের দাম বেশি আর মূল্য কারসাজির পেছনে রয়েছে সিন্ডিকেটের হাত।" প্রদীপের দৈত্য কোনো রকম চিন্তা না করেই হাসমত মুন্সিকে উত্তর দিলেন, “তুই পাশের কোনো গ্রাম থেকে কম দামে সিন্ডিকেট ধরে তোর গ্রামে পেঁয়াজ আমদানি কর। বেশি দামে বিক্রি করলেই লাভ আর লাভ। আর তুই নিজেই তখন হবি সিন্ডিকেট।” প্রদীপ আর দৈত্য নিয়ে অদ্ভুত স্বপ্নে ঘুম ভাঙ্গে হাসমত মুন্সির। কিন্তু এতোসব জটিল ক্যালকুলেশন মাথায় ঢোকে না হাসমতের। আর স্বপ্নে পাওয়া এই অদ্ভুত উপায় তার মনেও থাকে না ঘুম ভাঙ্গার পরে।

 

হাসমত মুন্সির এসব জটিল হিসাব নিকাশের বিষয়বস্তু মাথায় না ঢুকলেও দেশের অনেক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজির কাছেই জিম্মি গোটা বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থা। আর এসকল সিন্ডিকেটের সকল হাঁড়ির খবর জানেন আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী মাননীয় টিপু মুনশি। অবশ্য কথার ভোল পাল্টানো মাননীয় আবার প্রধানমন্ত্রীর ভয়ে বলে ফেলেছেন, “দেশে কোনো সিন্ডিকেট নেই”।

 

উপরের কাল্পনিক গল্পটির মতো আমাদের মাননীয়ের কাছে আশ্চর্য এক ম্যাজিক আছে, যা দিয়ে তিনি করে ফেলতে চান সব সমস্যার সমাধান। তার সেই আশ্চর্য ক্ষমতার নাম কোনো দ্রব্যের মূল্য বাড়লেই জনগণের পকেট কেটে টাকা নিয়ে নেওয়ার কিছুদিনের মাথায় প্রথমে আমদানি হুমকি দেয়া এবং বাজার সিন্ডিকেটের ফলে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান হিসেবে বিদেশ থেকে সেই দ্রব্যের আমদানি করা। তারই ধারাবাহিকতায় ডিমের বাজার ঠাণ্ডা করতে মাননীয়ের মাথায় আবারো তার সেই বিখ্যাত পুরনো সমাধান। ঘোষণা দিলেন ভারত থেকে আসবে ৪ কোটি ডিম।  এটি তিনি সকল সমস্যার সমাধান হিসেবেই দেখেন হয়তো। কিন্তু আসলে যে দেশে একবার একটি পণ্যের দাম বাড়লে সে দাম আর কমে না, সে দেশে আমদানিনির্ভর সমাধান কতোটা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য উপকারী সেটি ভাববার বিষয়।

  

খোদ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক মাসে পেঁয়াজ, আদা, কাঁচা মরিচ ও ডিমের দাম কমেছে। এই সময়ে পেঁয়াজের দাম প্রতি মেট্রিক টনে কমেছে ১২ শতাংশ, আদার দাম কমেছে ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ, কাঁচা মরিচের দাম ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং ডিমের দাম প্রতিটিতে ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ কমেছে। নিত্য ব্যবহার্য পণ্যের মধ্যে শুধু রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।


অন্যদিকে গত এক মাসে দেশের বাজারে প্রতি কেজিতে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ, আমদানি করা রসুনের দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ, আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। যে দেশে বাজার ঠাণ্ডা করার জন্য মাননীয়ের একমাত্র অস্ত্র আমদানী করা পণ্যের দামও বেড়ে যায়, সে দেশে তিনি ও তার ম্যাজিক যে কাজ করে না সেটি তিনি কবে বুঝবেন সেটি জন্য জনগণের উচিত তার জন্য সৃষ্টিকর্তার দরবারে দুই হাত তুলে প্রার্থনা করা। 

 

আসুন, এবার একটু ডিমের হিসাব মেলানো যাক। বিশ্ববাজারে ডিমের দাম গত ১১ সেপ্টেম্বর ছিলো ৫ টাকা ৬১ পয়সা। প্রতিবেশি দেশ ভারতে প্রতিটি লাল ডিম বাংলাদেশি টাকায় ৬ দশমিক ৫০ টাকা এবং প্রতিটি সাদা ডিম পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চলুন, আরেকটা দিকে দৃষ্টি ফেরানো যাক। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক উপস্থাপনায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, দেশে চলতি বছর ডিমের চাহিদাতিরিক্ত সরবরাহের পরিমাণ ১৩৪ দশমিক ৫৮ কোটি পিস। যদিওবা মাননীয়ের হিসাবে হিসাব মিলে না, বাকী ডিম গেলো কই! যদিওবা আজকাল ডিবি কার্যালয়ে ডিমের ব্যবহার নেই বললেই চলে। মাছ, মাংস, ডাল দিয়েই আপ্যায়ন করা হয় সরকারি দল, বিরোধী দলসহ সেলিব্রেটি, নন-সেলিব্রেটি সবাইকে। কিন্তু যদি দেশে চাহিদার বিপরীতে ডিমের যোগান এতো বেশি হয়েই থাকে, তাহলে মাননীয় কার স্বার্থে আর কী উদ্দেশ্যে দেশে ডিম আমদানি করে ডিমের বাজার ঠাণ্ডা করার মতো সিদ্ধান্তে গেলেন? পুর্বের মতো আমদানি করা ডিমের দামও যে পাশের দেশে বেড়ে গেলে তিনি একই দামে আমদানি করতে পারবেন এবং দেশের ভোক্তাদের কাছে নিয়ে যেতে পারবেন সে গ্যারান্টি তিনি পেয়েছেন কিনা সেটিও ভাববার বিষয়।

 

যদিওবা মাননীয়ের এ ধরনের ম্যাজিক্যাল সিদ্ধান্ত নতুন নয়। বাজার নিয়ন্ত্রণের গোড়ার দায়িত্বে থাকা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উৎপাদন, চাহিদা আর যোগানের হিসাব না মেলাতে পারলেও আমদানি হুঙ্কারে বরাবরই সিদ্ধহস্ত। পেঁয়াজের দাম বাড়লে বাজার সিন্ডিকেট না সামলিয়ে ঘোষণা আসে আমদানি করা হবে। চালের দাম বাড়লে চাল, রসুন, আদা, মৌসুমি ফলসহ সকল পণ্যের দাম কমানোর একমাত্র ম্যাজিক মাননীয়ের আমদানি সিদ্ধান্ত। ভাগ্যিস ডাব আমদানি করার ঘোষণা শুনতে হয়নি দেশবাসীকে। এজন্য মাননীয়ের জন্য রইলো করতালি।

ডিমের দাম স্থিতিশীল রাখতে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুসারে, চারটি প্রতিষ্ঠানকে এক কোটি করে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যে চারটি কোম্পানিকে ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তারা হলো মীম এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম এনার্জি ইমপোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স, টাইগার ট্রেডিং ও অর্ণব ট্রেডিং লিমিটেড। আমদানির অনুমতির পাশাপাশি খুচরা দোকানে একটি ডিমের সর্বোচ্চ দর ১২ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু বাজার মনিটরিং-এর দায়িত্বে থাকা ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মনিটরিং টিম বাজার মনিটরিং শেষ করে ফিরে গেলেই দেখা যাচ্ছে বাজারে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আবার বাড়তি দামেই বিক্রি করছে সকল পণ্য। আলু, পেঁয়াজের দাম বেধে দেবার পরেও যখন একই অবস্থা দেখা গিয়েছে বাজারে, সেখানে ডিমের বাজারে মাননীয়ের আমদানি ম্যাজিক কতোটা কাজ করবে সেটি দেখবার বিষয়।

 

মন খারাপের ভিড়ে আসুন, পুরোনো একটি সফলতার গল্প মনে করিয়ে দেই। করোনা চলাকালীন সময়ে প্রান্তিক খামারিরা যখন দুধ বিক্রি করতে না পেরে রাস্তায় ফেলে দিচ্ছিলেন, যখন ডিম ও পোল্ট্রি খামারের মালিকেরা অসহায় অবস্থায় ছিলেন তখন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় নিয়েছিলো যুগান্তকারী একটি উদ্যোগ। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিদের কাছ থেকে ডিম, দুধ ও মুরগীর মাংস কিনে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের মাধ্যমে এবং অনলাইন ব্যবস্থাপনায় বাজারের বাড়তি দামের চেয়ে কম দামে ভোক্তার ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছিলো দুধ, ডিম আর মাংস। কোভিড চলাকালীন সময়ে মানুষের পুষ্টির চাহিদাপূরণের পাশাপাশি এমন যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলো প্রাণিসম্পদ খাত। হাসি ফুটেছিলো এ দেশের প্রান্তিক খামারিদের মুখে।


রমজানের সময়টিতে অসাধু সিন্ডিকেট যখন গরুর মাংস, খাসির মাংসসহ ডিম ও দুধের দাম বাড়িয়ে দেয়, তখন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর দূরদর্শিতায় ক্ষুদ্র খামারিদের কাছ থেকে ন্যায্য দামে মাংস, দুধ ও ডিম কিনে ভ্যাম্যমান ভ্যানের মাধ্যমে সেগুলো বাজারের চেয়ে অনেক কম দানে বিক্রির ফলে তৈরি করা সম্ভব হয়েছিলো প্যারালাল একটি বাজারব্যবস্থার। যার ফলে সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে থাকা জনগণ কিছুটা স্বস্তির সুবাতাস পেয়েছিলো।

 

এখনো দেশের অনেক ক্ষুদ্র খামারি আছেন যারা কিছু ডিম বিক্রির টাকায় চালান তাদের সংসার। প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা যে বাজারে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন এমনটিও নয়। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় সবকিছুর মূল্য বেড়ে যাওয়ার ফলে খামারি পর্যায়ে এখনো প্রতি ডিম ৭ থেকে ১০ টাকার মধ্যেই বিক্রি করেন তারা। সেই ৮ টাকার ডিম ভোক্তা পর্যায়ে এসে ডজনপ্রতি বিক্রি হয় ১৫০ টাকায়। মাঝের লাভের গুড় খায় বাণিজ্যমন্ত্রীর সেই পরিচিত সিন্ডিকেট, যাদের সম্পর্কে সংসদেই তিনবারের বেশি তিনি নিজ মুখে বলেছেন তিনি জানেন কারা সিন্ডিকেট চালান। তিনি সিন্ডিকেটের ভয়ে ভীত করে তোলেন দেশের মানুষকে।


ডিমের চাহিদার থেকে যোগান বেশি থাকলে অবশ্যই এটি সিন্ডিকেটের কারসাজি এবং এটির দমনে তিনি চাইলেই হতে পারতেন সাহসী। দেখাতে পারতেন ম্যাজিক। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মতো নিতে পারতেন যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। প্রান্তিক খামারিদের কাছ থেকে সরাসরি ডিম কিনে টিসিবির পণ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারতেন ডিম। কিন্তু তিনি হয়তো তার প্রদীপের সেই দৈত্যের বলে দেওয়া আমদানি ম্যাজিকের বাইরে যাবেন না। অথবা তিনি চাইছেন সিন্ডিকেটের জয় হোক, জনগণের টাকায় ফুলে ফেঁপে উঠুক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। কারণ প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাজ উৎপাদন বাড়ানো এবং উৎপাদন ঠিক রাখা। সেই উৎপাদন যখন ঠিকঠাক, যখন এদেশের প্রাণিসম্পদ খাত স্বয়ংসম্পূর্ণ, ঠিক সেই সময়ে একজন ব্যর্থ মানহীন মাননীয়ের আমদানি হুঙ্কার আর আমদানির সফল বাস্তবায়ন কীসের ইংগিত দেয় সেটি দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার হওয়া উচিত।

ক্যান্সার যখন সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে তখন কেমোথেরাপির মাধ্যমে সমূলে ধ্বংস করতে হয় ক্যান্সারের জীবাণু। আগাছা জন্মালে উপর থেকে ছেটে না ফেলে সমূলে উপড়ে ফেলতে হয় সেই আগাছা। কিন্তু আমাদের মাননীয় আগাছা কাটেন, ক্যান্সারে মলম লাগান। সিন্ডিকেট না উপড়ে দেশের প্রান্তির খামারিদের ধ্বংস করতে ডিমের দাম কমাতে চালান আমদানি সন্ত্রাস। দেশবাসীর এখন একটাই প্রার্থনা, মাননীয়ের কোনো এক মাঝরাতের স্বপ্নে যেন কোনো দেশপ্রেমিক দৈত্য তার স্বপ্নে ধরা দিয়ে এমন এক প্রদীপ তাকে দিয়ে যান, যে প্রদীপ ঘষলে বের হবে সিন্ডিকেট ভাঙবার উপায়, যে দৈত্য তাকে বলে দিবেন শুধুমাত্র আমদানিতে নয়, চিন্তা, বুদ্ধি আর বাজার মাফিয়াদের নিয়ন্ত্রণে এনেই চালাতে হয় দেশ, নিয়ন্ত্রণ করতে হয় বাজার, হাসি ফুটাতে হয় মানুষের মুখে।        



মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশের দুই জেলায় ভূমিকম্প

প্রকাশ: ০৯:১২ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪।

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

জানা গেছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল পশ্চিমবঙ্গের উত্তমপুরে।

ভূমিকম্প  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ক্লাস চলার সময় ছিঁড়ে পড়ল সিলিং ফ্যান, শিক্ষার্থী জখম

প্রকাশ: ০৯:১৫ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জামালপুর পৌর শহরের একটি বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে সিলিং ফ্যান পড়ে সুমাইয়া আক্তার মীম নামের এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে পৌর শহরের রশিদপুর এলাকার ইজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সুমাইয়া আক্তার মীমকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

আহত মীম পৌরসভার বগাবাইদ গ্রামের ফেরদৌসের মেয়ে। আহত সুমাইয়া আক্তার মীম সেই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। 

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, সকাল ১০টা থেকে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। দশম শ্রেণির ক্লাসরুমে তৃতীয় ঘণ্টার ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরে দ্বিতীয় তলার শ্রেণি কক্ষের একটি ফ্যান ভেঙে সুমাইয়ার ওপর পড়ে যায়। এতে শিক্ষার্থী মুখের ওপরের ঠোঁট কেটে গিয়ে গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। গত বছরও ওই বিদ্যালয়ে ফ্যান পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল বলে জানান তারা।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা হাসপাতালে গেলে ছবি ও ভিডিও নিতে বাধা প্রদান করে বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা। আর এ বিষয়ে কোনো বক্তব্যও দিতে চাননি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আনিসুজ্জামান। এ সময় তিনি শুধু বলেন, বক্তব্য কী দেব বলেন, ফ্যান পড়ে গেছে এই আর কি।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হালিমা খাতুন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত না। তবে খবর নিচ্ছি। জেলার সাতটি উপজেলায় সব স্কুলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

জামালপুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সোমবার ৫ জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশ: ০৮:২৮ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলমান তাপদাহের কারণে দেশের পাঁচ জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (সোমবার) বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (২৮ এপ্রিল) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এক বার্তায় এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, দেশে চলমান তাপদাহের কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সকল মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (২৯ এপ্রিল) বন্ধ থাকবে।

তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ চাইলে তাদের স্কুল-কলেজ-মাদরাসা খোলা রাখতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

এছাড়া পরবর্তী সময়ে এ পাঁচ জেলায় কিংবা তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, এমন অন্যান্য জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত সোমবার জানিয়ে দেওয়া হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান   তাপদাহ   শিক্ষা মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আরও বড় হচ্ছে মন্ত্রিসভা

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দুই দফায় ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা আরও বড় হতে পারে বলে সরকারের ভেতরে গুঞ্জন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর বাজেট অধিবেশনের আগেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি সামনে আসতে পারে বলে সরকারের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। এই মন্ত্রিসভা অপূর্ণ ছিল, সেটি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর ১ মার্চ মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করা হয়। তবে সে দফায় কোন পূর্ণমন্ত্রী দেওয়া হয়নি। বরং ৭ জন নতুন প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। ২০১৮ সালেও মন্ত্রিসভা ছিল ৪৭ সদস্যের। এবারের মন্ত্রিসভা আওয়ামী লীগের গত তিন বারের মন্ত্রিসভায় চেয়ে আকারে সবচেয়ে ছোট। আর এই কারণেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়।  

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভা আরও বড় করার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। এছাড়া মন্ত্রিসভায় কয়েকটি দপ্তর পরিবর্তনের বিষয়টিও এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়া, পানি সম্পদ মন্ত্রণালেয়ও পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। 

এ ছাড়া পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তনেরও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার পরিবর্তে অন্য কোন অর্থনীতিবিদ বা অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া শ্রম মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিজিএমইএ-এর অনুরোধ রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। সামনের দিনগুলোতে শ্রম আইন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর কষাকষি করতে হতে পারে এই বিবেচনা থেকে বিজিএমইএ-এর পক্ষ থেকে সরকারকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। যিনি আইনে দক্ষ বিশেষ করে শ্রম আইনে দক্ষ কাউকে যেন এই মন্ত্রণালেয়র দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

উল্লেখ্য, মন্ত্রিসভার সদস্যদের ইতোমধ্যে ১০০ দিন পেরিয়ে গেছে গত ২১ এপ্রিল। এর মধ্যে মন্ত্রিসভার সদস্যদের ভালো-মন্দ নানান রকম হিসেব নিকেশ প্রধানমন্ত্রী করেছেন। তবে মন্ত্রিসভার সদস্যদেরকে এখনই বিচার করার সময় হয়নি বলেই সরকারের নীতি নির্ধারক মহল মনে করছেন। তবে টানা দুই থেকে তিনবার যারা প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন, তাদের মধ্যে থেকে দু’একজনকে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে। এদের মধ্যে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এদের মধ্যে এক বা একাধিক জনকে পূণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, জুনাইদ আহমেদ পলক ইতোমধ্যে রাজনৈতিক ভাবে আওয়ামী লীগের 'গুড বুকে' চলে গেছেন। বিশেষ করে তার শ্যালককে তিনি প্রার্থী থেকে প্রত্যাহার করার ফলে তিনি সরকারের আরও বেশি আস্থাভাজন এবং প্রিয়ভাজনে পরিণত হয়েছেন। তবে মন্ত্রিসভার রদবদল কখন, কীভাবে হবে এবং কতজন নতুন মন্ত্রী হবেন এ বিষয় সম্পর্কে কেউই কিছু বলতে পারেননি। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, এটি একান্তই প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারাধীন বিষয়। প্রধানমন্ত্রী যখন বিবেচনা করবেন তখনই তিনি এই রদবদল করবেন।

মন্ত্রিসভা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভারতে মোদি হারলে বাংলাদেশে কী হবে?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।

প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।

ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।

এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।

বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।

এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।

অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


ভারত   লোকসভা নির্বাচন   মল্লিকার্জুন খাড়গে   নরেন্দ্র মোদি   বাংলাদেশ   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন