চট্টগ্রাম পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনাময় অঞ্চল এই চট্টগ্রাম। এখানে রয়েছে অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ ও পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। চট্টগ্রামের প্রকৃতি খুবই সুন্দর। চারপাশের নয়নাভিরাম দৃশ্যাবলি মন কেড়ে নেয়। অজানা এক ভালোলাগা কাজ করে। প্রকৃতির সৌন্দর্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। এমন প্রকৃতির মায়ায় মন ভুলে যায় বেদনার মুহূর্তগুলো।
চট্টগ্রামের
প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ভরপুর এমন পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে জনসমক্ষে তুলে ধরার নানান
উদ্যোগ নিয়েছেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের
উদ্যোগে ঢাকা–চট্টগ্রামের মহাসড়কের ফৌজদারহাট সংযোগ সড়কের একেবারে সন্নিকটে অবৈধ দখলদারদের
কাছ থেকে ১৯৪ দশমিক ১৩ একর জায়গা উদ্ধার করা হয়। সেখানে অল্প সময়ের মধ্যে ‘ডিসি পার্ক’
নামে একটি দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। এটি এখন চট্টগ্রামবাসীর কাছে অন্যতম
বিনোদনের স্পট হিসেবে পরিচিত পেয়েছে।
আগে
যেখানে ছিল মাদকের আখড়া। সেখানে মাত্র অল্প কয়েকদিনের মধ্যে চোখ জুড়ানো–মন মাতানো ফুলের
সমাহার! বিস্তীর্ণ জলরাশি আর তার পাড় ঘেঁষেই ফুলের সাম্রাজ্য। শীতপ্রধান দেশের রানি
টিউলিপ ফুল থেকে শুরু করে দেশীয় গাঁদা, লাল, নীল, হলুদ বর্ণের ডালিয়া ছাড়াও আছে নানা
বর্ণের মেরিগোল্ড, চন্দ্রমল্লিকার মতো রঙ–বেরঙের ফুল। এমন দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যের দেখা
মিলবে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট থেকে বন্দরের সংযোগ সড়ক মেরিন ড্রাইভের একাংশে। চোখ ধাঁধানো
রঙ–বেরঙের এমন ফুলের এ সম্ভার নিয়ে ডিসি ফ্লাওয়ার পার্ক গড়ে তুলছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
ব্যস্ত নাগরিক জীবনে একটু প্রশান্তি ও স্বস্তির খোঁজে এখন প্রতিদিনই এখানে ছুটে আসছেন
হাজারো ভ্রমণপিপাসু মানুষ। বর্ণিল এই ফুলের
সমারোহ দেখে উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা। জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন,
পুরো এলাকা ফুল ও জলাশয়ের সমন্বয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন পার্ক হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এখন
পর্যন্ত প্রায় ১২২ প্রজাতির ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে এবং আরও লাগানো হবে।
তিনি
বলেন, এই পুরো এলাকাকে ঘিরে আমাদের মহাপরিকল্পনা রয়েছে। এখানে নারী–পুরুষ, শিশু–কিশোর,
যুবক, বৃদ্ধ সব বয়সী ও শ্রেণি পেশার মানুষের চিত্ত বিনোদনের জন্য সাজানো হচ্ছে। নানান
রঙের, নানান জাতের ফুলের পাশাপাশি এখানে গড়ে তোলা হবে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, সংরক্ষিত
বন, সাইক্লিং ট্র্যাক, বিলুপ্ত প্রায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রসহ বণ্যপ্রাণীদের আবাসস্থল।
থাকবে কায়াকিংয়ের ব্যবস্থাসহ সাম্পানের ব্যবস্থাও। শিশুদের জন্য কিডস জোন, থাকবে মুক্ত
আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর ব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক কনভেনশন হল।
শুধু
ফুলের সৌন্দর্য নয়, বিনোদন ও অবসর সময় কাটানোর জন্য এখানকার দুই জলাশয়ের মাঝখানে নির্মাণ
করা হবে ওয়াকওয়ে, কটেজ। থাকবে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা। এছাড়া এখানে নৌকাবাইচ ও মাছ শিকারের
ব্যবস্থা করা হবে। আর পুরো এলাকাকে পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলতে মাস্টার প্ল্যানের
কথা জানান জেলা প্রশাসক।
তিনি বলেন, অপরূপ সৌন্দর্যের লীলা ভূমি চট্টগ্রাম। বিশ্বে এমন শহর খুব কমই আছে যেখানে একত্রে সবুজে ঘেরা পাহাড়, নদী আর সাগরের মেলবন্ধনের দেখা মেলে। প্রাচ্যের রানিখ্যাত চট্টগ্রাম দেশের অন্যতম পর্যটন সম্ভাবনাময় এলাকা হিসেবে যেৃন সুপরিচিত তেমনি এটি দেশের একমাত্র বানিজ্যিক রাজধানী।
জেলা প্রশাসনের ছাদ খোলা পর্যটক বাস সার্ভিস :
চট্টগ্রাম
শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের অন্যতম নান্দনিক
ও জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকতগুলোর মধ্যে অন্যতম। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও নান্দনিকভাবে
অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে এই সমুদ্র সৈকতটির জনপ্রিয়তা পর্যটকদের কাছে দিন দিন বাড়ছে।
কর্ণফুলী নদী ও সাগরের মোহনায় অবস্থিত পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে বিকেল এবং সূর্যান্তের
সময় অগণিত পর্যটকের ঢল নামে। এছাড়া, চট্টগ্রাম শহরের ফৌজদারহাটে অবস্থিত জেলা প্রশাসন
চট্টগ্রাম কর্তৃক নির্মিত দৃষ্টিনন্দন ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত ‘ডিসি ফ্লাওয়ার পার্ক’
ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে এসব আকর্ষণীয় স্থান গুলোতে পর্যটকদের
ভ্রমণের জন্য নির্ভর করতে হয় গণপরিবহন কিংবা উচ্চ ভাড়ায় চালিত পরিবহনের ওপর। ফলে দেশ
বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকরা তো বটেই চট্টগ্রামের ভ্রমণ পিপাসুদের নানান
ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
পর্যটকদের
ভোগান্তি কমাতে এবং নিরাপদ ভ্রমণের জন্য প্রথমবারের মতো বিশেষ ছাদ খোলা বাস চালুর উদ্যোগ
নিয়েছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান
বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা পর্যটনপ্রেমীদের ডিসি পার্ক ও পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে যাত্রা
নির্বিঘ্ন করতে দুটি ডাবল ডেকার (একটি ছাদ খোলা) বাস দিয়ে পর্যটক বাস সার্ভিস চালু
করেছি। একই সাথে মাইক্রোবাস এর মাধ্যমে ‘হাফ ডে এবং ফুল ডে ট্যুর সার্ভিস’ চালু করেছি।
ভবিষ্যতে আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকত, ইউরোপীয়ান ক্লাব, বাটালী হিলসহ অন্যান্য জায়গায়ও
এই সার্ভিস চালু করবো। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এবং ফৌজদারহাটস্থ ডিসি পার্কের
গমনাগমন নির্বিঘ্ন ও সহজতর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের সহযোগিতায়
টাইগার পাস থেকে পর্যটক বাস দুটি চালু করেছি।
সার্ভিসটি
প্রতি শুক্রবার সকাল ৯টা, বিকাল ৩টা, বিকাল ৪টায় মোট ৩টি ট্রিপ পরিচালনা করে। এছাড়া
প্রতি শনিবার চলে ৪টি ট্রিপ। ট্রিপগুলো যথাক্রমে সকাল সাড়ে ৯টা, সকাল সাড়ে ১০টা, বিকাল
৩টা ও বিকাল ৪টায় যাত্রা করে। এছাড়া প্রতি রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন ২টি ট্রিপ
যথাক্রমে বিকাল ৩টা ও বিকাল ৪টায় চট্টগ্রামের টাইগারপাস থেকে পতেঙ্গার উদ্দেশ্য যাত্রা
করে।
পতেঙ্গা
থেকে ফেরার সময় : শুক্রবার তিনটি ট্রিপ যথাক্রমে দুপুর ১২টা, সন্ধ্যা ৭টা, রাত ৮টা,
শনিবার চারটি ট্রিপ যথাক্রমে দুপুর ১টা, দুপুর ২টা, সন্ধ্যা ৭টা, রাত ৮টায় পতেঙ্গা
থেকে একই রুটে ফিরে আসবে। পর্যটক বাস সার্ভিসে ভ্রমণের জন্য টাইগার পাস থেকে ডিসি পার্ক
৪০ টাকা, ডিসি পার্ক থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ৩০ টাকা, টাইগারপাস থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র
সৈকত ৭০ টাকা করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। একইভাবে পতেঙ্গা থেকে ডিসি পার্ক ৩০ টাকা,
ডিসি পার্ক থেকে টাইগারপাস ৪০ টাকা, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত থেকে টাইগারপাস ৭০ টাকা টিকিটের
মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
‘ফুল
ডে ট্যুর সার্ভিস’: পর্যটক বাস চালুর পর এবার চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার
মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় চালু হয়েছে ‘ফুল ডে ট্যুর সার্ভিস’। ইতোমধ্যে
এই সার্ভিস ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সপ্তাহে দুইদিন শুক্রবার ও শনিবার জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায়
দিনব্যাপী এ কার্যক্রমে ভ্রমণ পিপাসুদের দিনদিন আগ্রহ বাড়ছে। এতে দুপুরের লাঞ্চসহ যাত্রী
প্রতি খরচ পড়ছে ৮৫০ টাকা।
শুক্র
ও শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের স্টেশন রোড এলাকায় মোটেল সৈকত থেকে
৪টি মাইক্রোবাসে করে ৪০জন যাত্রী নিয়ে ফুল ডে ট্যুর সার্ভিসের যাত্রা শুরু করে।
এই
উদ্যোগের ব্যাপারে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক
বলেন, চট্টগ্রামের পর্যটন খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে প্রথমবারের মতো ‘হাফ ডে ও ফুল
ডে ট্যুর সার্ভিস’ চালু করেছি। প্রাথমিকভাবে এই উদ্যোগ কেমন হবে সেটা নিয়ে আমি খুব
সংকিত ছিলাম। চালুর পর দেখলাম–এই উদ্যোগে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। দিনদিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
এ কার্যক্রম আমরা হাতে নিয়েছি সেবার জন্য, ব্যবসার জন্য নয়।
হাফ
ডে ও ফুল ডে ট্যুর সার্ভিসে মোটেল সৈকত থেকে যাত্রীদের নিয়ে যাত্রা শুরু করে মহামায়া
লেক হয়ে সীতাকুণ্ডের ইকোপার্ক। পার্কের ভিতরে থাকা সহস্রধারা ও সুপ্তধারা দুটি ঝরনা
দেখে গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত হয়ে ফৌজদারহাট ডিসি পার্ক ভ্রমণ, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত
হয়ে আবার হোটেল সৈকতে ফিরে আসে। ভবিষ্যতে আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকত, ইউরোপীয়ান ক্লাব,
বাটালী হিলসহ অন্যান্য জায়গায়ও এই সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
মন্তব্য করুন
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। যাত্রাবাড়ীর
এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাতুয়াইল আউটগোয়িং ইউ টার্ন পয়েন্টে এ দুর্ঘটনা
ঘটে।
রোববার (৫ মে) দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর
আহত অবস্থায় তাদের দুজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের নিয়ে
আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবুল চিশতিকে মৃত ঘোষণা করেন এবং ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায়
৯৮ নম্বর ওয়ার্ডে কবির হোসেন মারা যান।
নিহতরা হলেন, পিকআপ ভ্যান চালক বাবুল চিশতী (৪৫) ও কবির হোসেন
(৫০)।
পিকআপ ভ্যানের চালক বাবুল চিশতি শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থানার সামন্ত
সাহা গ্রামের আব্দুর রশিদ আকন্দ ছেলে এবং কবির হোসেন একই জেলার ভেদরগঞ্জ থানার সিঁংঢালা
গ্রামের আব্দুর রশিদ বেপারির ছেলে। বর্তমানে দুজনই মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় ভাড়া
থাকতেন।
পথচারী তরিকুল ইসলাম জানান, গতরাতে মাতুয়াইল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের
সামনের রাস্তায় একটি পিকআপ ভ্যান ইউ টার্ন নিচ্ছিল। তখন তুহিন নামে যাত্রীবাহী একটি
বাস পিকআপ ভ্যানটিকে ধাক্কা দিলে ভ্যানটি দুমরে মুচরে যায় এবং বাসটি পাশে খাদের পানিতে
পড়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলের পিকআপ ভ্যানের ভিতর থেকে স্থানীয় লোকজন ও পথচারীরা
মুমূর্ষ অবস্থায় ওই দুইজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে বাবুল চিশতিকে চিকিৎসক
মৃত ঘোষণা করেন এবং ভোরের দিকে ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কবির হোসেন মারা
যান।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া
বলেন, মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ
অবগত আছেন।
তিনি আরো বলেন, নিহত বাবুল চিশতীর মরদেহ তার স্ত্রী নার্গিস আক্তার
শনাক্ত করেন। প্রথমে কবির হোসেনের পরিচয় পাওয়া না গেলেও পরবর্তীতে তার স্ত্রী নাসরিন
বেগম তার স্বামীর পরিচয় নিশ্চিত করেন।
ঢামেক হাসপাতাল সড়ক দুর্ঘটনা মৃত্যু
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপের ভোট উপলক্ষে ১৫০
উপজেলায় তিন দিনের জন্য মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন
(ইসি)। ইতোমধ্যে সংস্থাটির নির্দেশনায় প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক
বিভাগ।
রবিবার (০৫ মে) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সহকারী সচিব মো.
জসিম উদ্দিনের সই করা প্রজ্ঞাপনটি সংশ্লিষ্ট সবাইকে পাঠানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- আগামী ৮ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের
সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ৩২ ধারা অনুযায়ী, নির্বাচন
উপলক্ষে ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিবসের আগের মধ্যরাত অর্থাৎ ০৭ মে দিবাগত মধ্যরাত
১২টা থেকে ৮ মে দিবাগত মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক
চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। আর ৬ মে দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ৯ মে মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত
মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, যানজট
নিরসন ইত্যাদি প্রয়োজনে বাস্তবতার নিরিখে এবং স্থানীয় বিবেচনায় উল্লিখিত যানবাহন
ছাড়াও যেকোনো যানবাহন চলাচলের ওপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে।
এ নিষেধাজ্ঞা রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাদের
নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি বা বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য।
নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি বা বিদেশি সাংবাদিক
(পরিচয়পত্র থাকতে হবে) নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং জরুরি কাজে ব্যবহৃত কতিপয় যানবাহন (অ্যাম্বুলেন্সসহ
ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগে ব্যবহৃত যানবাহন) চলাচলের ক্ষেত্রে
এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এরূপ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে পারবে। যানবাহন চলাচলে বর্ণিত সময়সূচি
অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসককে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন ইসি মোটরসাইকেল নিষেধাজ্ঞা
মন্তব্য করুন
রোগীকে চিকিৎসা দিতে দেরি করায় ডাক্তারকে বেধড়ক পেটানো সেই আওয়ামী
লীগ নেতা এলিম পাহাড় এবার পা ধরে মাফ চেয়েছেন।
রোববার (৫ মে) শরীয়তপুর-১ আসনের এমপি ইকবাল হোসেন অপুর উপস্থিতিতে
চিকিৎসকের পা ধরে মাফ চান তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার মাফ চাওয়ার ভিডিওটি ছড়িয়ে
পড়েছে। এলিম পাহাড় শরীয়তপুর জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী সভাপতি।
ভুক্তভোগীরা হলেন, চিকিৎসক শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার
ডাক্তার শেহরিয়ার ইয়াছিন ও তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান।
ভিডিওতে দেখা যায়, সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর বাসভবনে হামলার
শিকার চিকিৎসকরাসহ কয়েকজন চিকিৎসক বসে আছেন। এলিম পাহাড়কে তাদের পায়ে ধরে মাফ চাইতে
বলছেন এমপি। তখন এলিম দুই চিকিৎসকের মধ্যে প্রথমে ডাক্তার শেহরিয়ারের পায়ে এবং পরে
তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমানের কাছে পা ধরে ক্ষমা চান। এ সময় তাকে সংসদ সদস্য ইকবাল
হোসেন অপুর পায়ে ধরতেও দেখা যায়।
ভিডিওতে পালং মডেল থানার ওসি মেজবাউদ্দিন আহমেদ, যুবলীগ নেতা বাচ্চু
বেপারী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সিদ্দিক পাহাড় ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিব) শরীয়তপুর
জেলা শাখার সভাপতি ডা. মনিরুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে দেখা যায়।
মীমাংসার বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক
হাবিবুর রহমান বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা কমিটির সভাপতি। ঘটনাটি
না বাড়িয়ে মীমাংসা করার জন্য তিনি অনুরোধ করেছেন। তাই তার উপস্থিতিতে ওই ব্যক্তি ক্ষমা
চেয়েছেন। তাই তার প্রতি সম্মান দেখিয়ে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী চিকিৎসক ডাক্তার শেহরিয়ার ইয়াছিন বলেন, স্থানীয় সংসদ
সদস্য অনুরোধ করায় আমি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করতে বাধ্য হয়েছি। আমার কানের পর্দা
ও কণ্ঠনালিতে আঘাত লেগেছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা এলিম পাহাড়, মোবাইল
ফোনে বলেন, সংসদ সদস্য আমাদের মুরব্বি। উনি বলেছেন, তাই মীমাংসা করেছি। আমার ছেলেরে
অন্য জায়গায় চিকিৎসা করাচ্ছি।
এ বিষয়ে শরীয়তপুরের জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম (পিপিএম)
বলেন, শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় ভুক্তভোগী জেলা পুলিশের কাছে
একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের সঙ্গে সঙ্গেই এলিম পাহাড়কে আটক করে পুলিশ। কিন্তু
আসামি গ্রেপ্তারের পর ভুক্তভোগী তার অভিযোগপত্রটি তুলে নেন। যার কারণে কোনো মামলা গ্রহণ
করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে শনিবার (৪ মে) দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে মারামারিতে আহত ছেলেকে চিকিৎসা দিতে দেরি করার অভিযোগে ডা. শেহরিয়ারকে বেধড়ক পেটান এলিম পাহাড়। এই সময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমানকেও লাঞ্ছিত করা হয়। পরে ডা. শাহরিয়ার বাদী হয়ে দুপুরে সদরের পালং মডেল থানায় একটি মামলার আবেদন করলে পুলিশ এলিম পাহাড়কে আটক করে।
এমপি ইকবাল হোসেন অপু শ্রমিক নেতা চিকিৎসক
মন্তব্য করুন
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান থানার ওসি
মো. মুজাহিদুল ইসলামসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (৫ মে) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ জেলা
ও দায়রা জজ আদালতে পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন নির্যাতনের
শিকার আব্দুল বারেক।
মামলা দায়ের করা আব্দুল বারেক সিরাজদিখান
উপজেলার বড়বর্তা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হোসেন মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জেলা
ও দায়রা জজ কাজী আব্দুল হান্নান মামলার ঘটনার সত্যতা যাচাই-পূর্বক তদন্ত করে প্রতিবেদন
দেওয়ার জন্য পিবিআই পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
একইসঙ্গে বাদী তথা ভুক্তভোগীদের জখমের
বিষয়ে সিভিল সার্জনকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. জামাল
হোসাইন জানান, গত ১৮ এপ্রিল জেলার সিরাজদিখান থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। ২৪ এপ্রিল
ওই মামলায় এজাহার নামীয় আসামি দেখিয়ে উপজেলার কুচিয়ামোড়া গ্রামের আব্দুল বারেকসহ ১১
জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এরপর ওই দিন রাতে গ্রেপ্তারকৃতদের থানা
পুলিশের হেফাজতে নির্যাতন করা হয়। পরদিন গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে
পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, জেল হাজতে থেকে আব্দুল
বারেক বাদী হয়ে সিরাজদীখান থানার ওসি ও অন্যান্য আরো ৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশের
হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছেন আদালতে।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান
সার্কেল) মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুনেছি আদালতে একটি পিটিশন মামলা হয়েছে। তবে ওই
ঘটনার সময় আমি ট্রেনিংয়ে ছিলাম।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন