ইনসাইড বাংলাদেশ

গণমাধ্যমে মার্কিন ভিসা নীতি: ১৯০ বিশিষ্ট নাগরিকের উদ্বেগ

প্রকাশ: ০৪:২০ পিএম, ০১ অক্টোবর, ২০২৩


Thumbnail

গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতি প্রয়োগ নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্যে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে গতকাল শনিবার নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক।

বিবৃতিতে পিটার হাসের বক্তব্যে সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ জানিয়ে লেখা চিঠির বিষয় উল্লেখ করা হয়। গতকাল ওই চিঠি পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে ভিসা নীতি প্রয়োগের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নীতির পরিপন্থী। বাংলাদেশে সচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যম একটি বড় ভূমিকা রেখেছে। উগ্রবাদী শক্তি, জঙ্গি, জামায়াত ইসলামীর মতো যুদ্ধাপরাধীর দল, সন্ত্রাসী যা প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলোকে নির্মূল করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশের গণমাধ্যম। এর ফলে বাংলাদেশ তালেবানের মতো একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়নি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতি নিয়ে পিটার হাসের বক্তব্যটি কট্টরপন্থী ও স্বাধীনতাবিরোধীরা স্বাগত জানিয়েছে। এই স্বাগত জানানো পক্ষটি অন্যান্য নীতিতে পশ্চিমাদের নিন্দা করে, মুক্তচিন্তকদের শত্রু মনে করে এবং ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধীদের দায়মুক্তির পক্ষে। হাসের বক্তব্যকে জামায়াতে ইসলামীর মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত ‘বাঁশের কেল্লা’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে স্বাগত জানিয়ে পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে হাসকে ‘একজন সত্যিকারের বন্ধু’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অতীতে এই পেজে ব্লগার ও মুক্তচিন্তকদের হত্যার পক্ষে নানা বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। ফলে এই পেজে হাসের বিবৃতি নিয়ে উল্লাস আসলে ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিকদের জন্য নিগূঢ় বার্তা দেয়।

এতে আরও বলা হয়, আমরা দেখেছি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করা থেকে বিরত ছিলেন। কিন্তু হাস তার বক্তব্য প্রত্যাহার না করায় ধারণা করা যায়, গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়তো চূড়ান্ত। এরই মধ্যে সম্পাদক ও সাংবাদিকেরা এটির নিন্দা করেছেন। হাসের এই বক্তব্যের কারণে সংবাদমাধ্যমগুলো সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশে বাধাপ্রাপ্ত হবে বলে মত দিয়েছেন অনেকেই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা দেখেছি, জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধ, ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিকদের কণ্ঠরোধ ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য নিয়ে ‘বাঁশের কেল্লা’ পেজে আস্ফালন চলছে।

হাসের দ্বৈতনীতির বিষয়টি তার বক্তব্যে উঠে এসেছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে আসার পর থেকে তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। কিন্তু তার এখনকার অবস্থান গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

অন্যদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা ছিল, গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না দিলে তারাও ভিসা নীতির আওতায় আসবেন। কিন্তু হাসের বিবৃতিতে দেখা যায়, বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রতিশ্রুতি, আর সেখানে গণমাধ্যমের ভূমিকার যে সুযোগ ছিল, সেটিকে মারাত্মক বাধাগ্রস্ত করবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক প্রচেষ্টা দেখেছি, যা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিপন্ন করার সম্ভাবনা রাখে। মার্কিন সরকার কর্তৃক র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার দাবি উত্থাপনে বড় ভূমিকা রেখেছেন দেশটির বিতর্কিত মার্কিন সিনেটর বব মেনেন্ডেজ। এ ছাড়া ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষরে একটি বিবৃতি প্রদান করা, যেখানে দাবি করা হয়েছে, বর্তমান সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে, যা একেবারে বাস্তবতা-বিবর্জিত এবং ন্যায়সংগত নয়। ফলে এই বিষয়গুলো আমাদের চিন্তা করতে বাধ্য করে যে এ ধরনের কার্যক্রমের পেছনে ভিন্ন কোনো ইচ্ছা রয়েছে কি না।

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে জামায়াত এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা থেকে শুরু করে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের হামলা আমরা দেখেছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা ব্যতীত এসব সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা অসম্ভব। বিএনপি-জামায়াত সর্বশেষ যেই জোট সরকার গঠন করেছিল, সে সময়ও ২৮ হাজারের বেশি হামলা চালানো হয় সংখ্যালঘুদের ওপর, যেখানে তাদের সম্পত্তি, বাড়িঘর দখলসহ মন্দিরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়, জীবন্ত মানুষকে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এ বিষয়ে তৎকালীন সরকারকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। কিন্তু বর্তমান সরকার নির্বাচিত হয়ে আসার পর রাষ্ট্রের সহায়তায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়েছে। আর সাম্প্রদায়িক এই সম্প্রতি বজায় রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সর্বশেষ বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা দেখতে পেলাম, ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখার প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ঘটেনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দণ্ডপ্রাপ্ত এবং আত্মস্বীকৃত খুনিদের ক্ষেত্রে, যাদের যুক্তরাষ্ট্র আশ্রয় প্রদান করছে। এটি বাংলাদেশের জন্য এমন এক জঘন্য হত্যাকাণ্ড, যা মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটায়। সুতরাং আমরা মনে করি যে ভিসা নীতিটি কীভাবে প্রয়োগ করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করা যৌক্তিক। কারা এর অনুমোদন দেবে এবং এই ধরনের পদক্ষেপের বৈধতা নিয়ে কারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা বোঝাটাও জরুরি। কারণ, আমরা রাষ্ট্রদূতের কার্যকলাপ দেখেছি এবং অন্যান্য কার্যাবলিও দেখেছি, যা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া মৌলবাদী শক্তিগুলোর জন্য বারুদ হিসেবে কাজে এসেছে।

বিবৃতিতে লেখক, অধিকারকর্মী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাপরাধবিরোধী প্রচারক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ মোট ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক সই করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শহীদজায়া সালমা হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, আইনজীবী ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত, চলচ্চিত্রনির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ, ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর সাত্তার বীর প্রতীক, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক নূরন নবী, অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, চিকিৎসক শেখ বাহারুল আলম, চিকিৎসক ইকবাল কবীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজকর্মী সুব্রত চক্রবর্ত্তী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূতত্ত্ববিদ মকবুল-ই এলাহী চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল গাফ্ফার, কবি জয়দুল হোসেন, সমাজকর্মী কাজী লুৎফর রহমান, সমাজকর্মী কামরুননেসা মান্নান, আইনজীবী আজাহার উল্লাহ্ ভূঁইয়া, মি. নির্মল রোজারিও, সভাপতি বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন, ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, সাধারণ সম্পাদক বুড্ডিস্ট ফেডারেশন। স্থান সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে কিছু নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বেসরকারি টিভি চ্যানেল২৪ -এ দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সাবেক-বর্তমান সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি গণমাধ্যমও আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতিতে যুক্ত হবে।

চলতি বছরের ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ভিসা নীতি ঘোষণা করে এবং ২২ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করে যে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।


গণমাধ্যম   মার্কিন ভিসা নীতি   ভিসা নিষেধাজ্ঞা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ঢাকায় মনোনীত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কে এই ডেভিড মিল

প্রকাশ: ১০:৩২ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ঢাকায় আসতেছেন দেশটির জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক ডেভিড স্লেটন মিল। বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কর্তৃক তাকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা জানানো হয়।।

রাষ্ট্রপতির এই মনোনয়ন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট শুনানিতে অনুমোদন পাওয়ার পর চূড়ান্ত হবে। নিয়োগ চূড়ান্ত হলেই বর্তামানে চীনে থাকা এই কূটনীতিকের গন্তব্য হবে ঢাকা।

মাকিন নিয়মানুসারে, প্রেসিডেন্ট কূটনীতিকের নামের মনোনয়ন ঘোষণা করেন। এরপর এটি দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে পাঠানো হয়। সেখানে শুনানির পর যোগ্য মনে হলে তাকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে সেই দেশে পাঠানো হয়। ফলে সিনেটে যোগ্য বিবেচিত হলেই তিনি বর্তমান রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

প্রেসিডেন্টের মনোনীত এ কূটনীতিক এর আগেও ঢাকায় কাজ করেছেন। হোয়াইট হাউসের তথ্য বলছে, ডেভিড মিল প্রায় ১০ বছর আগে ঢাকায় মার্কিন মিশনের উপপ্রধান ছিলেন। অর্থাৎ তার ঝুলিতে ঢাকার অভিজ্ঞতা আগে থেকেই রয়েছে। তবে সিনেটে যোগ্য না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবেন পিটার ডি হাস।

ডেভিড মিল বর্তমানে চীনে কর্মরত। তিনি সেখানকার রাজধানী বেইজিংয়ের মার্কিন দূতাবাসের অন্তবর্তীকালীন চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২২ সালের ২৬ মার্চ থেকে এই পদে নিয়োজিত রয়েছেন তিনি।

ডেভিড মিল ২০১৮ সালে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অর্থনৈতিক ও ব্যবসাবিষয়ক ব্যুরোর বাণিজ্য নীতিবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হন। এর আগে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নীতি ও বাস্তবায়ন বিষয়ক পরিচালক ছিলেন।

মার্কিন এ কূটনীতিক তারও আগে বিদেশ মিশনে ছিলেন। তিনি ওয়াশিংটন ডিসির ফরেন সার্ভিস ইনস্টিটিউটের লিডারশিপ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট স্কুলের সহযোগী ডিন, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে মার্কিন দূতাবাসের অর্থনীতিবিষয়ক পরামর্শদাতা এবং অর্থনৈতিক ব্যুরোর আর্থিক বিষয়ক অফিসের উপপরিচালকেরও দায়িত্ব পালন করেছেন।

ডেভিড মিলের একাধিক দেশে কূটনীতিক কার্যক্রমে ভূমিকা রয়েছে। হোয়াইট হাউসের তথ্যানুসারে, তিনি চীন, হংকং, তাইওয়ান, গিনি এবং ওয়াশিংটনে কূটনৈতিক কার্যক্রমে ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৯২ সালে তিনি ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন এবং মিনিস্টিার-কাউন্সিলর পদে অধিষ্ঠিত হন।

ফরেন সার্ভিসের আগে তিনি মার্কিন টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি ‘স্প্রিন্ট টেলিকমিউনিকেশন’র কর্পোরেট ফাইন্যান্স পদে ছিলেন।

ডেভিড মিল ভার্জিনিয়ার স্থানীয়। তিনি ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির আইজেনহাওয়ার স্কুল থেকে এমএস, টুলেন ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ এবং ডেলাওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ করেছেন। তিনি ডেপুটি চিফ অফ মিশন হিসেবে অসামান্য অবদানের জন্য বেকার-উইলকিন্স পুরস্কার পেয়েছেন।ইংরেজির বাইরে তার চীনা, ইউক্রেনীয় এবং ফ্রেঞ্চ ভাষায় দক্ষতা রয়েছে।

নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত   ডেভিড স্লেটন মিল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

যারা ভাবেন দুর্ঘটনা বন্ধ হয়ে যাবে, তারা আহাম্মকের স্বর্গে আছেন: শাজাহান খান

প্রকাশ: ০৯:২৮ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা কমানো যায়, কিন্তু তা বন্ধ করা যায় না উল্লেখ্য করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সংসদ সদস্য শাজাহান খান বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ হয়ে যাবে, এ কথা যারা মনে করেন, তারা আসলে আহাম্মকের স্বর্গে বাস করছেন। 

শুক্রবার (১০ মে) বেলা একটার দিকে ফরিদপুর নতুন বাস টার্মিনালে ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে শাজাহান খান বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলেই সাংবাদিকেরা বলে দেন, বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারা (সাংবাদিক) কি গবেষণা করে দেখেছেন যে দুর্ঘটনা কেন ঘটেছে? তিনি চান, সাংবাদিকেরা সত্য কথা তুলে ধরুক। শিবচরে যে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে, সেটা নিয়ে সাংবাদিকেরা লিখলেন, ‘বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে।’ কিন্তু পরে দেখা গেল, ওই গাড়ির সামনের চাকা বিস্ফোরিত হয়েছিল এবং সড়কের বেরিয়ার দুর্বল ছিল। তিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন, দুর্ঘটনা ঘটলেই যেন বলা না হয় বেপরোয়া গতি।

শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে ১১১টি সুপারিশ করেছি। এ সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে। দুর্ঘটনা বন্ধ করা যায় না। উন্নত দেশসহ এমন কোনো দেশ নেই, যেখানে সড়ক দুর্ঘটনা হয় না। তবে দুর্ঘটনার দিক থেকে আমরা মধ্যম স্তরের দেশ হিসেবে রয়েছি।’

তিনি সাংবাদিকদের প্রতি বলেন, ‘দুর্ঘটনা ঘটলেই ড্রাইভারের ওপর দোষ চাপাবেন না। আমি মানছি, অনেক চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান। তবে সব ক্ষেত্রে এ ঘটনা ঘটে না। যে ক্ষেত্রে এ কথা প্রযোজ্য নয়, সে ক্ষেত্রে এ মন্তব্য আসলেই ক্ষতিকর এবং তা মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে।’

সংসদ সদস্য চালকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের বুঝতে হবে, শিল্পপতি, এমপি, মন্ত্রী, চেয়ারম্যানের মতো আপনারাও সম্মানিত ব্যক্তি। অন্যকে সম্মান দেবেন, আপনারাও সম্মান পাবেন। মনে রাখবেন, আমাদের দ্বারা কোনো মানুষ যেন অসম্মানিত না হন।’

শাজাহান খান বলেন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টিসহ সব দল মিলে শ্রমিক ফেডারেশন গঠিত। শ্রমিক ফেডারেশন একক কোনো দলের নয়। ফেডারেশনের স্লোগান ‘দল যার যার, শ্রমিক ফেডারেশন এক কাতার’।

সভায় ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি জুবায়ের জাকির সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক, মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মো. নাসির প্রমুখ।

শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে পিটার ডি হাসের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ডেভিড স্লেটন মিল। আর নতুন এই রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। শুক্রবার (১০ মে) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবা‌দিক‌দের প্রশ্নের জবা‌বে এ কথা জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ মনোনয়নকে আমরা স্বাগত জানাই। মাস দে‌ড়েক আগে এ বিষয়টা আমাদের জানানো হ‌য়ে‌ছে। এখন তারা আনুষ্ঠা‌নিক ঘোষণা দিয়েছে। আশা করছি— নতুন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

বাংলাদেশে মানবাধিকার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমু‌দ বলেন, আমাদের দেশে মানবাধিকার অনেক দেশের চেয়ে ভালো। বিশ্বের কোনো দেশেই মানবাধিকার আদর্শ অবস্থানে নেই।

হাছান মাহমুদ বলেন, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্র পুলিশ যেভাবে দমন করছে, সেটি আমরা টিভির পর্দায় দেখছি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নাগরিক আন্দোলনকে কীভাবে পুলিশ দমন করছে, সেটিও আমরা দেখছি।

তি‌নি ব‌লেন, সব দেশের উচিত মানবাধিকার উন্নয়নে একযোগে কাজ করা। আমরাও আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে মানবাধিকার উন্নয়নে কাজ করতে চাই।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের জুলাই থেকে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা পিটার হাসের স্থলাভিষিক্ত হবেন কূটনীতিক মিল। মিনিস্টার কাউন্সেলর হিসেবে ১৯৯২ সালে ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন তিনি। এরপর ওয়াশিংটনের ফরেইন সার্ভিস ইনস্টিটিউটের লিডারশিপ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট স্কুলের সহযোগী ডিন, ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন ডেভিড মিল।


ডেভিড মিল   বাংলাদেশ   যুক্তরাষ্ট্র   কূটনীতি   পররাষ্ট্রমন্ত্রী   ড. হাছান মাহমুদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

মন্ত্রী-এমপিদের ফেসবুক আইডি ‘ভেরিফায়েড’ করে দিবে সরকার

প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

ফেক আইডি দিয়ে অপপ্রচার বন্ধে মন্ত্রী-এমপিদের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফায়েড করার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এমপি-মন্ত্রীদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফায়েড করার জন্য পাঠালে আমরা ফেরিফাই করে দেবো। ফলে ফেক আইডি দিয়ে আপনার নামে কেউ অপপ্রচার করতে পারবে না।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রশ্নোত্তরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ফেক (ভুয়া) ফেসবুক আইডি খুলে জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ীদের চরিত্র হনন করা হচ্ছে। ইউটিউব চ্যানেল খুলে মানুষের সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এসব বন্ধে মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ কী তা জানতে চান।

এর জবাবে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ বলেন, ‘আপনারা ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফায়েডের (যাচাইকৃত) জন্য পাঠালে আমরা ভেরিফাই (যাচাই) করে দেব। ফলে ফেক আইডি দিয়ে আপনার নামে কেউ অপপ্রচার করতে পারবে না।’

প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বিষয়টি নিয়ে বিটিআরসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানায়, তারা ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে অ্যাকাউন্ট ভেরিফায়েড করার জন্য আবেদন করতে পারে এবং সে অনুযায়ী ভেরিফায়েড হয়ে থাকে। তবে এটা শুধু মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সংসদ সদস্যের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসির উদ্যোগে তাঁদের অ্যাকাউন্টগুলো ভেরিফায়েড করা হয়েছে।

মেটা প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট ভেরিফায়েড করার নিয়ম

মেটা বলছে, দুইভাবে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই করা হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে, ভেরিফায়েড ব্যাজ। অর্থাৎ আবেদনকারী যেসব তথ্য দেন, সেগুলো এবং তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা ফেসবুক পেজে যেসব কর্মকাণ্ড করা হয়ে থাকে, সেগুলো যাচাই–বাছাই করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আরেকটি হচ্ছে, মেটা ভেরিফায়েড। এটা টাকা দিয়ে মাসিক সাবস্ক্রিপশনের ভিত্তিতে ভেরিফায়েড। এতে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পরিচালনা–সংক্রান্ত নানা সেবা, সুরক্ষাসহ বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া যায়। তবে এ ভেরিফিকেশন শুধু ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে হয়, কোনো পেজের জন্য নয়।

দুই পদ্ধতির যেভাবে ভেরিফায়েড হোক না কেন, উভয় ক্ষেত্রেই অ্যাকাউন্টের পাশে ব্লু টিক (নীল চিহ্ন) থাকে।

ভেরিফায়েড ব্যাজ পেতে অ্যাকাউন্টধারীকে অবশ্যই মেটার শর্ত ও কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডস মেনে চলতে হবে। এতে অবশ্যই মেটার নীতি অনুযায়ী প্রোফাইল, কভার ফটো ও নাম থাকতে হবে। অ্যাকাউন্ট অবশ্যই প্রকৃত ব্যবহারকারীর হতে হবে। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। একটি সঠিক বায়ো (পরিচিতি) এবং অন্তত একটি পোস্ট থাকতে হবে। অ্যাকাউন্টটি সুপরিচিত, অনেক বেশি অনুসন্ধান করা ব্যক্তি, ব্র্যান্ড বা কোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিধিত্ব করবে।

ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশনের আবেদনের জন্য পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো সরকারি কোনো পরিচয়পত্র দিতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে একটি ফোন নম্বর বা পরিষেবা বিলের অনুলিপি, নিবন্ধন নম্বর বা করের কাগজ, প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্রের অনুলিপি লাগবে।

আবেদনের সঙ্গে এসব কাগজপত্র জমা দেওয়ার পর ফেসবুক কর্তৃপক্ষ যদি আবেদন বাতিল করে, তাহলে ৩০ দিন পর আবার আবেদন করা যাবে। এভাবে অ্যাকাউন্ট/পেজ ভেরিফায়েড করতে কোনো টাকা লাগে না।

অন্যদিকে মেটা ভেরিফায়েড সেবা শুধু কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য। এর জন্যও সরকারি পরিচয়পত্র লাগবে। পাশাপাশি ভেরিফায়েড হওয়ার জন্য কিছু যোগ্যতা লাগবে, যার মাপকাঠি ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের জন্য আলাদা।

মন্ত্রী-এমপি   ফেসবুক আইডি   ভেরিফায়েড আইডি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ডেভিড মিল কী বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির পরিবর্তন আনবেন?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১০ মে, ২০২৪


Thumbnail

শেষ পর্যন্ত শেষ হয়ে যাচ্ছে পিটার ডি হাসের অধ্যায়। বাংলাদেশে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডেভিড স্লেটন মিলের নাম মনোনয়ন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এখন এটি সিনেটের অনুমোদন হলে ডেভিড মিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসাবে আবির্ভূত হবেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিদায় নিচ্ছেন পিটার ডি হাস। অর্থাৎ এটি সুস্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের ব্যাপারে যে মার্কিন নীতি অনুসরণ করছিল সেই নীতিতে পরিবর্তন আসছে। নিশ্চয়ই ডেভিড মিল একটি নতুন মিশন নিয়ে বাংলাদেশে আসবেন। আর এ কারণেই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরিয়ে নেওয়া হল পিটার ডি হাসকে।

প্রশ্ন উঠেছে যে, নতুন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে মার্কিন নীতির কী পরিবর্তন করবেন, তার নীতি কী ধরনের হবে? একজন রাষ্ট্রদূতকে যখন মনোনয়ন দেওয়া হয় তখন প্রথমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ওই দেশে তাদের পররাষ্ট্রনীতির কৌশলপত্র চূড়ান্ত করে। আর ওই কৌশল বাস্তবায়নের জন্য যাকে যোগ্য মনে করা হয় তাকে মনোনয়ন দেয়।

পিটার ডি হাসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল এমন এক সময়ে যখন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায়নি, বাংলাদেশের র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটি সুস্পষ্ট চাপ দিচ্ছিল। এই চাপকে আরও বাড়ানোর জন্যই পিটার ডি হাস বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার দায়িত্ব পালনকালে সুস্পষ্টভাবে তিনি তার অবস্থান প্রকাশ করেছিলেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব দেখানোর লক্ষ্যেই নির্বাচন নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের দৌড়ঝাঁপ করেছিলেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে প্রায় প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পিটার ডি হাস মিশন ব্যর্থ হয়েছে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বার্তাও দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে পিটার ডি হাসের সরে যাওয়াটা ছিল অবধারিত। অবশেষে সেটাই ঘটল।

এখন ডেভিড মিল বাংলাদেশে কী করবেন? প্রথমত, ডেভিড মিলের কূটনৈতিক ক্যারিয়ার যদি আমরা পর্যবেক্ষণ করি তাহলে দেখব যে, তার কূটনৈতিক ক্যারিয়ার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দেয়। একই সাথে বাংলাদেশে চীনকে মোকাবেলা করার জন্য মার্কিন কৌশলেরও একটি ইঙ্গিত বহন করে। ডেভিড মিল বাংলাদেশে উপ-রাষ্ট্রদূত হিসাবে বা ডেপুটি চিফ অফ মিশন হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কাজেই বাংলাদেশ তার পরিচিত। বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের মানুষের মন মানসিকতা এবং বাংলাদেশে কীভাবে কাজ আদায় করতে হয় ইত্যাদি কলাকৌশল সম্পর্কে তাকে নতুন করে শিখতে হবে না। এটি ডেভিড মিলের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এটি বিবেচনা করেই সম্ভবত ডেভিড মিলকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন।

দ্বিতীয়ত, ডেভিড মিল এখন এই মুহূর্তে চীনের বেজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অফ মিশন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি মার্কিন-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষার জন্য কাজ করেছেন। শুধু তাই নয়, ডেভিড মিল চীনের রাজনীতি এবং চীনের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে অনেক পরিষ্কার এবং স্বচ্ছ ধারণা রাখেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়গুলোতে অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ চীনের উপর অর্থনৈতিকভাবে অনেকখানি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। আর এর প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এমন একজন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিয়েছেন যিনি চীনের রাজনীতির অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে ওয়াকিবহাল। বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্বের একটি বড় বিষয় হল, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশি মাখামাখির সম্পর্ক। আর এ কারণেই চীনের কূটনীতিতে অভিজ্ঞ এবং চীনের কূটনীতি অলিগলি চেনা ডেভিড মিলকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

ডেভিড মিলের নিয়োগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে একটি বার্তা সুস্পষ্ট হয়েছে। তা হল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সুসম্পর্ক, বিশেষ করে অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও প্রসারিত করতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য বাংলাদেশ সম্পর্কে অভিজ্ঞ এবং বাংলাদেশে কাজ করা একজন ব্যক্তিকে পাঠানো হয়েছে। তৃতীয়ত বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের লাগাম টেনে ধরতে পারে এজন্য চীনের কূটনীতি সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে এমন একজন কূটনৈতিককে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। এখন দেখা যাক, ডেভিড মিলের বাংলাদেশ মিশন কতটুকু সফল হয়।


ডেভিড মিল   বাংলাদেশ   যুক্তরাষ্ট্র   কূটনীতি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন