নওগাঁয় পাঁচমাস সংসার জীবনে বনিবনা না হওয়ায় অবশেষে তালাক (ছাড়াছাড়ি) হওয়ার পরও মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ছেলের পরিবারের। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা থেকে প্রতিকার পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী ছেলের পরিবার। শনিবার দুপুরে নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শুনান ভুক্তভোগীর চাচা এরশাদ আলী। ভুক্তভোগী সাজ্জাদ হোসেন(রাজা) নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়নের বনগাঁ গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে। তিনি ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। ভুক্তভোগী আরো দুইজন হলেন- তার বড় ভাই তাহাজ্জত হোসেন ও ভগ্নীপতি শারাফুল ইসলাম।
এরশাদ আলী লিখিত বক্তব্যে বলেন- ২০২২ সালের ২১শে আগষ্টে নওগাঁ
পৌরসভার উপ-শেরপুর মহল্লার মতিউর রহমানের মেয়ে মোস্তারিন কে পারিবারিক ভাবে বিয়ে
করেন সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়নের বনগাঁ গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সাজ্জাদ
হোসেন(রাজা)। বিয়ের পর তারা পাঁচ মাস ঘর সংসার করে। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বনিবনা না
হওয়ায় তারা বিবাহ বিচ্ছেদ এর সিদ্ধান্ত নেয়। উভয় পক্ষের অভিভাবক ও আত্মীয় স্বজন সহ
স্থানীয় মাতব্বর প্রধানের মধ্যস্থতায় চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি খোলা তালাকের মাধ্যমে
বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তালাকের পরও মেয়ের বাবা আদালতে হয়রানি করবে বলে হুমকি প্রদান
করা হয়। এছাড়াও সাজ্জাদ হোসেন(রাজা) কর্মস্থল ঢাকায় গিয়েও হুমকি প্রদান করা হয়।
তালাকের কয়েকদিন পর অপহরণের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে মেয়ের বাবা মতিউর রহমান ৭-২-২৩ ইং
তারিখে সাজ্জাদ হোসেন(রাজা), তার বড় ভাই তাহাজ্জত হোসেন ও ভগ্নীপতি শারাফুল ইসলাম
এর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। যা সম্পূর্ণ রুপে মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তীহীন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন- আদালত হতে নওগাঁ সদর থানার মামলাটি এজাহার
হিসেবে গণ্য করার জন্য প্রেরণ করা হলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই(উপপরিদর্শক) আল
মামুন মনগড়া হিসেবে সাজ্জাদ হোসেন রাজাকে তালাকের পূর্বের ঘটনা দিয়ে অভিভূক্ত করে
চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ভিকটিম মোস্তারিনের মেডিক্যাল রিপোর্ট ছাড়াই
ধর্ষণের ঘটনা সত্য বলে পুলিশ রিপোর্ট প্রদান করে। ভিকটিমের বাবা মতিউর রহমান একজন
অবসর প্রাপ্ত পুলিশের এসআই। তিনি মানুষকে হয়রানী করার জন্য তালাকের পরও অতিরিক্ত
অর্থ দাবী করেন। তা দিতে অস্বীকার করায় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করেন। আমরা
সাধারণ ব্যবসায়ী ও সহজ সরল মানুষ। মামলার বিষয়টি নিরপেক্ষ ভাবে তদন্তের দাবী জানান
ভুক্তভোগীর পরিবার।
এ বিষয়ে মেয়ের বাবা মতিউর রহমান বলেন- ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর আবারও
আমার মেয়েকে প্রলোভন দিয়ে পালিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ঘটনার ৭-৮ দিন পর বগুড়া জেলার
সান্তাহার থেকে মেয়েকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের (তিনজন) বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা
করা হয়েছে। আদালত যা রায় দিবে আমরা মেনে নিবো। নওগাঁ সদর থানার এসআই(উপপরিদর্শক) ও
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আল মামুন এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চান না।
সংবাদ সম্মেলন সাজ্জাদ হোসেনের (রাজা) বড় ভাই তাহাজ্জত হোসেন ও
ফুফাতো ভাই বাবর আলীসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
নওগাঁ মিথ্যা মামলা হয়রানি অভিযোগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।