আওয়ামী
লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন
ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে
আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত। টানা
চতুর্থ বারের মতো সরকার গঠন
করবে আওয়ামী লীগ। আমাদের নেতাকর্মীরা
ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ পরাজিত করতে
পারবে না। গত কয়েকদিন
ধরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যে স্পিরিট ছিল,
এটা থাকলে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত।
তিনি
বলেন, বিএনপিবিহীন নির্বাচন করব, এটা আমরা
চাই না। নিয়ম অনুযায়ী
নির্বাচন হবে। তবে কে
এলো আর এলো না
তার জন্য নির্বাচন থেমে
থাকবে না। বিএনপি নির্বাচন
বানচাল করতে চায়। যারা
নির্বাচন চায় তারা কখনও
এমন সংঘাতের পথ বেছে নিতে
পারে না। নভেম্বরে নির্বাচনের
ট্রেন ছেড়ে দেবে।
আজ
(সোমবার) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথসভায় এসব
কথা বলেন তিনি।
ঢাকা
মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকা জেলা
আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ
সিটি করপোরেশনের মেয়র, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের দলীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং
সকল সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকগণের সঙ্গে এ যৌথসভা অনুষ্ঠিত
হয়।
ওবায়দুল
কাদের বলেন, বিএনপি বিদেশিদের কাছে বলছে তারা
সমাবেশে করলে আওয়ামী লীগ
পাল্টা সমাবেশ করে। বিএনপি তো
নাশকতা করে কিন্তু আওয়ামী
লীগ পাল্টা সমাবেশ করে না, শান্তি
ও উন্নয়ন সমাবেশ করে।
ওবায়দুল
কাদের বলেন, আজ ৩০ অক্টোবর
আমরা আছি। বিএনপি বলেছিল
তারা এদিন নতুন সরকার
গঠন করবে। আমরা শান্তি উন্নয়ন
সমাবেশে করে টিকে আছি।
বিএনপির বেঁধে দেওয়া ২৮ ও ২৯
অক্টোবর গেল, আমরা কিন্তু
আছি।
ওবায়দুল
কাদের আরও বলেন, ফখরুল
সাহেব ছাড়া বিএনপির সকল
নেতা পালিয়ে আছে। তাদের খুঁজেই
পাওয়া যাচ্ছে না। বিএনপির অবরোধের
নেতৃত্ব দেবে কে? তাদের
নেতাকর্মীরা সমাবেশ থেকে ফিরে গিয়ে
বলছে এ দল ভুয়া।
তাই তাদের নেতাকর্মীরা দল ছেড়ে চলে
যাচ্ছে।
বিএনপির
নেতারা বলছে তারেক রহমান
ভুয়া, ফখরুল ভুয়া। কেউ কেউ কান
ধরে দলে ছাড়ার কথা
বলছে। বিএনপির সব কিছু ভুয়া।
ওবায়দুল
কাদের আরও বলেন, একজন
পুলিশ সদস্যকে কিভাবে হত্যা করেছে। এটা দেখুন। কত
ভয়ংকর তারা। এটাই হলো তাদের
আসল চেহারা। গাজায় যা হচ্ছে তার
চেয়ে ভয়ংকর।
তিনি
বলেন, বিএনপি সাংবাদিকদের ওপর হামলা করছে
কিন্তু এটা কেন? সাংবাদিকদের
ওপর বিএনপি ক্ষেপলো কেন। সাংবাদিক যা
দেখে তা লেখে। যারাই
নিরপেক্ষভাবে সংবাদ লেখে তারাই বিএনপির
চোখে অপরাধী।
নেতাকর্মীদের
উদ্দেশে তিনি বলেন, কেউ
ধৈর্য হারাবেন না। শান্তি ও
উন্নয়ন সমাবেশে সবাই শান্তভাবে ছিল।
২৮ তারিখে রাত ১০টার পরে
মাঠে ছিলেন। সেদিন আমরা বিজয়ীর মতো
পরিবেশেই ছিলাম। সামনে নির্বাচন, আমরা বিজয়ের দিকে যাচ্ছি।
নেতাকর্মীদের
উদ্দেশে তিনি আরও বলেন,
যেকোনো মূল্যে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ
ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ পরাজিত করতে
পারে না। যারাই দলের
মনোনয়ন চাইবে তাদের সকলের আমলনামা শেখ হাসিনার কাছে
আছে। তিনি মনোনয়ন দেবেন।
এ
সময় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের
নির্দেশনা দিয়ে বলেন, আপনাদের
সক্রিয়ভাবে মাঠে থাকার জন্য
ধন্যবাদ। বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ
চলমান থাকবে।
সভায়
উপস্থিত ছিলেন— আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল
মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর
রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ,
মাহবুবউল আলম হানিফ, আ
ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম,
সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল
হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন,
সুজিত রায় নন্দী, অসীম
কুমার উকিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক
সম্পাদক আবদুস সবুরসহ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।
নির্বাচন শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ বিজয় নিশ্চিত চতুর্থ
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জেলা প্রশাসক সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।