রাজশাহীতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুই চিকিৎসককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে একজন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চিকিৎসক। অন্যজন গ্রাম্য চিকিৎসক। রোববার দিবাগত রাতে এ দুটি খুনের ঘটনা ঘটে।
নিহত চিকিৎসকরা হলেন গোলাম কাজেম আলী
(৪২)। তিনি রামেক হাসপাতালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন। আর গ্রাম্য চিকিৎসকের নাম
এরশাদ আলী দুলাল (৪৫)। তার বাড়ি রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ কচুয়াতৈল এলাকায়। তাকে
অপহরণের পর কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
রাজশাহীর পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার
থেকে চেম্বার শেষ করে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন ডা. কাজেম
আলী। রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী নগরীর বর্ণালী মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এই চিকিৎসক
নগরীর উপশর এলাকায় থাকতেন। তার স্ত্রীও একজন চিকিৎসক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,
রাতে চেম্বার শেষ করে মোটরসাইকেলযোগে বাসায় ফিরছিলেন ডা. কাজেম আলী। বর্ণালী মোড়ে
একটি মাইক্রোবাস তার গতিরোধ করে। এরপর মাইক্রোবাস থেকে দুর্বৃত্তরা নেমে তার বুকে
ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নিয়ে
যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহরাওয়ার্দী জানান, নিহত চিকিৎসকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য
রামেকের মর্গে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। কেন, কী কারণে তাকে
হত্যা করা হয়েছে তার তদন্ত চলছে। হত্যাকারীদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে নিহত গ্রাম্য চিকিৎসক এরশাদ আলী
দুলাল হোমিও চিকিৎসা দিতেন। রোববার বিকালে তাকে নিজ এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়। রাত
৯টার দিকে নগরীর শাহমখদুম থানার সিটিহাট এলাকা থেকে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে
পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, তাকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শাহমখদুম থানার ওসি ইসমাইল হোসেন
জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে স্বজনেরাই দুলালকে অপহরণ করে বলে পরিবার
অভিযোগ করেছে। অপহরণের পর চন্দ্রিমা থানায় একটি অভিযোগও করা হয়। এর ছয় ঘণ্টার
মধ্যে শাহমখদুম থানা এলাকায় তার লাশ পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি উদ্ধার
করে রাতেই রামেকের মর্গে পাঠানো হয়।
ওসি বলেন, ‘আমাদের থানা এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার হলেও এখানে মামলা হয়নি। চন্দ্রিমা থানার অপহরণ মামলাটিই এখন হত্যা মামলায় রূপ নেবে। হত্যাকারীদের ধরতে চন্দ্রিমা থানা পুলিশ কাজ করছে।’
মন্তব্য করুন
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হোসেন্দী বহুমুখী
উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালটপেপার ছিনতাইয়ের চেষ্টা, অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা
ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় হোসেন্দি ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠুকে প্রধান আসামি করে
অজ্ঞাত আরও দুইশো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
গজারিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক এসআই জাহিদ বাদী হয়ে ১৭ জনের
নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দেড়শো থেকে দুইশো জনকে আসামি করে গজারিয়া থানায় এ মামলা
দায়ের করেন। গতকাল বিকেলে মামলাটি দায়ের করা হয়। এ মামলায় একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে
ভোটগ্রহণের সময় দুপুর দেড়টার দিকে কেন্দ্র দখলে নিয়ে একাধিক ব্যালটপেপারে সিল মারেন
আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলামের সমর্থকরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে ব্যালটে মারার সিল লুট করে নিয়ে যান তারা।
পরে ওই কেন্দ্রে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিট থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ভোটগ্রহণ
বন্ধ রাখেন কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার। বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে
আবার ভোটগ্রহণ শুরু করা হলে কেন্দ্রের বাইরে থাকা দেড়শো থেকে দুইশো কর্মী সমর্থক জেলার
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যন্ড অপারেশন) মোহাম্মদ বদিউজ্জামানের ওপর হামলা করেন।
ভাঙচুর করা হয় তার ব্যবহৃত সরকারি গাড়ি। হামলা ঠেকাতে গিয়ে ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত হন
পুলিশের দুই সদস্য সাদ্দাম (২৪) ও সোহাগ (২৫)।
ঘটনা শুনে কেন্দ্রের ভেতরে থাকা পুলিশ সদস্যরা বাইরে বেরিয়ে এলে
তাদের ওপর ইট-পাটকেল, লাঠি-সোটা, হাতবোমা নিক্ষেপ করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে আবার
কেন্দ্রের দখল নেয়ার চেষ্টা করেন ওই কর্মী-সমর্থকরা। এসব ঘটনার উসকানি ও নেতৃত্ব দেন
হোসেন্দি ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু।
পুলিশ বারবার তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৭৪ রাউন্ড রাবার বুলেট ও বেশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে
পুলিশ।
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খান মামলা দায়েরের
বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলার এজাহারে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দেড়শো
থেকে দুইশো জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাসুম (২৫) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
চট্টগ্রামে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট অসীম জাওয়াদকে মানিকগঞ্জে দাফন করা হবে। বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাতে নিহতের পারিবারিক সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
নিহত বৈমানিক অসীম মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের ডা. মোহাম্মদ আমানউল্লার ছেলে। তার মায়ের নাম নিলুফা খানম। নিহত পাইলট মৃত্যুকালে স্ত্রী, ছয় বছর বয়সী কন্যা আইজা ও এক পুত্র সন্তানের জনক ছিলেন। একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবর শোনে কান্না থামছে না মা নিলুফা খানমের। ছেলে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। ছেলের এমন মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
জানা
গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার
দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা জহুরুল হক বিমান ঘাঁটির
থেকে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান
উড্ডয়ন করে। এর কিছুক্ষণ
পরই বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় এবং
বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।
কর্ণফুলী নদীতে ভূপাতিত হওয়ার আগেই বিমানে থাকা
বৈমানিক উইং কমান্ডার সোহান
ও বৈমানিক স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদ প্যারাসুট
দিয়ে নদীতে নামলেও দুজন আহত হন।
পরে
তাদের উদ্ধার করে পতেঙ্গা বিএনএস
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিমানের
উইং কমান্ডার সোহান জহুরুল হক ঘাঁটির মেডিকেল
স্কোয়াড্রনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে বিমান বিধ্বস্তর
ঘটনায় বৈমানিক অসীম জাওয়াদ বিএনএস
পতেঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
১৯৯২ সালের ২০ মার্চ আসীম জাওয়াদ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি পাস করেন। ২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে যোগদান করেন এবং ১ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে ক্যাডেটদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান সোর্ড অব অনার প্রাপ্তিসহ জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন।
চাকরিকালীন
তিনি দেশ-বিদেশে পেশাগত
বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করে সফলতার সঙ্গে
তা সম্পন্ন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি
অব প্রফেশনালস থেকে এভিয়েশন ইন্সট্রাক্টর্স
পোস্টগ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন। এছাড়া তিনি চীন থেকে
ফাইটার পাইলটস ফাউন্ডেশন ট্রেনিং কোর্স, ভারত থেকে অপারেশনাল
ট্রেনিং ইন এভিয়েশন মেডিসিন
ফর ফাইটার পাইলটস কোর্স, বেসিক এয়ার স্টাফ কোর্স
ও কোয়ালিফায়েড ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর্স কোর্স সম্পন্ন করেন।
তিনি
পেশাদারি দক্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ
‘মফিজ ট্রফি’, ‘বিমানবাহিনী প্রধান ট্রফি’ ও বিমানবাহিনী প্রধানের
প্রশংসাপত্র লাভ করেন। এ
ছাড়া ভারতীয় বিমানবাহিনীতে কোর্সে অংশগ্রহণ করে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ
ইন্ডিয়ান এয়ার অর্জন করেন।
মন্তব্য করুন
ঢাকায়
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে
ডেভিড স্লেটন মেলকে মনোনীত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ওয়াশিংটনের
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৯
মে) প্রেসিডেন্ট বাইডেন এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডেভিড স্লেটন মিলির নাম ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে
উল্লেখ করা হয়, ডেভিড
স্লেটন মেল বর্তমানে চীনের
বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসে ডেপুটি চিফ অব মিশন
হিসেবে রয়েছেন। সেখানে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন চার্জ
দ্য অ্যাফেয়ার্স হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
ডেভিড
স্লেটন মেল স্টেট ডিপার্টমেন্টের
ব্যুরো অব ইকোনমিক অ্যান্ড
বিজনেস অ্যাফেয়ার্সের ট্রেড পলিসি অ্যান্ড নেগোসিয়েশনের উপ-সহকারী সচিব
ছিলেন। তিনি ঢাকাস্থ মার্কিন
দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন,
ইউক্রেনের কিয়েভে মার্কিন দূতাবাসে অর্থনৈতিক বিষয়ক পরামর্শদাতা ছাড়াও চীন, হংকং, তাইওয়ান,
গিনি ও ওয়াশিংটনে নানা
দায়িত্ব পালন করছেন।
মিলির
মনোনয়ন এরই মধ্যে সিনেটে পাঠানো
হয়েছে। সিনেটে
শুনানির পর মিলিকে যোগ্য
মনে হলে
তবেই মনোনয়ন
চূড়ান্ত করে রাষ্ট্রদূত
করে তাকে
ঢাকায় পাঠানো হবে। মিলি ঢাকায়
রাষ্ট্রদূত হলে বর্তমান
রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
মন্তব্য করুন
একদিনের
সফরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা। শুক্রবার (১০ মে) সকাল
৭টা ১০ মিনিটে তিনি
ঢাকা থেকে রওনা করেন।
বৃহস্পতিবার
(৯ মে) এ তথ্য
জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব এমএম ইমরুল
কায়েস রানা। তিনি বলেন, `প্রধানমন্ত্রী
টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন'।
এ
বিষয়ে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কাজী
মাহবুবুল হক জানান, প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধা জানাবেন।
পরে ১৯৭৫ সালের ১৫
আগস্ট হত্যাকাণ্ডের শিকার বঙ্গবন্ধু ও অপর শহীদের
বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ
ও মোনাজাতে অংশ নেওয়ার কথা
রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন