ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচন হবে, তা সময় মতোই হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৪:২৫ পিএম, ৩১ অক্টোবর, ২০২৩


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথাসময়ে হবে। কে চোখ রাঙালো কে চোখ বাঁকালো তাতে যায় আসে না। নির্বাচন হবেই।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে ব্রাসেলস সফর নিয়ে অবহিত করতে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন— কোনো বিদেশি শক্তি কি আমাদের চোখ রাঙাচ্ছে, নির্বাচন কি যথাসময়ে হবে? জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন যথাসময়ে হবে এবং সময়মতো হবে। কে চোখ রাঙাল আর কে বাঁকাল আমরা কোনো পরোয়া করি না। দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের জন্য অনেক সংগ্রাম করেই কিন্তু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। আর গণতন্ত্র থাকলে, নির্বাচিত সরকার থাকলে— বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলে যে উন্নতি হয় এটা তো আপনারা বিশ্বাস করেন। 

তিনি বলেন, মাত্র ১৪ বছরে দেশের অভূতপূর্ব যে উন্নয়ন ও পরিবর্তন হয়েছে তা দৃশ্যমান। এ উন্নয়ন যে ‍শুধু ঢাকা শহরের মেট্রোরেল বা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তা নয়, উন্নয়ন ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে, তৃণমূলে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রত্যেকটি উন্নয়ন পরিকল্পনা মাফিক করেছি। তৃণমূলের যে পরিবর্তন হয়েছে তা আপনারা নিজেরা দেখে আসুন। কাজেই কে চোখ রাঙাল আর কে বাঁকাল তাদের পরোয়া করার সময় নেই।

কোন শক্তি চোখ রাঙাচ্ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কে রাঙ্গাচ্ছে এটা আপনারা বোঝেন না? আমার বলতে হবে কেন? 

সংলাপ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কার সঙ্গে সংলাপ করব। ট্রাম্প সাহেবের সঙ্গে কি বাইডেন সংলাপ করছে? যেদিন ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেন সংলাপ করবে সেদিন আমিও সংলাপ করব।

যাদের বাস পুড়িয়েছে তাদের সহায়তা করা হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি ২০১৩ সালে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। ২০১৩-১৪ ও ১৫— এই তিনটা বছর তাদের অগ্নিসন্ত্রাসের আক্রমণ চলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক বাস মালিকদের আমরা আর্থিকভাবে সহায়তা দিয়েছিলাম। যেন তারা ব্যবসা চালাতে পারে। এবারও যাদের বাস পুড়েছে তাদেরকেও সহায়তা দেওয়া হবে।’

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা(বিএনপি) পুলিশকে বারবার আঘাত করে। সারা দেশে ২৯ পুলিশ সদস্যকে মেরেছিল। ৫০০ এর উপর স্কুলঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল, যেখানে আমাদের নির্বাচনের পোলিং এজেন্ট হয়েছিল। এদের মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ববোধ নেই। এদের সঙ্গে আমরা যতই ভালো ব্যবহার করি না কেন, এদের স্বভাব কখনো বদলাবে না। এরা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করে। অবৈধ অস্ত্র হাতে এদের জন্ম, এরা নির্বাচন চায় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে আজ ২৩ সাল পর্যন্ত বদলে গিয়েছে বাংলাদেশ। এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আজ আপনাদের কাছে কেউ ভিক্ষা চাইতে আসবে না। প্রত্যেকের খাবারের ব্যবস্থা, ভূমিহীনদের জায়গার ব্যবস্থা, চিকিৎসা ব্যবস্থা, শিক্ষার ব্যবস্থা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কেউ কাজ করলে খেতে পারে, সে ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। আন্তর্জাতিকভাবে আমি যেখানে গিয়েছি সেখানেই সবাই বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করে। একমাত্র দুঃখে মরে যায় বিএনপি আর জামায়াত।’

বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন, ধিক্কার ছাড়া তাদের কিছুই জুটবে না

গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে ঘটা সহিংসতার জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি যে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন এসব ঘটনায় তা আবার প্রমাণ হয়েছে।

২৮ অক্টোবরের সহিংসতার ঘটনা নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কানাডার কোর্ট বারবার বলেছে বিএনপি-জামায়াত জোট সন্ত্রাসী জোট, তারা (বিএনপি) আবার সেটি প্রমাণ করলো। মাঝে কিছুটা রাজনৈতিক কর্মসূচি তারা পালন করেছে। আমাদের সরকারও কোনো বাধা দেয়নি। ধীরে ধীরে আস্থা অর্জন শুরু করেছিল। তবে ২৮ তারিখের ঘটনায় ধিক্কার ছাড়া আর কিছুই তাদের জুটবে না।’

বিএনপির ডাকা তিনদিনের অবরোধ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কীসের অবরোধ, কার জন্য অবরোধ। যখন দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, সারা বিশ্ব প্রশংসা করছে, তাদের কাজটাই হলো উন্নয়ন নস্যাৎ করা।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে নিজেরাই পালাল, পালিয়ে গিয়ে এখন আবার অবরোধের ডাক। কীসের অবরোধ? কার জন্য অবরোধ? যখন সারা বিশ্ব বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে প্রশংসা করছে তখন তাদের কাজ হলো বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। বাংলাদেশের এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, দেখাবে বাংলাদেশে কিছুই হয়নি। তাদের হামলার শিকার একদিকে পুলিশ, আর হচ্ছে সাংবাদিক। এদের ওপর তারা হামলা চালিয়েছে। সেগুলো কারা করেছে, তাদের নাম ডাক....। তারা তো প্রকাশ্যে করেছে। শুধু তাই নয়, গতকাল তারা লালমনিরহাটে আমাদের যুবলীগের একজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এভাবে হত্যা করা আর মানুষের সম্পদ নষ্ট করা, আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করাই তাদের চরিত্র। হঠাৎ কেন সাংবাদিকদের ওপর তারা চড়াও হলো? সাংবাদিকরা তাদের পক্ষে ভালো ভালো নিউজ দিচ্ছিল, টকশোতে ভালো ভালো কথা, বরং সরকারের দোষটাই সাংবাদিকরা বেশি দেখে। তাহলে তাদের রাগটা কেন সাংবাদিকদের ওপর হলো? সেটাই বুঝতে পারলাম না।’

খুনিদের সঙ্গে কীসের সংলাপ, ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেনের যেদিন সংলাপ হবে সেদিন দেখব

বিএনপিকে খুনিদের দল আখ্যা দিয়ে দলটির সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি একরকম উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, খুনিদের সঙ্গে আবার কীসের বৈঠক?

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নির্বাচন নিয়ে শর্তহীন সংলাপে বসার আহ্বান জানানো প্রসঙ্গে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কার সঙ্গে সংলাপ? বিরোধী দলের সঙ্গে। কোন বিরোধী দল? বিরোধী দলটা কে? সংসদীয় নিয়মে বিরোধী দলের একটা ব্যাখ্যা আছে। বিরোধী দল হচ্ছে, সেই দল যাদের সংসদে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি আছে। এর বাইরেরগুলো পরিগণিত হয় না। আমেরিকায়ও হয় না। ট্রাম্পকে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) কী বলবে? যদিও আমরা তাদের মতো সরকার ব্যবস্থায় নেই। এটা মাথায় রাখতে হবে।’

‘আমেরিকায় ট্রাম্পরে সঙ্গে কি বাইডেন সংলাপ করে? যেদিন ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেন সংলাপ করবে সেদিন আমিও সংলাপ করব।’

তিনি বলেন, ‘এই যে মানুষগুলোরে হত্যা করা হলো, তাকে (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) একটা প্রশ্ন করা হলো না কেন- যখন উপনির্বাচনে একটা ঘটনা ঘটেছে, হিরো আলমের ওপর হামলা, বিচার চাইল। এখন পুলিশ হত্যা করল, এতগুলো সাংবাদিককে মারল, তারা এটার বিচার দাবি করল না কেন?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুনিদের সঙ্গে আবার কীসের বৈঠক। খুনিদের সঙ্গে আবার কীসের আলোচনা? যারা মানুষের সম্পদ নষ্ট করেছে, যারা আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নষ্ট করেছে। সে বসে বসে ডিনার খাক (মার্কিন রাষ্ট্রদূত), ডায়ালগ করুক। এটা আমাদের দেশ, আমরা স্বাধীনতা এনেছি রক্ত দিয়ে।’

ইসরায়েলের সঙ্গে বিএনপির তফাৎ দেখেন না প্রধানমন্ত্রী

ফিলিস্তিনে ইসরায়েল যেভাবে হামলা করছে ২৮ অক্টোবরে ঢাকায় হওয়া হামলার সঙ্গে তার মিল খুঁজে পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি ফিলিস্তিনি নিয়ে বিএনপি কেন কথা বলে না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সরকারপ্রধান।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গাজায় যেমন ইসরায়েল হাসপাতালে হামলা করল বিএনপি একই কায়দায় পুলিশ হাসপাতালে হামলা করেছে। মনে হয়, ইসরায়েল আর ওদের মধ্যে ভালো একটা সমঝোতা আছে। ঠিক একইভাবে ওখানেও শিশু-নারী হত্যা। এরাও এখানে পুলিশ হত্যা করছে। আমি কোনো তফাৎ দেখি না।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিএনপি বা জামায়েত এরা কিন্তু এখন পর্যন্ত টু শব্দ করছে না। অথচ আমরা সবসময় কিন্তু ফিলিস্তিনের সঙ্গে আছি। তাদের জনগণের সঙ্গে সবসময় আছি। আমি আন্তর্জাতিকভাবে যেখানে যাই তাদের কথা বলি। তাদের ন্যায্য অধিকার কিন্তু ফেরত দিতে হবে, এটাই আমরা চাই।’

‘কিন্তু যারা (বিএনপি) এত কথা বলে, আবার ইসলামিভাব ধরে তারাও টু শব্দ করছে না। কাদের স্বার্থে? সেটা আমারও প্রশ্ন। বিএনপি এ ব্যাপারে কোনো কথা বলছে না কেন? এই যে শিশুদের হত্যা করছে, হাসপাতালে বোমা মারছে কই তারা তো টু শব্দটাও করছে না।’

সংসদে ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিন্দা প্রস্তাব বা রেজ্যুলেশন নেওয়া হলেও সংবাদ সম্মেলনে কোনো গণমাধ্যমকর্মী সরকারকে ধন্যবাদ না দেওয়া বা এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন না তোলায় মন খারাপ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। তিনি বলেন, ‘সংসদে আমরা ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিন্দা প্রস্তাব নিয়েছি। সাংবাদিকরা এটা নিয়ে কথা বলল না, ধন্যবাদ দিল না। কেন কথা বলল না জানি না, দুঃখ পেলাম।’

চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করা হবে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাচনী উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় দেওয়া মিয়ান আরেফির সঙ্গে বিএনপি কার্যালয়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, তাকে ছাড়া হচ্ছে না। আমি তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছি। তার খোঁজ করা হচ্ছে। তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কেন এ রকম প্রতারণা করল?

মিয়ান আরেফি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন ফ্রড, ভুয়া সে এসে তাদের (বিএনপির) অফিসে বসে সাফাই গাইল। আর যখন ধরা পড়ল তখন বলল, জানে না। আসলে তাদের (বিএনপির) নেতাই নেই। দলটার সমস্যাটাই এটা। নেতৃত্ব নেই, আছে কিছু মাইকবাজ। সারাদিন মুখে মাইক লাগিয়ে কথা বলে। সেটাও এখন আবার আন্ডার গ্রাউন্ডে চলে গেছে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আন্ডার গ্রাউন্ড থেকে সেই সুবিধা নিয়ে কথা বলছে।

দেশবাসীকে সজাগ ও সচেতন থাকার আহ্বান

২৮ অক্টোবর বা পরবর্তীতে যারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কিছু অপরাধী জামিন পেয়ে ছুটে এসেছে। জামিন পেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেহেতু এরা জামিন পেয়ে গেছে, এরা অপরাধ করছে। এদের দ্রুত সাজা দিয়ে শিক্ষা দেওয়া উচিত। এভাবে আগুন লাগাবে আর মানুষের ক্ষতি করবে এটা কখনও মেনে নেওয়া যায় না। যারা এভাবে অগ্নিসন্ত্রাস করে যাচ্ছে, তাদের সাজাটা যেন ঠিকমতো হয়; সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। যে হাত দিয়ে আগুন দেবে, সেই হাতে শাস্তি দিলে তাহলে তারা কষ্ট বুঝতে পারবে।

এ সময় দেশবাসীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, দেশবাসীকে সজাগ ও সচেতন থাকার আহ্বান জানাই। যারা এসব অগ্নিসন্ত্রাস করছে তাদের ধরিয়ে দিন। এর আগে তারা যখন শুরু করেছে তখনও মানুষ ঠেকিয়েছে। এবারও মানুষই ঠেকাবে।

২৮ অক্টোবরকে কেন্দ্র করে ঢাকায় ঘটে যাওয়া ঘটনা সরকারের পক্ষে গেল কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাভ-লোকসানের ব্যাপার নয়। মানুষকে হত্যা করছে, মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে। বরং আমাদের লাভ-লোকসান কী হলো তা জিজ্ঞেস না করে বিএনপিকে জিজ্ঞেস করা দরকার তারা যে গুন্ডামি-সন্ত্রাসী, অগ্নিসন্ত্রাস করে যাচ্ছে তাতে তারা কতটুকু লাভবান হচ্ছে। এটা আপনারা বরং বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞেস করেন।

প্রসঙ্গত, গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশ নিতে গত ২৪ অক্টোবর বেলজিয়ামে যান প্রধানমন্ত্রী। ২৫ ও ২৬ অক্টোবর ওই ফোরামে যোগ দেন তিনি। ফোরামের ফাঁকে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্র ও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।

২৫ অক্টোবর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন, নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। এসব বৈঠকের পর বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৩৫ কোটি ইউরোর একটি ঋণ সহায়তা, সাড়ে ৪ কোটি ইউরোর একটি অনুদান এবং একই খাতে বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে ১ কোটি ২০ লাখ ইউরোর অনুদান চুক্তি সই হয়।

এছাড়া সামাজিক খাতের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে ৭ কোটি ইউরোর আরও পাঁচটি অনুদান চুক্তি হয়। 

২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। ২৭ অক্টোবর দেশে ফিরে আসেন তিনি।

নির্বাচ   প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   সংবাদ সন্মেলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ইলিশের অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেল বিজ্ঞানীরা

প্রকাশ: ০৫:৫৭ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশের অন্ত্রের অণুজীবসমূহের গঠন ও বৈচিত্র্য উদঘাটন করে এক অনন্য প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার সন্ধ্যান পেয়েছেন গবেষকরা। সর্বদা রোগমুক্ত মাছ হিসেবে ইলিশের যে গৌরব রয়েছে, যার প্রকৃত রহস্য এই উপকারি ব্যাকটেরিয়া-মনে করেন গবেষকরা।

বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরকৃবি)-এর ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (আইজিবিই) এবং যুক্তরাজ্যের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় বাংলাদেশের ইলিশের অন্ত্রে অনন্য এই প্রোবায়োটিকের সন্ধান পান গবেষকরা। মেটাজিনোমিক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইলিশ মাছের অন্ত্রে এই নতুন প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করা হয়।

গবেষকদের দাবি, উপকারী এই প্রোবায়োটিক বাণিজ্যিক উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের মৎস্য চাষে ব্যবহার করা গেলে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। বর্তমানে মৎস্যচাষে মাছ রোগমুক্ত রাখতে বিপুল পরিমাণ ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়, যা মাছকে রোগমুক্ত রাখলেও জলজ বাস্তুতন্ত্রের অনেক ক্ষতি করে। এ ধরনের উপকারী প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার জলজ প্রকৃতিকে সুরক্ষিত রেখে মৎস্য চাষে নতুন বিপ্লব আনতে পারে।

গবেষকরা জানান, সমুদ্র থেকে নদীতে বিচরণকারী ইলিশ মাছ কখনো রোগাক্রান্ত হয়েছে, এমন কোনো গবেষণা প্রবন্ধ বা প্রতিবেদন নেই। সুতরাং অত্যাধুনিক মেটাজিনোমিক্স দ্বারা আবিষ্কৃত অনন্য নতুন প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিায়ার শনাক্তকরণ, ইলিশের রোগপ্রতিরোধিতা এবং অন্যান্য অনন্য বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বিজ্ঞানীদল মনে করে। এসব ব্যাকটেরিয়াকে আলাদা করে ভবিষ্যতে বাণিজ্যিকভাবে প্রোবায়োটিক হিসেবে দেশের মৎস্য চাষে ব্যবহারে সম্ভাবনাও উজ্জ্বল।

গবেষণাদলের প্রধান বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরকৃবি)-এর ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (আইজিবিই)’র অধ্যাপক ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো ড. তোফাজ্জল ইসলাম বলেন, এই গবেষণায় শনাক্তকৃত ব্যাকটেরিয়াসমূহের মধ্যে ল্যাকটোকক্কাস, মরগানেলা, এন্টেরোকক্কাস, অ্যারোমোনাস, শিওয়েনেলা, পেডিওকক্কাস, লিওকোনস্টক, স্যাক্কারোপোরা এবং ল্যাকটোব্যাসিলাস উল্লেখযোগ্য প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া হিসেবে তাৎপর্য বহন করে। এই প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়াগুলি বৈচিত্র্যময় সামুদ্রিক এবং নদীর বাস্তুতন্ত্রে বিচরণকারী ইলিশের অনন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, স্বাদ ও ফিটনেসের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।

গবেষণা দলের সঙ্গে যুক্ত ড. এম. নাজমুল হক বলেন, এই গবেষণার একটি উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার হলো, নির্দিষ্ট কিছু ব্যাকটেরিয়ার (সাইনোবাকা, সায়েনোকক্কাস, গেমাটা সেরেনিকক্কাস, স্যাক্কারোপলিস্পোরা এবং পলিনেলা) শনাক্তকরণ যা পূর্বে কোনো মিঠাপানি বা সামুদ্রিক মাছের প্রজাতিতে রিপোর্ট করা হয়নি। সমষ্টিগতভাবে, এই গবেষণায় রিপোর্ট করা ইলিশ মাছের ব্যাকটেরিয়োম এবং শ্রেণিবিন্যাস পর্যবেক্ষণের বিশ্লেষণ থেকে প্রাপ্ত তথ্য আরও ব্যাপক গবেষণার জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করেছে।

গবেষণা প্রবন্ধটি উচ্চ ইমপ্যাক্ট বিশিষ্ট বিজ্ঞান সাময়িকী প্লস ওয়ান-এ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা মেটাজিনোমিক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগৃহীত ইলিশ মাছের অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার প্রজাতি বৈচিত্র্য এবং এদের আপেক্ষিক সংখ্যা নির্ণয় করেন। তারা বাংলাদেশের প্রধান প্রধান আবাসস্থল যথাক্রমে চাঁদপুর, পটুয়াখালী, কক্সবাজার, মুন্সীগঞ্জ ও রাজশাহীতে বসবাসকারী ইলিশ মাছের অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার কৌলিক বৈশিষ্ট্যাবলি এবং স্বাতন্ত্র্য বিশ্লেষণ করে ইলিশের অন্ত্রে অনন্য বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন কিছু নতুন ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পান।

ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ এবং এ দেশের একটি ভৌগোলিক নির্দেশক (এও) পণ্য হিসেবে স্বীকৃত। এটি একটি আইকনিক ফ্ল্যাগশিপ প্রজাতি হিসেবে বিখ্যাত। স্বতন্ত্র্য এবং ব্যতিক্রমী স্বাদের কারণে ইলিশ মাছের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক মূল্য এবং দেশ ও বিশ্বব্যাপী এর সর্বোচ্চ চাহিদা রয়েছে। এটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক আন্তঃসীমান্ত প্রজাতি হিসেবে পরিচিত।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব ছাড়াও, ইলিশ অপরিসীম আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বহন করে। ইলিশ মাছের মোট বার্ষিক মূল্য ১৪, ৯৫০ কোটি টাকা, যা বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১.১৫ শতাংশেরও বেশি। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের ৪ মিলিয়ন মানুষের জীবিকার উৎস এই ইলিশ মাছ। এর বাইরে আনুমানিক ২.৫ মিলিয়ন ব্যক্তির বিস্তৃত ভেলুচেইনের সঙ্গে জড়িত। এই অতি চাহিদাসম্পন্ন এবং দামি মাছটি বাংলাদেশের সামগ্রিক মাছ উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ অবদান রাখে।

ইলিশ   উপকারী ব্যাকটেরিয়া  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সন্তানদের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় চান আমলারা

প্রকাশ: ০৩:৫৬ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে চান আমলারা। একই সঙ্গে দেশে অবস্থিত সরকারি এবং এমপিওভুক্ত কলেজে ব্যাপকভাবে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালুকরণ বন্ধ করে বিদ্যমান অনার্স ও মাস্টার্স লেভেলে প্রতি বছর নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্তকরণ নিয়ন্ত্রণ করার প্রস্তাবও দিয়েছেন তারা।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম দিবসে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের মুক্ত আলোচনায় এই প্রস্তাব দেন কর্মকর্তারা। এ সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব এবং সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব উপস্থিত ছিলেন।

প্রস্তাবনায় বলা হয়, সিভিল সার্ভিস অফিসারদের জন্য মাস্টার্স এবং উচ্চতর ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণ এবং তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য আলাদা সিভিল সার্ভিস বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে।

জেলা প্রশাসক সম্মেলন   প্রধানমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জে বয়লার বিস্ফোরণে শ্রমিক নিহত, আহত ২

প্রকাশ: ০৩:৫৫ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে একটি চালকলে ধান সিদ্ধ করার সময় বয়লার বিস্ফোরণে এক শ্রমিকে মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও দুই শ্রমিক। শুক্রবার (৩ মে) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জামতৈল পশ্চিম পাড়ার মেসার্স আজাহার চালকলে এ ঘটনা ঘটে। 

 

নিহত ফজল আলী (২৬) উপজেলার জামতৈল পশ্চিম পাড়ার রবিয়াল হোসেনের ছেলে।

 

আহত শ্রমিকরা হলেন, উপজেলার জামতৈল পশ্চিম পাড়ার মৃত পলান শেখের ছেলে জহুরুল শেখ (২৬) এবং কর্ণসূতি পশ্চিম পাড়ার মৃত সুরুত মন্ডলের ছেলে জিন্নাহ মন্ডল (৩০) ।

 

আহত শ্রমিক জহুরুল শেখ জানান, ‘ধান সিদ্ধ করার এক পর্যায়ে ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে বিকট শব্দে বয়লার বিস্ফোরণ হয়। এতে আমি সহ ফজল ও জিন্নাহ আহত হই। আমি আর জিন্নাহ হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে চলে এসেছি আর ফজলের অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।’ 

 

জহুরুল আরও জানান, ‘আমি গত এক বছরের বেশি সময় ধরে এই চালকলে কাজ করছি। এর মধ্যে বয়লারের পাইপ পরিবর্তন করা হলেও বয়লার পরিবর্তন করা হয়নি।'

 

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে নিহত ফজলের ভাই আসলাম হোসেন জানান, ‘মেসার্স আজাহার চালকলে ধান সিদ্ধ করার এক পর্যায়ে বয়লার বিস্ফোরণে ফজল গুরুতর আহত হয়। প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।'

 

মেসার্স আজাহার চালকলের স্বত্বাধিকারী আজাহার আলী রাজা দাবি করেন, ‘গত ছয় মাস আগে বয়লার ও কয়েক দিন আগে বয়লারের পাইপ পরিবর্তন করা হয়েছে। বয়লার কেন বিস্ফোরণ হলো বুঝতে পারছি না।’ 

 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুমনুল হক জানান, ‘বয়লার বিস্ফোরণে আহত তিন জন শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। দুই জনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়ে। এদের মধ্যে ফজল নামে একজন শ্রমিকের মুখের অনেকাংশ থেঁতলে গেছে।’

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন সুলতানা জানান, ‘মেসার্স আজাহার চালকলে বয়লার বিস্ফোরণের খবর পেয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।'


বয়লার বিষ্ফোরন   চালকল   শ্রমিক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দুই ট্রেনের সংঘর্ষ: স্টেশন মাস্টারসহ বরখাস্ত ৩, তদন্তে ২ কমিটি

প্রকাশ: ০৩:১৪ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

গাজীপুরের জয়দেবপুরে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে তেলবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় স্টেশন মাস্টারসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

শুক্রবার (০৩ মে) গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

আরও পড়ুন: গাজীপুরে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত বহু

আরও পড়ুন: দুই ট্রেনের সংঘর্ষ: উদ্ধারে যোগ দিয়েছে বিজিবি

এদিকে ঘটনার পর থেকে জয়দেবপুর স্টেশন দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম রুটের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছে অন্তত ৬টি ট্রেন।

জয়দেবপুরের স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী মিয়া বলেন, ‘আজ পৌনে ১১টার দিকে টাঙ্গাইল কমিউটার ও তেলবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। রেললাইনের পয়েন্টের ভুলের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে তেলবাহী ট্রেনের পাঁচটি এবং যাত্রীবাহী ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়। কমিউটার ট্রেনটিতে যাত্রী কম থাকায় হতাহতের সংখ্যা কম। কমিউটার ট্রেনের লোকোমাস্টারসহ চারজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ’।

তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আপঘুন্টি স্টেশন মাস্টার হাশেম ও পয়েন্টসম্যান সাদ্দাম হোসেনসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বগি উদ্ধারের জন্য ১২টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুস সামাদ বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। এরই মধ্যে রেলের সব বগি তল্লাশি করা হয়েছে। তবে ভেতরে কেউ আটকা নেই। ট্রেনের চালক ও সহকারী চালকসহ ৪ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, জয়দেবপুরে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিগন্যাল ভুল, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন স্টেশনে বেশ কয়েকটি ট্রেন যাত্রা বিরতি করা হয়েছে। দ্রুত উদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

এরআগে, শুক্রবার (০৩ মে) বেলা ১১টার দিকে জয়দেবপুর স্টেশনের আউটার সিগনালে যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সঙ্গে একটি তেলবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

তিনি জানান, রেল দুর্ঘটনায় দুই ট্রেনের চালক ও সহকারীরা আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রেল দুর্ঘটনায় ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে কমলাপুর রেলস্টেশনে আটকা পড়েছেন ৪-৫টি ট্রেনের যাত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে এসে গাজীপুর হয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশনের আউটার সিগনালে পৌঁছালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা তেলবাহী ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তবে টাঙ্গাইল কমিউটারে খুব বেশি যাত্রী ছিল না।

একজন উদ্ধারকর্মী জানান, শুক্রবার টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি বন্ধ থাকে। অন্যান্য দিন ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশনে থামে। আজ বন্ধ থাকায় এটির থ্রোপাস করার কথা। আর অপরদিকে ঢাকা থেকে আসা তেলবাহী ট্রেনটি স্টেশনে দাঁড়ানো ছিল। এখানে আপলাইন ও ডাউনলাইন আছে, কিন্তু কী কারণে ট্রেন দুটি মুখোমুখি হল সে বিষয়ে তদন্তের পর জানা যাবে।

আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

এর আগে, গতকাল রাজবাড়ীতে মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উদ্ধারকারী রিজার্ভ ট্রেন এসে লাইনচ্যুত ট্রেনটি উদ্ধার করে। রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা মালবাহী ট্রেনটি সকালে ২ নম্বর রেলগেট এলাকার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন ডিপোতে ঢোকার সময় লাইনচ্যুত হয়। তখন এ রুটে সব রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। উদ্ধারকারী রিজার্ভ ট্রেন সাড়ে ১০টার দিকে লাইনচ্যুত ট্রেনটি উদ্ধার করে। বর্তমানে রাজবাড়ীর সঙ্গে ঢাকা, রাজবাড়ী-দৌলতদিয়া ও রাজবাড়ী-খুলনা রুটে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।

এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় ২ নম্বর রেলগেট এলাকার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন ডিপোতে ঢোকার সময় মালবাহী ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। এতে মেইন লাইন ব্লক হয়ে যাওয়ায় রাজবাড়ীর সঙ্গে ঢাকা, রাজবাড়ী-দৌলতদিয়া ও রাজবাড়ী-খুলনা রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

খবর পেয়ে তিন ঘণ্টা পর ট্রেনটি উদ্ধার করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রাজবাড়ীর সঙ্গে স্বাভাবিক হয়েছে ট্রেন চলাচল।


দুই ট্রেন সংঘর্ষ   স্টেশন মাস্টার   তদন্তে কমিটি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দুই ট্রেনের সংঘর্ষ: উদ্ধারে যোগ দিয়েছে বিজিবি

প্রকাশ: ০২:৪৬ পিএম, ০৩ মে, ২০২৪


Thumbnail

গাজীপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ পরবর্তী উদ্ধার কাজে সহায়তা করতে দুই প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ঢাকা-জয়দেবপুর রেল সড়কের গাজীপুরের ছোট দেওড়া কাজীবাড়ি এলাকায় মালবাহী ও যাত্রীবাহী দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় উদ্ধার কাজের সহায়তায় ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন।

তিনি আরও জানান, টাঙ্গাইল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি আজ (শুক্রবার) বেলা ১১টায় জয়দেবপুর স্টেশনে যাত্রাবিরতি শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ট্রেনটি স্টেশন থেকে ছেড়ে আউটার সিগন্যালে পৌঁছানোর পর লাইন ক্রসিং করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা জয়দেবপুর আউটার সিগন্যালের কাজীবাড়ি ছোট দেওড়া এলাকায় একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।

এ ঘটনায় যাত্রীবাহী ট্রেনের চালকসহ আহত ৪জনকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় আরও আহত থাকতে পারে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।


ট্রেন সংঘর্ষ   বিজিবি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন