লক্ষ্মীপুরে চাঁদা দাবির অভিযোগে বিএনপি নেতা মানিক সাহার প্রকাশ ট্রাংক মানিকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সদর মডেল থানায় মামলাটি রুজু হয়।
জানা গেছে, সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল
ম্যাজিষ্ট্রেট সদর আমলী আদালতে আইনজীবী শ্যামল কান্তি চক্রবর্তী বাদী হয়ে মানিকের
বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এতে আদালতের বিচারক --- অভিযোগটি আমলে নিয়ে সদর মডেল
থানাকে মামলা রুজু করার নির্দেশ দেন। বাদীর আইনজীবী ফারুক হোসেন
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মানিক লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সাবেক সাধারণ
সম্পাদক ও পৌর বিএনপি সদস্য। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- পৌর
শহরের শাখারীপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী সমির রঞ্জন দে ও তার স্ত্রী রীতা রানী।
শ্যামল কান্তি চক্রবর্তী লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের সাখারী পাড়া এলাকার
বাসিন্দা। তিনি জেলা জজ আদালতের আইনজীবী ও সরকারি কৌঁসুলি (জিপি)।
মামলা সূত্র জানায়, শাখারী পাড়া এলাকায় শ্যামল কান্তির একটি ৫ তলা
বিশিষ্ট ভবন রয়েছে। ভবন নির্মাণের শুরুতেই অভিযুক্ত মানিক তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা
চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিয়েই শ্যামল ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করেন। ভবন
নির্মাণের ৭ বছর পার হয়ে গেলেও প্রায়ই চাঁদা দাবি করে আসছেন মানিক। এরমধ্যেই
ভবনটির পাশেই অপর দুই অভিযুক্ত সমির ও রীতা জমি ক্রয় করেন। তারা ভবন নির্মাণ করার
জন্য জমির মাটি খনন করেন। সেখানে পানি জমে শ্যামল কান্তির ভবনের নিচ থেকে মাটি সরে
যাচ্ছে। এতে ভবনটি ঝুঁকিতে রয়েছে। একপর্যায়ে শ্যামল দ্রুত কাজ শেষ করতে সমিরকে
জানায়। এরপ্রেক্ষিতে শ্যামলের কাছ থেকে অভিযুক্তরা ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ
ঘটনায় ২৭ জুলাই শ্যামল সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর থেকেই আরও
ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। গত ২ অক্টোবর দলবলসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তারা শ্যামলের কাছে
চাঁদা নিতে যায়। তখনও তিনি চাঁদা দেননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা তার পাশের
জমিতে আরও বড় গর্ত পানি জমিয়ে ভবনের অপূরণীয় ক্ষতির হুমকি দেয়।
বাদী শ্যামল কান্তি চক্রবর্তী বলেন, আমি আদালতে মামলার জন্য আবেদন
করি। আদালত মামলাটি রুজু করার জন্য সদর মডেল থানাকে নির্দেশ দিয়েছে। অভিযুক্তদের
আমি দৃষ্টান্ত বিচার চাই।
বিএনপি নেতা মানিক সাহা বলেন, আমি একটি নোটিশ পেয়েছি। তবে চাঁদা দাবির বিষয়টি সত্য নয়। ঘটনাটির কিছুই আমার জানা নেই। লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন, বাংলা ইনসাইডারকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মন্তব্য করুন
ফরিদপুরের সালথায় তীব্র দাবদাহে ৩ শিক্ষক ও ১০ শিক্ষার্থী অসুস্থ
হয়ে পড়েছে। অসুস্থদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে তিন শিক্ষার্থীকে
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
রোববার (২৮ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের
রামকান্তুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
ও সালথা থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিবদর্শন করেন।
অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন রামকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
সহকারী শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, রোজার ঈদের পর থেকে স্কুল বন্ধ ছিল। প্রধান
শিক্ষকও মাতৃত্বকালিন ছুটিতে রয়েছেন। দীর্ঘদিন পর গতকাল রোববার স্কুল খোলা হয়। সকালে
স্কুলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে প্রথমে বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম ও মাঠে জমে থাকা
ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করি।
তিনি আরও বলেন, কিছু সময় কাজ করার পর তীব্র গরমে আমরা সবাই পানির
পিপাসায় ভুগছিলাম। তখন সবারই গলা শুকিয়ে আসছিল। পরে স্কুলের টিউবওয়েল চেপে ঠান্ডা পানি
বের করে তা পান করি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর একে একে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বমি করতে থাকে
এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয় এক যুবক এসে আমাকে বলেন, স্যার ওই টিউবওয়েলের পানি
খেয়েন না, পানিতে বিষ মেশানো হয়েছে। পরে অসুস্থদের দ্রুত সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
নেওয়া হয়। সেখানে সকলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে রানিতা নামে এক শিশুর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে ফরিদপুর
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থদের মধ্যে
শিক্ষক সুকলা রানী শীল, রেবেকা বেগম, রবিউল ইসলাম, শিক্ষার্থী সাদিহা, নাহিদ ও তৌকিয়ার
নাম পাওয়া গেছে। বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি।
সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল
মমিন বলেন, ‘টিউবওয়েলের পানিতে কোনো ধরনের বিষক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা
করা হচ্ছে, ওই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থদের মধ্যে দুজনের
চিকিৎসা এখনো চলছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সবাই শঙ্কামুক্ত’।
সালথা থানার ওসি ফায়েজুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রথমে খবর পেয়েছিলাম
টিউবওয়েলের পানি খেয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে ঘটনাস্থলে এসে ডাক্তারের
সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তিনি জানিয়েছেন টিউবওয়েলের পানিতে বিষক্রিয়ার কোনো লক্ষণ পাননি’।
এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী
জানান, রোববার স্কুল খোলার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সকালে স্কুলে এসে টিউবওয়েলের পানি
খেয়ে অসুস্থ পরলে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন সবাই মোটামুটি সুস্থ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন, তারা বিষক্রিয়ার কোনো আলামত
পাননি। গরমের কারণেও এ ঘটনা ঘটতে পারে। তারপরও টিউবওয়েলের পানি আমরা পরীক্ষা করে দেখব।
একইসঙ্গে আগামীকাল থেকেই ছাত্রছাত্রীরা যাতে নিরাপদ পানি খেতে পারে, সে ব্যবস্থা গ্রহণ
করা হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন