ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশ নিয়ে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র যেসব বিষয়ে একমত নয়

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১২ নভেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে, কিভাবে হবে তা নিয়ে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র পরস্পর মুখোমুখী অবস্থানে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে যারপরনাই আগ্রহী এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে বারবার বিভিন্ন ভাবে সতর্ক করছে। অন্যদিকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত মনে করছে, বাংলাদেশের নির্বাচন এ দেশের একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে কোনো দেশেরই অতিরিক্ত নাক গলানো উচিত নয়। আর এ কারণেই দুটি দেশ এখন এই প্রথমবারের মতো আঞ্চলিক বিষয়ে সম্পূর্ণ দুই মেরুতে অবস্থান করছে। 

সর্বশেষ গত ১০ নভেম্বর ভারতে টু প্লাস টু সম্মেলনে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। সেই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গটিও ব্যাপকভাবে আলোচিত হয় এবং বাংলাদেশ প্রসঙ্গে দুই দেশ তাদের অবস্থান এবং দূরত্ব বহাল রেখেছে। ভারত যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সঙ্গে একমত হতে পারেননি, তেমনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের অবস্থানের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছে। 

বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, মূলত পাঁচটি ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রে একমত হতে পারেনি। এগুলো হলো-

১. চীনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করা: ভারত মনে করে চীনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার প্রধান উপায় হল বাংলাদেশকে পাশে রাখা। বর্তমান সরকারকে সমর্থন জানানো এবং বুঝিয়ে শুনিয়ে চীনের বলয় থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা। বাংলাদেশকে যদি বেশি চাপ দেওয়া যায় তাহলে বাংলাদেশ আরও বেশি চীনা বলয়ে চলে যাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তেমনটা মনে করেন না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে বাংলাদেশে চীনের অর্থনৈতিক আগ্রাসন অনেক বেড়ে গেছে। এখন সেটা থামানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। 

২. বিএনপিকে নির্বাচনে আনা না আনা: ভারত মনে করে যে বিএনপির নির্বাচনে আসা না আসা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং বিএনপি যদি নির্বাচনে নাও আসে তাহলেও কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তা মনে করেন না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে জনগণের মতামত প্রতিফলনের জন্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। 

৩. বঙ্গোপসাগরের হিস্যা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গোপসাগরে তার আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বঙ্গোপসাগরে যেন মার্কিন কর্তৃত্ব নিশ্চিত হয়, সেটি চূড়ান্ত করতে চায়। অন্যদিকে ভারত মনে করে যে, বঙ্গোপসাগর ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যখন যেটা প্রয়োজন হবে সেটা ভারত-ই তাদের সেই প্রয়োজন মেটাবে। এক্ষেত্রে মার্কিন উপস্থিতির কোনো প্রয়োজন নেই। 

৪. বাংলাদেশে মৌলবাদ এবং জঙ্গিবাদের উত্থান প্রসঙ্গ: ভারত মনে করে যে, বর্তমান সরকার যদি দায়িত্ব না থাকে তাহলে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ উত্থানের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে যদি বিএনপি-জামাত আসে তাহলে বাংলাদেশ আবার জঙ্গিবাদের দিকে এগোবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তা মনে করে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে গণতন্ত্রের বিকাশ ধারা অব্যাহত থাকলে কখনোই জঙ্গিবাদের উত্থান হবে না। বরং গণতান্ত্রিক ধারা বাধাগ্রস্ত থাকলে, সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে, জনমতের প্রতিফলন না ঘটলে, বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠনগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে এবং এরকম মাথাচাড়া দিয়ে উঠা কোনো ভাবেই কারও জন্য মঙ্গল হবে না। 

৫. বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন: ভারত মনে করে যে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যদি না থাকে, বিশেষ করে শেখ হাসিনা যদি ক্ষমতায় না থাকে তাহলে বাংলাদেশে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যাবে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য তা মনে করে না। তারা মনে করে যে, বাংলাদেশে যদি গণতান্ত্রিক ধারা বিকশিত হয় এবং বাংলাদেশ যদি কোয়াড়ের অন্তর্ভুক্ত হয় সেক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নতাবাদের অবসান এমনিতেই ঘটবে। 

এই পাঁচ বিষয় নিয়ে দুই পক্ষ একমত হতে পারেনি। যার প্রভাব আগামী নির্বাচনে পড়তে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

বাংলাদেশের নির্বাচন   ভারত   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

৫২৩ হজযাত্রীর টাকা নিয়ে লাপাত্তা ২ এজেন্সি মালিক

প্রকাশ: ১১:০৮ এএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে গত মে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৪ হাজার হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। কিন্তু ৫২৩ জন যাত্রীর টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে আল রিসান ট্রাভেলস দিয়া ইন্টারন্যাশনাল নামের দুই এজেন্সি। এরমধ্যে আল রিসান ট্রাভেলসের ৪৪৮ জন এবং দিয়া ইন্টারন্যাশনালের ৭৫ জনের টাকা নিয়ে পালিয়েছে। ফলে দুই এজেন্সির মাধ্যমে নিবন্ধন করা হজযাত্রীদের হজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এর প্রেক্ষিতে ওই হজ এজেন্সির চেয়ারম্যান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ওই চিঠি পেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেশের সকল ইমিগ্রেশনকে চিঠি দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আবু তাহেরের সই করা পৃথক দুটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের হজ মৌসুমে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হজ লাইসেন্স নম্বর ০৬৭২) এর অধীনে ৪৪৮ জন হজযাত্রীর নিবন্ধন হয়েছে। এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে অদ্যাবধি কোনও ভিসা করা হয়নি। অবস্থায় এজেন্সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এতে এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং তাদের বছর হজে যাওয়া অনিশ্চিত হতে পারে।  অবস্থায় আল রিসান ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে এবং একইসাথে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ভিসা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে এজেন্সির মালিক গা ঢাকা দেয়। অফিসে যোগাযোগ করলে তাদের ভিসা আবেদন করা হয়েছে এমন তথ্য জানানো হয় হাজীদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একজনেরও ভিসা হয়নি এমন তথ্য জানার পর হাজীরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে এজেন্সির মালিককে গ্রেফতার তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

এদিকে রংপুরে দিয়া ইন্টারন্যাশনাল নামে আরেকটি হজ এজেন্সির ৭৫ জন যাত্রীর হজযাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এজেন্সির মালিকলিডএজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় না করে ৭৫ জন যাত্রীর তিন কোটি টাকা নিজেদের নামে করা এজেন্সির ব্যাংক হিসাবে নিয়েছেন। ফলে হজযাত্রীদেরও হজযাত্রা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

এর প্রেক্ষিতে ওই হজ এজেন্সির চেয়ারম্যান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।


হজযাত্রী   লাপাত্তা   মালিক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

টঙ্গীতে প্লাস্টিক কারখানায় আগুন

প্রকাশ: ১০:৪৫ এএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লেগেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাত পৌঁনে ১১টার দিকে টঙ্গীর সিলমুন মোল্লার গ্যারেজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আবু মোহাম্মদ সাজেদুল কবির জোয়ার্দার বলেন, কারখানাটিতে প্লাস্টিকের দানা তৈরি করা হতো। আগুনের খবর পেয়ে প্রায় এক ঘণ্টা যাবত আমাদের তিনটি ইউনিটের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে।

প্রায় এক ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন ডাম্পিংয়ের কাজ চলছে। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিক জানা যায়নি। 


আগুন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

কাঁচা মরিচের কেজি দেড়শ টাকা ছাড়িয়েছে

প্রকাশ: ১০:০৬ এএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

কোরবানির ঈদের মাসখানেক বাকি। ইতিমধ্যে বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম প্রতি কেজি ৮০-১০০ থেকে বেড়ে ১৫০-১৬০ টাকা হয়েছে। গত কোরবানির সময়ে ঢাকায় কাঁচা মরিচের কেজি ৭০০ টাকায় উঠেছিল।

বছরের এই সময়ে দেশে কাঁচা মরিচের কিছুটা সংকট থাকে। তাতে আমদানি করে প্রয়োজন মেটাতে হয়। এবার দাম বাড়তে থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বাজারে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে মরিচের সরবরাহ কমেছে। এতে বাড়ছে দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা বেড়েছে। এদিকে বাজারে গ্রীষ্মকালীন মরিচের গাছ এখন শুকিয়ে এসেছে। ফলনও আগের তুলনায় কমে এসেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সঙ্গনিরোধ শাখা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত দেশের বাইরে থেকে কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি (আইপি) দেওয়া হয়নি। তবে বাজার পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।


কাঁচা মরিচ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশে দরিদ্র মানুষের খাবারের ব্যয় বেড়েছে ৫৮ শতাংশ

প্রকাশ: ০৯:৪৯ এএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েই চলছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) চলতি মাসে বাংলাদেশের খাদ্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, খানা জরিপ অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের খাবার কেনার খরচ ছিল প্রতি মাসে মাথাপিছু হাজার ৮৫১ টাকা। গত দুই বছরে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মাথাপিছু খাবার কেনার খরচ বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৯২৩ টাকা; যা দুই বছর আগের তুলনায় ৫৮ শতাংশ বেশি।

সরকারি বেসরকারি সব হিসাব বলছে, গত দুই বছরে দেশের মানুষের আয় বাড়লেও এই সময়ে ধারাবাহিকভাবে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের আশপাশে থেকেছে। সামগ্রিকভাবে দেশের প্রধান খাদ্যগুলোর দাম বেড়েছে। বিশেষ করে চাল, আটা আমিষের প্রধান উৎস মুরগির মাংস, ডিম, মাছ সবজির দাম বাড়তির দিকে। বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ, আদা, কাঁচা মরিচ ফলের দামও।

ডব্লিউএফপি গত মাসে (এপ্রিল) বাংলাদেশের খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব নিয়ে আরেকটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের ১৭ শতাংশ মানুষ খাদ্যঝুঁকিতে ছিল; যা এর আগের মাসের তুলনায় শতাংশ বেড়েছে। দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। আর ৪৩ শতাংশ মানুষ বাকিতে খাবার কিনছে। ২২ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্য চিকিৎসা বাবদ খরচ কমিয়েছে। আর ১৩ শতাংশ মানুষ সঞ্চয় ভাঙছে। খাদ্যঝুঁকিতে থাকা মাত্র ২১ শতাংশ মানুষ বাইরে থেকে সহায়তা পাচ্ছে।

ডব্লিউএফপির চলতি মাসের বাজার তদারকি প্রতিবেদন বলছে, মাথাপিছু খাদ্যের দাম দেশের একেক বিভাগে একেকভাবে বেড়েছে। চট্টগ্রাম, ঢাকা সিলেটে জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি বেড়েছে। রংপুর, রাজশাহী ময়মনসিংহে তুলনামূলকভাবে কম বেড়েছে। বাকি এলাকাগুলোতে দাম অপরিবর্তিত আছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে ছয় মাস ধরে গমের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। ফলে বাংলাদেশেও গমের আমদানি বেড়েছে। তবে আমদানির তুলনায় গমের দাম কমেনি। মার্চে আটার খুচরা মূল্য প্রতি কেজি প্রায় ৫৭ টাকায় পৌঁছেছে; যা এর আগের মাসের তুলনায় সামান্য বেশি। দেশে গমের চাহিদার ৮৫ শতাংশ আমদানি করা হয়।

টানা চতুর্থ মাসের মতো ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে দেশে চালের দাম বেড়েছে। আমনে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে শতাংশ বেশি উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও দাম বেড়েছে। উৎপাদন বেশি হওয়া সত্ত্বেও চালের দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে চালকল মালিকেরা উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করেছেন।

ডব্লিউএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে দেশে সরকারি খাদ্য মজুত কমতির দিকে ছিল। সাধারণত বছরের এই সময়ে খাদ্যের মজুত কম থাকে। কিন্তু এবার মজুতের পরিমাণ আগের থেকে কম। ফেব্রুয়ারিতে সরকারি খাদ্য মজুত ছিল ১৫ লাখ ৬০ হাজার টন। এর মধ্যে চাল ১৩ লাখ ৩০ হাজার টন, যা আগের এক বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ কম।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে সরকারি মজুত গত দুই মাসে আরও কমেছে। গত ১৫ মে গুদামে চাল, গম ধান মিলিয়ে মোট মজুত ছিল ১১ লাখ ১২ হাজার ৪২০ টন। এর মধ্যে চাল লাখ ৫১ হাজার ৩২৫ টন আর গম লাখ ৫১ হাজার টন। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে চাল গমের সরবরাহ বাড়িয়ে দেওয়ায় মজুত কমছে। তবে আগামী জুন থেকে বোরো সংগ্রহ শুরু হলে মজুত বাড়তে শুরু করবে বলে মনে করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

ডব্লিউএফপি চলতি মাসে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে ২০১৯ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত খাদ্য পরিস্থিতির পরিবর্তনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, সংকটের সময় বাংলাদেশে খাদ্য ব্যবস্থাপনা বহুমুখী সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছে। কোভিড-১৯ সংকটের পর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে খাদ্য আমদানি কমে আসে। এর আগে ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে খাদ্যপণ্যের উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ছাড়া ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গবাদিপশুর উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার গণমাধ্যকে বলেন, ‘আমাদের খাদ্য উৎপাদন যথেষ্ট ভালো। আর সার, জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের উৎপাদন খরচও বেড়েছে। ফলে চালের দাম আরও কমাতে গেলে কৃষক উৎপাদন কমিয়ে দেবেন। তখন চালের জন্য আমাদের আবারও আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভর করতে হবে।

ডব্লিউএফপির হিসাব অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ সালে খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রায় শতাংশে পৌঁছায়। এর আগে ছিল দশমিক শতাংশ। ২০২৩ সাল থেকে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দ্রুত বাড়তে থাকে। ওই বছরের অক্টোবরে তা ১৩ শতাংশে পৌঁছায়।

সংকট শুরু হওয়ার পর অর্থাৎ ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে খাদ্যের দাম ৭৫ শতাংশ বেড়ে যায়। এর মধ্যে শক্তি জোগায় এমন খাদ্যগুলোর দাম ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। চাল গমের মতো দানাদার খাদ্য, চিনি, ভোজ্যতেল, মাছ, মাংস মুরগির মতো প্রাণিজ আমিষ সবজি, দুধ ডিমের মতো পুষ্টিকর খাবারের দামও বেড়ে যায়।


দরিদ্র   মানুষ   খাবার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দুবাইয়ে গোপন সম্পদ ৫৩২ বাংলাদেশির, শীর্ষে ভারত ও পাকিস্তান

প্রকাশ: ০৯:৩১ এএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরের আবাসনবাজার বেশ রমরমা। বিভিন্ন দেশের সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে সন্দেহভাজন অপরাধীরাও এখানে বিনিয়োগ করছে। কিনছে বাড়ি ও ফ্ল্যাট। এই তালিকায় পিছিয়ে নেই বাংলাদেশিরাও।

ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরির বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ৫৩২ জন বাংলাদেশি সেখানে বাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনেছেন। যার মূল্য ৩৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলার।

ফাঁস হওয়া সম্পদ কেনার ঘটনার সঙ্গে ট্যাক্স অবজারভেটরি নিজেদের আনুমানিক হিসাবও দিয়েছে। যেখানে ফাঁস হওয়া ঘটনার সঙ্গে ফাঁস না হওয়া ঘটনাও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তবে কারা এসব সম্পদ কিনেছেন, সেই তথ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।

তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে দুবাইয়ের শতভাগ রেডিমেড (প্রস্তুত) আবাসন সম্পদ কিনেছেন বা অপ্রস্তুত আবাসন সম্পদ কেনার জন্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন এমন কিছু ব্যক্তির তালিকা ফাঁস হয়েছে।

তালিকায় ৩৯৪ জন বাংলাদেশির নাম এসেছে। ওই বছর তারা মোট ২২ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের সম্পদ কিনেছেন। সেবার বাংলাদেশিরা মোট ৬৪১টি সম্পদ কিনেছিলেন। তবে অবজারভেটরির মতে, ওই বছর সর্বমোট ৫৩২ জন বাংলাদেশি সেখানে বাড়ি-ফ্ল্যাট কিনেছেন।

ব্যাংক লুট করে বিসমিল্লাহ গ্রুপের খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরীসহ অন্তত ২০ জন ঋণখেলাপির সম্পদ এখন দুবাইয়ে। তালিকায় আরও রয়েছে সাবেক মন্ত্রী, রাজনীতিক, অপরাধী, অর্থ পাচারকারীদের নাম।

ওয়ান-ইলেভেনের প্রভাবশালী সাবেক সেনা কর্মকর্তারা সেখানেই অবস্থান করছেন। তাদের রয়েছে বাড়ি, দোকানসহ নানা ধরনের ব্যবসা। আমলাদের অনেকেই তাঁদের বিত্তের ঘাঁটি গড়েছেন দুবাইয়ে। তাঁদের একাধিক বাড়ি আর বিশাল সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সদ্যবিদায়ী মন্ত্রিসভার একজন মন্ত্রী এবং তাঁর মেয়ের নাম উঠে এসেছে গোপন সম্পদের পাহাড় গড়ার তালিকায়।

গত মঙ্গলবার একটি বৈশ্বিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা প্রকল্প ‘দুবাই আনলকড’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে বিশ্বের সম্পদশালীদের গোপন সম্পদের তথ্য ফাঁস করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, দুবাইয়ের আবাসন খাতে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা। তাদের তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশি নাগরিকও। ৩৯৪ বাংলাদেশির ২ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা মূল্যের ৬৪১টি সম্পত্তি রয়েছে দুবাইয়ে। সম্পত্তির মালিকের এ তালিকায় আরও রয়েছেন বিভিন্ন দেশের বড় ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এমনকি বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তি, অর্থ পাচারকারী ও অপরাধীরাও সেখানে বিপুল সম্পদের মালিক।

প্রতিবেদনে ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানির পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির পরিবারের সদস্যদের নাম রয়েছে। তালিকায় দেখা গেছে, দুবাইয়ে সবচেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে ভারতীয়দের। সেখানে ৩৫ হাজার প্রপার্টির মালিক ২৯ হাজার ৭০০ ভারতীয়। এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন পাকিস্তানিরা। দেশটির ১৭ হাজার নাগরিকের দুবাইয়ে ২৩ হাজার প্রপার্টি রয়েছে। এর মূল্য ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন