রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (২৯ নভেম্বর) ফিলিস্তিনের জনগণ ও সরকারের প্রতি দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন ও সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ফিলিস্তিনিদের
সাথে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি
ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণীতে ফিলিস্তিনি
জনগণের মর্যাদাপূর্ণ জীবন সার্বভৌম মাতৃভূমি
নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক
সম্প্রদায় এবং মানবিক সংস্থাগুলোকে
একসাথে কাজ করার আহ্বান
জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি
তাঁর বার্তায় বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সংহতি দিবসের গৌরবময় উপলক্ষ্যে আমি ফিলিস্তিনি জনগণ
ও সরকারের প্রতি দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন ও সংহতি পুনর্ব্যক্ত
করছি।’
তিনি
বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ
হিসেবে সবসময় স্বাধীনতা, শান্তি এবং গণতন্ত্রে বিশ্বাস
করে।
তিনি
বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা
মিশনে সবচেয়ে বড় অবদানকারী দেশ।’
রাষ্ট্রপতি
বলেন, যুদ্ধ শান্তি আনতে পারে না
বরং যুদ্ধ ধ্বংস এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন
করে।
তিনি
বলেন, একটি দ্বি-রাষ্ট্র
সমাধানের ভিত্তিতে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র
প্রতিষ্ঠায় তাদের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের প্রতি বাংলাদেশের অটুট সমর্থন রয়েছে।
বাংলাদেশ
কখনোই বিশ্বের কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘন সমর্থন করে না উল্লেখ
করে তিনি বলেন, আমাদের
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমান নির্দেশিত এবং আমাদের সংবিধানে
অন্তর্ভুক্ত নীতি অনুযায়ী আমরা সবসময় ধর্মনিরপেক্ষতা
ও শান্তির আদর্শ অনুসরণ করি।’
তিনি
বলেন, ‘ফিলিস্তিনি ভাই-বোনেরা, যারা
তাদের বৈধতা থেকে ছাপ্পান্ন বছরেরও
বেশি সময় ধরে আত্মনিয়ন্ত্রণের
অধিকার বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের জনগণ তাদের প্রতি
সংহতির প্রকাশে নিবেদিত থাকবে।’
তিনি
বলেন, বাংলাদেশ গাজায় আবাসিক এলাকা ও হাসপাতালগুলোতে
অব্যাহত নৃশংস বোমা হামলার তীব্র
নিন্দা জানায়, এতে নারী, শিশু
এবং বৃদ্ধসহ হাজার হাজার ফিলিস্তিনি সাধারণ নাগরিক নিহত ও আহত
হয়েছে। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে এই নৃশংসতা মানবাধিকারের
লংঘন।
তিনি
বলেন, আমরা গাজা ও
ফিলিস্তিনে সামগ্রিকভাবে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানাচ্ছি।
তিনি
বলেন ‘আমরা আলোচনার মাধ্যমে
প্রতিটি সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশ সর্বদা
ফিলিস্তিনের জনগণ ও সরকারের
পাশে আছে।’
রাষ্ট্রপতি
মানবতা, ন্যায় ও ন্যায্যতার জন্য
সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবিক সহায়তা
সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি
বলেন, ‘আসুন, আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের
জন্য কাজ করি যাতে
তাদের নিরাপদ, নির্ভীক এবং তাদের সার্বভৌম
মাতৃভূমিতে মর্যাদাপূর্ণ জীবন পায়।’
ফিলিস্তিনি
জনগণের প্রতি আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেছেন,
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে যোগ দিয়ে
১৯৬৭-এর পূর্ববর্তী সীমানা
এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানীসহ দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান
করার ভিত্তিতে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্ম নিয়ন্ত্রণ অধিকার
ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার নিরঙ্কুশ অধিকারের
প্রতি দ্ব্যর্থহীন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছে।
তিনি
বলেন, বাংলাদেশ সবসময় সারা বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদ,
উপনিবেশবাদ বা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে
নিপীড়িতদের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে সমর্থন করেছে।
তিনি
বলেন, আমাদের এ দৃঢ় অঙ্গীকার
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের দিকনির্দেশনায় পরিচালিত এবং এ নীতি
আমাদের জাতীয় সংবিধানে নিহিত রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ তাদের ফিলিস্তিনি
ভাই ও বোনদের প্রতি
তাদের সংহতি প্রকাশে অবিচল থাকবে যারা ছাপ্পান্ন বছরেরও
বেশি সময় ধরে তাদের
আত্মনিয়ন্ত্রণের বৈধ অধিকার থেকে
বঞ্চিত রয়েছে।
তিনি
আরো বলেন, বাংলাদেশ গাজায় নারী ও শিশুসহ
নিরীহ বেসামরিক মানুষদের নির্মম হত্যাকা-ের এবং শরণার্থী
শিবির, স্কুল, হাসপাতাল এবং ধর্মীয় স্থানসহ
সুরক্ষিত স্থাপনার ওপর নির্বিচারে বোমা
হামলা তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, “গাজায় বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করে ইসরায়েল বর্তমানে
যে যুদ্ধ চালিয়েছে তা হচ্ছে ফিলিস্তিনি
জনগণের ওপর সম্মিলিত শাস্তির
সমতুল্য এবং ইসরালে কর্তৃক
মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক
আইনের লঙ্ঘন।"
তিনি
আরও বলেন, বাংলাদেশ ইসরায়েলের বর্বরতা বন্ধের এবং সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতির
দাবি জানাচ্ছে।
তিনি
আরো বলেন, “বাংলাদেশ দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, ইসরায়েল অব্যাহতভাবে
মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক
আইন উপেক্ষা ও লঙ্ঘন করা
তা সত্ত্বেও দায়মুক্তি ভোগ করে চলেছে।
তিনি
বলেন, "আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস
করি যে, ফিলিস্তিনের জনগণ
ন্যায়বিচার ও প্রতিকার পাওয়ার
দাবি রাখে যা শুধুমাত্র
অব্যাহত দখলদারিত্বের মধ্যে বসবাসরত ফিলিস্তিনের জনগণের আত্ম নিয়ন্ত্রণ অধিকার
সহ একটি ন্যায্য সমাধান
নিশ্চিত করার মাধ্যমে অর্জন
করা যেতে পারে।
তিনি
বলেন, "আমরা আরো বিশ্বাস
করি যে, জাতিসংঘের প্রাসঙ্গিক
অসংখ্য প্রস্তাবের বাস্তবায়ন, চার জাতি প্রস্তাবিত
রোড ম্যাপ, মাদ্রিদ শান্তি সম্মেলনের শর্তাবলী, আরব পিস ইনিশিয়েটিভ
এবং জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সদস্য
রাষ্ট্রের প্রচেষ্টা মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করতে এবং ফিলিস্তিন
সমস্যার একটি স্থায়ী শান্তিপূর্ণ
ও ন্যায্য সমাধান লাভের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী
একটি সার্বভৌম স্বদেশে, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও মর্যাদার সঙ্গে
বসবাসের জন্য ফিলিস্তিনি জনগণের
আকাঙ্খা ও বৈধ অধিকার
পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা জোরদার এবং কার্যকর ও
সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহনের লক্ষ্যে একসঙ্গে
কাজ করার জন্য আন্তর্জাতিক
সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
(বাসস)
রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।