ইনসাইড বাংলাদেশ

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সমঝোতার জন্য চেষ্টা করে

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সাথে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে স্বাধীন হয় আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ। পৃথিবীর বুকে সৃষ্টি হয় বাংলাদেশ নামক একটি ভূখন্ড। বাংলাইনসাইডার এই বিজয়ের মাসে ধারাবাহিক ভাবে ‘চতুর্থ পর্বে’ ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র পঞ্চদশ খন্ড’ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুহিতের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করছে-

নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড়ের সময় থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে বাঙ্গালীরা সংগঠিত হতে থাকে। নিউইয়র্কের ইষ্ট পাকিস্তান লীগ অব আমেরিকা ঘূর্ণিঝড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অবহেলা নিয়ে কথা তুলে আর বাংগালীদের জন্য সাহায্যের আবেদন করে। কাজী শামসুদ্দিন আর ডঃ আলমগীর মার্চ মাসে স্বাধীনতার দাবী উঠান, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লংঘনের নালিশ করেন আর জাতিসংঘের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শনের আয়োজন করেন। ২৫শে মার্চ গণগত্যা শুরু হলে এই লীগ নাম পরিবর্তন করে এবং জুন মাস পর্যন্ত বাংগালী সমাজের প্রতিনিধির ভূমিকা পালন করে। ২৫শে মার্চের পরে শহরে শহরে লীগের শাখা গড়ে ওঠে তবে তারা সকলেই নিজস্ব কার্যক্রম অনুযায়ী এগুতে থাকে। সমন্বিত সংগঠন গড়ে উঠতে কয়েক মাস চলে যায়। তবে নিউইয়র্কের লীগ অব আমেরিকাই বাংলাদেশ আন্দোলনে অগ্রপথিকের ভূমিকা পালন করে।

২৯শে মার্চ সোমবার ওয়াশিংটনে বাংগালীদের একটি সমাবেশ এবং বিক্ষোভ মিছিল হয়। কেপিটল হিল হোয়াইট হাউস, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভবনের সামনে এই সমাবেশ হয়। প্রায় দুই শত মানুষ আসে এবং এদের মধ্যে বেশ কিছু সরকারী কর্মচারী এবং গবেষক ছিলেন। এখানে উল্লেখ করা উচিত যে, এই সমাবেশ আয়োজনে দূতাবাসের নিম্নপদস্থ কর্মচারীদের ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেহেতু তারাই ফোনের মাধ্যমে বেশীরভাগ যোগাযোগ স্থাপন করেন। সমাবেশ শেষ করার পর আমার বাসায় প্রায় ৭০ জন মিলিত হন এবং ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে আমরা আলোচনা করি।

১৩ই এপ্রিল বি, বি, সি'র মাধ্যমে জাকারিয়া চৌধুরী ঘোষণা করেন যে বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ থেকে আমরা অনুভব করি যে আন্দোলন এবার নতুন পর্যায়ে শুরু হবে। জাকারিয়া চৌধুরীর সংগে আমার টেলিফোনে যোগাযোগ হয় এবং তিনি দীর্ঘায়িত মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে উপদেশ দেন। এখানে একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। ১৬ই এপ্রিল একটি সম্মেলনে আমি পাকিস্তানী প্রতিনিধি হিসেবে যাই এবং সেখানে তুরস্কের প্রতিনিধির সাথে আমার প্রচণ্ড বাক-বিতণ্ডা হয়। এই বাক-বিতণ্ডার বিষয় ছিল তুরস্ক কর্তৃক পাকিস্তানকে সামরিক সাহায্য দান। এর তিনদিন পর আমাকে এই সম্মেলন থেকে প্রত্যাহার করা হয় এবং আমার চলাফেরার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

২৭শে এপ্রিল বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ম্যাকনামারার সংগে আমার যোগাযোগ হয়। আমি পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধের জন্য আবেদন জানাই। তাছাড়া বিশ্বব্যাংকের সহকারী পরিচালক গ্রেগরি ভোটার সংগে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে থাকি। তিনি বাংলাদেশের বিষয়টি দেখাশুনা করতেন।

মে মাসের শেষের দিকে আমেরিকার কংগ্রেসে ফরেইন এ্যাসিসটেন্স এ্যামেন্ডমেন্ট প্রস্তাব পেশ করা হয়। সিনেটে স্যাক্সবি-চার্চ প্রস্তাবে পাকিস্তানে সব সাহায্য বন্ধ করার দাবী করা হয়। আর হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিতে গ্যালাগার প্রস্তাবে একই দাবী উত্থাপন করা হয়। এদিকে দূতাবাসের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে পড়ে। বহু লোককে চাকুরীচ্যুত করা হয়।

৯শে আগষ্ট টরনটোতে অক্সফ্যাম আয়োজিত একটি বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। স্যার হিউ কিননীসাইত এতে সভাপতিত্ব করেন আর বৃটেনের জুডিথ হার্ট, ভারতের জেনারেল চৌধুরী, প্রফেসর নূরুল হাসান এবং কানাডার বহু সংসদ সদস্য এই সম্মেলনে যোগদান করেন। এই সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবগুলো সুবিখ্যাত "টরনটো ডিকলারেশন" হিসেবে পরিচিত। এই সম্মেলনে জনাব এম আর সিদ্দিকী ও আমি বাংলাদেশের তরফ থেকে উপস্থিত ছিলাম। এর কিছুদিন পর শেখ মুজিবের বিচার সম্পর্কিত খবর আসে। আমরা এর বিরুদ্ধে জোর তৎপরতা চালাতে থাকি। এর বিরুদ্ধে জনমত প্রবল হয়ে ওঠে। বেশ কিছু কংগ্রেস সদস্য বিবৃতি দেন এবং এমনকি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের রাষ্টদূতকে ডেকে এনে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ৩রা সেপ্টেম্বর ডাঃ মালিক গভর্ণর হন। কিছুদিন পর একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে শেখ মুজিবকে ছেড়ে নেয়া হচ্ছে যা পরবর্তীকালে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

ডিসেম্বর মাসে যখন যুদ্ধ শুরু হয় তখন আমরা এক প্রকার নিশ্চিত ছিলাম যে যুদ্ধে আমরা জয়ী হবই। যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে একটা ঘটনার উল্লেখ করা যায়। অক্টোবর মাসের দিকে সারওয়ার মুর্শেদ খানের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান-এর পক্ষ থেকে চিঠি আসে। এতে ছিল বিমান বাহিনী গঠন করার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র এবং ভারী কামান-গোলার একটি বিশদ বিবরণ কিন্তু এই বিবরণ বা প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের তালিকা খুবই উদ্ভট ছিল যেহেতু এই সব সংগ্রহ করা ছিল অসম্ভব এবং এর জন্য যে অর্থ প্রয়োজন হতো তাও আমাদের ছিল না। অবশ্য যুদ্ধে ভারত যে আমাদের সাহায্য করবে তা আমরা সহজেই অনুমান করেছিলাম।

যুদ্ধকালীন অবস্থায় কিছু পাকিস্তানী আমাদের মুজিব নগর সরকারের সাথে একটি সমঝোতায় আসতে চেষ্টা করে। তাদের কয়েকজন জানায় যে, এই প্রস্তাব ভূট্টোর মস্তিষ্কপ্রসূত। তারা বলে মুজিবকে ছেড়ে দেয়া হবে যদি শেখ মুজিব সরাসরি জাতিসংঘে এসে পূর্ব পাকিস্তানের ভূ-খণ্ড থেকে সব বিদেশী সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানান এবং তার আহবানে ভারত সাড়া দেয়। এমতাবস্থায় পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে একটি রাজনৈতিক সমঝোতায় এসে বাঙালীদের সব দাবী মেনে নেবে। প্রস্তাবটি অত্যন্ত চতুর বলে আমাদের মনে হয়েছিল। আমরা উত্তরে জানাই যে সর্বশক্তি বলতে আমরা ভারত এবং পাকিস্তান উভয়কে বুঝি। ছেড়ে যেতে হলে উভয়কে যেতে হবে একসাথে। কিন্তু এই আলোচনা সরকারী পর্যায়ে পৌঁছুবার আগেই বন্ধ হয়ে যায়।

১১ই ডিসেম্বর আকেরটি প্রস্তাব নিয়ে পাকিস্তানীরা উপস্থিত হয় এবং সমঝোতার জন্য চাপ দেয়। তারা এই প্রস্তাব পেশ করার জন্য বিচারপতি চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি পাকিস্তানীদের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দেন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে একটি ভীতিপূর্ণ ঘটনা ছিল চট্টগ্রামের উদ্দেশে সপ্তম নৌবহরের যাত্রা। আমার বিশ্বাস, যদি কংগ্রেসে ব্যাপারটা ফাঁস না হয়ে যেত তাহলে হয়ত বা সত্যি সত্যি নৌবহর চট্টগ্রামের নিকট এসে যেত।

এ সময় আমরা সবাই ঢাকার অবস্থা নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত ছিলাম। কংগ্রেস সদস্য কোরম্যান কর্তৃক আয়োজিত একটি ভোজসভায় আমি উপস্থিত ছিলাম। সেখানে এশিয়ার ব্যাপার নিয়ে গবেষণারত মার্কিন বুদ্ধিজীবীদের সমাবেশ হয়। সেদিন আমাদের প্রধান চিন্তার বিষয় ছিল নতুন বাংলাদেশ কেমন হবে। যুদ্ধবিধবস্ত ও অত্যাচারে নিপীড়িত জাতিকে কি অবস্থায় আমরা পাব আর কি করে এর পুনর্বাসন করা যাবে। ১৬ তারিখ দেশ স্বাধীন হলো এবং ১৮ তারিখে জানতে পারলাম বাংলাদেশের বহু বুদ্ধিজীবীকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। সেদিন আমি ইয়েলে গিয়েছিলাম অধ্যাপক নূরুল ইসলামকে ঢাকার পথে বিদায় দিতে।

মুজিব নগর থেকে সচিব তওফিক ইমামের কাছ থেকে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ পরিকল্পনা বোর্ড স্থাপনের খবর পাই। বোর্ডে যোগদানের জন্য অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, আনিসুর রহমান ও হারুনুর রশীদের প্রতি আহ্বানও আসে। এই প্রসঙ্গে খাদ্য ও দুর্ভিক্ষের ওপর সিনেটের রিফিউজী সার কমিটির জন্য আমাকে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে হয়। এই সাব কমিটির জন্য পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যা সম্বন্ধেও আরেকটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করি ডিসেম্বরে। মোটামুটিভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য নানা ধরনের প্রস্তুতির প্রয়োজন আমরা বিদেশে থেকেও অনুভব করি আর তার জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা নিই।


মুক্তিযুদ্ধ   পাকিস্তান   সমঝোতা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পরিবেশ রক্ষায় জবি শিক্ষার্থী শাকিবের পদযাত্রা

প্রকাশ: ১০:২০ এএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

পরিবেশ রক্ষায় টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত হাইকিং পদযাত্রা শুরু করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছামিউজ্জোহা শাকিব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী।

 

শনিবার (১৮মে) সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ থেকে অভিযান শুরু করে শাকিব। শাকিব জানান, পরিবেশ রক্ষায় বাংলাদেশের দীর্ঘতম রুট টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া হাইকিং পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার হাইকিং করবেন। তার এবারের স্লোগান " হাইকিং ফর সেভিং বাংলাদেশ। যার শিরোনাম নির্ধারণ করা হয়েছে "Come Forward to Protecting Nature".

 

শাকিবের এবারের লক্ষ্য দেশের জলবায়ু পরিবর্তনে বৃক্ষ নিধনের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সকল মানুষের মধ্যে তুলে ধরা। হাইকিং সময়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গ্রামে গ্রামে গিয়ে তরুণ শিক্ষার্থী যুবসমাজের মাঝে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ তুলে ধরা। সেই সাথে গাছ লাগানোর উপকারিতা ও গাছ কাটার কুফল সম্পর্কে অবগত করবেন তিনি। 

 

হাইকিং শুরুর পূর্বে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন শকিব। এসময় তিনি হাইকিং চলাকালীন সময়ে নিরাপত্তা সহযোগিতা বিষয়ে আলোচনা করেন।

 

শাকিবের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, পরিবেশ রক্ষায় গাছ লাগানো ও মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির এই কাজ খুবই প্রশংসনীয়। প্রত্যেকের নিজ নিজ জায়গা থেকে এধরনের কাজে এগিয়ে আসা উচিত। 

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২২ সালে পরিবেশ রক্ষায় হাইকিং ফোর্স বাংলাদেশের আয়োজনে মুজিবনগরের ভারত সংলগ্ন সীমান্ত থেকে ১১ দিনের একটি অভিযান করেন। মুজিবনগর থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ছিলো অভিযানটি। 


পরিবেশ রক্ষা   হাইকিং   পদযাত্রা   জবি শিক্ষার্থী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

শেরপুরে গরু চোরচক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ১০:০৯ এএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে আন্তঃজেলা গরু চোর চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় দুইটি গাভী ও একটি বাঁছুর গরু উদ্ধার করা হয়েছে।

 

শনিবার (১৮ মে) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং-এ শেরপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আকরামুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

গ্রেপ্তাররা হলেন, কসবা কাঠগড়ের ট্রাক ড্রাইভার মোঃ আঃ জলিল ওরফে ফকির হোসেন (৩৪), টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুরের মো: মহির উদ্দিন (৫০), মোঃ আজিজুল ইসলাম (২৩), মোঃ সাহিজুল ইসলাম (৩০), মোঃ মিনহাজ (৩৫) ।

 

এবিষয়ে পুলিশ সুপার মোঃ আকরামুল হোসেন জানান, ১২মে রাত আড়াইটার দিকে ঝিনাইগাতীর জড়াকুরার মোঃ শাহজাহান মিয়ার গোয়াল ঘর থেকে পাঁচটি গরু চোরেরা চুরি করে নিয়ে যায়। গরু গুলোর আনুমানিক দাম ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। পরে শাহজাহান গত ১৪ মে এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর থেকে পুলিশ এ বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং সোর্সের মাধ্যমে চোর সনাক্তের চেষ্টা করে পুলিশ।

 

এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আসামি ট্রাক ড্রাইভার মোঃ আঃ জলিল ওরফে ফকির হোসেনকে শুক্রবার (১৭ মে) শেরপুর শহরের কসবা কাঠগড় থেকে গ্রেপ্তার করে। আসামী আঃ জলিলকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এ ঘটনার বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত চোরদের নাম প্রকাশ করে।

তার দেয়া তথ্যমতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে অভিযান পরিচালনা করে বাকি পাচঁ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে দুইটি গাভী ও একটি বাঁছুর গরু উদ্ধার করে। ঘটনার সাথে জড়িত আরও আসামি পলাতক আছে। তাদেরকে গ্রেপ্তাতারে জেলা পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।


গরু চোর চক্র   গ্রেপ্তার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী বাবর আলী

প্রকাশ: ১০:০০ এএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। তিনি পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করলেন।  

রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি। বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান।

হিমালয়ের শীতিধার চূড়া জয়ের জন্য বাবর আলী রওনা দিয়েছিলেন ১ এপ্রিল। চূড়াটি পর্বতের ১৫ হাজার ৫০০ ফুট ওপরে। সকাল সাড়ে ৮টায় সেখানে তিনি বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান।

তবে অভিযান কিন্তু এখনো শেষ নয়, বাবরের আসল লক্ষ্য শুধু এভারেস্ট নয়, সঙ্গে লাগোয়া পৃথিবীর চতুর্থ শীর্ষ পর্বত লোৎসেও। রোববার ক্যাম্প-৪ এ নেমে মাঝরাতে আবারো শুরু করবেন দ্বিতীয় লক্ষ্যের পথে যাত্রা। সব অনুকূলে থাকলে ভোরে পৌঁছে যাবেন এর চূড়ায়। 

প্রসঙ্গত, এ লোৎসেতে ইতোপূর্বে কোনো বাংলাদেশি সামিট করেননি এবং কোনো বাংলাদেশি একই অভিযানে দুইটি আট হাজারী শৃঙ্গ চড়েননি। তাই লক্ষ্য পূরণে হলে বাবার আলী করবেন এ বিপজ্জনক খেলায় বাংলাদেশের ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

চলতি বছরের ১ এপ্রিল নেপালের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন বাবর আলী। পর্বতারোহণের প্রয়োজনীয় অনুমতি ও নানা সরঞ্জাম কেনার কাজ শেষ করে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে লুকলার উদ্দেশ্যে রওনা তিনি। সপ্তাহ খানেকের ট্রেকিং শেষ পৌঁছান এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে। মূল অভিযান শুরু হয় এখান থেকেই। পর্বতের চূড়ায় উঠতে সময় লাগে দুই মাসের মতো।

যাত্রা শুরু আগে বাবর আলী জানান, বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে জয় করা অনেকের স্বপ্ন। প্রতিবছর হাজারো পর্বতারোহী এভারেস্টের পথে হাঁটেন। কিন্তু এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার পর একই সঙ্গে আরেক পর্বতশৃঙ্গ লোৎসে ওঠার চেষ্টা বাংলাদেশ থেকে আগে হয়নি। আমি সেই চ্যালেঞ্জটাই নিলাম। অর্থাৎ একই অভিযানে মাউন্ট এভারেস্ট ও চতুর্থ উচ্চতম পর্বত মাউন্ট লোৎসের চূড়ায় উঠব।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেছেন ৩৩ বছর বয়সী বাবর আলী। এরপর শুরু করেছিলেন চিকিৎসা পেশা। তবে থিতু হননি। চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘোরার কর্মযজ্ঞ শুরু করেন। সাইকেলিংয়ের পাশাপাশি এখন পর্যন্ত সারগো রি (৪ হাজার ৯৮৪ মিটার), সুরিয়া পিক (৫ হাজার ১৪৫ মি.), মাউন্ট ইয়ানাম (৬ হাজার ১১৬ মি.), মাউন্ট ফাবরাং (৬ হাজার ১৭২ মি.), মাউন্ট চাউ চাউ কাং নিলডা (৬ হাজার ৩০৩ মি.), মাউন্ট শিবা (৬ হাজার ১৪২ মি.), মাউন্ট রামজাক (৬ হাজার ৩১৮ মি.), মাউন্ট আমা দাবলাম (৬ হাজার ৮১২ মি.) ও চুলু ইস্ট (৬ হাজার ০৫৯ মি.) পর্বতের চূড়ায় উঠেছেন এই তরুণ।


বাংলাদেশ   এভারেস্ট জয়ী   বাবর আলী   মাউন্ট এভারেস্ট  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

স্কুল ছুটি দিয়ে দাওয়াতে গেলেন প্রধান শিক্ষক!

প্রকাশ: ০৯:৪৭ এএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail চাটমোহর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। শনিবার দুপুরে তোলা ছবি

সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করে স্কুল ছুটি দিয়ে কর্মচারীর বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাবনার চাটমোহর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেএম আব্দুর রবের বিরুদ্ধে।

 

শনিবার (১৮ মে) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ওই স্কুলে কর্মরত (নৈশ প্রহরী) উপজেলার গুনাইগাছা গ্রামের বাসিন্দা আতাউর রহমানের বাড়িতে স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে সকল কর্মচারীদের নিয়ে তিনি দাওয়াত খেতে যান প্রধান শিক্ষক।

 

এভাবে স্কুল ছুটি দিয়ে দাওয়াত খেতে যাওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন শিক্ষার্থী, অভিভাবক থেকে শুরু করে এলাকার সচেতন মানুষ।

 

দুপুর ২টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের প্রধান গেট বন্ধ। ভেতরে নতুন ভবন নির্মাণ কাজের জন্য কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক অবস্থান করছেন। যে সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস হওয়ার কথা সেই সময় স্কুলে নেই কোনো শিক্ষার্থী। প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে শুরু করে প্রতিটি শ্রেণিকক্ষ ছিল তালাবদ্ধ। চলতি পথে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সকালের কয়েকটা ক্লাস হওয়ার পরেই দুপুর ১টার আগে স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়।

 

জানা গেছে, চাটমোহর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী আতাউর রহমান এবার স্ব-স্ত্রীক হজে যাবেন। এ জন্য শনিবার নিজ বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য সকালে কয়েকটা ক্লাস নেওয়ার পরেই তড়িঘড়ি করে দাওয়াতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক কে এম আব্দুর রবের নির্দেশে স্কুল ছুটি দেওয়া হয়। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নিজেই সকল শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিয়ে দাওয়াত খেতে যান। ক্লাস বাদ দিয়ে প্রধান শিক্ষকের এমন স্বেচ্ছাচারিতা এবং ছুটি দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা।

 

কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, এমনিতেই নানা কারণে বছরের বেশিরভাগ সময় স্কুল ছুটি থাকে। বাচ্চাদের পড়াশোনা ঠিক মতো হয় না। তারপর এভাবে ছুটি দিয়ে দাওয়াত খেতে যাওয়ায় বেশ কয়েকটা ক্লাস করতে পারলো না শিক্ষার্থীরা। আর হুট করে ছুটি দেওয়ায় অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানদের নিতে আসতে পারেননি। এতে বিপাকে পড়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থী। এটা কোনো প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাজ হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তারা।

 

জানতে চাইলে চাটমোহর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে এম আব্দুর রব বলেন, 'আমার এক স্টাফ হজে যাবে, সে জন্য দাওয়াত খেতে এসেছি। আসলে প্রতিষ্ঠানের কোনো স্টাফের দাওয়াত খেতে এভাবেই যাওয়া হয়। বরাবরই তাই হয়ে আসছে।'

 

স্কুল বন্ধ করে এভাবে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আসলে মেয়েরা তো দুষ্টু। স্কুল চালু রাখা ঠিক হবে না। তাই ছুটি দিয়ে দাওয়াত খেতে আসা হয়েছে।'

 

এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মগরেব আলী বলেন, 'স্কুল ছুটি দিয়ে দাওয়াত খেতে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমি প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হালীম বলেন, 'বিষয়টি আমি জানি না। এখানে আমার কিছু বলার নেই। প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাথে আপনি কথা বলেন।'


স্কুল বন্ধ   দাওয়াত   প্রধান শিক্ষক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

পাবনায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

প্রকাশ: ০৯:২৬ এএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ৮ম শ্রেনীর এক ছাত্রী (১৩) কে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৭ মে) রাতে পাবনার সুজানগর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামে ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। সে রাইপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, শুক্রবার (১৭ মে) রাত পৌনে নয়টার দিকে পড়াশোনা শেষ করে বাথরুমে যাচ্ছিল ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী সময় পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা একই এলাকার উমেদ আলী মৃধার ছেলে বখাটে বারেক মৃধা, তার বন্ধু ইমন সাজিদ তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পাশের নির্মাণাধীন একটি ভবনে

সেখানে আগে থেকে অবস্থান করছিল সাব্বির তুহিন নামের আরো দুইজন বখাটে। তাদের মধ্যে প্রথমে বারেক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। পরে অন্য একজন ধর্ষণ করার চেষ্টা করলে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে সেখান থেকে পালিয়ে যায় বখাটেরা। পরে তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালেরে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করেন স্বজনরা।

সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনায় রাতেই ভুক্তভোগীর নানী থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার সাথে যারা জড়িত আছে, তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।'


ধর্ষণ   স্কুল ছাত্রী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন