আজ বরিশাল সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরিশাল সফরকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে সমাবেশস্থলে দলে দলে নেতাকর্মীরা যোগ দেওয়া শুরু করেছেন। মিছিল সহকারে সকাল ৯টা থেকে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আসতে শুরু করেন তারা।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে সরেজমিনে
দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু উদ্যানের এক তৃতীয়াংশ নেতাকর্মীতে পরিপূর্ণ সমাবেশস্থল।
বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়ন
থেকে আসা আওয়ামী লীগ কর্মী ইউনূস বেপারী বলেন, সকাল ৬টা থেকেই আমাদের এলাকার শত শত
নেতাকর্মী এসেছেন। আমরা দ্বিতীয় দফায় ৮টার দিকে রওনা দিয়ে এসেছি।
সিটি করপোরেশনের ২৩নং ওয়ার্ড থেকে আসা ইকবাল
মুন্সী বলেন, বিকেল তিনটার পর সমাবেশ শুরু হবে আমরা সকলেই জানি। সকালে এসেছি সমাবেশস্থলে
জায়গা রাখতে। নেত্রীর ভাষণ কাছ থেকে শুনতে চাই।
সমাবেশের মঞ্চে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট
একেএম জাহাঙ্গীরের সঞ্চালনায় সমাবেশের প্রাথমিক পর্ব শুরু হয়। এরপরে সঞ্চালনা শুরু
করেন নির্ধারিত সঞ্চালক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস।
সমাবেশে প্রবেশের জন্য দক্ষিণদিকে বান্দরোড
সড়কে একটি মূল গেট খোলা রয়েছে। এছাড়া চারদিকে বাঁশের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে।
সাদা কাপড় দিয়ে চারপাশ ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সমাবেশের মাঠে তিন স্তরে সেন্সরযুক্ত নিরাপত্তা
গেইট দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার জানিয়েছেন, জুম্মার নামাজের পর আনুষ্ঠানিকভাবে সভা শুরু হবে। বিকেল তিনটার মধ্যে সমাবেশের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্চে উঠবেন। জনসভার সভাপতিত্ব করবেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক
ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম
বাহাউদ্দিন নাসিম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন।
এ ছাড়া ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, বাংলাদেশ
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান আনোয়ার
হোসেন মঞ্জু, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম ও বরিশাল সিটি মেয়র আবুল খায়ের
আব্দুল্লাহও বক্তব্য দেবেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস।
বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, তিনটি স্তরে সমাবেশস্থল করা হয়েছে। প্রথম স্তরে
প্রধান অতিথির মঞ্চ। যেখানে প্রধানমন্ত্রী এবং তার সঙ্গে বরিশালের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরাসহ
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বসবেন। দ্বিতীয় ধাপে থাকবেন বরিশাল বিভাগ ও জেলার গুরুত্বপূর্ণ
নেতৃবৃন্দ। তৃতীয় ধাপে নেতাকর্মীদের নারী ও পুরুষের দুটি ভাগে ২০ হাজার চেয়ার রাখা
হয়েছে।
এর আগে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভায় যোগ দেন। এর পাঁচ বছর পর এবারও নির্বাচনী সভায় যোগ দিতে আসছেন। এর আগে যদিও চলতি বছরের মার্চ মাসে বরিশাল সফরের কথা ছিল শেখ হাসিনার। পরে তা স্থগিত করা হয়।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।