সপ্তাহ শেষেও বাজারে ফেরেনি স্বস্তি। উল্টো
অধিকাংশ ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। মোটাদাগে বলা যায়, দাম বেড়েছে প্রায় সব পণ্যেরই। এরমধ্যে
কোনো কোনো পণ্যের দাম বৃদ্ধি স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকলেও কোনো কোনোটির বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে।
বাজারে গত কয়েকদিনে চালের দাম অস্বাভাবিক
বেড়েছে। যা কেজিপ্রতি বেড়েছে ৬ টাকা পর্যন্ত। আবার ভোটের আগে যে গরুর মাংস ৬৫০ টাকা
কেজিতে নেমেছিল, তা এখন ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে আটা-ময়দা ও ডালের দাম এক
লাফে কেজিতে ১০ টাকা ও তেলের দাম লিটারপ্রতি ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
এ ছাড়া দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে প্রায় সব
ধরনের শাক-সবজি, মাছ, ব্রয়লার মুরগি, ফার্মের ডিম, আদা-রসুনসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যও।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন
বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বাজারে নিত্যপণ্যের হঠাৎ এমন দাম বৃদ্ধিতে চরম অসন্তোষ
প্রকাশ করছেন ক্রেতারা।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁপে, মুলা ও শালগম
ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজি কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস
ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ৪০ থেকে আকারভেদে ৬০ টাকা পর্যন্ত। ভরপুর শীতে বাজারে শিমের
দামও চড়া; প্রতি কেজি ৮০ টাকা। আর মাঝারি আকারের একটি লাউয়ের দাম ৮০ টাকা, বড় হলে ১০০
টাকাও বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আসা এক ব্যক্তি বলেন, ভরা মৌসুমে শীতকালীন সবজির দাম কমার কথা। কিন্তু বাজারে এসে ভিন্ন চিত্র দেখা
যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এখন এতো দামে সবজি বিক্রি হওয়ার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। বাজারে সাংঘাতিকভাবে সিন্ডিকেট কাজ করছে। যা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। যে কারণে এ পরিস্থিতি।
তবে সবজির দাম বাড়ার পেছনে কুয়াশাকে দায়ী
করেছেন কাওরান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা মাহমুদ হাসান। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বেশি
কুয়াশা পড়ছে। এতে নির্ধারিত সময়ে পণ্যবাহী ট্রাক আসছে না। সে কারণে ঢাকায় তুলনামূলক
পণ্য কম আসছে। এছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে কৃষকের অনেক সবজি নষ্ট হচ্ছে। এর প্রভাবও
পড়েছে বাজারে।
চালের দাম কমেনি
ভোটের পর থেকে দেশে চালের বাজার উত্তপ্ত।
কেজিপ্রতি ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যদিও গত মাসে রেকর্ড পরিমাণে আমন ধান উৎপাদন হয়েছে,
তাতে বাজারে সরবরাহেও কোনো টান নেই। তারপরও উৎপাদন এলাকা থেকে রাজধানী সব জায়গায় বেড়েছে
চালের দাম।
রাজধানীর সেগুসবাগিচা বাজারে দেখা গেছে, সরু
(মিনিকেট) চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৪ টাকা দরে। যা সপ্তাহ দুয়েক আগে ছিল ৬৫
থেকে ৬৮ টাকা। অর্থাৎ কেজিতে সর্বোচ্চ ৬ টাকা বেড়েছে। মাঝারি (বিআর-২৮, পায়জাম) চালের
কেজিতে সর্বোচ্চ ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা। এছাড়া কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে
মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকা।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ’র
(টিসিবি) তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে সরু চালের দাম ৫ দশমিক ৩৮, মাঝারি চাল প্রায়
৩ এবং মোট চালের দাম প্রায় ৪ শতাংশ বেড়েছে।
দাম বাড়তি সব ধরনের আমিষ পণ্যের
ভোটের আগে গরুর মাংসের বেঁধে দেওয়া দাম ছিল
৬৫০ টাকা কেজি। ভোটের পরে তা এক দফা বেড়ে ৭০০ টাকা হয়। এখন ঢাকা শহরের অধিকাংশ বাজারে
প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়।
সেগুনবাগিচা বাজারে দুটি মাংসের দোকান। সেখানে
৭৫০ টাকায় মাংস বিক্রি হতে দেখা গেছে। দোকান মালিকের কাছে এ ব্যাপারে জানতে তিনি চাইলে বলেন, আমরাও ভোটের আগে ৬৫০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি করেছি। পরে
৭০০ করেছি। এখন গরুর দাম বেশি। ওই দামে বিক্রি করে লাভ হয় না। গত দুদিন থেকে ৭৫০ টাকা
কেজি দরে বিক্রি করছি।
মাংসের পাশাপাশি মাছের বাজারও বেশ চড়া। মালিবাগ
বাজারের মাছ বিক্রেতা সালাউদ্দিন বলেন, বিভিন্ন পদের মাছের দাম কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা
পর্যন্ত বেড়েছে।
বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও প্রতি ডজনে
৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।
গত সপ্তাহে হুট করেই ব্রয়লার মুরগির দাম
প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হচ্ছে
২২০ থেকে ২২৫ টাকা। যা গত মাসে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকার মধ্যে ছিল। সোনালি জাতের মুরগির
দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায়।
অন্যদিকে মুদি বাজারে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে
কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। বেড়েছে মসুর ডালের
দামও। প্রতি কেজি ভালো মানের মসুর ডাল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা আগের
থেকে ১০ টাকা বেশি।
আটা-ময়দা, চিনি-তেলের দাম বেড়েছে ঘোষণা ছাড়া
এরআগে বিভিন্ন সময় ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর
সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন
ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো বা কমানোর কাজ ঘোষণা দিয়ে করলেও এবারে চুপিসারেই দাম বাড়িয়েছে।
বাজারে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়িয়ে
১৭৩ টাকা করা হয়েছে, যা ভোটের আগে বিক্রি হয়েছে ১৬৯ টাকায়। ৫ লিটারের বোতলের দাম ৮২৫
টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৪৫ টাকা করা হয়েছে।
ও ময়দার দাম ১০ টাকা এবং চিনির দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। বাজারে প্রতি কেজি প্যাকেটের আটার দাম এখন ৬৫ টাকা। ময়দার দাম বেড়েছে হয়েছে কেজিপ্রতি ৮০ টাকা।
চিনির দামেও একই ধরনের অস্থিরতা। প্রতি কেজি
প্যাকেটজাত চিনি বাজারে ১৪৮ টাকা মূল্য থাকলেও বিক্রেতারা সেটা খুলে বিক্রি করছেন ১৫০-১৬০
টাকায়।
বাজারে এখন প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। দেশি পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকা। একই সঙ্গে রসুনের দাম ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং আদার দাম ২ দশমিক ২২ শতাংশ বেড়েছে। বাজারে এখন প্রতি কেজি আদা এবং রসুন একই দামে ২০০ থেকে ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার চড়া বাজার-দর দ্রব্যমূল্য মাছ ডিম মাংস চাল ভোজ্যতেল সবজি
মন্তব্য করুন
দেশে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে আজ সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা,
যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বন্ধ থাকবে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের
সঙ্গে পরামর্শক্রমে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়। তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতাতপ
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে সেসব প্রতিষ্ঠান চাইলে খোলা রাখতে পারবে। এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত
জানানো হবে।
প্রভাতী শাখায় ক্লাস হওয়ায় প্রাথমিক স্কুল খোলা থাকবে বলে প্রাথমিক
ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন
থাইল্যান্ডে ৬ দিনের সরকারি সফর শেষে আজ সোমবার (২৯ এপ্রিল) ব্যাংকক
থেকে দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং সূত্র জানিয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সোমবার সকালে (স্থানীয় সময়) ব্যাংকক ত্যাগের কথা রয়েছে। সকাল সাড়ে ১১টায় তিনি ঢাকায়
পৌঁছাবেন।’
প্রেস উইং থেকে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা
থাভিসিনের আমন্ত্রণে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক
উভয় সফরে ২৪ এপ্রিল বিকেলে ব্যাংককে আসেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনে ডন মুয়াং
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে লালগালিচা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। সেখানে তাকে গার্ড
অব অনার ও গান স্যালুট জানানো হয়।
শেখ হাসিনা এই সফরকে ‘প্রতিবেশী’ নীতির ওপর বৃহত্তর ফোকাসের অংশ
বলে বর্ণনা করেছেন, কারণ এটি দুদেশের জন্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গতিকে আরও নবায়নের
চমৎকার সুযোগ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এ সফর দুদেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করার
ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
থাই প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজ বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি
দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, এ সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশে অত্যন্ত
প্রয়োজনীয় প্রেরণা জোগাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি এ সফর আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে
একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এটি আমাদের দুদেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের একটি নতুন
যুগের সূচনা করেছে। আমাদের জনগণ ও দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আগামীতেও সম্পর্কের
নবায়নের এ গতিকে আমাদের ধরে রাখতে হবে।’
সফর চলাকালীন (২৬ এপ্রিল) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাই প্রধানমন্ত্রী
থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেন,
যেখানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক
জোরদার করতে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি স্বাক্ষরিত হয়।
নথিগুলো হচ্ছে- একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ), একটি
লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই), যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং থাইল্যান্ডের
প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের উপস্থিতিতে স্বাক্ষর হয়।
নথির মধ্যে অফিসিয়াল পাসপোর্ট হোল্ডারদের জন্য ভিসা ছাড়সংক্রান্ত
চুক্তি, জ্বালানি সহযোগিতা, শুল্ক বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তা এবং পর্যটন ক্ষেত্রে
সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা স্মারক এবং ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ)
নিয়ে আলোচনা সংক্রান্ত লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) রয়েছে।
শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসে থাই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া একটি আনুষ্ঠানিক
মধ্যাহ্নভোজেও যোগ দেন। গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে
থাই কুহ ফাহ ভবনের সামনের উন্মুক্ত স্থানে লালগালিচা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ এপ্রিল জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত
মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০ তম অধিবেশনে যোগ দেন। এ অধিবেশনে
দেওয়া ভাষণে তিনি সব বিশ্বনেতাকে যুদ্ধ, আক্রমণ এবং আগ্রাসন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে
যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও এসক্যাপের নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়াহ আলিসজাবানা এবং ইউএনএসক্যাপ সম্মেলনস্থলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুসিত প্রাসাদের অ্যামফোর্ন সাথার্ন থ্রোন হলে থাইল্যান্ডের রাজা ও রানি মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরা-ক্লাওচা-উয়ুয়া এবং রানি সুথিদা বজ্রসুধা-বিমলা-লক্ষণের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
মন্তব্য করুন
ফরিদপুরের সালথায় তীব্র দাবদাহে ৩ শিক্ষক ও ১০ শিক্ষার্থী অসুস্থ
হয়ে পড়েছে। অসুস্থদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে তিন শিক্ষার্থীকে
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
রোববার (২৮ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের
রামকান্তুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
ও সালথা থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিবদর্শন করেন।
অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন রামকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
সহকারী শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, রোজার ঈদের পর থেকে স্কুল বন্ধ ছিল। প্রধান
শিক্ষকও মাতৃত্বকালিন ছুটিতে রয়েছেন। দীর্ঘদিন পর গতকাল রোববার স্কুল খোলা হয়। সকালে
স্কুলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে প্রথমে বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম ও মাঠে জমে থাকা
ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করি।
তিনি আরও বলেন, কিছু সময় কাজ করার পর তীব্র গরমে আমরা সবাই পানির
পিপাসায় ভুগছিলাম। তখন সবারই গলা শুকিয়ে আসছিল। পরে স্কুলের টিউবওয়েল চেপে ঠান্ডা পানি
বের করে তা পান করি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর একে একে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বমি করতে থাকে
এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয় এক যুবক এসে আমাকে বলেন, স্যার ওই টিউবওয়েলের পানি
খেয়েন না, পানিতে বিষ মেশানো হয়েছে। পরে অসুস্থদের দ্রুত সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
নেওয়া হয়। সেখানে সকলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে রানিতা নামে এক শিশুর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে ফরিদপুর
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থদের মধ্যে
শিক্ষক সুকলা রানী শীল, রেবেকা বেগম, রবিউল ইসলাম, শিক্ষার্থী সাদিহা, নাহিদ ও তৌকিয়ার
নাম পাওয়া গেছে। বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি।
সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল
মমিন বলেন, ‘টিউবওয়েলের পানিতে কোনো ধরনের বিষক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা
করা হচ্ছে, ওই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থদের মধ্যে দুজনের
চিকিৎসা এখনো চলছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সবাই শঙ্কামুক্ত’।
সালথা থানার ওসি ফায়েজুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রথমে খবর পেয়েছিলাম
টিউবওয়েলের পানি খেয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে ঘটনাস্থলে এসে ডাক্তারের
সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তিনি জানিয়েছেন টিউবওয়েলের পানিতে বিষক্রিয়ার কোনো লক্ষণ পাননি’।
এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী
জানান, রোববার স্কুল খোলার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সকালে স্কুলে এসে টিউবওয়েলের পানি
খেয়ে অসুস্থ পরলে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন সবাই মোটামুটি সুস্থ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন, তারা বিষক্রিয়ার কোনো আলামত
পাননি। গরমের কারণেও এ ঘটনা ঘটতে পারে। তারপরও টিউবওয়েলের পানি আমরা পরীক্ষা করে দেখব।
একইসঙ্গে আগামীকাল থেকেই ছাত্রছাত্রীরা যাতে নিরাপদ পানি খেতে পারে, সে ব্যবস্থা গ্রহণ
করা হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন