ইনসাইড বাংলাদেশ

দিনাজপুর পার্বতীপুরের মধ্যপাড়া খনিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ

প্রকাশ: ০৯:৪৭ পিএম, ০১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

দেশের একমাত্র দিনাজপুরের পার্বতীপুরের মধ্যপাড়া পাথর খনিতে অদক্ষ বিপণন ব্যবস্থান কারনে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেছে। উত্তোলন বাড়লেও পাথর বিক্রিতে নেই গতি। প্রতি মাসে প্রায় দেড় লাখ টন পাথর উত্তোলনের বিপরীতে বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার মে.টন পাথর। বুধবার (৩১ জানুয়ারী) পর্যন্ত খনির ৯টি ইয়ার্ডে বিভিন্ন সাইজের পাথর মজুদ রয়েছে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন।

এদিকে, পাথর রাখার স্থান না থাকায় খনির উৎপাদন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি উৎপাদন বন্ধ রাখার ঘোষনা দিয়ে গত বুধবার সন্ধ্যায় নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়েছে। ঘোষনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খনি উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। সেই সাথে খনিতে কর্মরত প্রায় ৭ শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কর্মবিরতী দেওয়া হয়েছে।

দৈনিক পাথর উত্তোলনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৬ হাজারের অধিক পাথর উত্তোলন করে খনির উৎপাদন ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি। খনিতে দৈনিক পাথর উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন। 


এর আগে কখনও একদিনে এত বিপুল পরিমাণ পাথর উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসির ব্যবস্থাপনায় গত ডিসেম্বর মাসে পাথর উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার মেট্রিক টন। আর পাথর বিক্রি হয়েছে গত ডিসেম্বর মাসে মাত্র ৬৫ হাজার মেট্রিক টন। দৈনিক পাথর বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৩ হাজার মেট্রিক টন।

মধ্যপাড়া কঠিন শিলা প্রকল্পে পাথর উত্তোলন বাড়লেও বিক্রি আশঙ্কাজনকভাবে কম। ফলে কোম্পানিটি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে। খনি কর্তৃপক্ষের বাস্তবসম্মত বিপণন ব্যবস্থা না থাকা ও পাথর পরিবহনে মোটরযানের এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ আরোপ হওয়ায় পাথর বিক্রি আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। খনি কর্তৃপক্ষের বাস্তবসম্মত বিপণন ব্যবস্থা না থাকায় পাথর বিক্রিতে জটিলতা দেখা দিয়েছে। বিক্রয়নীতি বাজার উপযোগী না হওয়ায় প্রতি মাসে প্রায় ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

এর আগে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে খনি কর্তৃপক্ষের অদক্ষ বিপণন ব্যবস্থার কারণে পাথর খনির ৯টি ইয়ার্ডে প্রায় ৭ লাখ টন পাথর অবিক্রীত থাকার পর পাথর খনিটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে অবিক্রীত পাথরের স্তূপ ক্রমবর্ধমান বাড়ায় পাথর খনিটি আবারো বন্ধ হয়ে গেল। এ অবস্থায় খনির উপর নির্ভরশীল শ্রমিক ও খনি সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর জীবন ও জীবিকা নির্বাহে অপূরণীয় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন করেও সময়মতো বিল পাচ্ছে না খনির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি। এ অবস্থায় অর্থ সংকটে পড়ে উৎপাদন বিল না পাওয়ায় ৭ শতাধিক দেশীয় এখনি শ্রমিক-কর্মচারী ও প্রায় শতাধিক বিদেশি খনি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীর বেতন-ভাতা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে উৎপাদনকারি ঠিকাদারকে। পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া পাথর খনি কর্তৃপক্ষ ও উৎপাদন ঠিকাদার জিটিসির মাঝে প্রাইস এডজাস্টমেন্ট নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়ায় পুরোদমে পাথর উৎপাদন করেও জিটিসি শতভাগ বিল পাচ্ছে না। খনি কর্তৃপক্ষ গেল বছরের মার্চ মাস থেকে ঠিকাদারের প্রতি মাসের উৎপাদন ও আনুষঙ্গিক খরচের বিলের ৭৫ শতাংশ দিচ্ছে। প্রাতি মাসে ২৫ শতাংশ বিল কম দেয়ায় জানুয়ারী পর্যন্ত ১১ মাসে জিটিসির পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের বিলও সম্পূর্ণ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এর ফলে জিটিসির পাওনার পরিমাণ বেড়ে হবে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।

জানা গেছে, গত বছরের মার্চ মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারী পর্যন্ত ১১ মাসে প্রায় ১০ লাখ টন পাথর উৎপাদন করেছে জিটিসি। গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ৭ কোটি ৬০ লাখ কম দেয়া হয়েছে যা প্রদত্ত বিলের ২৫ শতাংশ। প্রাইস এডজাস্টমেন্ট না হওয়ায় খনি কর্তৃপক্ষ এভাবে জিটিসির টাকা আটকে রেখেছে। প্রাইস এডজাস্টমেন্ট (মূল্য সমন্বয়) করে জিটিসির বকেয়া পাওনাসহ নিয়মিত বিল পরিশোধ না করা নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে খনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

খনির একটি সুত্র জানিয়েছেন, খনিতে পাথর উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) গত ডিসেম্বর খনি থেকে ১ লাখ ৪৮ হাজার মেট্রিক টন করে পাথর উত্তোলন করে। নভেম্বর মাসে ১ লাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন এবং অক্টোবর মাসে ১ লাখ ৪২ হাজার পাথর উত্তোলন করা হয়। পাথর বিক্রির কাজটি তদারক করে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি। এ অবস্থায় পাথর বিক্রিতে গতি আনতে পাথরের দাম কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত ২৬ অক্টোবর মাসে তারা শূন্য থেকে ৫ মিলি ডাস্ট পাথর ১ হাজার ২৫০ টাকা, ৫ মিলি থেকে ২০ মিলি পাথর ৩ হাজার ১৫০ টাকা, ২০ মিলি থেকে ৪০ মিলি পাথর ৩ হাজার ৫শ’ ৫০ টাকা, ৪০ মিলি থেকে ৬০ মিলি পাথর ৩ হাজার ৮০০ টাকা, ৬০ মিলি থেকে ৮০ মিলি পাথর ২ হাজার ৮০০ টাকা এবং ২৫০ মি.মি. বোল্ডার পাথর ৩ হাজার ২শ টাকা প্রতি মেট্রিক টন দর নির্ধারণ করে বিক্রি করছে। প্রতি মেট্রিক টন ক্রাস্ড পাথরের লোডিং চার্জ ৬০ টাকা এবং বোল্ডার পাথরের লোডিং চার্জ ৮০ টাকা। 


মধ্যপাড়া পাথর খনির কর্মকর্তা ও ডিলাররা জানিয়েছেন, আগে ১০ চাকার ট্রাক (ট্রাকের ওজনসহ) ৪২ থেকে ৪৬ মেট্রিক টন ও ৬ চাকার ট্রাক (ট্রাকের ওজনসহ) ৩০ থেকে ৩২ মেট্রিক টন পাথর পরিবহন করত। কিন্তু ২০১৮ সালের মোটরযান এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ বিধি অনুযায়ী ১০ চাকার ট্রাক (ট্রাকের ওজনসহ) ৩২ মেট্রিক টন ও ৬ চাকার ট্রাক (ট্রাকের ওজনসহ) ২২ মেট্রিক টনের বেশি পাথর বহন করতে পারছে না। ফলে পাথর বিক্রি অনেকটা কমেছে। 

মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিঃ এর একাধিক ডিলার নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক জানান, পাথর বিক্রি না হওয়ার মূল কারণ হলো বিপণন ব্যবস্থা। মধ্যপাড়া পাথর খনিতে গ্রাহকরা চাহিদা অনুযায়ী পাথরের সাইজ পাচ্ছে না। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানিকৃত পাথর সাইজ অনুযায়ী পাওয়া যায়। ফলে পাথর ব্যবসায়ীরা মধ্যপাড়া খনি থেকে পাথর না কিনে হিলি স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পাথর কিনছে। সামগ্রিকভাবে লাভ কমে যাওয়ায় পাথর বিক্রিতে আমাদের আগ্রহ কমে গেছে। কারণ সেখান থেকে আনা পাথরের মূল্য মধ্যপাড়ার তুলনায় কম পড়ছে। এ কারণেই মধ্যপাড়া খনিতে পাথর বিক্রি আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ জন ডিলার রয়েছেন। এক সময় সেখানে প্রায় ১৫০ জন ডিলার ছিল।

এ ব্যাপারে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু দাউদ মুহাম্মদ ফরিদুজ্জামান সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন সিরিভ না করায় তার মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।


গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি   জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম   পাথর উত্তোলন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশের দুই জেলায় ভূমিকম্প

প্রকাশ: ০৯:১২ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪।

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

জানা গেছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল পশ্চিমবঙ্গের উত্তমপুরে।

ভূমিকম্প  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ক্লাস চলার সময় ছিঁড়ে পড়ল সিলিং ফ্যান, শিক্ষার্থী জখম

প্রকাশ: ০৯:১৫ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জামালপুর পৌর শহরের একটি বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে সিলিং ফ্যান পড়ে সুমাইয়া আক্তার মীম নামের এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে পৌর শহরের রশিদপুর এলাকার ইজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সুমাইয়া আক্তার মীমকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

আহত মীম পৌরসভার বগাবাইদ গ্রামের ফেরদৌসের মেয়ে। আহত সুমাইয়া আক্তার মীম সেই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। 

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, সকাল ১০টা থেকে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। দশম শ্রেণির ক্লাসরুমে তৃতীয় ঘণ্টার ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরে দ্বিতীয় তলার শ্রেণি কক্ষের একটি ফ্যান ভেঙে সুমাইয়ার ওপর পড়ে যায়। এতে শিক্ষার্থী মুখের ওপরের ঠোঁট কেটে গিয়ে গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। গত বছরও ওই বিদ্যালয়ে ফ্যান পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল বলে জানান তারা।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা হাসপাতালে গেলে ছবি ও ভিডিও নিতে বাধা প্রদান করে বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা। আর এ বিষয়ে কোনো বক্তব্যও দিতে চাননি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আনিসুজ্জামান। এ সময় তিনি শুধু বলেন, বক্তব্য কী দেব বলেন, ফ্যান পড়ে গেছে এই আর কি।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হালিমা খাতুন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত না। তবে খবর নিচ্ছি। জেলার সাতটি উপজেলায় সব স্কুলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

জামালপুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সোমবার ৫ জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশ: ০৮:২৮ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলমান তাপদাহের কারণে দেশের পাঁচ জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (সোমবার) বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (২৮ এপ্রিল) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এক বার্তায় এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, দেশে চলমান তাপদাহের কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সকল মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (২৯ এপ্রিল) বন্ধ থাকবে।

তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ চাইলে তাদের স্কুল-কলেজ-মাদরাসা খোলা রাখতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

এছাড়া পরবর্তী সময়ে এ পাঁচ জেলায় কিংবা তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, এমন অন্যান্য জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত সোমবার জানিয়ে দেওয়া হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান   তাপদাহ   শিক্ষা মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আরও বড় হচ্ছে মন্ত্রিসভা

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দুই দফায় ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা আরও বড় হতে পারে বলে সরকারের ভেতরে গুঞ্জন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর বাজেট অধিবেশনের আগেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি সামনে আসতে পারে বলে সরকারের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। এই মন্ত্রিসভা অপূর্ণ ছিল, সেটি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর ১ মার্চ মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করা হয়। তবে সে দফায় কোন পূর্ণমন্ত্রী দেওয়া হয়নি। বরং ৭ জন নতুন প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। ২০১৮ সালেও মন্ত্রিসভা ছিল ৪৭ সদস্যের। এবারের মন্ত্রিসভা আওয়ামী লীগের গত তিন বারের মন্ত্রিসভায় চেয়ে আকারে সবচেয়ে ছোট। আর এই কারণেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়।  

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভা আরও বড় করার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। এছাড়া মন্ত্রিসভায় কয়েকটি দপ্তর পরিবর্তনের বিষয়টিও এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়া, পানি সম্পদ মন্ত্রণালেয়ও পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। 

এ ছাড়া পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তনেরও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার পরিবর্তে অন্য কোন অর্থনীতিবিদ বা অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া শ্রম মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিজিএমইএ-এর অনুরোধ রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। সামনের দিনগুলোতে শ্রম আইন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর কষাকষি করতে হতে পারে এই বিবেচনা থেকে বিজিএমইএ-এর পক্ষ থেকে সরকারকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। যিনি আইনে দক্ষ বিশেষ করে শ্রম আইনে দক্ষ কাউকে যেন এই মন্ত্রণালেয়র দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

উল্লেখ্য, মন্ত্রিসভার সদস্যদের ইতোমধ্যে ১০০ দিন পেরিয়ে গেছে গত ২১ এপ্রিল। এর মধ্যে মন্ত্রিসভার সদস্যদের ভালো-মন্দ নানান রকম হিসেব নিকেশ প্রধানমন্ত্রী করেছেন। তবে মন্ত্রিসভার সদস্যদেরকে এখনই বিচার করার সময় হয়নি বলেই সরকারের নীতি নির্ধারক মহল মনে করছেন। তবে টানা দুই থেকে তিনবার যারা প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন, তাদের মধ্যে থেকে দু’একজনকে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে। এদের মধ্যে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এদের মধ্যে এক বা একাধিক জনকে পূণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, জুনাইদ আহমেদ পলক ইতোমধ্যে রাজনৈতিক ভাবে আওয়ামী লীগের 'গুড বুকে' চলে গেছেন। বিশেষ করে তার শ্যালককে তিনি প্রার্থী থেকে প্রত্যাহার করার ফলে তিনি সরকারের আরও বেশি আস্থাভাজন এবং প্রিয়ভাজনে পরিণত হয়েছেন। তবে মন্ত্রিসভার রদবদল কখন, কীভাবে হবে এবং কতজন নতুন মন্ত্রী হবেন এ বিষয় সম্পর্কে কেউই কিছু বলতে পারেননি। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, এটি একান্তই প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারাধীন বিষয়। প্রধানমন্ত্রী যখন বিবেচনা করবেন তখনই তিনি এই রদবদল করবেন।

মন্ত্রিসভা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভারতে মোদি হারলে বাংলাদেশে কী হবে?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।

প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।

ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।

এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।

বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।

এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।

অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


ভারত   লোকসভা নির্বাচন   মল্লিকার্জুন খাড়গে   নরেন্দ্র মোদি   বাংলাদেশ   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন