ইনসাইড বাংলাদেশ

ইসরায়েলের পক্ষে থাকা সিএনএন চ্যানেলে ইউনূস কন্যার সাক্ষাৎকার

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

ইসরায়েলের হয়ে পক্ষপাতমূলক সংবাদ নীতির কারণে নিজেদের কর্মীদের তোপের মুখে পড়েছে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন। সংবাদমাধ্যমটির পক্ষপাতমূলক পলিসি ও নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন খোদ প্রতিষ্ঠানটির কর্মী সাংবাদিকরা। ইসরায়েলের হয়ে পক্ষপাতমূলক সংবাদ পরিবেশন করে যাওয়া সেই প্রতিষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ড. ইউনূসের কন্যা ও মার্কিন নাগরিক মনিকা ইউনূস। এ সময় বাংলাদেশের বিচার বিভাগের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি তিনি নিজের বাবার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে দেশের সাংবিধানিক কাঠামোকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে দণ্ড পাওয়া শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শাস্তি থেকে রক্ষা করতে লবিংয়ে নেমেছেন তার কন্যা মনিকা ইউনূস। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এ দেয়া সাক্ষাৎকার সেটিরই অংশ। যেখানে তিনি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

মনিকা এমন এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছে যা গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের হয়ে পক্ষপাতমূলক খবর প্রকাশ করায় নিজেদের কর্মীদের তোপের মুখে পড়েছে। সংবাদমাধ্যমটির কর্মীরাই এই হীন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে ও সরাসরি প্রতিবাদ জানিয়েছে। 

সিএননের নিউজরুম থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও অভ্যন্তরীণ একডজন মেমো ও ইমেইল ঘেঁটে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, আটলান্টার হেডকোয়ার্টার থেকে নির্দেশনা অনুযায়ী মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যমটিতে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে সিএনএনের এক কর্মী গার্ডিয়ানকে বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বেশিরভাগ খবর ইসরায়েলের প্রতি নেটওয়ার্কের  পদ্ধতিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক পক্ষপাতিত্বের দ্বারা প্রভাবিত করা হয়েছে। এটি সাংবাদিকতার অপব্যবহারের সমান। 
 
সংবাদমাধ্যমটিতে হামাসের বক্তব্য এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ রাখা হয়েছে। পক্ষপাতমূলক এই সংবাদমাধ্যমটিতে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে দণ্ড পাওয়া শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কন্যা মনিকা ইউনূস।

এদিকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চলা আইনি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে নানাভাবে চলছে আন্তর্জাতিক লবিং। তাকে ‘আইনি হয়রানি’ বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন হিসেবে একটি যৌথ বিবৃতি ছাপা হয়েছে, যে বিবৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১২ জন সিনেটর। এর আগে বিচার বন্ধে এমনই বিজ্ঞাপন আকারে বিবৃতি দিয়েছেন কয়েকজন নোবেলজয়ী। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে ইউনূসের পরিচিত আছে। আর এসব লবিং, বিবৃতি ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিচার বন্ধের আহ্বানকে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর চাপ প্রয়োগ ও হস্তক্ষেপের সামিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে সবচাইতে মজাদার বিষয় হলো ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি দেয়ার জন্য বারবার এই ব্যক্তিদের দেখা গেলেও গাজায় ফিলিস্তিনদের ওপর চলা ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধে এখন পর্যন্ত কোন কথাই বলেননি এই বিবৃতি দানকারী অধিকাংশ সদস্য। এমনকি এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়ে কোন বিবৃতি প্রদান করেননি তারা। তবে কি গাজায় ইসরাইলের গণহত্যার থেকেও বাংলাদেশে ড. ইউনূসের মামলাকে বড় মানবাধিকার ইস্যু হিসেবে দেখছেন তারা?

সিএনএনের সাংবাদিক ক্রিস্টিন আমানপোরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন এই নাগরিক তার বাবার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে মনিকা বলেন, অভিযোগগুলো মূলত তার কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত, যেটা সাধারণভাবে দেওয়ানি আদালতেই নিষ্পত্তি সম্ভব। কিন্তু এগুলোকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অর্থহীন। ড. ইউনূস ও তার সহকর্মীরা শতভাগ নির্দোষ। আন্তর্জাতিক আইনজ্ঞরাও বিষয়টি যাচাই করেছেন। তারাও বলেছেন, এই অভিযোগগুলো 'বানোয়াট'।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন,  মনিকা ইউনূস যে কথাটা বলতে চাচ্ছেন, তাতে পরোক্ষভাবে উনি স্বীকার করেই নিয়েছেন যে, এখানে শ্রম আইন লঙ্ঘন হয়েছে। শ্রম আইন ২০০৬ ও বিধিমালা ২০১৫ আইএলও কর্তৃক স্বীকৃত এবং সেখানে ফৌজদারি একটা আলাদা চ্যাপ্টার আছে।

সুতরাং এ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে, বিদেশে বসে একটি পক্ষপাতমূলক সম্প্রচার মাধ্যমে ড. ইউনূস কন্যা বাংলাদেশের বিচার বিভাগের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইছেন। একজন ভিনদেশি নাগরিক হয়ে তিনি বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে হেয় করতে চেয়েছেন।  

এদিকে  ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মনিকা দাবি করলেও আসলে এই ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো সরকারিভাবে। ১৯৮৩ সালে রাষ্ট্রপতির অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে একটি সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে গ্রামীণ ব্যাংক। আর ড. ইউনূস ছিলেন এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সরকারের নিযুক্ত ও বেতনভুক্ত একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক; কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠাতা নন তিনি।
 
গ্রামীণ ব্যাংক নারীদের ঋণগ্রস্ত করে তুলছে এবং ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে অনেকে আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছেন, এমন অভিযোগগুলোর বিষয়ে সাক্ষাৎকারে মনিকার কাছে জানতে চাওয়া হলে জবাবে তিনি বলেন, ক্ষুদ্রঋণ সুনির্দিষ্ট একটি মডেল, যা সঠিকভাবে অনুসরণ করা না হলে অন্য যেকোনো জিনিসের মতোই তা ব্যর্থ হতে পারে। অর্থাৎ যারা আত্মহত্যা করেছে তাঁরা নিজেদের ভুলের কারণেই করেছে বলে মত দিয়েছেন তিনি।

এদিকে সাক্ষাৎকারে একাধিকবার ড.ইউনূস কেন বাংলাদেশ সরকারের প্রতিহিংসার শিকার তা জানতে চাইলেও এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি মনিকা। আর আইনের যে সকল অসঙ্গতিকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে এই মামলাকে প্রতিহিংসা পরায়ণ দাবি করা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা সহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি না দিয়ে কেনো প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি প্রদান করা হচ্ছে না এ বিষয়েও কোন ব্যাখ্যা মেলেনি ইউনূসের পক্ষে কাজ করে যাওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে। মনিকাও এ বিষয়ে কোন মন্তব্য না করে বরং আইন ও নির্বাহী বিভাগের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাধীন বিচার বিভাগের মুখোমুখি দাড় করানোর চেষ্টা করছে সকল মহল।

গত পহেলা জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনে দায়ে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে শ্রম আদালত।

ইউনূসের বিরুদ্ধে আনা কল্যাণ তহবিলে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ না দেয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করার মতো অভিযোগগুলো আদালতে প্রমাণিত হয়েছে।

সাজা পেয়ে শ্রম আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে ইউনূস। তার বিরুদ্ধে রয়েছে আরও অনেক মামলা। গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলায় ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুদক।

২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের তখন গ্রেফতার করে কারাগারে আটকে রাখা হয়।

আর সেই রাজনীতি নিষিদ্ধ ও রাজনীতিবিদদের জেল-জুলমের সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নতুন একটি রাজনৈতিক দল খুলতে মাঠে নামেন। জরুরি অবস্থার মধ্যেই তিনি নাগরিক শক্তি নামের রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য ব্যাপক তোড়জোড় চালিয়েছিলেন, যা নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হয়।

রাজনীতিতে ইউনূসের আগ্রহের বিষয়ে মনিকা বলেন, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি একবারের জন্য এটা ভেবেছিলেন। তবে তার রাজনৈতিক কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই।

তবে উইকিলিকস থেকে ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের প্রধান দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠাতে চেয়েছিলেন এই নোবেলজয়ী। জেনারেল মইন ইউ আহমেদের লেখা বই এবং আরও কিছু নথি থেকে এটি স্পষ্ট ছিল যে, ১-২ বছরের জন্য নয়, বরং দীর্ঘ মেয়াদে অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক সরকার গঠনের জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন ড. ইউনূস।

ইসরায়েল   সিএনএন চ্যানেল   মনিকা ইউনূস  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রংপুর মেডিকেলের আইসিইউতে আগুন

প্রকাশ: ১১:০৬ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের ৩ নম্বর এসিতে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (১১ মে) বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় আধা ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল ওয়ার্ডটি। তবে, বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।

ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ড হায়দার আলী বলেন, ‘এখানে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট হয়। সঙ্গে সঙ্গে আমরা সেটা নিয়ন্ত্রণ করি।’

হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর স্বজন সজল জানান, বিকেলে কিছুক্ষণের জন্য বিদ্যুৎ চলে যায়। পরে আবার চলে আসে। এখন কোনো সমস্যা নাই।

একাধিক রোগীর স্বজন জানান, হাসপাতালে তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

আইসিইউ ওয়ার্ডের ইনচার্জ জামাল উদ্দিন মিন্টু জানান, ৩টা ৫৫ মিনিটে ওই ওয়ার্ডের ৩ নম্বর এসির সার্কিট পুড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সেটি বন্ধ করে জরুরি লাইন চালু করা হয়। মেইন লাইন থেকে বিদ্যুৎ আধা ঘণ্টা বন্ধ ছিল। এখন সব কিছু ঠিক আছে।

এ বিষয়ে রংপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক বাদশা আলম কালবেলাকে বলেন, ‘অগ্নিসংযোগের ঘটনা আমরা জানি না।’


আগুন   রমেক  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সরকারের প্রথম চার মাস: রাজনীতিতে স্বস্তি অর্থনীতিতে উৎকণ্ঠা

প্রকাশ: ১১:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

একটি নতুন সরকারের প্রথম চার মাস সময়কে বলা হয় হানিমুন পিরিয়ড। এই সময় সাধারণত সরকারের দোষ ত্রুটি বা সমালোচনাগুলোকে উপেক্ষা করা হয়। সরকারের কর্মসূচি এবং পরিকল্পনাগুলোর দিকে সাধারণ মানুষের নজর রাখেন ভবিষ্যতে সরকার কী করবে তার একটা ইঙ্গিত পাওয়া যায় প্রথম চার মাসে। আর এই কারণেই সময়টাকে হানিমুন পিরিয়ড বলা হয়। কিন্তু যেহেতু আওয়ামি লিগ সরকার পুরনো টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় এসেছে তাই সে কারণেই আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য সেই হানিমুন পিরিয়ড আর প্রযোজ্য হয়নি। বরং নতুন সরকার আগের অতীতের ভুল ত্রুটিগুলো কীভাবে কাটিয়ে ওঠে সে ব্যাপারে সকলের মনোযোগ ছিল।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নতুন মেরুকরণ

আওয়ামী লীগ সরকার টানা চতুর্থবার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল এক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই। এই নির্বাচন হবে কি না, নির্বাচনের পর আন্তর্জাতিক মহল নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে কি না, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী ভূমিকা নেবে ইত্যাদি নানা অনিশ্চয়তা সংকট এবং আলোচনার মধ্যেই ৭ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার ১১ জানুয়ারি টানা চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করেন। তিনি নতুন এবং পুরনো মিলিয়ে তার মন্ত্রিসভাকে সাজান৷ অন্য ৩ বারের মতো মন্ত্রীদের ঢালাও ভাবে বাদ না দিয়ে বেশ কিছু পুরনো মন্ত্রী এবার নতুন মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নিয়েছেন। আর এই মন্ত্রিসভার আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য ছিল, মন্ত্রিসভাকে একটি রাজনৈতিক চরিত্র দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। আওয়ামী লীগের সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমানের মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতারা মন্ত্রিসভায় জায়গা পান। ফলে এই মন্ত্রিসভা নিয়ে মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল।

প্রথম চার মাসে মন্ত্রিসভা প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে বলেই অনেকে মনে করেন। কয়েকজন মন্ত্রীকে বেশ উজ্জল এবং আলোকিত দেখা গেছে। মানুষের জন্য কাজ করা তাদের কমিটমেন্ট। সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশেষ করে নতুন মন্ত্রী হওয়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমানের কর্মতৎপরতা ছিল ছোখে পড়ার মত। তবে নতুন সরকার গাঠিত হওয়ার পর যে রাজনৈতিক সংকটের আশঙ্কা করা হয়েছিল সে রাজনৈতিক সংকট থেকে সরকার শুরুতে কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশের উপর যে নেতিবাচক মনোভাব ছিল নির্বাচনের পর তা কেটে যেতে শুরু করেছে। বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছে। এটা সরকারের জন্য একটা বড় স্বস্তি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নির্বাচনের পর মিয়ে গেছে। তারা এখন অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে। বিভিন্নরকম কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তারা নিজেদের হতাশা কাটানোর চেষ্টা করছে। সরকারের সামনে কোন বড় ধরনের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ নেই বললেই চলে।

আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদের-একরাম চৌধুরীর নোয়াখালীর বিরোধ: যেখান থেকে শুরু

তবে প্রথম চার মাসে অর্থনৈতিক সংকট ভয়াভয় হয়ে উঠছে। অর্থনৈতিক সংকটই সরকারে কাছে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা অর্থনৈতিক সংকটকে বাড়িয়ে দিয়েছে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, ব্যাংকিং সেক্টরে অনিয়ম, লাগামহীন দুর্নীতি, অর্থপাচার ইত্যাদি ইস্যু গুলোকে অর্থনীতিতে একটি নাজুক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ব্যাংকিং সেক্টর এখন একটি হতাশাজনক চিত্র একই সাথে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। বাংলাদেশকে এখন ঋণ নিয়ে চলতে হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ আয়ের উৎস কমে গেছে আর সব কিছু মিলিয়ে সামনের দিনগুলোতে অর্থনৈতিক সংকটে একটি নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। এই পরিস্থিতি থেকে কিভাবে উত্তরণ করা যায় সেটিই হল এখন সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।


আওয়ামী লীগ   মন্ত্রিসভা   সরকার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫-প্রত্যাশীদের বিক্ষোবে পুলিশের বাধা, আটক ১৫, আলটিমেটাম

প্রকাশ: ১০:০৩ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

গণভবনের উদ্দেশে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলনরত একদল ব্যক্তি। বেলা তিনটার দিকে এ কর্মসূচি থেকে ১৫ জনকে শাহবাগ থানা-পুলিশ আটক করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আটককৃতদের ছেড়ে দিতে রাত ১০টা পর্যন্ত সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

শনিবার (১১ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার দাবিতে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫-প্রত্যাশী সমন্বয় পরিষদ’ নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে এই কর্মসূচি ডাকা হয়েছিল।

রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। সমাবেশ শেষে বেলা তিনটার দিকে আন্দোলনকারীরা গণভবনের উদ্দেশে মিছিল নিয়ে যাত্রা করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিছিলটি শাহবাগ মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এ সময় পুলিশ তাদের ব্যাপক মারধর ও লাঠিপেটা করে এবং তাদের ১৫ জনকে আটক করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। এরপর ৩৫-প্রত্যাশীরা আবার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন। সন্ধ্যায় সেখানে সংবাদ সম্মেলন করে ১৫ শিক্ষার্থীকে আটকের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫-প্রত্যাশী সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শরিফুল হাসান। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে তিনি বলেন, ‘আমরা রাত ১০টা পর্যন্ত আলটিমেটাম দিলাম। এর মধ্যে আমাদের আটক শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে গণভবন থেকে আমাদের দাবি পূরণের বিষয়টি সুরাহা করতে হবে।’

শরিফুল হাসান পরে বলেন, ‘রাত ১০টার মধ্যে আটক আন্দোলনকারীদের ছেড়ে দেওয়া না হলে সাড়ে ১০টায় রাজু ভাস্কর্যে সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।’ রাত পৌনে আটটায় এই প্রতিবেদন লেখার সময় আন্দোলনকারীরা রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন।

শাহবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস) আরশাদ হোসেন বলেন, আন্দোলনকারীরা কয়েকটি স্থানে সড়ক আটকিয়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন দেন। তাদের সরে যেতে বললেও সরে না যাওয়ায় বাধ্য হয়ে ১৩ জনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে।


চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫-প্রত্যাশীদের বিক্ষোব   আটক   আলটিমেটাম  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

'আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতো না'

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

আজ ভোর রাতে চিরবিদায় নিয়েছেন হায়দার আকবর খান রনো। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের শেষ আলোকবর্তিকা। বাংলাদেশের সৎ রাজনীতির শেষ উত্তরাধিকার। বাংলাদেশে প্রগতিশীল এবং বাম রাজনীতির শেষ অনুকরণীয় উদাহরণ। হায়দার আকবর খান রনোর বিদায় বাম রাজনীতিতে এক নতুন করে শূন্যতা তৈরি করল। এই শূন্যতা কখনও পূরণ হবে না। নিজে একসময় চৈনিক বামে আসক্ত হলেও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিনি চীনপন্থী নীতির সাথে একমত পোষণ করেন৷ চীনপন্থী বামরা যখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, আমাদের অস্তিত্বের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল সেইসময় হায়দার আকবর খান রনো দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। বাম রাজনীতিতে তার বিভ্রান্তি থাকতে পারে কিন্তু ন্যায় নীতি এবং আদর্শের প্রশ্নে তিনি ছিলেন অটল।

বাংলাদেশের বাম রাজনীতিতে হায়দার আকবর খান রনো এবং রাশেদ খান মেনন যেন যুগলবন্দি নাম ছিল। দুইজনই বাংলাদেশের বাম রাজনীতির ধারাকে বিকশিত করেছিলেন। এই দুইজনের কারণেই তরুণ এবং ছাত্র সমাজের মধ্যে বাম রাজনীতির একটা বিকাশ হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুই বন্ধু এক থাকতে পারেননি। এক বৃন্তের দুটি ফুল ভেঙে যায়। হায়দার আকবর খান রনো তার আদর্শের প্রশ্নে শেষ জীবন পর্যন্ত অটল থেকেছেন। অন্যদিকে, রাশেদ খান মেনন ক্ষমতার হালুয়া-রুটি খাওয়ার লোভে বাম আদর্শ ত্যাগ করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন। মন্ত্রী হয়েছেন, এমপি হয়েছেন এবং নিজের আদর্শকে সেলফি তুলে রেখেছেন। দুই বাম নেতার এই দূরত্ব বাংলাদেশের বাম রাজনীতিতে অনেকখানি ক্ষতি করেছে।

হায়দার আকবর খান রনো ছিলেন আদর্শবাদী স্বাধীনচেতা। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মুক্তবুদ্ধি চর্চায় অবিচল আস্থাবান এক মানুষ। তিনি শেষ জীবনে তার নিজের হাতে গড়া দল ওয়ার্কার্স পার্টি তে থাকেননি। তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন। এর প্রধান লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের বাম রাজনীতিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং একটি সুবিন্যস্ত ধারায় বাম রাজনীতিকে নতুন করে সংগঠিত করা। কিন্তু তার সেই যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। তবে রাজনীতিতে তার অবস্থান খুব জোরালোভাবে স্পষ্ট করতেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে থাকার কারণে সবসময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে সচল ছিলেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় এবং একে একে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি দেয়া শুরু করে তখন হায়দার আকবর খান সরকারের এই নীতির প্রশংসা করেছিলেন৷ সেই সময় এক টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য আওয়ামী লীগের কোনো অবদান নেই বলে তিনি উল্লেখ করে বলেছিলেন যে, এটি শেখ হাসিনার একক অবদান। শেখ হাসিনার সাহস এবং প্রজ্ঞার কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব হয়েছে বলে হায়দার আকবর খান রনো মন্তব্য করেছিলেন।

ওই টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, 'শেখ হাসিনা যদি প্রধানমন্ত্রী না থাকতেন, আওয়ামী লীগও যদি ক্ষমতায় থাকতো তাহলে এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কখনোই সম্ভব হতো না।' এভাবেই নিজের মনের ভাবনা স্পষ্ট এবং অবিচল ভাবে বলার এক সাহস ছিল তার। জীবনে তিনি একজন নির্ভীক রাজনীতিবিদ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন না, একজন সৎ মানুষ হিসেবে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের বাম রাজনীতিতে মুণি সিং, মোহাম্মদ ফরহাদের পর হায়দার আকবর খান ছিলেন এক উজ্জ্বল তারকা। তার চলে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের বাম রাজনীতিতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হল সেই শূন্যতা কেউ কোনদিন পূরন করতে পারবে না।


আওয়ামী লীগ   শেখ হাসিনা   প্রধানমন্ত্রী   যুদ্ধাপরাধী   হায়দার আকবর খান রনো  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সন্ধান মিলল ছয় মাস ধরে নিখোঁজ যুবকের, পেটে কাটা দাগ

প্রকাশ: ০৯:০৯ পিএম, ১১ মে, ২০২৪


Thumbnail

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থেকে প্রায় ছয় মাস আগে নিখোঁজ হন মানসিক ভারসাম্যহীন মো. সেলিম (৪০)। রাজধানীর মিরপুরে মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে তাকে উদ্ধার করেছেন পরিবারের সদস্যরা।

নিখোঁজ হওয়া সেলিম ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বৃ-পাঁচাশি গ্রামের মো. হাসিম উদ্দিনের ছেলে। 

স্বজনেরা জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখে তারা সেলিমকে চিনতে পারেন। পরে ঈশ্বরগঞ্জ থেকে স্বজনেরা ঢাকায় গিয়ে মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বৃহস্পতিবার তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

সেলিমের ছোট ভাই মাহিন মিয়া বলেন, ভাইকে নিয়ে আসার সময় ফাউন্ডেশনে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন কাগজ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হয়েছে। বাড়িতে আনার পর ভাইয়ের পেটের ডান পাশে অস্ত্রোপচারের বড় দাগ দেখে তারা সন্দেহ করছেন, ভাইয়ের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গহানি হতে পারে। 

তিনি বলেন, ‘আমরা হতদরিদ্র পরিবার। অর্থের অভাবে এখন ভাইয়ের অঙ্গহানি হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করতে চিকিৎসকের কাছে যেতে পারছেন না।

সেলিমের ছোট বোন ফারজানা আক্তার জানান, চার ভাইয়ের মধ্যে সেলিম সবার বড়। তার সংসারে দুটি মেয়ে আছে। তিনি এলাকায় কাজকর্ম করে পরিবারের ভরণপোষণ করতেন। বছরখানেক আগে ভাইয়ের মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। মানসিক সমস্যার কারণে তাকে (সেলিম) মাঝেমধ্যে বাড়িতে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। তিনি শিকল খুলে বিভিন্ন জায়গায় চলে যেতেন। আবার কয়েক দিন পর ফিরে আসতেন। কিন্তু এবার তাকে খোঁজ করেও পাওয়া যাচ্ছিল না।

সেলিমের স্ত্রী ফাতেমা বলেন, ছয় মাস আগে এক সন্ধ্যায় তার স্বামী বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাননি। দীর্ঘদিন পর মিল্টন সমাদ্দারের গ্রেপ্তারের খবর টেলিভিশনে দেখেন। এর মধ্যে তার দেবর ও অন্য স্বজনেরা একদিন ইউটিউব ভিডিওতে মিল্টনের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের শয্যায় সেলিমকে শুয়ে থাকতে দেখে চিনে ফেলেন। পরে সেখান থেকে সেলিমকে উদ্ধার করে গ্রামে আনা হয়েছে। সেলিম আগে নিজে চলাফেরা করতে পারলেও এখন তার অন্যের সাহায্য লাগছে।

সেলিমের স্ত্রী ফাতেমা বলেন, তার স্বামীর মানসিক সমস্যা থাকলেও কোনো শারীরিক সমস্যা ছিল না। পেটে এত বড় অপারেশনের দাগ কিসের, জানতে চান তিনি। মিল্টন সমাদ্দারের কেয়ারে স্বামীর কোনো অঙ্গহানি হলে দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রম থেকে সেলিম নামের এক ব্যক্তিকে উদ্ধারের ঘটনাটি জানার পর থানা থেকে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে তাঁর বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল। তবে সেলিমের পরিবার থানায় কোনো অভিযোগ করেননি।


ময়মনসিংহ   ঈশ্বরগঞ্জ   নিখোঁজ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন