ইনসাইড বাংলাদেশ

নীলফামারীতে ভ্যান চালককে হত্যা, প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় পলাতক ৫

প্রকাশ: ০৬:২১ পিএম, ০৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের চাওড়াডাঙ্গী মাঝাপাড়া গ্রামে মিলন ইসলাম (৩৮) নামে এক ভ্যান চালককে বখাটে জুয়ারী ও তাদের সহযোগীরা পিটিয়ে হত্যা করে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসী। নিরিহ একটি সুখী পরিবার হঠাৎ করেই কার্যত শেষ হয়ে গেছে। একমাত্র উপার্জনকারী ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বৃদ্ধ বাবা তোফাজ্জল হোসেন ও বৃদ্ধা মা লিলি বেগম। অপর দিকে স্বামীকে চিরতরে হারিয়ে স্ত্রী মুক্তা বেগম(৩৫) দিশেহারা। আর বাবাকে হারিয়ে  তিন সন্তান মোরসালিন(১২) মোজাহিদ(১০) ও নুসরাত জাহান মাহি(৩) নির্বাক।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গেলে গ্রামবাসী সহ হত্যার শিকার ভ্যান চালকের স্বজনরা জানায় হত্যাকান্ডের পর বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী  জড়িত ৭ জনের মধ্যে দুইজনকে  আটক করে পুলিশকে দিলেও পুলিশ অপর পলাতক ৫ জন আসামীকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। অভিযোগ উঠেছে আসামীরা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে উল্টো হুমকী ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামীকে পুলিশ রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ ও আদালতে স্বীকারোক্তি জবানবন্দীর ব্যবস্থাও করেনি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। 

সুত্র মতে, এই ঘটনায় নিহত মিলনের স্ত্রী  মুক্তাবানু বাদী হয়ে গ্রামের আনিছুর রহমান (৪৮) ও তার দুই ছেলে খোকন ইসলাম (২০) ও রিপন ইসলাম (২৫), সিরাজুল ইসলাম (৫২) ও তার দুই ছেলে বিপুল ইসলাম (২৭) ও স্বপন ইসলাম (২৪) এবং আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. মানিক ইসলামের (৪০) নামে জলঢাকা থানায় হত্যা  মামলা দায়ের করে। এদের মধ্যে গ্রামবাসী বিপুল ইসলাম ও স্বপন ইসলামকে ধাওয়া করে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিতে সক্ষম হয়।

গ্রামবাসীরা জানায়, 'ঘটনার একদিন পর এলাকার স্বতন্ত্র এমপি সাদ্দাম হোসেন পাভেল নিহত ভ্যান চালকের বাড়ীতে এসেছিলেন। তিনি ঘটনার সমাধান করে দিতে চেয়েছেন। কি সমাধান করে দিবেন আমরা তার কথা বুঝি নাই। আমরা যা বুঝি তা হলো ভ্যান চালক মিলন  হত্যার ন্যায় বিচার চাই। আসামীদের  ফাঁসি চাই।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘গত ৩০ জানুয়ারী বিকেল ৩ টায় আসামীরা সহ বেশ কিছু যুবক ভ্যানচালক মিলনের বাড়ীর সামনের রাস্তায় চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি করে মার্বেল দিয়ে জুয়া খেলছিল। ওই সময় নিহত মিলন ভ্যান চালিয়ে ক্লান্ত শরীরে বাড়ীতে এসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। মার্বেলের জুয়া খেলা নিয়ে ওই সকল যুবকদের মধ্যে হট্টগোল বাধে। ভ্যান চালক মিলন বাড়ি থেকে বাইরে এসে তার বাড়ীর সামনে মার্বেল খেলতে নিষেধ ও  হট্টগোল না করার জন্য অনুরোধ করেন। এসময় আসামীদের মধ্যে স্বপন ক্ষিপ্ত হয়ে ভ্যান চালক মিলনের হাতের আঙ্গুল কামড় দেয়। মিলন তার হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য স্বপনকে ধাক্কা দিলে পিছন থেকে খোকন ইসলাম জলপাইয়ের মোটা ঠাল দিয়ে মিলনের মাথায় সজোরে আঘাত করে।

এতে তৎক্ষনাত মিলন মাটিতে পড়ে গেলে মাথা থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ওই অবস্থায় মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছিল ভ্যান চালক।  এ সময় অপর আসামীরা এসে মাটিতে পড়ে থাকা ভ্যান চালক মিলনকে এলোপাথারি লাথি মারতে থাকে।  স্বামীকে রক্ষা করতে তার স্ত্রী মুক্তা বানু, মা লিলি বেগম ও স্থানীয় ওমর ফারুক এগিয়ে আসলে অভিযুক্তরা তাদেরকেও মারতে শুরু করে। পরে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাদের  হাত থেকে আহত মিলন ও তার পরিবারকে ছাড়িয়ে নেয়। গুরুতর রক্তাত্ব আহত অবস্থায় মিলনকে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ভ্যান চালক মিলনকে  রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থনান্তর করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন রাত ১১টায় মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে মিলন।’ 

পরের দিন ৩১ জানুয়ারী ভ্যান চালক মিলনের লাশের ময়নাতদন্ত হয় রংপুর মেডিকেলে। সেখান থেকে মরদেহ এনে সন্ধ্যায় গ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। ওইদিন রাতেই মিলনের স্ত্রী বাদী হয়ে জলঢাকা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী  ওমর ফারুক (১৯) বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই মিলন ভাই বাড়ীর সামনে জুয়া খেলতে বারণ করলো তাদের। তার বাড়ীতে ছোট ছেলে-মেয়ে আছে তারা এগুলো জুয়া খেলা শিখতে পারে তাই এখানে খেলতে নিষেধ করলো। কিন্তু এক পর্যায় তারা মিলন ভাইয়ের উপর  চড়াও হয় এবং স্বপন এসে তার আঙ্গুল কামড়ে ধরে। আঙ্গুল ছাড়াতে স্বপনকে ধাক্কা দিলে পিছন থেকে খোকন মোটা ঠাল দিয়ে মাথায় মারে। এসময় আমি মিলন ভাইকে বাঁচাতে গেলে তারা আমাকেও মারতে থাকে।’

প্রত্যক্ষদর্শী গোলাম জাকারিয়া বাবু (৪৬) বলেন,‘আমি জমিতে কাজ করছিলাম। হঠাৎ চিৎকার চেচামেচি শুনে আমি ছুটে আসতেই দেখি খোকন একটি মোটা ঠাল দিয়ে মিলনের মাথায় আঘাত করলো। আঘাত করা মাত্রই মিলন মাটিতে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারায় ও তার মাথা থেকে রক্ত ঝড়তে থাকে।

মাটিতে থাকা অবস্থাতেও তারা (অভিযুক্তরা) মিলনকে মারতেই থাকে। তার মা-স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারতে থাকে। এলাকার ওআ হত্যাকারীরা সন্ত্রাসীও জুয়ারী। তারা কোনো কিছুর তোয়াক্কা করে না। কিছুদিন আগেও এলাকার জুখেখা বেগম নামে এক গৃহবধুর হাত ভেঙ্গে দিয়েছিল। এছাড়া রাতে ছিনতাই ও মাদক সেবন করে তারা।'

অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী বেলাল হোসেন বলেন,‘মিলনের মাথা দিয়ে রক্ত বের হতে থাকলেও তারা (অভিযুক্তরা) মাটিতে পড়া অবস্থায় তাকে মারতেই থাকে। মা, স্ত্রী এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারতে থাকে। গুরুতর আহত অবস্থায় মিলনকে আমরা তাদের হাত রক্ষা করে ভ্যানে যখন উঠাই তখনও তারা ভ্যানে শোয়ানো অবস্থায় মারতে থাকে।'

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন মিলন। তার মৃত্যুতে দিশেহারা সকলে। ছেলেকে হারিয়ে মা বাবা নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তাদের কিভাবে মানুষ করবেন তা ভেবে কুল-কিনারা পাচ্ছে না নিহত মিলনের স্ত্রী মুক্তাবানু। অর্থাভাবে ন্যায় বিচার পাবে কি না সে নিয়েও রয়েছে তাদের শঙ্কা।

নিহত মিলনের মা লিলি বেগম বিলাপ করে বলেন, 'আমার সব শেষ হয়ে গেছে, আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব? আমার পুত্রবধু অসহায় হয়ে পড়েছে। নাতি-নাতনিরা কাকে বাবা বলে ডাকবে? ওদের এখন কে দেখবে? সামান্য মার্বেল খেলতে নিষেধ করায় ওরা আমার ছেলে মিলনকে এভাবে খুন করতে পারলো? আল্লাহ ওদের মাফ করবে না। আমি ওদের ফাঁসি চাই। '

শোকে তিন সন্তান নিয়ে দিশেহারা নিহত মিলনের স্ত্রী  মুক্তা বানু । কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আসামীরা আমাদের দেড়শতক জমি দখলের চেস্টা করেছিল। এমনকি তাদের কাছে জমি বিক্রি করার জন্য আমার স্বামীকে চাপ দিয়ে আসছিল। এতে রাজি ছিল না স্বামী। স্ত্রীর ধারনা মার্বেল খেলতে নিষেধ করার ঘটনাটি পুজি করে ওই জমি দখলের ব্যর্থ হবার ক্ষোভে আসামীরা সবাই মিলে পরিকল্পনা করে হামলা করে আমার স্বামীকে খুন করেছে। ওরা জায়গা-জমির জন্য খুন করেছে। আমি বিচার চাই। ওরা মাঝে মাঝেই আমাদের হত্যার হুমকি দিত। ওরা আমার স্বামীকে খুন করেছে।

ছেলে-মেয়েদের কিভাবে মানুষ করবো? কিভাবে সংসার চলবে? আর কিভাবেই বা স্বামী হত্যার বিচার পাবো? তারা টাকাওয়ালা শক্তিশালী মানুষ। গ্রামবাসী দুই আসামীকে ধরে পুলিশকে দেয়।  প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় পলাতক ৫ আসামী রয়েছে। পুলিশ তাদের ধরেনা। তিনি জানান, এলাকার এমপি সাদ্দাম হোসেন পাভেল আমাদের বাড়ীতে এসেছিল। তিনি সমাধান করে দিতে চেয়েছেন। আমি বলেছি স্বামী হত্যার  ন্যায় বিচার চাই। আসামীদের  ফাসি চাই।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জলঢাকা থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মিনহাজুল ইসলাম বলেন,‘ওই ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ময়না তদন্তের রির্পোট  পাওয়া যায়নি। রির্পোট পাওয়ার পর  প্রয়োজনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।


মিনহাজুল ইসলাম   এমপি সাদ্দাম হোসেন পাভেল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

চট্টগ্রামে সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রীর লড়াই

প্রকাশ: ১০:১১ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ২৯ মে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা যেন কোন প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে না যায় বা না সমর্থন করে এমন নির্দেশনা থাকলেও চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রীর লড়াই চলছে।

জানা গেছে, আনোয়ারায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিন প্রার্থী। তবে এর মধ্যে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান কাজী মোজাম্মেল হককে (আনারস) ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এম এ মান্নান চৌধুরীকে (মোটরসাইকেল) সমর্থন দিচ্ছেন। ভোট ছাপিয়ে উপজেলা নির্বাচন পরিণত হয়েছে সাবেক ও বর্তমান দুই মন্ত্রীর লড়াইয়ের মঞ্চ। তবে দুই নেতার বাইরে আলাদাভাবে প্রচারণা এগিয়ে নিচ্ছেন দুবারের চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী (দোয়াত কলম)।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ১ মে সন্ধ্যায় আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভা ডেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বটতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান চৌধুরীকে প্রার্থী ঘোষণা করে। ওই সভায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী তাকে সমর্থন দেন। একই দিন রাতে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক প্রার্থী হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আনোয়ারার চাতরী চৌমুহনীসহ বিভিন্ন জায়গায় আনন্দ মিছিল করেন ওয়াসিকার অনুসারীরা। 

তবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারী কাজী মোজাম্মেল হক উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনী পরিবেশের মোড় ঘুরে যায়। মোজাম্মেলের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অনেকে থাকায় জমে উঠেছে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনী আমেজ।

উপজেলা পরিষদের নির্বাচন ঘিরে আনোয়ারায় তিন পক্ষ একে অপরের মুখোমুখি অবস্থানে আছে। সাবেক ভূমিমন্ত্রীর প্রার্থী এম এ মান্নানকে জেতাতে ১০ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এককাট্টা হলেও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা মাঠে নেমেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের প্রার্থী কাজী মোজাম্মেল হককে জেতাতে। ওই দুই প্রার্থীর বাইরে জেলা-উপজেলার বেশ কিছু নেতাকে নিয়ে মাঠে আছেন তৌহিদুল হক চৌধুরী।

উল্লেখ্য, আনোয়ারা উপজেলার ১১ ইউনিয়নে ৭৪টি ভোটকেন্দ্র আছে। তার মধ্যে স্থায়ী ভোটকক্ষ ৪৮৪টি এবং অস্থায়ী ভোটকক্ষ ৫০টি। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৮৮ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯ হাজার ২২১ জন।

উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

এমপিপুত্রের দাপটে অন্যরা কোণঠাসা

প্রকাশ: ০৯:৩৬ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সেনবাগ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের ছেলে সাইফুল আলম দিপুর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য প্রার্থীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে নিজেদের সুবিধামতো ব্যবহার করার ফলে অন্য প্রার্থীরা তাদের শঙ্কার কথা জানিয়েছে।

প্রার্থীদের অভিযোগ, দিপু বাবার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তার সমর্থকরা পদে পদে হয়রানি করছে অন্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের। প্রশাসনকে নিজেদের কাজে লাগানো, অন্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের হুমকি, প্রচারণায় বাধাসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ড করছেন ভোটের মাঠে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তার বাবা মোরশেদ আলম। সম্মেলনের মাধ্যমে লায়ন জাহাঙ্গীর আলম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। কিন্তু গত সংসদ নির্বাচন আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকের পক্ষে ভোট করার দায়ে লায়ন জাহাঙ্গীরকে পদ থেকে বহিষ্কার করেন এমপি মোরশেদ। এরপর নিজের পছন্দের বাহার উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করেন তিনি। এ ছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন মোরশেদ। কোনো সম্মেলন ছাড়াই তিনি এসব কমিটি দিচ্ছেন। সব মিলেয়ে সেনবাগে রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্বাভাবিক করে তুলেছে এমপি পরিবার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটিগুলোও তাদের দখলে।

জানা গেছে, নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই অন্য প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি এবং দলীয় সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার হুমকি দিচ্ছেন সাইফুল আলম দিপু ও তার অনুসারীরা। নির্বাচনে ১, ৬,৭ ও ৮ নং ইউনিয়নসহ অন্য ইউনিয়নেও অন্য প্রার্থীর এজেন্ট প্রবেশ না করার জন্যও প্রতিনিয়ত চাপ ও হুমকি দিচ্ছেন তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলীয় নেতা জানান, তার বিপক্ষে গিয়ে অন্য প্রার্থীর ভোট করায় তাদের সরকারি বরাদ্দ টিআর, কাবিখা এবং দলীয় পদপদবি না দেওয়ার চাপ দিচ্ছেন দিপু। এজন্য প্রশাসন দিয়েও নেতাকর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। মামলারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আগামী মঙ্গলবার (২১ মে) দেশের ১৫৭টি উপজেলায় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের ২য় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২য় ধাপে সেনবাগসহ নোয়াখালীতে মোট ৩টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সেনবাগ উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়াই করছেন মোট ১৫ জন প্রার্থী৷ তারা সবাই ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।

স্থানীয় সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের ছেলে আনারস প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল আলম দিপু ছাড়াও চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন সেনবাগ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী মো. আবু জাফর টিপু, বর্তমান চেয়ারম্যান হেলিকপ্টার প্রতীকের প্রার্থী জাফর আহাম্মদ চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী হাসান মঞ্জুর, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সদস্য মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী এ কে এম জাকির হোসেন জুয়েল ও টেলিফোন প্রতীকের প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর আলম মানিক।

উপজেলা নির্বাচন   নোয়াখালী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বান্দরবানে সেনা অভিযানে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত

প্রকাশ: ০৭:৪৬ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলা সীমান্তে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) তিন সদস্য নিহত হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্র, কার্তুজ, সামরিক পোশাক ও অন্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। 

রোববার (১৯ মে) দুপুরে রুমা উপজেলায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ডেবাছড়ার গভীর অরণ্যে কেএনএফ আস্তানা গেড়েছে- এমন খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ঘণ্টা ব্যাপী গুলি বিনিময়ের পর সেখান থেকে কেএনএফের দু’জন সদস্যের লাশ ও একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তিনিও মারা যান। নিহতদের এখনো কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি।

বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রুমা উপজেলার রনিন পাড়ার কাছে ডেবাছড়া এলাকায় কেএনএফের একটি আস্তানায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযানে তিনজন নিহত হয়েছে। ঘটনার পর মরদেহ উদ্ধারের জন্য পুলিশ সেখানে গিয়েছে।

উল্লেখ্য, বান্দরবানে গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদে হামলা, টাকা-অস্ত্র লুটের ঘটনায় মামলায় অভিযুক্ত ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগে বান্দরবানজুড়ে যৌথ বাহিনীর চিরুনি অভিযান চলমান রয়েছে।

বান্দরবান   কেএনএফ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য নিয়ে মতবিনিময় সভা

প্রকাশ: ০৭:৩৯ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

সিরাজগঞ্জে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে নিয়ে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য নারী পক্ষ নামে একটি সংগঠন সিরাজগঞ্জ ও পাবনার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

রবিবার (১৯ মে') দুপুরে শহরের এস. এস রোডস্থ নর্থ টাউন রেস্তোরাঁয় প্রোগ্রাম ফর উইম্যান ডেভোলপমেন্ট (পি ডাব্লিউডি) সার্বিক সহযোগিতা ও নারীপক্ষ আয়োজনে ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য দিনব্যাপী মতবিনিময় সভার শুভ উদ্বোধন করেন নারীপক্ষ চেয়ার পারসন গীতা দাস। 

 

মতবিনময় সভায় নারীপক্ষ চেয়ারপার্সন গীতা দাস বলেন, মানুষ কোনো ভালো কর্ম করলে তাকে বিশেষায়িত করা যায়। কিন্তু নারীরা নির্যাতিত হলেও তাদেরকে বিশেষায়িত করা হয়। যেমন ধর্ষণের শিকার হলে তাকে ধর্ষিতা, নির্যাতনের শিকার হলে নির্যাতিতা বলা হয়। অথচ ধর্ষণের শিকার, নির্যাতনের শিকার লিখলেও হয়।’ একজন নারীকে মানুষ হিসেবে দেখলে এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

 

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন কামরুন নাহার, ফেরদৌসী আখতার, পিডাব্লিউডি নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা জলি।

এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি চ্যানেল টুয়েন্টিফর সিনিয়র রিপোর্টার সাংবাদিক হীরুকগুণ, এনটিভি জেলা প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম ইন্না, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজন সরকার, বৈশাখী টেলিভিশন সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সুজিত সরকার, দীপ্ত টিভির সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি শিশির, দীপ্ত টিভি পাবনা জেলা প্রতিনিধি শামসুল আলম সহ অনেকে।


ভাষায় লিঙ্গীয় বৈষম্য   মতবিনিময়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা, চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

প্রকাশ: ০৭:২৯ পিএম, ১৯ মে, ২০২৪


Thumbnail

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামালের বিরুদ্ধে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের শিবপুর বাজার এলাকা থেকে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করেন চেয়ারম্যার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল।

 
রোববার (১৯ মে) মোটরসাইলে প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট ও রিটার্নিং অফিসারের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

 

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপে আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

 
অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্ত উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের শিবপুর বাজার এলাকা থেকে জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা ও মোটরসাইকেল শোডাউন দিয়ে প্রচার কাজ চালিয়েছেন। যা নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঙ্ঘন।

 

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যার প্রার্থী তানভীর ইসলাম বলেন, সাইফুল ইসলাম কামালের গুন্ডা সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত আমার কর্মী, সমর্থক, ভোটারদের ভয়ভীতি, হুমকী, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করছে। ফলে নির্বাচন কমিশনের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আচরণবিধি সাইফুল ইসলাম কামাল বারবার লঙ্ঘন করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করছেন।

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইফুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘ঘোড়া নিয়ে প্রচার প্রচারণা করিনি। তবে আমি ঘেড়ার গাড়ি নিয়ে প্রচার প্রচারণা করেছি। এটাও যদি বিধি নিষেধ থাকে তাহলে এটাও পরিহার করবো।’

পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট ও রিটার্নিং অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জীবন্ত ঘোড়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় চেয়ারম্যান প্রার্থী এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি আমরা। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।


উপজেলা নির্বাচন   আচরণ বিধি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন