ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার আগামী সপ্তাহে ঢাকায় আসছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এটি হবে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার প্রথম ঢাকা সফর।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনসূ ও কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, আফরিন আক্তার ২৪ ফেব্রুয়ারি তিন দিনের সফরে বাংলাদেশে আসতে পারেন।
সংসদ নির্বাচনের আগে গত অক্টোবরে আফরিন আক্তার ঢাকা সফর করেন। নির্বাচনের আগে সেটাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কোনো জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার শেষ বাংলাদেশ সফর।
কূটনেতিক সূত্র জানিয়েছে, তিন দিনের ঢাকা সফরের সময় আফরিন আক্তার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (উত্তর আমেরিকা অনু বিভাগ) খন্দকার মাসুদ আলমের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করবেন। এর পাশাপাশি পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন তিনি।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ তথা আওয়ামী লীগ সরকারের মতপার্থক্য রয়েছে। নির্বাচনের আগে ও পরে যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেনি। এমন এক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ মাসের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লেখেন। ওই চিঠিতে তিনি দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ‘ঐকান্তিক ইচ্ছার’ কথা উল্লেখ করেন।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, আফরিন আক্তার বাংলাদেশ সফরের সময় একটি অবাধ ও মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীর পাশাপাশি মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি আলোচনায় আসতে পারে।
গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশে এসেছিলেন আফরিন আক্তার। পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রত্যাশার কথা অব্যাহতভাবে বলে যাচ্ছে। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর থাকবে দেশটির। দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারত্বকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের শান্তিপূর্ণ উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্র জোর দিচ্ছে।
নির্বাচন নিয়ে দুই দেশের মতপার্থক্য, এ নিয়ে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তাদের অবস্থানের সঙ্গে জো বাইডেনের চিঠির গুণগত পার্থক্য রয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে নির্বাচনের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। এ নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকেরা বলছেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির পররাষ্ট্রনীতিতে গণতন্ত্র, সুশাসনের মতো মূল্যবোধের বিষয়গুলো সব সময় থাকবে। তবে বাংলাদেশের নির্বাচন–পরবর্তী পরিস্থিতিতে অংশীদারত্বের বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্র সামনে রাখবে।
যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।