ইনসাইড বাংলাদেশ

কৃষক ও ভোক্তার দূরত্ব কমাতে সাকিবের ফসল ডটকম

প্রকাশ: ০৩:৩৮ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

মাত্র দুজন কর্মী নিয়ে শুরু করেছিলেন যাত্রা, এখন সেখানে কাজ করেন তিন শতাধিক কর্মী। প্রথম দিন অর্ডার আসে মাত্র বিশ কেজির, কিন্তু বর্তমানে দৈনিক বেচাকেনা প্রায় ৮০ হাজার কেজি। বলছিলাম, কৃষিপণ্য বিক্রির ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ফসল ডটকমের কথা।

এই প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা সাকিব হোসাইন। পরে মো. মামুনুর রশীদকে অংশীদার বানিয়ে নেন। প্রথম তিন মাস সাকিব ও মামুনুর নিজেরাই কৃষিপণ্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে মোড়কজাত ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেছেন।

২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে স্বল্প পরিসরে যাত্রা শুরু হয় এই প্রতিষ্ঠানের। বর্তমানে ১১ হাজারের বেশি কৃষকের উৎপাদিত সবজি কিনে নিজস্ব পরিবহনে ঢাকার সব কাঁচাবাজারে সরবরাহ করছে সাকিবের হোসাইনের এই উদ্ভাবনী উদ্যোগটি (স্টার্টআপ)।

উদ্যোক্তা হিসেবে সাকিবের যাত্রা শুরু হয় ২০১২ সালে। তখন তিনি সপ্তম শ্রেণিতে পড়তেন, বয়স মাত্র ১২ বছর। এক বন্ধুর বড় ভাই ছিলেন মেরিন প্রকৌশলী। চীন থেকে তিনি সাকিবকে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য এনে দিতেন। ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে সেগুলো বিক্রি করা হতো। এ কাজের পাশাপাশি তিনি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শেখেন। সফটওয়্যার ও অ্যাপ তৈরি করতে তাঁর ভালো লাগত। ২০১২ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত তিনি অনলাইনে ইলেকট্রনিক পণ্য বিক্রি করতেন।

২০১৫ সালে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় সাকিব প্রিন্ট ভ্যালি নামে আরেকটি উদ্যোগ শুরু করেন। এই উদ্যোগের কাজ ছিল ছাপাখানা ও গ্রাহকদের একটা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা। যে বিশেষ সফটওয়্যারে এটি চালানো হতো, সেটিও তাঁর বানানো। ২০১৭ পর্যন্ত চলে প্রিন্ট ভ্যালি। মাসে তখন বিক্রি হতো তিন–চার লাখ টাকার পণ্য।

২০১৭ সালের শেষ দিকে সাকিব আলাদিন কিডস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। ওখানে তিনি বিপণন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিষ্ঠানটি পরবর্তী সময়ে শিশুদের জন্য অনলাইনে একটি বড় বাজার হিসেবে গড়ে ওঠে।

ফসল ডটকমের প্রধান কার্যালয় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। ১৪টি জেলায় রয়েছেন পণ্য সংগ্রহ কেন্দ্র। এই কেন্দ্রগুলো থেকে কৃষকদের কাছ থেকে নগদ অর্থে পণ্য কেনা হয়।

করোনা মহামারির সময়ে সাকিবের ভাবনায় কৃষকদের নিয়ে কাজের আগ্রহ জাগে। গ্রাম ও শহরে কৃষিপণ্যের দামে বিস্তর পার্থক্য দেখে সিদ্ধান্ত নেন এটা নিয়ে কাজ করবেন। সাকিব দেখলেন পাঁচ টাকা পরিবহন খরচ বাড়ার অজুহাতে পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। ঢাকার কারওয়ান বাজার এবং কাপ্তান বাজারে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘুরতেন তিনি।

ঢাকার পাইকারি বাজার দেখার পর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর–অক্টোবর মাস পর্যন্ত চষে বেড়ান বাংলাদেশের ৩৮টি জেলা। সরাসরি কথা বলেন নানা পর্যায়ের সাত শতাধিক কৃষকের সঙ্গে। বোঝার চেষ্টা করেন কৃষিপণ্যের সরবরাহপ্রক্রিয়া কীভাবে কাজ করে। সাকিব খেয়াল করেন, কৃষকেরা তাঁদের পণ্যের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। অন্যদিকে বাজারে ক্রেতা চড়া দামে পণ্য কিনছেন। সাকিব ভাবলেন, তিনি যদি ন্যায্যমূল্যে কৃষকের সব পণ্য কিনে ফেলতে পারেন, তাহলে তাঁদের অবস্থার পরিবর্তন করা সম্ভব। সেই চিন্তা থেকেই ফসল ডটকমের জন্ম।

২০২০ সালের শেষ দিকে ফসল ডটকমের কার্যক্রম শুরু করেন সাকিব। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন ২০২১ সালের জানুয়ারিতে। বর্তমানে ১১ হাজারের বেশি কৃষকের উৎপাদিত সবজি কিনে নিজস্ব পরিবহনে ঢাকার সব কাঁচাবাজারে সরবরাহ করছে সাকিবের হোসাইনের এই উদ্ভাবনী উদ্যোগটি (স্টার্টআপ)।

এ বিষয়ে ফসল ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা ২৪ বছর বয়সী সাকিব বলেন, ‘পৃথিবীর যত বড় বড় স্টার্টআপ কোম্পানি রয়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগই কোনো একটা সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদেরও একটা সমস্যা থেকে “ফসল”–এর ধারণা মাথায় আসে। সমস্যাটা হলো কৃষকের ন্যায্য দাম না পাওয়া। এর সমাধানে প্রচলিত ব্যবস্থা থেকে সরে এসে উদ্ভাবনী কিছু করার চেষ্টা করেছি।

সাকিব হোসাইন বলেন, প্রথম দিন মাত্র ৫ কেজি বেগুন আর ১৫ কেজি পটল—মোট ২০ কেজি সবজির চাহিদা (অর্ডার) এসেছিল। কিন্তু তিন বছরের ব্যবধানে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে বিক্রি হয় প্রায় ৮০ হাজার কেজি (৮০ টনের বেশি) সবজি।

তিনি আরও জানান, এছাড়াও শুরুতে আমাদের মাত্র দুজন কর্মী ছিলেন, এখন সেখানে প্রতিদিন তিন শতাধিক কর্মী কাজ করেন। ফসল ডটকমে যে কৃষকেরা পণ্য সরবরাহ করেছেন, তাঁরা প্রচলিত বিপণনব্যবস্থার চেয়ে বেশি আয় করেছেন। পাঁচ হাজারের বেশি খুচরা দোকানদার যুক্ত হয়েছেন আমাদের এই প্ল্যাটফর্মটিতে।

ঢাকার বিভিন্ন কাঁচাবাজারে ফসল ডটকমের বিক্রয়কর্মীরা প্রতিদিন পণ্যের চাহিদা গ্রহণ করেন। সে অনুযায়ী ভোর পাঁচটার মধ্যে নিজস্ব পরিবহনে পণ্য পৌঁছে যায় খুচরা বিক্রেতার কাছে। শুধু ঢাকায় নয়, ফসল ডটকম দেশের ৩৫টি জেলায় পণ্য সরবরাহ করে থাকে।

ফসল ডটকমের প্রধান কার্যালয় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। ১৪টি জেলায় রয়েছেন পণ্য সংগ্রহ কেন্দ্র। এই কেন্দ্রগুলো থেকে কৃষকদের কাছ থেকে নগদ অর্থে পণ্য কেনা হয়। শাকসবজি মোড়কজাত করার জন্য ঢাকার মহাখালীতে আছে ফসলের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র। এমন কেন্দ্র ঢাকার বাইরে আছে আরও আটটি। রাজধানীর অধিকাংশ কাঁচাবাজারে ফসল ডটকম পণ্য সরবরাহ করে। এ ছাড়া বড় বড় সুপারশপ, যেমন ডেইলি শপিং, মীনাবাজার এবং ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান ফুড পান্ডা, চালডাল, দারাজ ছাড়াও প্রায় ২০০ রেস্তোরাঁয় কৃষকের পণ্য সরাসরি পৌঁছে দিচ্ছে ফসল।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে সাকিব বলেন, ‘পরিকল্পনা একটিই। কৃষক এবং ভোক্তা—দুই পক্ষের সঠিক মূল্যায়ন। আমরা একটি লক্ষ্যে এগোচ্ছি। প্রতিবছরের জন্যই আমাদের কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি বাংলাদেশে এমন একটি ইকোসিস্টেম তৈরি করতে, যেটি ব্যবহার করে আমরা প্রত্যেকেই উপকৃত হব।


কৃষক   ভোক্তা   সাকিব   ফসল ডটকম  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশের দুই জেলায় ভূমিকম্প

প্রকাশ: ০৯:১২ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪।

রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

জানা গেছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল পশ্চিমবঙ্গের উত্তমপুরে।

ভূমিকম্প  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ক্লাস চলার সময় ছিঁড়ে পড়ল সিলিং ফ্যান, শিক্ষার্থী জখম

প্রকাশ: ০৯:১৫ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

জামালপুর পৌর শহরের একটি বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে সিলিং ফ্যান পড়ে সুমাইয়া আক্তার মীম নামের এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে পৌর শহরের রশিদপুর এলাকার ইজ্জাতুন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সুমাইয়া আক্তার মীমকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

আহত মীম পৌরসভার বগাবাইদ গ্রামের ফেরদৌসের মেয়ে। আহত সুমাইয়া আক্তার মীম সেই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। 

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, সকাল ১০টা থেকে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। দশম শ্রেণির ক্লাসরুমে তৃতীয় ঘণ্টার ক্লাস শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরে দ্বিতীয় তলার শ্রেণি কক্ষের একটি ফ্যান ভেঙে সুমাইয়ার ওপর পড়ে যায়। এতে শিক্ষার্থী মুখের ওপরের ঠোঁট কেটে গিয়ে গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। গত বছরও ওই বিদ্যালয়ে ফ্যান পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছিল বলে জানান তারা।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা হাসপাতালে গেলে ছবি ও ভিডিও নিতে বাধা প্রদান করে বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা। আর এ বিষয়ে কোনো বক্তব্যও দিতে চাননি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আনিসুজ্জামান। এ সময় তিনি শুধু বলেন, বক্তব্য কী দেব বলেন, ফ্যান পড়ে গেছে এই আর কি।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হালিমা খাতুন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত না। তবে খবর নিচ্ছি। জেলার সাতটি উপজেলায় সব স্কুলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

জামালপুর  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সোমবার ৫ জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশ: ০৮:২৮ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলমান তাপদাহের কারণে দেশের পাঁচ জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (সোমবার) বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (২৮ এপ্রিল) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এক বার্তায় এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, দেশে চলমান তাপদাহের কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সকল মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল (২৯ এপ্রিল) বন্ধ থাকবে।

তবে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আছে সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ চাইলে তাদের স্কুল-কলেজ-মাদরাসা খোলা রাখতে পারবেন বলেও জানান তিনি।

এছাড়া পরবর্তী সময়ে এ পাঁচ জেলায় কিংবা তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, এমন অন্যান্য জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত সোমবার জানিয়ে দেওয়া হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান   তাপদাহ   শিক্ষা মন্ত্রণালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

আরও বড় হচ্ছে মন্ত্রিসভা

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দুই দফায় ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা আরও বড় হতে পারে বলে সরকারের ভেতরে গুঞ্জন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর বাজেট অধিবেশনের আগেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি সামনে আসতে পারে বলে সরকারের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। এই মন্ত্রিসভা অপূর্ণ ছিল, সেটি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর ১ মার্চ মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করা হয়। তবে সে দফায় কোন পূর্ণমন্ত্রী দেওয়া হয়নি। বরং ৭ জন নতুন প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে ৪৪ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। ২০১৮ সালেও মন্ত্রিসভা ছিল ৪৭ সদস্যের। এবারের মন্ত্রিসভা আওয়ামী লীগের গত তিন বারের মন্ত্রিসভায় চেয়ে আকারে সবচেয়ে ছোট। আর এই কারণেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়।  

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভা আরও বড় করার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। এছাড়া মন্ত্রিসভায় কয়েকটি দপ্তর পরিবর্তনের বিষয়টিও এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হচ্ছে। বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়া, পানি সম্পদ মন্ত্রণালেয়ও পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। 

এ ছাড়া পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তনেরও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার পরিবর্তে অন্য কোন অর্থনীতিবিদ বা অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া শ্রম মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিজিএমইএ-এর অনুরোধ রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। সামনের দিনগুলোতে শ্রম আইন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর কষাকষি করতে হতে পারে এই বিবেচনা থেকে বিজিএমইএ-এর পক্ষ থেকে সরকারকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। যিনি আইনে দক্ষ বিশেষ করে শ্রম আইনে দক্ষ কাউকে যেন এই মন্ত্রণালেয়র দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

উল্লেখ্য, মন্ত্রিসভার সদস্যদের ইতোমধ্যে ১০০ দিন পেরিয়ে গেছে গত ২১ এপ্রিল। এর মধ্যে মন্ত্রিসভার সদস্যদের ভালো-মন্দ নানান রকম হিসেব নিকেশ প্রধানমন্ত্রী করেছেন। তবে মন্ত্রিসভার সদস্যদেরকে এখনই বিচার করার সময় হয়নি বলেই সরকারের নীতি নির্ধারক মহল মনে করছেন। তবে টানা দুই থেকে তিনবার যারা প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন, তাদের মধ্যে থেকে দু’একজনকে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে বলেও জানা গেছে। এদের মধ্যে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এদের মধ্যে এক বা একাধিক জনকে পূণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, জুনাইদ আহমেদ পলক ইতোমধ্যে রাজনৈতিক ভাবে আওয়ামী লীগের 'গুড বুকে' চলে গেছেন। বিশেষ করে তার শ্যালককে তিনি প্রার্থী থেকে প্রত্যাহার করার ফলে তিনি সরকারের আরও বেশি আস্থাভাজন এবং প্রিয়ভাজনে পরিণত হয়েছেন। তবে মন্ত্রিসভার রদবদল কখন, কীভাবে হবে এবং কতজন নতুন মন্ত্রী হবেন এ বিষয় সম্পর্কে কেউই কিছু বলতে পারেননি। 

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, এটি একান্তই প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারাধীন বিষয়। প্রধানমন্ত্রী যখন বিবেচনা করবেন তখনই তিনি এই রদবদল করবেন।

মন্ত্রিসভা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ভারতে মোদি হারলে বাংলাদেশে কী হবে?

প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।

প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।

ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।

এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।

বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।

এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।

অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


ভারত   লোকসভা নির্বাচন   মল্লিকার্জুন খাড়গে   নরেন্দ্র মোদি   বাংলাদেশ   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন