শুরু
হচ্ছে চার দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি)
সম্মেলন। রোববার (২ মার্চ)
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার
কার্যালয়ের শাপলা হলে সকাল সাড়ে
১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। এরপর করবী হলে ডিসিরা
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন। সম্মেলনের
মূল কার্য-অধিবেশনগুলো হবে রাজধানীর ওসমানী
স্মৃতি মিলনায়তনে।
মন্ত্রিপরিষদ
বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২২
সাল পর্যন্ত ১২টি সম্মেলনে ডিসিরা
যেসব প্রস্তাব তুলেছেন, তা বাস্তবায়নের গড়
হার ৮২ দশমিক ৩০
শতাংশ। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের এ হারকে সন্তোষজনক
মনে করছে সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ
বিভাগ থেকে প্রকাশিত সম্মেলনের
কর্মসূচিতে দেখা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ
সচিবের সভাপতিত্বে কার্য-অধিবেশনগুলোতে ডিসিদের প্রস্তাবগুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগের মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী কিংবা সচিবদের ‘খোলামেলা’ আলোচনা হবে। এবার রাষ্ট্রপতির
সঙ্গে ডিসিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ, মতবিনিয়ম ও নৈশভোজের পর্ব
থাকছে না। কারণ, রাষ্ট্রপতি
আজ শনিবার সন্ধ্যায় চিকিৎসার উদ্দেশে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন।
অন্যান্য
বছরের মতো আয়োজন থাকছে
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন স্পিকারের সঙ্গে
সৌজন্য সাক্ষাৎ, মতবিনিময় এবং নৈশভোজের।
এ
ছাড়া সম্মেলনের শেষ দিন সুপ্রিম
কোর্ট ভবনে প্রধান বিচারপতির
সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ডিসিরা। প্রধান বিচারপতি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে নির্দেশনা দেবেন বলে জানা গেছে।
এবার সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে ডিসিদের দেখা হচ্ছে না।
এ ছাড়া সম্মেলনের শেষ
দিন প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার
কথা রয়েছে। এ সভায় ডিসিরাও
উপস্থিত থাকবেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সভার পর প্রধানমন্ত্রীর
সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেবেন কর্মকর্তারা।
জানা
গেছে, ২০০৯ সাল থেকে
এ পর্যন্ত মোট ১৩টি সম্মেলনের
আয়োজন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মাঝে করোনা মহামারির
কারণে ২০২০ এবং ২১
সালে সম্মেলন হয়নি। ১৩টি সম্মেলনের মধ্যে
১২টি সম্মেলনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৮২ শতাংশের
বেশি। গত বছরের সম্মেলনের
সিদ্ধান্তগুলো এখনো বাস্তবায়ন শেষ
হয়নি। ফলে এ সম্মেলনের
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার জানাতে পারেনি
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তবে সার্বিকভাবে সম্মেলন
থেকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকার বেশ সন্তুষ্ট বলে
মনে করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের
দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
কোন
সম্মেলনে কত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন
:
২০০৯
সালের ২৮ থেকে ৩০
জুলাই পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী ডিসি
সম্মেলনে ৩৭৭টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে জানা গেছে। এসব সিদ্ধান্তের ৫৬
শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগ। ২০১০ সালের ২৫
থেকে ২৭ জুলাই সম্মেলন
অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে
২৮৯টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তগুলোর প্রায়
৫২ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে সরকার। ২০১১ সালের সম্মেলনে
৫২৩টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এসব সিদ্ধান্তের ৮১
দশমিক ৬৫ শতাংশ বাস্তবায়নে
সক্ষম হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগ।
২০১২
সালের সম্মেলন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া
হয়েছিল ৫৩৩টি। বাস্তবায়ন হয়েছে ৯১ দশমিক ১৮
শতাংশ। ২০১৩ সালের সম্মেলনে
৪৭৫টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাস্তবায়িত হয়েছে
৯২ শতাংশ। ২০১৪ সালের সম্মেলন
থেকে ৪৬৪টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বাস্তবায়ন হয়েছে
৯২ শতাংশ। ২০১৫ সালে ৪৭৯টি
সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন হার ৯৩ শতাংশের
বেশি। ২০১৬ সালে সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয় ৪৭৭টি, যেখানের
বাস্তবায়নের হার ৯৩ দশমিক
৯২ শতাংশ। এর পরের বছরের
সম্মেলনে ৪৩০টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। বাস্তবায়ন
হয় ৯৩ দশমিক ৯৫
শতাংশ। ২০১৮ সালের সম্মেলন
থেকে ৩৬৬টি সিদ্ধান্ত নেন সংশ্লিষ্টরা। বাস্তবায়ন
হয়েছে ৯২ দশমিক ৯০
শতাংশ। ২০১৯ সালে বিভিন্ন
মন্ত্রণালয়-বিভাগ সংশ্লিষ্ট ৩৩০টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বাস্তবায়ন হয়েছে
৭৫ শতাংশ। এ সিদ্ধান্তগুলো এখনো
বাস্তবায়নাধীন। এগুলোর বাস্তবায়ন কত শতাংশ হয়েছে,
তা এখনো জানাতে পারেনি
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এবারের
কার্য-অধিবেশন:
সম্মেলন
উদ্বোধন এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে
মুক্ত আলোচনা ও ফটোশেসনের পর
করবী হলে প্রথম অধিবেশনে
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও আওতাধীন সংস্থাগুলোর
কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি কার্য-অধিবেশন
রয়েছে ডিসিদের। বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হবে। প্রথম
দিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়,
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া
মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও
শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কার্য-অধিবেশন রয়েছে। রাতে ‘উন্নয়নে মাঠ প্রশাসন’ শীর্ষক
আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। পরে নৈশভোজের
মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের
কর্মসূচি শেষ হবে।
দ্বিতীয়,
তৃতীয় ও চতুর্থ দিন
অন্যান্য মন্ত্রণালয়-বিভাগের সঙ্গে ডিসিদের কার্য-অধিবেশন রয়েছে। এসব কার্য-অধিবেশনে
মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সচিবরা
উপস্থিত থেকে ডিসিদের প্রস্তাব
শুনবেন এবং সে অনুযায়ী
আলোচনা করবেন।
ডিসি সম্মেলনের মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরকার প্রধানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের খোলামেলা আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়। ফলে মাঠের সার্বিক চিত্র জানতে পারে সরকার। ডিসিরা তাদের নিজ নিজ জেলার সমস্যা-সম্ভাবনা সরকারের কাছে তুলে ধরার সুযোগ পান। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগ সেসব সমস্যা চিহ্নিত করে, তা সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারেন। এজন্য ডিসি সম্মেলনকে মাঠ প্রশাসন ও সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সেতুবন্ধ তৈরির সুযোগ হিসেবে দেখা হয়।
জেলা প্রশাসক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাপদাহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।
প্রথম দুই দফা ভোটের যে হার, তাতে বিজেপির মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিজেপির নেতারা ভোটে যে ভূমিধস বিজয় আশা করছিলেন সেটি হবে না। ভারতের কোন কোন গণমাধ্যমগুলো ভোটের ফলাফলে নাটকীয় ঘটনা ঘটারও ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০০৪ সালের নির্বাচনে যেভাবে কংগ্রেস অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছিল সেরকম কোন ঘটনা ঘটতেও পারে বলে মনে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অবশ্য এখনও আরও পাঁচ দফা ভোট বাকি আছে এবং বিজেপি আশা করছে যে, পরবর্তী ধাপগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং বিজেপি তাদের জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রাখবে। নরেন্দ্র মোদি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে দেওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানাচ্ছেন।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ভোটের হাওয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোটের যে নিরঙ্কুশ বিজয়ের ধারণা করা হয়েছিল, সেটি বাস্তবতা নাও পেতে পারে। আর এ কারণেই মোদী যদি শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন, তাহলে সেটি হবে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বড় ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং এটি হবে ভারতের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক।
এখন যখন ভারতের নির্বাচনে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বা অনিশ্চয়তার ফলাফলের শঙ্কা জেগেছে তখন প্রশ্ন উঠছে যে, বিজেপি যদি এই নির্বাচনে পরাজিত হয় তাহলে বাংলাদেশে কী হবে? গত দুটি নির্বাচনে ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন দিয়েছে। ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি সরকার।
বিশেষ করে ২০২৪ এর নির্বাচনে ভারতীয় সরকারের পরিপূর্ণ সমর্থন ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করত এবং এই নির্বাচনকে অস্বীকৃতি জানাত বলেও অনেকে মনে করেন। মার্কিন মনোভাব পাল্টানোর ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর নির্বাচনের পর বিএনপি থেকে শুরু করে জাতীয় পার্টি প্রত্যেকেই বলছে যে, ভারত বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখেছে। যদিও এরকম অভিযোগকে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করে এবং আওয়ামী লীগ মনে করে যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি আওয়ামী লীগ বা বিজেপি কেউই অস্বীকার করে না।
এখন প্রশ্ন হল, যদি বিজেপি পরাজিত হয়, ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশের সমীকরণ কী হবে? কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বর্তমান সরকারের জন্য সমীকরণের কোন পরিবর্তন হবে না। কারণ ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সরকারের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা দিয়েছে।
অনেকে মনে করেন যে, এখন ভারতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মনোভাবের কারণে সীমান্তে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য রাখা হচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশের মধ্যে একটা ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি নরেন্দ্র মোদি তাহলে এই অবস্থানের পরিবর্তন হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও বিকশিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভারত লোকসভা নির্বাচন মল্লিকার্জুন খাড়গে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাত ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট হয় ১৯ এপ্রিল এবং সেখানে ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল ৮৯টি নির্বাচনী এলাকায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ দফায় ভোট হবে ৭ মে। সেখানে ৯৪টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে এবং সপ্তম দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে পয়লা জুন। আর ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল জানা যাবে।