চার
দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি)
সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ। সম্মেলনের আলোচ্য সূচিতে
থাকছে ৩৫৬টি প্রস্তাব। আলোচনায় গুরুত্ব পাবে ভূমি ব্যবস্থাপনা
ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম জোরদারকরণ ইত্যাদি।
রোববার
(৩ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ডিসি সম্মেলন-২০২৪-এর উদ্বোধন
করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেষ
হবে বুধবার (৬ মার্চ)।
গতকাল
শনিবার (২ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক সম্মেলন
উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন
এ কথা জানান।
মন্ত্রিপরিষদ
সচিব বলেন, এবারের ডিসি সম্মেলন ওসমানী
স্মৃতি মিলনায়তনে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত
হবে। গত সম্মেলন তিন
দিনব্যাপী ছিল। স্পিকার ও
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে জেলা প্রশাসকরা সৌজন্য
সাক্ষাৎ, সদয় নির্দেশনা গ্রহণ
ও মতবিনিময় করবেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও সামরিক-বেসামরিক
সমন্বয় বিষয়ক অধিবেশন সংযুক্ত করা হয়েছে।
এবারের
সম্মেলনে সর্বমোট অধিবেশন ৩০টি। কার্য-অধিবেশন ২৫টি (একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান,
একটি স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং মতবিনিময় এবং
একটি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং সদয় নির্দেশনা
গ্রহণ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা
একটি। এছাড়া অংশগ্রহণকারী কার্যালয়: একটি (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়)। একই সঙ্গে
৫৬টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ, কার্যালয় ও সংস্থা সম্পর্কে
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রায় ৩৫৬টি প্রস্তাবনা জমা পড়েছে।
প্রাপ্ত
প্রস্তাবগুলোর জনসেবা বৃদ্ধি, জনদুর্ভোগ হ্রাস করা, রাস্তাঘাট ও
ব্রিজ নির্মাণ, পর্যটনের বিকাশ, আইন-কানুন বা
বিধিমালা সংশোধন, জনস্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে। এর
মধ্যে বেশি সংখ্যক প্রস্তাব
পড়েছে সড়ক পরিবহন ও
মহাসড়ক বিভাগ থেকে ২২টি। গত
বছরও একইভাবে ডিসিরা প্রায় আড়াইশ প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন।
তিনি
বলেন, প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলো হলো: ভূমি ব্যবস্থাপনা,
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম জোরদারকরণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম,
স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম-সৃজন ও
দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়ন, তথ্য ও যোগাযোগ
প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্ন্যান্স,
শিক্ষার মান উন্নয়ন ও
সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ,
পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ,
ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের
বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়।
মন্ত্রিপরিষদ
সচিব বলেন, এবারের ডিসি সম্মেলনে প্রথমবারের
মতো সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের কাছে তাদের
অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন ও
প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। এজন্য সম্মেলনের প্রথম দিন (রোববার) সন্ধ্যা
সাড়ে ৭টায় ‘উন্নয়নে মাঠ প্রশাসন’ শীর্ষক
এক আলোচনা সভার আয়োজন করা
হয়েছে।
আলোচনা
সভায় সভাপতিত্ব করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিবরা।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি মন্ত্রণালয়/ বিভাগ/ কার্যালয়ের যথাযথ তৎপরতা, আন্তরিকতা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা থাকায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২৩ এ গৃহীত সিদ্ধান্তের শতকরা ৬২ ভাগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে৷
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জেলা প্রশাসক সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।