ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজধানীর নিয়মিত অগ্নিদুর্ঘটনায় কি শুধু দায় চাপানোর চেষ্টা?

প্রকাশ: ০৯:৩৪ এএম, ০৩ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো বুয়েটের দুই শিক্ষার্থীর স্মরণে মানববন্ধনে দাঁড়ান বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁরা অগ্নিদুর্ঘটনায় দায়ীদের শাস্তি দাবি করেন।

রাজধানীতে বড় কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেই দেখা যায়, কোনো না কোনো সরকারি সংস্থার গাফিলতি ও তদারকির অভাব ছিল। ২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলীর আগুন থেকে শুরু করে সর্বশেষ বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড চিত্রটি একই। কিন্তু কোনো ঘটনায় সরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। সম্প্রতি বেইলি রোডের আটতলা ভবন গ্রিন কোজি কটেজে আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যুর পর সামনে এসেছে একই গাফিলতির চিত্র।

এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে যে মামলা করেছে তার এজাহারে বলা হয়েছে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) দোকান পরিদর্শকদের ‘ম্যানেজ’ করে ভবনে অবৈধভাবে রেস্তোরাঁ পরিচালনা করা হচ্ছিল।

পুলিশের মামলাটিতে নাম উল্লেখ করে ভবনের মালিক প্রতিষ্ঠান, রেস্তোরার মালিক ও ভবনের তত্ত্বাবধায়ককে আসামি করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি কোনো সংস্থা বা সংস্থার কোনো কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়নি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিদর্শনে ভবনে অগ্নিঝুঁকির চিত্র নিয়মিতই বেরিয়ে আসে। যেমন ২০২৩ সালে তারা সারা দেশে ৫ হাজার ৩৭৪টি ভবন পরিদর্শন করে। এর মধ্যে ২ হাজার ১১৮টি ভবনে ঝুঁকি খুঁজে পায়। ৪২৪টি ভবনকে তারা অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

ঢাকায় বিগত পাঁচ বছরে হওয়া অন্তত ৯টি বড় অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দুর্ঘটনার পর তদারকির দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা নিজেদের দায় অন্য সংস্থার ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

কোন কোন ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার তদন্তে সরকারি সংস্থার গাফিলতির চিত্র উঠে আসে। কিন্তু তাদের ‘দায়মুক্তি’ দেওয়া হয়। এবার এভাবে দায়মুক্তি দেওয়ার সমালোচনা করলেন সরকারি দলের সংসদ সদস্য এবং সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

শনিবার (২ মার্চ) জাতীয় সংসদে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুনের ঘটনা তদন্ত করে ৬২ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সবার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি।

তিনি গতকাল সংসদে আরও বলেন, ‘আমরা সে সময় ১ হাজার ৩০০ ভবনকে চিহ্নিত করেছিলাম, গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে, যে ভবনের প্ল্যান (নকশা) ঠিক নেই, যে ভবনের অধিকাংশ ফ্লোর (তলা) অননুমোদিতভাবে করা হয়েছে, সে ভবনগুলো কিন্তু ভাঙা সম্ভব হয়নি। এটাও কিন্তু একপ্রকার দায়মুক্তি দেওয়া।’

গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেনও সরকারি সংস্থার ভূমিকা নিয়ে বলেন, রাজউকের আরও বেশি সজাগ হওয়া উচিত।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের আগুনে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৪ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। দুজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার তদন্তে সরকারি সংস্থার গাফিলতির চিত্র উঠে আসে। কিন্তু তাদের ‘দায়মুক্তি’ দেওয়া হয়।

নিয়মিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটু পেছনে ফেরা যাক তবে কি

২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় রাসায়নিক গুদামে বিস্ফোরণে ৭১ জনের মৃত্যু হয়।

এর এক মাস পরই বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুনে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

২০২১ সালে ঢাকার মগবাজারে একটি ভবনে এবং ২০২৩ সালে সিদ্দিক বাজার ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার দুটি ভবনে বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৪৪ জন।

২০২৩ সালে ঢাকার বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স, নিউমার্কেট ও কৃষি মার্কেটে আগুন লাগে। এতে হতাহতের ঘটনা কম। তবে ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি। ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডের আরও ঘটনা রয়েছে, সেসব ঘটনায় মৃত্যুও হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিদর্শনে ভবনে অগ্নিঝুঁকির চিত্র নিয়মিতই বেরিয়ে আসে। যেমন ২০২৩ সালে তারা সারা দেশে ৫ হাজার ৩৭৪টি ভবন পরিদর্শন করে। এর মধ্যে ২ হাজার ১১৮টি ভবনে ঝুঁকি খুঁজে পায়। ৪২৪টি ভবনকে তারা অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

২০২০ সাল থেকে চার বছরে ফায়ার সার্ভিস ২৪ হাজার ১৯৩টি ভবন পরিদর্শন করেছে। ভবনগুলোর মধ্যে ৭ হাজার ৮০১টিতে অগ্নিঝুঁকি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৮০৩টি অতি অগ্নিঝুঁকিতে ছিল। সব কটি ভবন কর্তৃপক্ষকেই অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, ২০২০ সাল থেকে ঢাকায় যেসব ভবনে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, সব কটিই তাদের ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় ছিল। ফলে দেখা যাচ্ছে, যথাসময়ে অগ্নিঝুঁকি নিবারণে ব্যবস্থা নেওয়া হলে ক্ষয়ক্ষতি কম হওয়ার সুযোগ ছিল।

বেইলি রোডের ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যুর পর ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ভবনটি যে অগ্নিঝুঁকিতে ছিল, তা তিন দফা চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন তাঁরা। কোনো ভবন কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

ফায়ার সার্ভিস কেন শুধু চিঠি দেয়, কেন ভবন সিলগালা করা হয় না, সেটা জানতে চাওয়া হয়েছিল সংস্থাটির পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইনে (২০০৩) তাঁদের মামলা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে বিধিমালা স্থগিত আছে।

এ কারণে চিঠি দেওয়া ছাড়া তাঁদের করার কিছু থাকে না। তিনি বলেন, ব্যবস্থা নিতে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়।

২০২৩ সালের এপ্রিলে মাত্র ১১ দিনের ব্যবধানে ঢাকার ফুলবাড়িয়ার বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের চারটি বিপণিবিতান ও ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ) বিপণিবিতানে ভয়াবহ আগুন লাগে। এই পাঁচটি বিপণিবিতানই অতি ঝুঁকিপূর্ণ বলে একাধিকবার সতর্ক করেছিল ফায়ার সার্ভিস। বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সকে ১০ বার চিঠি দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকেও চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। তবে কেউ ব্যবস্থা নেয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা বলেন, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স ও ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটের অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা বলে কিছু ছিল না।

২০১৯ সালের পর ফায়ার সার্ভিস ঢাকার বিপণিবিতানগুলো পরিদর্শন করে ১ হাজার ৪৮টি বিপণিবিতানকে ঝুঁকিপূর্ণ এবং অতি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। বিপণিবিতান কর্তৃপক্ষ ও সিটি করপোরেশনকে একাধিকবার চিঠি দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এখানে দোষারোপ করে আসলে লাভ নেই। অনেক বিপণিবিতান আছে ঝুঁকিপূর্ণ, যেগুলো ভেঙে ফেলা প্রয়োজন।

কিন্তু ভবন না ভাঙার বিষয়ে উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা নিয়ে আসে বিপণিবিতানের দোকান মালিক সমিতি। ফলে সেখানে কিছু করার থাকে না। তিনি বলেন, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স ভাঙতে গিয়েও সিটি করপোরেশন একই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল।

বেইলি রোডের আগুনে শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) গতকাল একটি মানববন্ধন করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সেখানে শিক্ষার্থীদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘আজকে নাহিয়ান কালকে কে?’ ‘এই দায়িত্বহীনতার দায়ভার কার?’

বেইলি রোডে আগুনেও সিটি করপোরেশনের দায় রয়েছে বলে মনে করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, অনুমোদন ছাড়া ভবনজুড়ে রেস্তোরাঁ ও দোকান ভাড়া দেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই সিটি করপোরেশন ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে।

জানতে চাইলে দক্ষিণ সিটির সিইও মিজানুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার সময় নাগরিকদের সেবাটা যেন সহজ হয় সেটা চিন্তা করা হয়। চুক্তিপত্র ও সাধারণ কয়েকটি বিষয় দেখে ব্যবসার অনুমতি দেওয়া হয়।

বেইলি রোডে আগুনে হতাহতের স্বজনেরা বলছেন, রাজউক কিছু দেখবে না, সিটি করপোরেশন লাইসেন্স দিয়ে দেবে, ফায়ার সার্ভিস শুধু চিঠি দেবে—তাহলে নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে কী করে। বেইলি রোডের আগুনে শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) গতকাল একটি মানববন্ধন করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সেখানে শিক্ষার্থীদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘আজকে নাহিয়ান কালকে কে?’ ‘এই দায়িত্বহীনতার দায়ভার কার?’

ঢাকার মগবাজার, সিদ্দিক বাজার ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার তিনটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তকারীদের ভাষ্যমতে, সব কটি বিস্ফোরণ ঘটে পাইপলাইনের ছিদ্র দিয়ে বের হওয়া গ্যাস জমে। এ ক্ষেত্রে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে কোন ঘটনায় কে দায়ী, তা নিরূপণ করা যাচ্ছে না।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, তিতাসের দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না, মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

মগবাজার ও সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত করছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা সিটিটিসির অতিরিক্ত উপকমিশনার রহমতউল্লাহ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, দুটি মামলাতেই শিগগিরই আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

সিদ্দিক বাজারে কুইন স্যানিটারি মার্কেট হিসেবে পরিচিত সাততলা ভবনের বেজমেন্টে গত বছরের ৭ মার্চ বিস্ফোরণে ২৬ জনের মৃত্যুর পর জানা যায়, রাজউকের অনুমোদন না নিয়েই পাঁচতলা ভবন সাততলা করা হয়।

এর আগে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় রাসায়নিক গুদামে বিস্ফোরণের ঘটনায় সিটি করপোরেশন, রাজউক, ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক পরিদপ্তরসহ সরকারি সংস্থাগুলোর তদারকির ঘাটতি উঠে এসেছিল।

চুড়িহাট্টার ঘটনায় বাবা হারানো এক ছেলে বলেন, ঘটনাটির প্রায় পাঁচ বছর হয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত শুধু মামলার বাদী হিসেবে তাঁর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে; আর কারও নয়। তিনি বলেন, মামলা কত দিন চলবে, ন্যায়বিচার পাবেন কি না, তা নিয়ে তিনি সংশয়ে রয়েছেন।

২০১০ সালে নিমতলীতে রাসায়নিক গুদাম থেকে ছড়ানো আগুনে ১২৬ জনের মৃত্যুর পরও বিভিন্ন সংস্থার গাফিলতির চিত্র উঠে আসে। তখন থেকেই বলা হচ্ছে, পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহাম্মেদ খান বলেন, অগ্নিঝুঁকিতে থাকা ভবনের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হলে ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন, রাজউকসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে; তা না হলে দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

চুড়িহাট্টায় আগুনের পর পুরান ঢাকাকে রাসায়নিকমুক্ত করতে সব সংস্থার সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করে অভিযান শুরু হয়েছিল। কিছুদিন পরই তা থেমে যায়।


অগ্নিদুর্ঘটনা   অগ্নিকাণ্ড   বেইলি রোড   আগুন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজধানীতে বজ্রসহ শিলা-বৃষ্টি

প্রকাশ: ১০:৪১ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীতে শুরু হয়েছে বজ্রসহ বৃষ্টি। সঙ্গে শিলা। আজ রোববার (৫ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হয় এ শিলা-বৃষ্টি। এর আগে রাত ৯টার দিকে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া।

শনিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পরিস্থিতির পূর্বাভাস দেয়। পূর্বাভাসে বলা হয়, সোমবার থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছয় দিন ধরে হতে পারে ঝড়বৃষ্টি। কয়েক দিনের বৃষ্টির পর কমে যেতে পারে তাপপ্রবাহ।

আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, রোববার বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশের ওপর দিয়ে বজ্রপাত ও বিচ্ছিন্নভাবে শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে। সেজন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া কাল সোমবার থেকে সারা দেশে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। এতে করে যেসব জায়গায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল সেগুলো ধীরে ধীরে প্রশমিত হবে। 

রাজধানী   শিলা-বৃষ্টি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বন্ধ বিমানবন্দর চালুর পরিকল্পনা আপাতত নেই: বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী

প্রকাশ: ০৯:৪৩ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান জানিয়েছেন, বন্ধ থাকা বিমানবন্দরগুলো চালুর পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।

রোববার (৫ মে) বিকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য আলী আজমের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।
 
ফারুক খান বলেন, বর্তমানে দেশে তিনটি আন্তর্জাতিক, সাতটি অভ্যন্তরীণ ও পাঁচটি স্টল বিমানবন্দর রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর চালু রয়েছে। এসব বিমানবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, বন্ধ থাকা বিমানবন্দরগুলো চালু করার পরিকল্পনা সরকার তথা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের আপাতত নেই। তবে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন, যাত্রী চাহিদা এবং এয়ারলাইনসগুলোর আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে বন্ধ বিমানবন্দরগুলো চালুর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

বিমানবন্দর   বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী   জাতীয় সংসদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং, বিদ্যুৎ গেল কোথায়: সংসদে চুন্নু

প্রকাশ: ০৯:৩৪ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

লোডশেডিং নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, গ্রামে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলেছে ২৮ হাজার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্যাপাসিটি রয়েছে। তাহলে এই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে তিনি এ প্রশ্ন করেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এই মুহূর্তে সারাদেশের মানুষ অনেক সমস্যায় আছে। তার মধ্যে দুটি সমস্যায় মানুষ খুব আক্রান্ত। একটি হলো বিদ্যুৎ। এই মৌসুমে সারাদেশে গ্রামে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আর সরকার বলেছে ২৮ হাজার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্যাপাসিটির কথা, তাহলে এই বিদ্যুৎ গেল কোথায়? বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে আমার এলাকার মানুষ দাওয়াত দিয়েছে, লোডশেডিং হয় কিনা দেখার জন্য।

তিনি আরও বলেন, যে সব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ভাড়ায়, তাদের সক্ষমতার ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরেও বসে আছে এবং ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থেকে ভাড়া বাবদ ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আগের পার্লামেন্টে আমি বলেছিলাম, আমার এলাকায় প্রায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজকে চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই সশরীরে উনি আমার এলাকায় একটু যাবেন, যে কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

চুন্নু বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।

লোডশেডিং   মুজিবুল হক চুন্নু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরে রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়ে সংখ্যালঘুর জমি দখল, ঘর নির্মাণ


Thumbnail

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়ে বিরোধপূর্ণ জমিতে একটি টিনসেট ঘর স্থাপন করেছে তাজল ইসলাম নামে এক ভূমি পরিমাপক। 

রোববার (৫ মে) ভোর রাতে উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজাঙ্গালিয়া গ্রামের করুনানগর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিলেও যথা সময়ে পুলিশ আসেনি বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। 

বিকেলে ভূক্তভোগী টিংকু রানী দাস, বিপন রানী দাস, শোভন দাস ও অনিক চন্দ্র দাসসহ কয়েকজন এ অভিযোগ করেন। তারা জানায়, লোক মারফত তারা জানতে পারেন তাজল ইসলাম বিরোধীয় জমিতে ঘর তুলবেন। এতে শনিবার (৪ মে) দিবাগত সারারাত তারা পাহারারত ছিলেন। কেউই ঘুমাননি। রোববার ফজরের আযান দিলে তারা ঘুমাতে যায়। ঠিক সেই মুহুর্তে তাজল ইসলাম প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষকে নিয়ে এসে বিরোধীয় জমিতে থাকা টিনের বেড়া ভেঙে ফেলে। ঘটনাটি আঁচ করতে পেরে সবাই এসে বাধা দিলে তাজল ইসলামসহ তার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে তাদের (ভূক্তভোগী) ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে ভূক্তভোগীরা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দেয়। সেখান থেকে বিষয়টি কমলনগর থানাকে জানানো হয়। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছতে ২ ঘণ্টা সময় লাগিয়েছে। এর মধ্যে অন্যত্র তৈরিকৃত একটি নতুন ঘর এনে তাজল ইসলামরা বিরোধীয় জমিতে স্থাপন করে। এসময় টিংকু, বিপন, শোভন ও অনিকসহ কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ আনা হয়। 

ভূক্তভোগীরা আরও জানায়, পুলিশ এসে ঘর দেখে তারা থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলে। যদি পুলিশ সময়মতো আসতো তাহলে তাজল ইসলামরা ঘর স্থাপন করার সুযোগ পেতো না। আদালতে মামলা চলমান থাকলেও হামলা চালিয়ে ঘর স্থাপনের ঘটনায় তাজল ইসলামের বিচার চেয়েছেন ভূক্তভোগীরা।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিলন মন্ডল বলেন, ডালিম কুমার দাস নামে এক ব্যক্তি তাজল ইসলামের কাছে জমি বিক্রি করে। ডালিম ও তাজলসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক রাম কৃষ্ণ দাসসহ ভূক্তভোগীরা অগ্রক্রয় অধিকার আইনে রামগতি সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। মামলাটি এখনো চলমান। এরমধ্যে তাজল ইসলাম হামলা চালিয়ে ঘর স্থাপন করে আইন অমান্য করেছে। আমরা তার বিচার দাবি করছি। 

তবে অভিযুক্ত তাজল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তিনি রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চরসীতা গ্রামের বাসিন্দা। 

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশও পাঠানো হয়েছে। হামলার ঘটনায় কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। কেউ আটকও নেই। জায়গা জমি নিয়ে সমস্যা রয়েছে। ক্রেতা তার জমি দখল করতে এসেছে। এটি উভয়পক্ষ বসে মীমাংসা করতে পারতো।

লক্ষ্মীপুর   সংখ্যালঘু   জমি দখল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

তাপপ্রবাহে কী করতে হবে, জানিয়ে জাতীয় নির্দেশিকা প্রকাশ

প্রকাশ: ০৮:২১ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

অতিরিক্ত গরমে মাথা ঘোরানো, দুশ্চিন্তা, স্ট্রোক, মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়া, অ্যাজমা, মাংসপেশিতে খিঁচুনি, চামড়ায় ফুসকুড়ি, কিডনি অকার্যকর হওয়ার মতো অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের গরমে বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, শ্রমজীবী মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তাই তাপপ্রবাহ থেকে সুরক্ষার জন্য কী কী করতে হবে, তা জানিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় গাইডলাইন বা নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে সরকার।

রোববার (৫ মে) দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক জাতীয় গাইডলাইনের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান করা হয়।

অনুষ্ঠানে জাতীয় গাইডলাইনের মোড়ক উন্মোচন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা। যারা একটু শারীরিকভাবে কম সামর্থ্যবান, যাদের ডায়াবেটিস, হার্ট-ডিজিস বা বিভিন্ন অসুখ রয়েছে, তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। এই বইয়ে নির্দেশিত গাইডলাইন লিফলেট আকারে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দিতে হবে। ইতোমধ্যে সব সরকারি হাসপাতালে এই গাইডলাইন প্রেরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নগর পরিকল্পনাবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দেখি গ্রামের চেয়ে ঢাকা শহরে তাপমাত্রা অনেক বেশি। এর কারণ আমরা ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে শহরের গাছপালা সব কেটে সাবাড় করেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর হয়তো আমরা খুব প্রভাব ফেলতে পারি না। কিন্তু নগর পরিকল্পনার সময় যদি এসব বিষয় আমরা মাথায় রাখি, তাহলে অনেকাংশেই পরিত্রাণ সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা, ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ এমা ব্রিগহাম প্রমুখ।

তাপপ্রবাহ   জাতীয় নির্দেশিকা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন