ইনসাইড বাংলাদেশ

ঢাকার নীরব এলাকাতেই শব্দ দুই থেকে আড়াই গুণ

প্রকাশ: ০১:০১ পিএম, ০৫ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীর সচিবালয়ের চারপাশের এলাকা সরকার ঘোষিত ‘নীরব এলাকা’। অথচ এখানেও দিনের বেলায় নির্ধারিত মানমাত্রার চেয়ে দুই গুণ বেশি শব্দ হচ্ছে। রাজধানীর অন্যান্য কিছু নীরব এলাকাতেও দিনের বেলা দুই গুণ ও রাতের বেলায় আড়াই গুণেরও বেশি শব্দ হচ্ছে। সব মিলিয়ে সরকার ঘোষিত রাজধানীর নীরব এলাকাতেই শব্দদূষণ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।

সাম্প্রতিক পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলনের (পরিজা) এক জরিপে রাজধানীর শব্দদূষণের ওপরের চিত্র উঠে এসেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে ঢাকা মহানগরীর ৪৫টি স্থানে শব্দের মাত্রা পরিমাপ করে পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি। গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়।

পরিজার জরিপে দেখা গেছে, নীরব এলাকায় দিনে শব্দের মাত্রা মানমাত্রার চেয়ে দুই গুণের বেশি এবং রাতে আড়াই গুণের বেশি থাকছে।

আবাসিক ও মিশ্র এলাকায় দিনে দেড় গুণ ও রাতে দুই গুণের বেশি শব্দ হয়। বাণিজ্যিক এলাকায় দিন ও রাতে নির্ধারিত মানমাত্রার চেয়ে দেড় গুণ বেশি শব্দ হচ্ছে। শব্দদূষণের প্রধান উৎস হিসেবে জরিপে উঠে এসেছে যানবাহন চলাচল ও হর্ন, নির্মাণকাজ, কলকারখানার যন্ত্রপাতি চলা, গান বাজানো, জেনারেটর চালু রাখা ইত্যাদি।

২০০৬ সালের শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালায় বিভিন্ন এলাকাকে নীরব, আবাসিক, মিশ্র ও বাণিজ্যিক ও শিল্প শ্রেণিতে ভাগ করে এসব এলাকায় শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

বিধিমালায় হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত বা একই জাতীয় অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান এবং এর চারপাশের ১০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকাকে নীরব এলাকা বলা হয়েছে।

বিধিমালা অনুযায়ী, নীরব এলাকায় শব্দের মানমাত্রা দিনে (ভোর ৬টা থেকে রাত ৯টা) ৫০ ডেসিবল ও রাতে (রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা) ৪০ ডেসিবল। আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ ও রাতে ৪৫ ডেসিবল, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ ও রাতে ৫০ ডেসিবল এবং বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ ও রাতে ৬০ ডেসিবল গ্রহণযোগ্য মাত্রা। শিল্প এলাকায় শব্দের মানমাত্রা দিনে ৭৫ ডেসিবল ও রাতে ৭০ ডেসিবল।

মানিক মিয়া এভিনিউ, আসাদ গেট, বাংলামোটর, শাহবাগ, প্রেস ক্লাব, পল্টন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ধানমণ্ডি, আগারগাঁও, সচিবালয় এলাকাসহ ঢাকা মহানগরীর ৪৪টি স্থানে জরিপ পরিচালনা করে পরিজা।

এর ফলাফলে বলা হয়েছে, নীরব হিসেবে নির্ধারিত এলাকাগুলোর মধ্যে দিনে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ হয় সচিবালয় এলাকায়। সেখানে দিনের বেলা ১০১.৭ ডেসিবল শব্দ রেকর্ড করা হয়, যা নির্ধারিত মানমাত্রার দ্বিগুণ। অন্যদিকে রাতে সবচেয়ে বেশি ১০১.৫ ডেসিবল শব্দ পাওয়া গেছে ধানমণ্ডি ল্যাবএইড হাসপাতাল এলাকায়, যা নির্ধারিত মানমাত্রার চেয়ে আড়াই গুণ বেশি।

নীরব এলাকায় ভোর ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দিনের শব্দের মাত্রা ছিল ৮৪.৫ থেকে ১০১.৭ ডেসিবল। রাতে তা ৯৬.৪ থেকে ১০১.৫ ডেসিবলের মধ্যে। আবাসিক এলাকায় দিনে ৮২ থেকে ৯১ ডেসিবল ও রাতে ৮৩ থেকে ৯১ ডেসিবল পাওয়া গেছে। বাণিজ্যিক এলাকায় শব্দের মাত্রা ছিল দিনে ৯২ থেকে ৯৭ ডেসিবল ও রাতে ৯১ থেকে ৯৯ ডেসিবল।

সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলনের (পরিজা) সভাপতি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান শব্দদূষণ বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট কর্মকর্তা নিয়োগ ও আইনের বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) মতে, ৬০ ডেসিবল শব্দে মানুষের শ্রবণশক্তি সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ১০০ ডেসিবল শব্দে শ্রবণশক্তি চিরতরে হারাতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান অবস্থা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা মহানগরীর ৫০ শতাংশ মানুষ ৩০ ডেসিবল মাত্রার শব্দ শোনার ক্ষমতা হারাবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, শব্দদূষণের ফলে মানুষ কেবল শ্রবণশক্তি হারায় না, নানা ধরনের জটিল রোগেও আক্রান্ত হয়।


সচিবালয়  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

জুনে আরও বড় হচ্ছে মন্ত্রিসভা?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। আগামী বাজেটের আগে কিংবা পরে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হতে পারে এমন গুঞ্জন হচ্ছে আওয়ামী লীগ মহলে। বিভিন্ন সূত্র গুলো বলছেন, মন্ত্রিসভায় আরও নতুন মুখ আসতে পারে। দু একজন মন্ত্রীর দপ্তর পরিবর্তনের বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে বলে দায়িত্বশীল একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের জন্য কতগুলো ইস্যু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে এসেছে। এরকম বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করতে পারেন বলে আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়। পয়লা মার্চ ৭ জন নতুন প্রতিমন্ত্রীকে যুক্ত করার মধ্য দিয়ে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করা হয়। এখন মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ৪৪ জন। সামনের দিনগুলোতে মন্ত্রিসভা আরও বড় হতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র ভুল ধারণা করছে। বিশেষ করে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে সরকার নতুন করে গুরুত্ব দিতে চায় বলেই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের বিষয়টি সামনে এসেছে বলে জানা গেছে।

বর্তমান মন্ত্রিসভায় এখনও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন একজন প্রতিমন্ত্রী এবং তরুণ এই প্রতিমন্ত্রীর হাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ন্যস্ত করার ফলে সংকটের সমাধান হয়নি। বরং জিনিসপত্রের দাম নিয়ে মানুষের দুর্বিষহ অবস্থা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এই অবস্থায় সরকার এখানে একজন পূর্ণমন্ত্রী দিতে পারেন এমন আলোচনা ছিল। এর আগেও মন্ত্রিসভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব অবসরে গেছেন এবং নতুন সচিবকে সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীকে আনা হবে। 

অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তনের বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে। সেখানে একজন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়া হচ্ছে। একজন প্রতিমন্ত্রী আছেন বটে। তবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে একজন অর্থনীতিবিদ বা অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে সরকার ভাবছে বলে জানা গেছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমনীতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের শ্রম নীতির বিষয়টিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং এটি নিয়ে সামনে বড় ধরনের সমঝোতা এবং সংলাপে বাংলাদেশকে যেতে হবে বলে অনেকেই মনে করেন। এই বাস্তবতায় শ্রম মন্ত্রণালয়ের একজন পূর্ণমন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টিও সরকারি মহলে আলাপ আলোচনা হচ্ছে বলে জানা গেছে। 

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মোহাম্মদ আলী আরাফাত পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। গত কয়েক মাসে তার পারফরম্যান্স অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই সরকারের নীতি নির্ধারক মহল মনে করছে। এ ছাড়াও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে থাকা জুনাইদ আহমেদ পলক এবং নসরুল হামিদের পূর্ণ মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে কেউ কেউ দাবি করেছেন। 

বিভিন্ন মহল বলছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীকে দেওয়া হতে পারে। আবার অনেকে মনে করছেন, একজন ঝানু রাজনীতিবিদকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রিসভার রদবদল বা মন্ত্রিসভায় কাউকে অন্তভুর্ক্ত করা সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারাধীন বিষয়। প্রধানমন্ত্রী যখন যাকে যোগ্য বিবেচনা করবেন সেই বিবেচনা অনুযায়ী যে কাউকে মন্ত্রিসভায় অন্তভুর্ক্ত করতে পারেন। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন এখনও মন্ত্রিসভা অপূর্ণাঙ্গ। তাই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ যে কোন সময় হতে পারে বলে অনেকের ধারণা।

মন্ত্রিসভা   শেখ হাসিনা  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

সেই অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসির নির্দেশ

প্রকাশ: ০৮:০১ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে গিয়ে ছোট ভাইয়ের দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার সময় সঙ্গে যাওয়া পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. মনিরুজ্জামান বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত করার জন্যও বলেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

গত সোমবার (১৩ মে) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ইসির উপসচিব মিজানুর রহমান। 

চিঠিতে বলা হয়, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামান পোশাক পরে ঝিনাইদহ-১ শূন্য আসনের নির্বাচন উপলক্ষে একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয় থেকে সম্ভাব্য একজন প্রার্থীর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকালে সঙ্গে ছিলেন, যা পত্রপত্রিকা ও গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধি ১৯৭৯ লঙ্ঘন করা হয়েছে উল্লেখ করে ওই চিঠিতে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইসি নির্দেশ দিয়েছে। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ গৃহীত ব্যবস্থা ইসিকে অবহিত করার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়েছে ওই চিঠিতে।

উল্লেখ্য, গত ২৯ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে গিয়ে ছোট ভাইয়ের দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার সময় সঙ্গে ছিলেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা। তার ভাই শৈলকুপা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান ঝিনাইদহ-১ আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। গত ১৬ মার্চ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবদুল হাইয়ের মৃত্যুতে ঝিনাইদহ-১ আসনটি শূন্য হয়। এই আসনে উপনির্বাচন হবে আগামী ৫ জুন।


ঝিনাইদহ-১  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

চীনকে ঠেকাতেই বাংলাদেশে মার্কিন কৌশল পরিবর্তন

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

ডোনাল্ড লু’র বাংলাদেশ সফর যেন পরিবর্তনের বার্তা দিয়ে গেল। সব ক্ষেত্রেই ডোনাল্ড লু মার্কিন নীতির পরিবর্তিত অবস্থার একটি জানান দিলেন। ডোনাল্ড লু’র এই সফরের শেষ প্রান্তে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন যে, অতীতের তিক্ততা ভুলে আমরা সামনের দিকে এগোতে চাই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার বাংলাদেশ নীতি সম্পূর্ণ যে বদলে ফেলেছে সেই বার্তাটি দেওয়ার জন্যই ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। 

এই পরিবর্তিত অবস্থার কারণ কী- সে ব্যাপারে কূটনীতিক মহলে নানামুখী আলাপ আলোচনা চলছে। নানা কারণ নিয়ে তারা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করছেন। তবে অধিকাংশ কূটনীতিক মনে করেন বাংলাদেশে চীনের আধিপত্য প্রভাব ঠেকানোর জন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মূলত তার কৌশল পরিবর্তন করেছে। 

ডোনাল্ড লু এবার বাংলাদেশ সফরে কেবল যে তার কৌশল পরিবর্তন করেছেন তাই নয়, তিনি সরকারের সঙ্গে যে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চান, সেই বার্তাও দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এবং প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে পরিচিত সালমান এফ রহমানের বাসায় নৈশ্যভোজ এবং তার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক, বিএনপির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোন সাক্ষাৎ না করা, মার্কিন পন্থী সুশীলদেরকে এড়িয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে ডোনাল্ড লু সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, বর্তমান সরকারের সঙ্গে তারা সম্পর্ক গভীর করতে চায়। আর সরকার এই সুযোগটি নিয়েছে। সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অতীতের তিক্ততাকে আর বাড়াতে চায় না এমন অবস্থান সুস্পষ্ট করেছে। 

বাংলাদেশে গত কয়েক বছর ধরে চীনের প্রভাব এবং প্রতিপত্তি বাড়ছে। অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ ক্রমশ চীনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এখন অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে চীন নির্ভরতা সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম বড় বাজার। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটা সম্ভাবনার ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে গত এক দশকে। আর এ কারণেই বাংলাদেশে অনেক ব্যবসা এবং বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বোয়িং বিক্রি করতে চায়। বিমান কেনার জন্য বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করেছে, তেমনই ফ্রান্সের এয়ার বাস কেনার বিষয়টি নিয়েও আলাপ আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। 

বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রবন্দর তেল গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়টিও সামনে এসেছে। এখানেও একাধিক মার্কিন কোম্পানি আগ্রহী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে এ সমস্ত ব্যবসাগুলো যদি বাংলাদেশ থেকে তারা পেতে চায় তাহলে সরকারের সাথে সম্পর্ক করার কোনো বিকল্প নেই। আর অন্যদিকে বাংলাদেশে চীনের অর্থনৈতিক প্রভাব এখন রাজনৈতিক প্রভাবের দিকে রূপান্তরিত হচ্ছে।

অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পগুলোতে চীন কেবল অংশীদার নয়, এখন রাজনৈতিক বিষয়ে তারা আগ্রহ দেখাচ্ছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে আওয়ামী লীগের একাধিক দল চীন সফরে যাচ্ছে। বিশেষ করে বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের একটি দলের চীন সফর এবং এরপর কাজী জাফরউল্লাহ এর নেতৃত্বে দলের চীন সফরের বিষয়টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের নজর এড়ায়নি। আর এ কারণেই তারা মনে করছেন যে, বাংলাদেশে চীনের প্রভাব বলয় যেন বৃদ্ধি না হয় সেজন্য তাদের সাথে সুসম্পর্ক করাই তাদের জন্য জরুরী। চাপ দিয়ে নয়, বরং সম্পর্ক উন্নয়ন এবং পারস্পরিক আস্থা বিশ্বাসের মাধ্যমেই বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র আপন করে নিতে চায়। এবং এই উপমহাদেশে কৌশলগত অবস্থান দৃঢ় করতে চায়। বাংলাদেশকে যে চাপ দিয়ে নতজানু করা সম্ভব নয় এই উপলদ্ধি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনের প্রধান কারণ বলে অনেক কূটনীতিক মনে করছেন।

চীন   বাংলাদেশ   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   ডোনাল্ড লু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

'এমন খুচরা এমপি আমি পকেটে রাখি'

প্রকাশ: ০৬:৩৯ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও শিল্পপতি ড. আশরাফ আলী চৌধুরী সারুর এক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

সোমবার (১৩ মে) আলেকজান্ডার বাজারের আওয়ামী লীগের দলীয় অফিসে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক সভায় বক্তৃতা দেন তিনি।

তার দেওয়া বক্তব্য মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভাইরাল বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আশ্রাফ আলী সারু বলেন, 'এমন ছোটখাট খুচরা এমপি আমি পকেটে রাখি।'

বক্তব্যে তিনি বলেন, পৌর নির্বাচনে এম মেজবাহ উদ্দিনকে মেয়র হিসেবে জয়ী করতে এক হাজার মানুষকে তাঁবু টানিয়ে দুদিন ভাত খাইয়েছি। প্রায় ১৩ লাখ টাকা খরচ করেছি। এরপর সংসদ নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য বিভিন্ন সংস্থা থেকে তাকে চাপ দেওয়া হলেও তিনি তা নাকচ করে দেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু এমপি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি, ডিসি, ইউএনও, ওসিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন ব্যক্তিকে লাখ লাখ টাকা সহায়তা করেন এবং উপঢৌকন দেন। করোনাকালীন প্রশাসনকে উপকরণ সহায়তাসহ নগদ টাকা দিয়েছেন।

স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুনের নির্বাচনে টাকা ব্যয় করার কথা উল্লেখ করে সারু বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বর্তমান এমপি আব্দুল্লাহ আল মামুন আমাকে ব্ল‍্যাকমেইল করেছেন। আমি নির্বাচনের সময় তার জন্য ১৪ লাখ টাকা খরচ করেছি। এখন তিনি বিএনপি-জামায়াতকে রামগতিতে প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছেন।

উপজেলা নির্বাচনে এমপি মামুন বিএনপি নেতা শরাফ উদ্দীন আজাদ সোহেলের পক্ষাবলম্বন করার তীব্র সমালোচনা করে উপজেলা আওয়ামী লীগের এ নেতা অভিযোগ করে বলেন, এমপি সাহেব আমাকে ব্ল‍্যাকমেইল করেছেন। তিনি কথা দিয়ে কথা রাখেননি। তিনি এখন বিএনপি নেতাকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়েছেন। ২০১৪ সাল থেকে ১৮ সাল পর্যন্ত রামগতি- কমলনগরকে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করেছেন।

২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এমপির পক্ষে নির্বাচন করার কথা উল্লেখ করে ড. সারু বলেন, এমপি আব্দুল্লাহ অতীতের মতো আর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রশ্রয় দেবেন না এবং জামায়াত বিএনপিকে লালন-পালন করবে না বলে ওয়াদা করায় আমি তার নির্বাচন করেছি। কিন্তু এখন তিনি তার কথা রাখেননি। তিনি আবারও সেই আগের মতোই কাজ করছেন। এমপি এলাকায় সন্ত্রাস নৈরাজ্যকর পরিবেশ তৈরি করেন। স্বতন্ত্র এমপি আব্দুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে নির্বাচন করায় রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ মুরাদকে অথর্ব উল্লেখ করে তার কড়া সমালোচনা করেন তিনি।

উপজেলা নির্বাচনে ড. সারু ভোট করেছেন রোকেয়া আজাদের আনারস প্রতীকের। সেখানেও তিনি ৭ লাখ টাকা খরচ করেছেন বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন। এ ছাড়া তিনি নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেলের কঠোর সমালোচনা করেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ, সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কাশেম নিজাম, সহসভাপতি একরামুল কবির টিটু, সদস্য ও পৌর মেয়র এম মেজবাহ উদ্দিন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সদস্য সাহেদ আলী মনুসহ অনেকে।

বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. সারু বলেন, আমি যা বলেছি সবই সত্য। আমার বক্তব্যেই আমার উত্তর রয়েছে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আব্দুল্লাহ বলেন, আশ্রাফ আলী সারু সংসদ নির্বাচনে আমার পক্ষে ২২ দিন প্রচার করেছেন। বিনিময়ে আমার কাছ থেকে দুই লাখ টাকাও নিয়েছেন।


লক্ষ্মীপুর   রামগতি উপজেলা   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

ট্রাফিক পুলিশের মারধরে রিকশাচালকের পা ভাঙল

প্রকাশ: ০৬:০৪ পিএম, ১৭ মে, ২০২৪


Thumbnail

লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে ফজলু নামে এক রিকশাচালকের পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে সাভারের এক ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদে একটি আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে রেখেছে রিকশাচালকরা। 

শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গেন্ডা বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে।

আহত রিকশাচালক দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর থানার বাসনাপুর মহল্লার আবুল হোসেনের ছেলে। অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন, ঢাকা উত্তরের ট্রাফিক পুলিশের রেকার ড্রাইভার সোহেল রানা ও মোস্তফা।

ভুক্তভোগী রিকশাচালক ফজলু বলেন, আমি পাকিজার সামনে থেকে রিকশাচালিয়ে গেন্ডার দিকে আসছিলাম। এসময় একটি মোটরসাইকেলে করে দুই ট্রাফিক পুলিশ আমাকে ধাওয়া দেয়। পরে আমি গেন্ডা বাসস্ট্যান্ডের কাছে এসে রিকশা ব্রেক করি। এসময় মোটরসাইকেল থেকে ট্রাফিক পুলিশ নেমে আমার বাম পায়ে লোহার পাইপ দিয়ে আঘাত করে। পরে আমাকে এলোপাথাড়ি মারধর করে। কিন্তু আমি হাত দিয়ে ঠেকাতে চেষ্টা করি, কিন্তু পারিনি। পরে আমি সড়কে পড়ে যাই  সেখান থেকে আর দাঁড়াতে পারছিলাম না। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে আমাকে মারধর করা থামায় ট্রাফিক পুলিশ। এরপরে আমাকে চিকিৎসার জন্য সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে পাঠায় বলে জানান তিনি।

রুবেল নামে অপর এক রিকশাচালক অভিযোগ করে বলেন, ট্রাফিক পুলিশরা সকাল থেকেই টাকার জন্য রিকশা ধরে। রিকশা ধরলেই দুই হাজার টাকা করে দিতে হয়। আর যদি কেউ টাকা না দেয় বিভিন্ন ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এজন্য আমরা আজকে সড়কে প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু পুলিশ এসে আমাদের বাঁধা দিয়েছে বলে জানান তিনি।

রেকার চালক মোস্তফা বলেন, আজ আমার ডিউটি ছিল না। আমি এ মারামারির বিষয়ে কিছুর জানি না। বর্তমানে আমি স্যারের সঙ্গে রয়েছি। পরে কথা বলবো বলে জানান তিনি।  

সাভার মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রিকশা চালকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। বিস্তারিত ট্রাফিক পুলিশের অ্যাডমিন জানেন বলে জানান তিনি।

ঢাকা উত্তরের ট্রাফিক পুলিশের অ্যাডমিন হোসেন শহীধ চৌধুরীকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।  


ট্রাফিক পুলিশ   রিকশাচালক   আহত   রিকশাচালক   দিনাজপুর জেলা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন