লাগাতার
হরতালের মধ্যে ৬ মার্চ পাকিস্তানের
সামরিক সরকারের প্রধান প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ২৫ মার্চ
জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন। দুপুরে বেতার ভাষণে তিনি বলেন, ‘এ
দেশকে রক্ষার জন্য পূর্ব ও
পশ্চিম পাকিস্তানের কোটি কোটি বাসিন্দার
জন্য আমার দায়িত্ব রয়েছে।
আমি তাদের হতাশ করব না।
’
ইয়াহিয়া খানের বেতার ভাষণের পরপরই বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও পূর্ব পাকিস্তান শাখার ওয়াকিং কমিটির জরুরি যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক ঘন্টার রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শহীদদের রক্ত মাড়িয়ে তিনি ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনায় যেতে পারেন না। এই দিনটিতেও ঢাকাসহ সারা বাংলায় সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে ঢাকা টানা পঞ্চম দিনের মতো গর্জে ওঠে। সারা বাংলা ছিল সভা-সমাবেশও মিছিলে উত্তাল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সকাল থেকে সর্বস্তরের মানুষ রাস্তাায় নেমে আসে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকেন। শান্তিপূর্ণ হরতাল পালন শেষে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ব্যাংক এবং যেসব বেসরকারি অফিসের কর্মচারী বেতন পাননি, সেসব অফিস বেতন দেওয়ার জন্য খোলা থাকে।
বিকেলে মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সমাবেশে নারীরা লাঠিসোঁটা ও কালো পতাকা নিয়ে উপস্থিত হন। একই সময় বায়তুল মোকাররমের সামনে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে সাংবাদিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কে জি মুস্তফা গণ-আন্দোলনের সঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকেরা কলমের স্বাধীনতা এবং সংগ্রামী জনতার কথঅ লিখতে চান। সমাবেশে প্রাদেশিক সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আলী আশরাফ ও সাবেক সম্পাদক আতাউস সামাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের উদ্যোগে বিরাট মশাল মিছিল বের হয়। এ ছাড়া বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি, ছাত্র ইউনিয়ন (মতিয়া), গণ শিল্পীগোষ্ঠী, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে জনসভা ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহীতে মিছিলের ওপর সশস্ত্র বাহীনির গুলিতে একজন নিহত এবং ১৪ জন আহত হন। সেখানে ওই দিন সান্ধ্য আইন জারি ছিল। খুলনায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও গুলিবর্ষণে ১৮ জন নিহত এবং ৮৬ জন আহন হন। বেলা ১১ টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের গেট ভেঙ্গে এই দিনে ৩৪১ জন কয়েদি পালিয়ে যান। এ সময় পুলিশের গুলিতে সাতজন কয়েদি নিহত এবং ৩০ জন আহত হন।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগজীবন রাম জানান, ভারতীয় ভূখন্ডের ওপর দিয়ে পাকিস্তানের সব ধরনের বিমান চলাচলে এখন থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো।
টিক্কা খান পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর নিযুক্ত
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান এদিন সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেন। এদিন রাওয়ালপিন্ডিতে সরকারিভাবে এ কথা ঘোষণা করা হয়।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার ভাষণকে স্বাগত জানিয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, তাঁর দল ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশনের আগেই আলোচনার মাধ্যমে শাসনতন্ত্রের মোটামুটি একটি কাঠামো স্থির করতে চায়। অধিবেশনের আগে তিনি দেশের সংহতির স্বার্থে আরেকবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত বলে জানান। কারণ, এ জন্য ৬ দফার রদবদল প্রয়োজন।
কাউন্সিল মুসলিম লীগের নেতা এয়ার মার্শাল (অব.) নূর খান লাহোরে এক সমাবেশে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ শাসনের বৈধ অধিকার রয়েছে। ক্ষমতা হস্তান্তরের সব বাধা অবিলম্বে দূর করতে হবে। প্রেসিডেন্টের বেতার ভাষণে পরিস্থিতির অবনতির জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর দোষারোপ করায় নূর খান দুঃখ প্রকাশ করেন।
পাকিস্তান মুসলিম লীগের (কাইয়ুম) প্রধান খান আবদুল কাইয়ুম খান পেশোয়ারে ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বানে সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি দেন।
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বানের ঘোষণাকে জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মওদুদী ও সাবেক আইনমন্ত্রী এস এম জাফর স্বাগত জানান।
গণঐক্য আন্দোলনের প্রধান এয়ার মার্শাল (অব.) আসগর খান সন্ধ্যায় আওয়ামীলীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন।
পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) পশ্চিম পাকিস্তান শাখার প্রধান নবাবজাদা নসরুল্লাহ খান ও কাউন্সিল মুসলিম লীগ প্রধান মিয়া মমতাজ মোহাম্মদ খান দৌলতানা পৃথক পৃথক বিবৃতি ইয়াহিয়া খানের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বানের ঘোষণাকে স্বাগত জানান।২
সূত্র:
১. ইত্তেফাক ও সংবাদ, ৭
মার্চ ১৯৭১। ২. পূর্বোক্ত।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জেলা প্রশাসক সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে একটি চালকলে ধান সিদ্ধ করার সময় বয়লার বিস্ফোরণে এক শ্রমিকে মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও দুই শ্রমিক। শুক্রবার (৩ মে) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জামতৈল পশ্চিম পাড়ার মেসার্স আজাহার চালকলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফজল আলী (২৬) উপজেলার জামতৈল পশ্চিম পাড়ার রবিয়াল হোসেনের ছেলে।
আহত শ্রমিকরা হলেন, উপজেলার জামতৈল পশ্চিম পাড়ার মৃত পলান শেখের ছেলে জহুরুল শেখ (২৬) এবং কর্ণসূতি পশ্চিম পাড়ার মৃত সুরুত মন্ডলের ছেলে জিন্নাহ মন্ডল (৩০) ।
আহত শ্রমিক জহুরুল শেখ জানান, ‘ধান সিদ্ধ করার এক পর্যায়ে ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে বিকট শব্দে বয়লার বিস্ফোরণ হয়। এতে আমি সহ ফজল ও জিন্নাহ আহত হই। আমি আর জিন্নাহ হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে চলে এসেছি আর ফজলের অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।’
জহুরুল আরও জানান, ‘আমি গত এক বছরের বেশি সময় ধরে এই চালকলে কাজ করছি। এর মধ্যে বয়লারের পাইপ পরিবর্তন করা হলেও বয়লার পরিবর্তন করা হয়নি।'
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে নিহত ফজলের ভাই আসলাম হোসেন জানান, ‘মেসার্স আজাহার চালকলে ধান সিদ্ধ করার এক পর্যায়ে বয়লার বিস্ফোরণে ফজল গুরুতর আহত হয়। প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।'
মেসার্স আজাহার চালকলের স্বত্বাধিকারী আজাহার আলী রাজা দাবি করেন, ‘গত ছয় মাস আগে বয়লার ও কয়েক দিন আগে বয়লারের পাইপ পরিবর্তন করা হয়েছে। বয়লার কেন বিস্ফোরণ হলো বুঝতে পারছি না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুমনুল হক জানান, ‘বয়লার বিস্ফোরণে আহত তিন জন শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। দুই জনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়ে। এদের মধ্যে ফজল নামে একজন শ্রমিকের মুখের অনেকাংশ থেঁতলে গেছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন সুলতানা জানান, ‘মেসার্স আজাহার চালকলে বয়লার বিস্ফোরণের খবর পেয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।'
মন্তব্য করুন
গাজীপুরের জয়দেবপুরে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে তেলবাহী ট্রেনের
মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় স্টেশন মাস্টারসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (০৩ মে) গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত বহু
আরও পড়ুন: দুই ট্রেনের সংঘর্ষ: উদ্ধারে যোগ দিয়েছে বিজিবি
এদিকে ঘটনার পর থেকে জয়দেবপুর স্টেশন দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম
রুটের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছে অন্তত ৬টি ট্রেন।
জয়দেবপুরের স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী মিয়া বলেন, ‘আজ পৌনে ১১টার
দিকে টাঙ্গাইল কমিউটার ও তেলবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। রেললাইনের পয়েন্টের ভুলের
কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে তেলবাহী ট্রেনের পাঁচটি এবং যাত্রীবাহী ট্রেনের চারটি
বগি লাইনচ্যুত হয়। কমিউটার ট্রেনটিতে যাত্রী কম থাকায় হতাহতের সংখ্যা কম। কমিউটার ট্রেনের
লোকোমাস্টারসহ চারজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায়
৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ’।
তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আপঘুন্টি স্টেশন মাস্টার হাশেম ও পয়েন্টসম্যান
সাদ্দাম হোসেনসহ তিনজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের
জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বগি উদ্ধারের জন্য ১২টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে রিলিফ ট্রেন
ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুস সামাদ বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। এরই মধ্যে রেলের সব বগি তল্লাশি করা হয়েছে। তবে ভেতরে কেউ আটকা নেই। ট্রেনের চালক ও সহকারী চালকসহ ৪ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল
পরিদর্শন করে বলেন, জয়দেবপুরে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে
প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে তাদের
প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিগন্যাল ভুল, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা
ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন স্টেশনে বেশ কয়েকটি ট্রেন যাত্রা বিরতি করা হয়েছে। দ্রুত উদ্ধার
প্রক্রিয়া শুরু করতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ
করা হয়েছে।
এরআগে, শুক্রবার (০৩ মে) বেলা ১১টার দিকে জয়দেবপুর স্টেশনের আউটার
সিগনালে যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সঙ্গে একটি তেলবাহী ট্রেনের মুখোমুখি
সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
তিনি জানান, রেল দুর্ঘটনায় দুই ট্রেনের চালক ও সহকারীরা আহত হয়েছেন।
তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রেল দুর্ঘটনায় ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের
রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে কমলাপুর রেলস্টেশনে আটকা পড়েছেন ৪-৫টি ট্রেনের যাত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি উত্তরবঙ্গ থেকে
ছেড়ে এসে গাজীপুর হয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশনের আউটার সিগনালে
পৌঁছালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা তেলবাহী ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তবে টাঙ্গাইল
কমিউটারে খুব বেশি যাত্রী ছিল না।
একজন উদ্ধারকর্মী জানান, শুক্রবার টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি বন্ধ থাকে। অন্যান্য দিন ট্রেনটি জয়দেবপুর স্টেশনে থামে। আজ বন্ধ থাকায় এটির থ্রোপাস করার কথা। আর অপরদিকে ঢাকা থেকে আসা তেলবাহী ট্রেনটি স্টেশনে দাঁড়ানো ছিল। এখানে আপলাইন ও ডাউনলাইন আছে, কিন্তু কী কারণে ট্রেন দুটি মুখোমুখি হল সে বিষয়ে তদন্তের পর জানা যাবে।
আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
এর আগে, গতকাল রাজবাড়ীতে মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
পরে ৩ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। বৃহস্পতিবার (২ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে
উদ্ধারকারী রিজার্ভ ট্রেন এসে লাইনচ্যুত ট্রেনটি উদ্ধার করে। রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনের
মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা মালবাহী ট্রেনটি সকালে ২ নম্বর
রেলগেট এলাকার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন ডিপোতে ঢোকার সময় লাইনচ্যুত হয়। তখন এ রুটে
সব রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। উদ্ধারকারী রিজার্ভ ট্রেন সাড়ে ১০টার দিকে লাইনচ্যুত
ট্রেনটি উদ্ধার করে। বর্তমানে রাজবাড়ীর সঙ্গে ঢাকা, রাজবাড়ী-দৌলতদিয়া ও রাজবাড়ী-খুলনা
রুটে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় ২ নম্বর রেলগেট এলাকার ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন
ডিপোতে ঢোকার সময় মালবাহী ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। এতে মেইন লাইন ব্লক হয়ে যাওয়ায় রাজবাড়ীর
সঙ্গে ঢাকা, রাজবাড়ী-দৌলতদিয়া ও রাজবাড়ী-খুলনা রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে তিন ঘণ্টা পর ট্রেনটি উদ্ধার করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রাজবাড়ীর সঙ্গে স্বাভাবিক হয়েছে ট্রেন চলাচল।
দুই ট্রেন সংঘর্ষ স্টেশন মাস্টার তদন্তে কমিটি
মন্তব্য করুন
গাজীপুরে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ পরবর্তী উদ্ধার কাজে সহায়তা করতে দুই
প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঢাকা-জয়দেবপুর রেল সড়কের গাজীপুরের ছোট দেওড়া কাজীবাড়ি
এলাকায় মালবাহী ও যাত্রীবাহী দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় উদ্ধার কাজের
সহায়তায় ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন।
তিনি আরও জানান, টাঙ্গাইল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা টাঙ্গাইল
কমিউটার ট্রেনটি আজ (শুক্রবার) বেলা ১১টায় জয়দেবপুর স্টেশনে যাত্রাবিরতি শেষে ঢাকার
উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ট্রেনটি স্টেশন থেকে ছেড়ে আউটার সিগন্যালে পৌঁছানোর পর লাইন
ক্রসিং করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা জয়দেবপুর আউটার সিগন্যালের কাজীবাড়ি ছোট দেওড়া
এলাকায় একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।
এ ঘটনায় যাত্রীবাহী ট্রেনের চালকসহ আহত ৪জনকে উদ্ধার করে গাজীপুর
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় আরও আহত
থাকতে পারে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।
মন্তব্য করুন