ইনসাইড বাংলাদেশ

কথায় কথায় পিস্তল বের করে হুমকি, থামাননি কেউ

প্রকাশ: ১০:২৫ এএম, ০৬ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

দীর্ঘদিন থেকেই অবৈধ অস্ত্র বহন করেন সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রায়হান শরীফ। মতের অমিল হলেই সেই পিস্তল বের করে হুমকি দেন। বিষয়টি সবাই জানলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সম্প্রতি শ্রেণিকক্ষে ছাত্রকে গুলি করে আলোচনায় আসেন তিনি।

রায়হান শরীফ তার জ্যেষ্ঠ সহকর্মীকে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সাবেক কর্মস্থল নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। বর্তমান কর্মস্থলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এখানে এসেও কথায় কথায় পিস্তল উঁচিয়ে হুমকি দেওয়া ছাড়েননি। তবে মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তাকে দুই দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু তিনি জবাব দেননি বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী। অধ্যক্ষের দাবি, প্রভাব খাটানোর কারণে রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে এত দিন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।

গত সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে মেডিকেল কলেজে মৌখিক পরীক্ষা চলাকালে আরাফাত আমিন নামের এক শিক্ষার্থীকে গুলি করেন শিক্ষক রায়হান শরীফ। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে রায়হানের হেফাজত থেকে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৮১টি গুলি, ৪টি ম্যাগাজিন ও ১২টি বিদেশি চাকু উদ্ধার করে।

পুলিশ জানিয়েছে, রায়হানের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার সদর থানায় দুটি মামলা হয়েছে। একটির বাদী গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীর বাবা আবদুল্লাহ আল আমিন। তিনি ছেলেকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ এনেছেন। এই মামলায় সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারক বিল্লাল হোসেনের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রায়হান।

অপর মামলাটি করেন সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক আবদুল ওয়াদুদ। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের এই মামলায় রায়হানের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানায় পুলিশ। তবে অন্য মামলায় স্বীকারোক্তি দেওয়ায় রিমান্ড মঞ্জুর হয়নি।

সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, রায়হান শরীফের কাছ থেকে উদ্ধার করা পিস্তল দুটি অবৈধ। পিস্তল উঁচিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং শ্রেণিকক্ষে অস্ত্র বহনের বিষয়টি এত দিন কেউ পুলিশকে বলেননি। বিষয়টি এখন তদন্ত করে দেখা হবে।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, এক বছর দুই মাস আগে মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক পদে যোগদানের পর থেকেই পিস্তল ঠেকিয়ে শিক্ষার্থীদের হুমকি, শ্রেণিকক্ষে পিস্তল প্রদর্শন, ছাত্রীদের অশ্লীল ইঙ্গিতসহ নানা অপকর্ম করতে থাকেন। শ্রেণিকক্ষে পিস্তল উঁচিয়ে ভয় দেখানোর ভিডিও ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

কলেজের শিক্ষার্থী ইমামুল হাসান বলেন, রায়হান শরীফ প্রায়ই মধ্যরাতে ছাত্র হোস্টেলে গিয়ে পিস্তল উঁচিয়ে হুমকি দিতেন। তিনি শিক্ষার্থীদের পকেটের টাকায় চা-নাশতা কিনে আনতে বাধ্য করতেন। মাঝেমধ্যে সেই সব চা-নাশতা ছাত্রী হোস্টেলে পৌঁছে দিতে বাধ্য করতেন।

সাইমুর রহমান নামে হোস্টেলের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ‘রায়হান শরীফ এক রাতে তার কক্ষে গিয়ে মুড়ি ও চা আনতে বলেন। মুড়ি এনে মাখিয়ে দেওয়ার পর তাঁকেও খেতে বলেন। মধ্যরাতে খেতে রাজি না হলে পিস্তল বের করে রায়হান বলেন, ‘মুড়ি খাবি না, তাহলে গুলি খা।’

কলেজ সূত্রে জানা গেছে,  রায়হান শরীফ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। সেখানে তিনি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন।

জানা যায়, রায়হান শরীফ ২০১৭ সালে সিরাজগঞ্জ শহরের বেসরকারি নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা ছিলেন। এই কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন সিরাজগঞ্জ শাখার সভাপতি জহুরুল হক বলেন, রায়হান কর্মরত থাকাকালে প্রায়ই অস্ত্র উঁচিয়ে ভীতিকর অবস্থা তৈরি করতেন। হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান লিয়াকত আলীকে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ায় তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

লিয়াকত আলী বলেন, হাসপাতালের দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তাঁকে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন রায়হান শরীফ।

দুই মাস আগে ঢাকায় জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমিতে (এনএপিডি) তিন মাসের বনিয়াদি প্রশিক্ষণে এসে এক নারী চিকিৎসককে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ রয়েছে রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে। গত ডিসেম্বরে প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে শেষ হয় ফেব্রুয়ারিতে। ভুক্তভোগী চিকিৎসকের পাশের রুমে থাকা আরেক নারী চিকিৎসক প্রথম আলোকে বলেন, রাতের বেলায় ওই নারীর কক্ষের দরজায় নক করতেন রায়হান শরীফ। প্রশিক্ষণের সময়ও নানাভাবে বিরক্ত করতেন। বিষয়টি তখন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। তবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

পিস্তল রায়হানের ‘পোষা পাখি’

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা বলছেন, সোমবার (৪ মার্চ) রায়হান শরীফ শ্রেণিকক্ষে ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে ‘এটা আমার পোষা পাখি’ বলে গুলি চালান, যা শিক্ষার্থী আরাফাত আমিনের ডান ঊরুতে লাগে।

এ ঘটনায় করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রায়হান শরীফ সব সময় রূঢ় আচরণ করেন। ব্যাগে পিস্তল ও ধারালো অস্ত্র বহন করতেন। টেবিলের ওপর পিস্তল রেখে পাঠদান করতেন। ঘটনার দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে আরাফাত আমিন চিৎকার করলে তাঁকে সাহায্যের জন্য বন্ধুরা এগিয়ে আসেন। তাঁরা তাঁকে জরুরি বিভাগে নিতে চাইলে রায়হান শরীফ অস্ত্র উঁচিয়ে বলেন, ‘তোরা যদি ওকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যাস, তাহলে তোদের গুলি করে মেরে ফেলব।’

সিরাজগঞ্জ ডিবির পরিদর্শক জুলহাজ উদ্দীন বলেন, রায়হানের মুঠোফোনে বিদেশি পিস্তলের বহু ছবি পাওয়া গেছে। আরও অস্ত্র আছে কি না, খোঁজ নিতে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ রোডের বাসায় অভিযান চালানো হয়। তবে সেখানে অস্ত্র পাওয়া যায়নি। এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রায়হান স্বীকার করেন, প্রতিটি পিস্তল তিনি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা করে কিনেছিলেন। অস্ত্রের প্রতি তাঁর বিশেষ আকর্ষণ ছিল।

ক্যাম্পাসে তদন্ত কমিটি, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

শিক্ষার্থীকে শিক্ষকের গুলির ঘটনায় স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিন সদস্যের তদন্ত দলটি কলেজ ক্যাম্পাসে আসে। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক বায়জীদ খুরশীদের নেতৃত্বে তদন্ত দলের সদস্যরা যখন আহত শিক্ষার্থী ও সহপাঠীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করছিলেন, তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেন। তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের চিকিৎসক সনদ বাতিল ও চাকরিচ্যুত করার দাবিতে কলেজের সামনের সিরাজগঞ্জ-নলকা আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। বিক্ষোভের কারণে বেলা সোয়া ১১টা থেকে সোয়া ১২টা পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে কলেজের অধ্যক্ষ দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।

তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক রায়হান তদন্ত কমিটির কাছে শিক্ষার্থীকে গুলি করার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তা ‘অনিচ্ছাকৃত’ বলে দাবি করেছেন। তিনি লাইসেন্সবিহীন দুটি পিস্তল রাখা ও বিভিন্ন সময় তা প্রদর্শনের বিষয়টিও স্বীকার করেছেন।

কমিটি সূত্র আরও জানিয়েছে, তারা নির্ধারিত তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার চেষ্টা করবে। তবে এর আগেই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

তদন্ত কমিটি সূত্র জানিয়েছে, আহত শিক্ষার্থীর আঘাত তেমন গুরুতর নয়। গুলিটি লেগেছে ওই শিক্ষার্থীর প্যান্টের পকেটের কাছে। সেখানে তাঁর মুঠোফোন ছিল। গুলিটি আগে মুঠোফোনে লাগে, সেটি ভেদ করে আঘাত লাগে।

মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, রায়হান শরীফ জামিনে মুক্ত হয়ে আবার কলেজে ফিরে আসেন কি না, সেই আতঙ্কে আছেন শিক্ষার্থীরা। একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা করে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তাকে চাকরিচ্যুত করার জন্য বিধি মোতাবেক সুপারিশ করা হবে।


হীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ   অস্ত্র বহন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

রাজধানীতে বজ্রসহ শিলা-বৃষ্টি

প্রকাশ: ১০:৪১ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

রাজধানীতে শুরু হয়েছে বজ্রসহ বৃষ্টি। সঙ্গে শিলা। আজ রোববার (৫ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হয় এ শিলা-বৃষ্টি। এর আগে রাত ৯টার দিকে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া।

শনিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পরিস্থিতির পূর্বাভাস দেয়। পূর্বাভাসে বলা হয়, সোমবার থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছয় দিন ধরে হতে পারে ঝড়বৃষ্টি। কয়েক দিনের বৃষ্টির পর কমে যেতে পারে তাপপ্রবাহ।

আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, রোববার বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশের ওপর দিয়ে বজ্রপাত ও বিচ্ছিন্নভাবে শিলাবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে। সেজন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া কাল সোমবার থেকে সারা দেশে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। এতে করে যেসব জায়গায় তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিল সেগুলো ধীরে ধীরে প্রশমিত হবে। 

রাজধানী   শিলা-বৃষ্টি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

বন্ধ বিমানবন্দর চালুর পরিকল্পনা আপাতত নেই: বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী

প্রকাশ: ০৯:৪৩ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান জানিয়েছেন, বন্ধ থাকা বিমানবন্দরগুলো চালুর পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।

রোববার (৫ মে) বিকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য আলী আজমের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।
 
ফারুক খান বলেন, বর্তমানে দেশে তিনটি আন্তর্জাতিক, সাতটি অভ্যন্তরীণ ও পাঁচটি স্টল বিমানবন্দর রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর চালু রয়েছে। এসব বিমানবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, বন্ধ থাকা বিমানবন্দরগুলো চালু করার পরিকল্পনা সরকার তথা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের আপাতত নেই। তবে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন, যাত্রী চাহিদা এবং এয়ারলাইনসগুলোর আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে বন্ধ বিমানবন্দরগুলো চালুর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

বিমানবন্দর   বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী   জাতীয় সংসদ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

গ্রামে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং, বিদ্যুৎ গেল কোথায়: সংসদে চুন্নু

প্রকাশ: ০৯:৩৪ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

লোডশেডিং নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, গ্রামে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। সরকার বলেছে ২৮ হাজার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্যাপাসিটি রয়েছে। তাহলে এই বিদ্যুৎ গেল কোথায়?

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে তিনি এ প্রশ্ন করেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এই মুহূর্তে সারাদেশের মানুষ অনেক সমস্যায় আছে। তার মধ্যে দুটি সমস্যায় মানুষ খুব আক্রান্ত। একটি হলো বিদ্যুৎ। এই মৌসুমে সারাদেশে গ্রামে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোথাও ১২ ঘণ্টা, কোথাও ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আর সরকার বলেছে ২৮ হাজার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্যাপাসিটির কথা, তাহলে এই বিদ্যুৎ গেল কোথায়? বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে আমার এলাকার মানুষ দাওয়াত দিয়েছে, লোডশেডিং হয় কিনা দেখার জন্য।

তিনি আরও বলেন, যে সব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ভাড়ায়, তাদের সক্ষমতার ৪১ শতাংশ সক্ষমতা থাকার পরেও বসে আছে এবং ২২-২৩ আর্থিক বছরে বসে থেকে ভাড়া বাবদ ২৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আগের পার্লামেন্টে আমি বলেছিলাম, আমার এলাকায় প্রায় বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, আমি আজকে চ্যালেঞ্জ চাই না। আমি চাই সশরীরে উনি আমার এলাকায় একটু যাবেন, যে কয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে।

চুন্নু বলেন, দায়মুক্তি দিয়ে যেসব চুক্তি আমরা করেছি, সেগুলো দয়া করে প্রত্যাহার করুন। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে জরিমানা দেওয়া হবে, এ চুক্তি বাতিল করুন। সেসব কোম্পানি বিদ্যুৎ দিলে বিল পরিশোধ করবেন। বসিয়ে রেখে এভাবে এক বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা দেবেন, তারপর আবার লোডশেডিংও থাকবে! ঢাকায় থেকে অসহনীয় অবস্থা আপনারা বুঝবেন না।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করুন। বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছেন। মন্ত্রী একটি সুন্দর কথা বলেন, সমন্বয়। সমন্বয়ের মানে মূল্যবৃদ্ধি। এ সমন্বয় আগামী তিন বছর বারবার করবেন। ভর্তুকি তুলে নিলে বিদ্যুতের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাবে দুই-তিন বছর পর। মানুষ কিনতে পারবে কি না, আমি জানি না। আমি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে বলব, শুধুমাত্র দাম না বাড়িয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নিন, যাতে জনগণের ওপর চাপ না পড়ে, একটি সহনীয় অবস্থায় আপনারা সরকারেও থাকতে পারেন, আর বিদ্যুৎও যাতে পাওয়া যায়।

লোডশেডিং   মুজিবুল হক চুন্নু  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরে রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়ে সংখ্যালঘুর জমি দখল, ঘর নির্মাণ


Thumbnail

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়ে বিরোধপূর্ণ জমিতে একটি টিনসেট ঘর স্থাপন করেছে তাজল ইসলাম নামে এক ভূমি পরিমাপক। 

রোববার (৫ মে) ভোর রাতে উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজাঙ্গালিয়া গ্রামের করুনানগর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দিলেও যথা সময়ে পুলিশ আসেনি বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। 

বিকেলে ভূক্তভোগী টিংকু রানী দাস, বিপন রানী দাস, শোভন দাস ও অনিক চন্দ্র দাসসহ কয়েকজন এ অভিযোগ করেন। তারা জানায়, লোক মারফত তারা জানতে পারেন তাজল ইসলাম বিরোধীয় জমিতে ঘর তুলবেন। এতে শনিবার (৪ মে) দিবাগত সারারাত তারা পাহারারত ছিলেন। কেউই ঘুমাননি। রোববার ফজরের আযান দিলে তারা ঘুমাতে যায়। ঠিক সেই মুহুর্তে তাজল ইসলাম প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষকে নিয়ে এসে বিরোধীয় জমিতে থাকা টিনের বেড়া ভেঙে ফেলে। ঘটনাটি আঁচ করতে পেরে সবাই এসে বাধা দিলে তাজল ইসলামসহ তার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে তাদের (ভূক্তভোগী) ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে ভূক্তভোগীরা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দেয়। সেখান থেকে বিষয়টি কমলনগর থানাকে জানানো হয়। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছতে ২ ঘণ্টা সময় লাগিয়েছে। এর মধ্যে অন্যত্র তৈরিকৃত একটি নতুন ঘর এনে তাজল ইসলামরা বিরোধীয় জমিতে স্থাপন করে। এসময় টিংকু, বিপন, শোভন ও অনিকসহ কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ আনা হয়। 

ভূক্তভোগীরা আরও জানায়, পুলিশ এসে ঘর দেখে তারা থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলে। যদি পুলিশ সময়মতো আসতো তাহলে তাজল ইসলামরা ঘর স্থাপন করার সুযোগ পেতো না। আদালতে মামলা চলমান থাকলেও হামলা চালিয়ে ঘর স্থাপনের ঘটনায় তাজল ইসলামের বিচার চেয়েছেন ভূক্তভোগীরা।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিলন মন্ডল বলেন, ডালিম কুমার দাস নামে এক ব্যক্তি তাজল ইসলামের কাছে জমি বিক্রি করে। ডালিম ও তাজলসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক রাম কৃষ্ণ দাসসহ ভূক্তভোগীরা অগ্রক্রয় অধিকার আইনে রামগতি সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। মামলাটি এখনো চলমান। এরমধ্যে তাজল ইসলাম হামলা চালিয়ে ঘর স্থাপন করে আইন অমান্য করেছে। আমরা তার বিচার দাবি করছি। 

তবে অভিযুক্ত তাজল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তিনি রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চরসীতা গ্রামের বাসিন্দা। 

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশও পাঠানো হয়েছে। হামলার ঘটনায় কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। কেউ আটকও নেই। জায়গা জমি নিয়ে সমস্যা রয়েছে। ক্রেতা তার জমি দখল করতে এসেছে। এটি উভয়পক্ষ বসে মীমাংসা করতে পারতো।

লক্ষ্মীপুর   সংখ্যালঘু   জমি দখল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড বাংলাদেশ

তাপপ্রবাহে কী করতে হবে, জানিয়ে জাতীয় নির্দেশিকা প্রকাশ

প্রকাশ: ০৮:২১ পিএম, ০৫ মে, ২০২৪


Thumbnail

অতিরিক্ত গরমে মাথা ঘোরানো, দুশ্চিন্তা, স্ট্রোক, মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়া, অ্যাজমা, মাংসপেশিতে খিঁচুনি, চামড়ায় ফুসকুড়ি, কিডনি অকার্যকর হওয়ার মতো অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের গরমে বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, শ্রমজীবী মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তাই তাপপ্রবাহ থেকে সুরক্ষার জন্য কী কী করতে হবে, তা জানিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় গাইডলাইন বা নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে সরকার।

রোববার (৫ মে) দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক জাতীয় গাইডলাইনের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান করা হয়।

অনুষ্ঠানে জাতীয় গাইডলাইনের মোড়ক উন্মোচন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা। যারা একটু শারীরিকভাবে কম সামর্থ্যবান, যাদের ডায়াবেটিস, হার্ট-ডিজিস বা বিভিন্ন অসুখ রয়েছে, তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। এই বইয়ে নির্দেশিত গাইডলাইন লিফলেট আকারে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দিতে হবে। ইতোমধ্যে সব সরকারি হাসপাতালে এই গাইডলাইন প্রেরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নগর পরিকল্পনাবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দেখি গ্রামের চেয়ে ঢাকা শহরে তাপমাত্রা অনেক বেশি। এর কারণ আমরা ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে শহরের গাছপালা সব কেটে সাবাড় করেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর হয়তো আমরা খুব প্রভাব ফেলতে পারি না। কিন্তু নগর পরিকল্পনার সময় যদি এসব বিষয় আমরা মাথায় রাখি, তাহলে অনেকাংশেই পরিত্রাণ সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা, ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ এমা ব্রিগহাম প্রমুখ।

তাপপ্রবাহ   জাতীয় নির্দেশিকা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন