দেশের চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ীভাবে বন্ধের সুপারিশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। নিজস্ব ক্যাম্পাস না থাকা, গুণগত শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকা, ট্রাস্টি বোর্ডের দ্বন্দ্ব ও মামলা এবং উপাচার্যসহ গুরুত্বপূর্ণ তিন পদে নিয়োগের ব্যবস্থা না নেওয়ায় গত ফেব্রুয়ারিতে এ চিঠি পাঠানো হয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছে আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, ইবাইস ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা ও কুইন্স ইউনিভার্সিটি।
দেশের উচ্চশিক্ষার প্রসারে তিন যুগ থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি গড়ে উঠছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আইনের তোয়াক্কা না করা এবং শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে না পারায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেই লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে ইউজিসি।
ইউজিসির
ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন,
এমন কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আছে,
যেগুলো প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিয়ম-নীতির কোনো তোয়াক্কা করেনি।
শিক্ষার গুণগত মান ও কাঙ্ক্ষিত
পরিবেশ তৈরিতেও ব্যর্থ।
এসব
বিষয় সমাধানে কমিশন থেকে বারবার তাগিদ
দেওয়া হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো
ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। বরং
আদালত থেকে রায় এনে
তারা শিক্ষার্থী ভর্তি করছে। ফলে ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর
শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কম। মূলত তারা
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা
অঙ্কের টিউশন ফি আদায় ও
সার্টিফিকেট বিতরণ করে থাকে। নামসর্বস্ব
এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্থায়ীভাবে বন্ধের জন্য সরকারের কাছে
চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জানা
যায়, দি ইউনিভার্সিটি অব
কুমিল্লা ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বরে
অনুমোদন পায়। বিশ্ববিদ্যালয় আইন
না মানার কারণে ২০০৬ সালে সরকার
এই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছিল।
এখনো বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে
দ্বন্দ্ব ও আদালতে একাধিক
মামলা আছে। আমেরিকা বাংলাদেশ
ইউনিভার্সিটি সাময়িক অনুমতিপত্রের শর্ত না মানা
এবং গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায়
সরকারি স্মারক জারির মাধ্যমে ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি
বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ইবাইস
ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ নিয়ে
দ্বন্দ্ব ও আদালতে মামলা
চলছে।
এই
তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রপতির নিয়োগকৃত উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও
কোষাধ্যক্ষ পদে কোনো ব্যক্তি
নেই। বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষও
নেই। ফলে আইন অনুযায়ী
বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক, ভর্তি, পরীক্ষা ও ফলাফল এবং
একাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।
এ
ছাড়া কুইন্স ইউনিভার্সিটিকে ২০১৫ সালে এক
বছরের জন্য সাময়িকভাবে ও
শর্ত সাপেক্ষে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে
শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে ব্যর্থ
হওয়ায় বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা
কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ইউজিসি। এগুলো হলো সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।
এসব
বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ক্যাম্পাস ও ভবনে স্থানান্তরে
একাধিকবার নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন। নির্ধারিত সময় পার হলেও
দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না
থাকায় কমিশন থেকে নতুন শিক্ষার্থী
ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার রোকাইয়া ইসলাম রিপা বলেন, ‘ভর্তি বন্ধের বিষয়টি আমার জানা নেই। এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি প্রগ্রাম পরিচালিত হচ্ছে। উপাচার্য নিয়োগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন।’
নিজস্ব
ক্যাম্পাস না থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে
নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছে অন্তত আরো এক ডজন
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে রয়েছে
ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ,
আশা ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ও প্রাইম এশিয়া
ইউনিভার্সিটি।
ইউজিসি
সূত্র জানিয়েছে, শিগগিরই নিজস্ব ক্যাম্পাসে যাওয়ার শর্তে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে।
কিছু বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ভবন তৈরি করছে,
কেউ আবার নিজস্ব জায়গায়
অস্থায়ীভাবে স্টিল ফ্রেম দিয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পাস
নির্মাণ করছে।
এসব
কাজ তদারকিতে ইউজিসি থেকে পরিদর্শকদল পাঠানো
হবে। কাজের অগ্রগতি নিয়ে তারা কমিশনে
প্রতিবেদন দেবে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে
পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বেসরকারি
ওই চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর তথ্যের
সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইউজিসি সদস্য ড. বিশ্বজিৎ চন্দ।
তিনি বলেন, ‘অনেকেই মূলধারায় ফিরে আসার চেষ্টা করছে। আমরা তাদের সুযোগও দিচ্ছি। ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ তাদের ট্রাাস্টি বোর্ডের সমস্যাগুলো সমাধান করেছে। আশা ইউনিভার্সিটি তাদের নিজস্ব ক্যাম্পাস দ্রুততার সঙ্গে নির্মাণ করছে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে, আমরা তাদের সহযোগিতা করব। আইন না মানার যে প্রবণতা ছিল, এ কারণে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত শিক্ষা আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। তবে এখন থেকে কঠোরভাবে এসব দেখা হবে। শুধু শিক্ষার্থী ভর্তি আর সার্টিফিকেট বাণিজ্য করতে দেওয়া হবে না।’
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে পাঁচ বছর বয়সী শিশু মুজাহিদ পাঁচশ’ টাকার একটি নোট নিয়ে বাড়ির পাশে এক দোকানে কিছু কিনতে যাচ্ছিল। এসময় তার কাছ থেকে টাকা কেড়ে নিতে কৌশলে এক কিশোর ব্রহ্মপুত্রের কাছে টাকা কেড়ে নিয়ে শিশুটিকে নদে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর থেকে নিখোঁজ শিশু মুজাহিদ। দুইদিনেও তার খোঁজ মেলেনি।
আজ রোববার (১২ মে) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস।
এর আগে, শুক্রবার (১০ মে) দুপুরে উপজেলার সানন্দবাড়ী এলাকার পাটাধোয়া পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ওই এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ শামিম হোসেনকে (১৫) আটক করে পুলিশ। ইতোমধ্যে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে ওই কিশোর।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে মুজাহিদ তার বাবা-মায়ের অগোচরে ঘর থেকে ৫০০ টাকার একটি নোট নিয়ে পাশের এক দোকানে যায়। এসময় শামীম টাকার লোভে শিশু মুজাহিদের পিছু নেয় এবং টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য বেড়ানোর কথা বলে তাকে বাড়ির নিকটবর্তী ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে মুজাহিদের কাছ থেকে কৌশলে টাকা নিতে না পেরে শামীম জোরপূর্বক ৫শ’ টাকা কেড়ে নিয়ে তাকে সানন্দবাড়ি ব্রহ্মপুত্র নদে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এ ঘটনার পর থেকে ভয়ে শামিম গা ঢাকা দেয়। পরে নিখোঁজ মুজাহিদের স্বজনরা শামিমকে সন্দেহ করে পুলিশকে জানালে দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে তাকে আটক করা হয়।
দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, শামিমকে দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে আটক করা হয়েছে। শনিবার ঘটনাস্থলে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে মুজাহিদকে নদে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করেছে। ছোট ছেলে মুজাহিদ, সাঁতার জানে না। ধারণা করা হচ্ছে, মুজাহিদের মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হলে আদালতে প্রেরণ করা হয় শামিমকে।
ব্রহ্মপুত্র নদ ৫শ’টাকার লোভ শিশু কিশোর
মন্তব্য করুন
ভারতের হাইকমিশনার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
মন্তব্য করুন
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে পাঁচ বছর বয়সী শিশু মুজাহিদ পাঁচশ’ টাকার একটি নোট নিয়ে বাড়ির পাশে এক দোকানে কিছু কিনতে যাচ্ছিল। এসময় তার কাছ থেকে টাকা কেড়ে নিতে কৌশলে এক কিশোর ব্রহ্মপুত্রের কাছে টাকা কেড়ে নিয়ে শিশুটিকে নদে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর থেকে নিখোঁজ শিশু মুজাহিদ। দুইদিনেও তার খোঁজ মেলেনি।