সুপ্রিম
কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের প্রথম দিন নির্বিঘ্নে ভোট
দিয়েছেন আইনজীবীরা। সকাল ১০টার পর
ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এক
ঘণ্টা মধ্যাহ্ন বিরতির পর ভোট চলে
বিকেল সোয়া ৫টা পর্যন্ত।
প্রথম দিন তিন হাজার
২৬১টি ভোট পড়েছে বলে
জানিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটির সদস্য মো. কামাল হোসেন।
নির্বিঘ্ন ভোট নিয়ে সন্তুষ্টি
প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা।
বুধবার
(৬ মার্চ) সকালে ভোট শুরুর পর
প্রবীণ আইনজীবী, সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন,
সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, অ্যাটর্নি
জেনারেল এ এম আমিন
উদ্দিনসহ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের ভোট দিতে দেখা
যায়।
তবে
ভোট শুরু হওয়ার আগে
থেকে আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে সাদা শার্ট পরা
শতাধিক ব্যক্তিকে জড়ো হতে দেখা
যায়। জড়ো হওয়া ব্যক্তিদের
প্রায় প্রত্যেকের শার্টে সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথীর নির্বাচনী ব্যাজ ছিল।
পরে
ভোটারদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ এনে
জড়ো হওয়া ব্যক্তিদের সুপ্রিম
কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে দিতে
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়কের কাছে আবেদন করেন
আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা
প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হক।
আবেদনে
তিনি লেখেন, ‘একজন সম্পাদক পদপ্রার্থীর
পক্ষে বেশ কিছু লোক;
যারা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য কিংবা ভোটার নয়, তারা সুপ্রিম
কোর্ট প্রাঙ্গণে বিশেষ অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে মহড়া দিচ্ছে এবং
ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটারদের উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করছে,
যা সুষ্ঠু নির্বাচনে অন্তরায়। অতএব সুপ্রিম কোর্ট
প্রাঙ্গণে অত্র সমিতির সদস্য
কিংবা ভোটার ব্যতীত অবাঞ্ছিত/বহিরাগত ব্যক্তিগণকে দ্রুত অপসারণ করে সুষ্ঠু নির্বাচনী
পরিবেশ বজায় রাখতে আপনার
দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করছি।’
পরে
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী জড়ো হওয়া ব্যক্তিদের
সরিয়ে দিলে তারা সুপ্রিম
কোর্ট মাজার গেটের বাইরে বটতলায় জড়ো হন। সেখানে
তাদের স্লোগান দিতেও দেখা গেছে।
সুষ্ঠু
ভোটে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সভাপতি প্রার্থী
এম কে রহমান বলেন,
‘সুন্দর-শৃঙ্খলাপূর্ণ ভোট হয়েছে। আশা
করি দ্বিতীয় দিনেও ভোটের পরিবেশ এ রকম থাকবে।’
আওয়ামী
লীগ সমর্থিত সম্পাদক প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হক
বলেন, ‘সবার প্রত্যাশামতো ভোট
হয়েছে। দ্বিতীয় দিনের ভোটও এ রকম
সুষ্ঠু-সুন্দর, আনন্দময় পরিবেশে হবে বলে আশা
করছি।
আর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রথম দিনের
ভোট শান্তিপূর্ণ-স্বতঃস্ফূর্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন
বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সম্পাদক প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস কাজল। আরেক সম্পাদক প্রার্থী
ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভুইয়াও প্রথম দিনের ভোটে সন্তুষ্টি প্রকাশ
করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিগত
যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার ভালো ভোট হয়েছে। এবার
ভোটার কার্ড থাকায় ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া আরো স্বচ্ছ হয়েছে।’
গত ১১ ফেব্রুয়ারি এক
নোটিশে সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের
(২০২৪-২৫) তারিখ ঘোষণা
করা হয়। তফসিল অনুসারে,
বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার
দুই দিনব্যাপী নির্বাচন হবে।
নির্বাচন
পরিচালনা উপকমিটির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবুল খায়ের কালের
কণ্ঠকে বলেন, ‘সুষ্ঠু-সুন্দর-স্বচ্ছ পরিবেশে প্রথম দিনের ভোট হয়েছে। ভোটগ্রহণ
শুরু হতে একটু বিলম্ব
হয়েছে বটে। কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবে
ভোট হয়েছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে সবাই ভোট দিয়েছেন।
আজ তিন হাজার ২৬১টি
ভোট কাস্ট হয়েছে।’
অরাজনৈতিক
পেশাজীবী সংগঠন হলেও সুপ্রিম কোর্ট
আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা
বরাবরই প্যানেলভিত্তিক পরিচিতি পেয়েছেন। আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের মনোনীত প্রার্থীরা ‘সাদা প্যানেল’-এর
প্রার্থী হিসেবে হিসেবে পরিচিত। আর বিএনপি-জামায়াতপন্থী
আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী প্যানেলের সমর্থিত প্রার্থীরা ‘নীল প্যানেল’-এর
প্রার্থী হিসেবে পরিচিত।
প্রতিবছর
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ১৪টি পদে নির্বাচন
করে থাকে। এর মধ্যে সভাপতি-সম্পাদকসহ দাপ্তরিক পদ সাতটি, বাকি
সাতটি সদস্য পদ। সাদা-নীল
দুই প্যানেলই বরাবরের মতো ১৪টি পদে প্রার্থিতা
ঘোষণা করেছে। এ দুই প্যানেলের
বাইরে সভাপতি পদে দুজন, সম্পাদক
পদে দুজন এবং কোষাধ্যক্ষ
পদে একজন নির্বাচন করছেন।
অর্থাৎ এবারের নির্বাচনে মোট ৩৩ জন
প্রার্থী হয়েছেন।
গত বছর সুপ্রিম কোর্ট
আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে সাদা-নীল
প্যানেলের প্রার্থী-সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে ব্যাপক হট্টগোল হয়। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া,
হাতাহাতি-ভাঙচুরের মধ্যে পুলিশি হামলার ঘটনাও ঘটে। পুলিশের হামলায়
আইনজীবীদের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট বিটের বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও
আহত হন। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন বর্জন না করলেও নীল
প্যানেলের প্রার্থীরা ভোট থেকে সরে
দাঁড়ান। গত বছর ১৫-১৬ মার্চ ভোট
হয়। দ্বিতীয় দিনের একপেশে ভোটের পরদিন অর্থাৎ ১৭ মার্চ ফল
প্রকাশ করে নির্বাচন পরিচালনা
উপকমিটি। নিরঙ্কুশ জয় পায় বঙ্গবন্ধু
আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সাদা প্যানেল। এবারের
নির্বাচনে মোট ভোটার সাত
হাজার ৮৮৮টি। ১০টি বুধে একসঙ্গে
ভোটগ্রহণ চলছে।
সাদা
প্যানেলের প্রার্থীরা
এ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে
প্রার্থী হয়েছেন আবু সাঈদ সাগর,
সম্পাদক পদে শাহ মঞ্জুরুল
হক, সহসভাপতি দুটি পদে যথাক্রমে
রমজান আলী শিকদার ও
ড. দেওয়ান মো. আবু ওবাঈদ
হোসেন (সেতু), কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ নুরুল
হুদা আনসারী, সহসম্পাদকের দুটি পদে মো.
হুমায়ুন কবির ও মোহাম্মদ
হুমায়ুন কবির (পল্লব)। আর সদস্য
সাতটি পদে যথাক্রমে খালেদ
মোশাররফ (রিপন), মাহমুদা আফরোজ (মনি), মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূইয়া, মো. বেলাল হোসেন,
মো. রায়হান রনি, রাশেদুল হক
খোকন ও সৌমিত্র সরদার
প্রার্থী হয়েছেন।
নীল
প্যানেলের প্রার্থীরা
এ প্যানেল থেকে সভাপতি পদে
প্রার্থী হয়েছেন এ এম মাহবুব
উদ্দিন (খোকন), সম্পাদক পদে মো. রুহুল
কুদ্দুস (কাজল), সহসভাপতি দুটি পদে মো.
হুমায়ুন কবির ও সরকার
তাহমিনা বেগম সন্ধ্যা, কোষাধ্যক্ষ
পদে রেজাউল করিম, সহসম্পাদক পদে মাহফুজুর রহমান
(মিলন) ও মোহাম্মদ আব্দুল
করিম। আর সদস্য সাতটি
পদে ফাতিমা আক্তার, মো. শফিকুল ইসলাম,
মো. রাসেল আহমেদ, মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান নজরুল, মহিউদ্দিন হানিফ, মো. ইব্রাহিম খলিল
ও সৈয়দ ফজলে এলাহী
প্রার্থী হয়েছেন।
স্বতন্ত্র
প্রার্থী যাঁরা
পরিচিত দুই প্যানেলের বাইরে
সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন
মো. খলিলুর রহমান বাবলু (এম কে রহমান)
ও মো. ইউনুছ আলী
আকন্দ। সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন
নাহিদ সুলতানা যুথী ও ফরহাদ
উদ্দিন আহমেদ ভুইয়া। এ ছাড়া কোষাধ্যক্ষ
পদে প্রার্থী হয়েছেন মো. সাইফুল ইসলাম।
সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন ভোট
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
হেফাজতে ইসলাম মাওলানা মামুনুল হক
মন্তব্য করুন
উন্মুক্ত কারাগার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে এবার নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও ভাগনে। ছোট ভাই শাহদাত হোসেন প্রার্থী হয়েছেন চেয়ারম্যান পদে। আর ভাগনে মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু প্রার্থী হয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান পদে।