সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘পুনর্বাসনের পরও একটি
বড় সংখ্যাই অভ্যাস বশত ভিক্ষাবৃত্তিতে থেকে যেতে চান, সে কারণেই সরকারের ভিক্ষাবৃত্তি নিবৃতকরণ
ও পুনর্বাসন কর্মসূচি পুরোপুরি সফল হয় না। বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে তাদের এই অভ্যাসটি
কিভাবে পরিবর্তন করা যায়, সে চিন্তা করতে হবে।’
বুধবার (২০ মার্চ) সকালে রাজশাহী সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের
উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
এছাড়াও সরকারের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ২৯টি পণ্যের দাম বেঁধে দেয়া
এবং ব্যবসায়ীদের তা না মানার ঘটনায় তিনি বলেন, অন্ততপক্ষে রমজানের সময় ব্যবসায়ীদের
মুনাফা যৌক্তিক পর্যায়ে থাকা দরকার, এটি সবার প্রত্যাশা।
নতুন মন্ত্রীসভায় দায়িত্ব পাবার পর এই প্রথম রাজশাহীতে সমাজকল্যাণ
মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। পরপর তিন বার তিন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ ও পালন করায় কোনটিতে
বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন এমন প্রশ্নে তিনি জানান, দেশের স্বার্থে বঙ্গবন্ধু কন্যা
যেখানে যখন কাজ করতে দায়িত্বভার দিয়েছেন সেখানেই স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করেছি।
নতুন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর সামাজিক সুরক্ষা বলয় আরও
কিভাবে শক্তিশালী করা যায় সে বিষয়ে কাজ করছি। দেশের নারী শিশু সুরক্ষা, পথ-শিশুদের
মৌলিক অধিকার, প্রবীণদের যত্ন নেয়ার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
এছাড়াও দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ঘটার পাশাপাশি নাগরিকদের গড় আয়ু
বেড়েছে বলে দেশে প্রবীণের সংখ্যাও বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। জানান সকলের জন্য তাদের
প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করছে তার সরকার।
দুই দিনের সফরে বুধবার সকালে বিমান যোগে ঢাকা থেকে রাজশাহী পৌঁছান
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এ সময় সার্কিট হাউজে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এতে উপস্থিত
ছিলেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, বাগমারা আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদসহ
জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের দলীয় নেতা-কর্মীরা।
সার্কিট হাউজ থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি যান বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর
পৌরসভায়। সেখানে দিনব্যাপী সুধী সমাবেশ, ঈদ উপহার বিতরণ শেষে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে
আলোচনা করবেন তিনি।
রাজশাহী সার্কিট হাউজে রাত্রি যাপন শেষে পরদিন বৃহস্পতিবার তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।
বিএনপি এখন হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দল। তাদের ভিতর অবিশ্বাস-কোন্দল প্রচণ্ড আকার ধারণ করেছে। যার ফলে দলটি এখন নতুন আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় নেই। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অস্তিত্বের সংকটে আছে। তাদের কর্মী সমর্থক নেই। কাজেই রাজনীতিতে তারা সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের সুযোগই পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিকভাবে নির্বাচনের আগে মনে করা হয়েছিল সরকার বড় ধরনের সংকটে পড়বে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের আগে যেভাবে সরকারকে সতর্ক করেছিল, হুঁশিয়ারি দিয়েছিল; অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে নিষেধাজ্ঞার মত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছিল- নির্বাচনের পর সেই অবস্থা পাল্টে গেছে।
বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলা সত্ত্বেও নতুন সরকারের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্যই বেশি চেষ্টা করছে। অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য; তারাও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচনের বিষয় তারা তেমন সামনে আনতে রাজি নন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবতা হল সরকার স্বস্তিতে নেই। বরং আস্তে আস্তে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। আর সরকারের এই চাপের প্রধান কারণ হল অর্থনীতি। বিগত মেয়াদেই অর্থনীতিতে বিবর্ণ চেহারাটা সামনে উঠেছিল। এটি আস্তে আস্তে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের জন্য অর্থনৈতিক সংকটগুলো মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়ছে বলেই অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য সরকার বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করছে। কিন্তু সেই উদ্যোগগুলো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেমন অর্থনৈতিক সংকটের একটি প্রধান বিষয় হল মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে, মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য সরকার যত ব্যবস্থাই নেক, সেই ব্যবস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ফলপ্রসূ বলে বিবেচিত হয়নি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল, ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-বিশৃঙ্খলতা। আর এটি দূর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েকটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কৌশল এখন ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে বিশৃঙ্খল অবস্থারও একটা উন্নতি হয়নি।
ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খলার হওয়ার প্রধান কারণ হল খেলাপি ঋণ এবং অর্থপাচার। ঋণ খেলাপিদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর অবস্থান গ্রহণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা শোনা যাচ্ছে বটে। কিন্তু বাস্তবে এই পরিকল্পনাগুলো কতটুকু বাস্তবায়িত হবে সে নিয়েও বিভিন্ন মহলের সন্দেহ রয়েছে। কারণ অতীতেও দেখা যে, ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে পারছে না।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্কট বাড়ছে, বিশেষ করে এখন বাংলাদেশকে ঋণের দায় মেটাতে হচ্ছে। ঋণের দায় মেটানোর চাপ সামলাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রায় টান পড়ছে। আর বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান যে উৎস প্রবাসী আয় এবং রপ্তানী আয়- সে দুটোতেও কোনওরকম ইতিবাচক ব্যবস্থা নেই। সামনে বাজেট, আর এই বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি মহাপরিকল্পনা সরকারকে করতেই হবে। অর্থনৈতিক সংকট যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো আরও কঠিন, চ্যালেঞ্জিং এবং সংকটাপন্ন হবে বলেই মনে করে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতি হাসান মাহমুদ আলী আয়শা খান আওয়ামী লীগ সরকার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার একটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে। রাজনৈতিকভাবে যারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করতে বলেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনের পর তারা সঙ্কুচিত, কোণঠাসা এবং হতাশাগ্রস্ত। আওয়ামী লীগের সামনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই বললেই চলে। না সংসদে, না রাজপথে।